৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৩শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 176

অসুস্থ হয়ে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে মেয়র আইভী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৫টার দিকে আইভীকে হাসপাতালাতে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। আইভীর সমস্যা চিন্হিত করতে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। পরিবর্তন ডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ল্যাবএইডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাইফুর রহমান লেলিন।

তিনি জানান, মেয়র আইভী সিসিইউতে আছেন। এখানে অজারভেশনে থাকবেন। নরমাল ইনসিডেন্ট উনার ব্লাড পেসার কম ছিল। আমরা এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারছি না। সিটি স্কেন করা হবে, তারপর বলা যাবে সমস্যা কোন জায়গা থেকে আসছে। ব্রেইন নাকি হার্টের সমস্যা হয়েছে- তা বলা যাবে।

তিনি আরও জানান, ‘এর মধ্যে মেয়র আইভীর সমস্যা চিন্হিত করতে পাঁচজন ডাক্তারকে নিয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।’

এর আগে দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তিনতলায় চিকিৎসাধীন সাংবাদিক শরীফউদ্দিন সবুজ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলমসহ আহতদের দেখতে এসে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে ঢাকা আনা হয়।

যারা অস্ত্র দেখিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে-স্বরাষ্টমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জে সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান ও মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অস্ত্র হাতে যাদের ছবি এসেছে, তাদেরকে ছাড় না দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। মন্ত্রী বলেন, ‘অ্যাসিওরেন্স দিচ্ছি, যারা অস্ত্র দেখিয়েছে, যারা নিজের হাতে আইন তুলে নিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রাজধানী লাগোয়া বন্দরনগরীতে হামলার দুই দিন পর বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীতকরণের এই অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নারায়ণগঞ্জের ঘটনা নিয়ে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী।

নারায়ণগঞ্জে উচ্ছেদ করা হকারদেরকে আবার বসাতে শামীম ওসমানের হুমকির পর মেয়র আইভীর মিছিলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় মঙ্গলবার। এ সময় গণমাধ্যমে নিয়াজুল ইসলাম নামে একজনের পিস্তল হাতের ছবি আসে। তিনি শামীম ওসমানের অনুসারী এবং শামীম এটা নিজেও স্বীকার করেছেন।

তবে শামীম দাবি করেছেন, নিয়াজুলের অস্ত্রটি বৈধ এবং আইভীপন্থীদের হামলার পর এটি বের করেছিলেন তিনি। আর অস্ত্র বের করার পর সেটি ছিনিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু পুলিশ মামলা নিচ্ছে না।

সংঘর্ষের পর দিন শামীম ওসমানও কিছু ছবি দেখিয়ে দাবি করেন, গুলি করা হয়েছে আইভীর মিছিল থেকেও। আর এতে অংশ নেয় বিএনপির চিহ্নিত ক্যাডাররাও।

এই ঘটনার পর শামীম ও আইভীকে ঢাকায় তলব করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই ঘটনাটি দেখছেন। আর গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটিও।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন, একটা দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। এ জন্য যা দরকার সেটা আমরা করছি। যারা অস্ত্র দেখিয়েছে, যারা নিজের হাতে আইন তুলে নিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হবে।’

‘আমরা খতিয়ে দেখছি। ভিডিও ফুটেজ দেখে কারা করেছে তাদের ধরার জন্য প্রচেষ্টা নিচ্ছি এবং কী কারণে করল, তার পুরোপুরি একটা ইনকোয়ারি আমরা করছি।’

শামীম ওসমান এবং আইভীকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তাদের এই বিরোধ পছন্দ করছেন না। এগুলো না থামালে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

না”গঞ্জে অস্ত্রধারীদের খুঁজতে মাঠে নেমেছে পুলিশ

ডেস্ক নিউজঃ নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষের সময় ব্যবসায়ী নিয়াজুল নিয়াজুল ইসলাম খানকে পিস্তল হাতে দেখা যায়। এছাড়া আইভী সমর্থক আবু সুফিয়ান এবং বিএনপি কর্মী সুমনকে অস্ত্র হাতে দেখা গেছে। হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া এলাকায় সংঘর্ষে এখনও কোনও পক্ষ থেকেই মামলা করা হয়নি। তবুও পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় যারা অস্ত্র ব্যবহার করেছিল তাদের খুঁজছেন তারা।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

ঘটনাস্থলে যারা অস্ত্র নিয়ে গিয়েছিলেন, সেইসব ব্যক্তির বিষয়ে পুলিশ এখন খোঁজখবর নিচ্ছে। তাদের কাছে ভিডিও ফুটেজ আছে বলে উল্লেখ করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কেউ অভিযোগ করতে এলে তা নেওয়া হবে।

নিয়াজুল ইসলাম খান নামে যে ব্যক্তি একটি অস্ত্র বের করেছিলেন, তার বিষয়েও পুলিশ প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘তিনি একজন ব্যবসায়ী বলে জানতে পেরেছি। তার অন্য কোনও পরিচয় আছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি সেখানে কেন গিয়েছিলেন তা জানার চেষ্টা চলছে। তবে এখন তিনি পলাতক। আমরা শুনেছি, তার একটি পিস্তল লাইসেন্স করা রয়েছে। তবে যে পিস্তলটি তার হাতে দেখা গেছে সেটি লাইসেন্স করা কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মঙ্গলবারের (১৬ জানুয়ারি) সংঘর্ষের ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। তার ভাষ্য, ‘ইতোমধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি জিডি করা হয়েছে। আমরা প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছি। এছাড়া ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসক একটি কমিটি করে দিয়েছে বুধবার। তারাও ঘটনাটি তদন্ত করবে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দেবেন।’

এর আগে মেয়র আইভী দাবি করেছেন, হামলাকারী নিয়াজুল নগর যুবলীগের নেতা ও শামীম ওসমানের সমর্থক। তবে শামীম ওসমান দাবি করেছেন, ‘নিয়াজ বিশাল মার্কেটের মালিক, তিনি নিশ্চয়ই পিস্তল হাতে রাস্তায় নামবেন না।’

একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘নিয়াজুল আমার পরিচিত। তিনি বিশাল বড় মার্কেটের মালিক। সে সুইটের ভাই যাকে বিএনপির সময় ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছিল। এটা কি তার দোষ? বিশাল কোনও মার্কেটের মালিক নিশ্চয়ই পিস্তল হাতে রাস্তায় নামবে না! তার হাতে পিস্তল দেখা গেলেও পরীক্ষা করা হোক এই পিস্তল থেকে গুলি করা হয়েছে কিনা।’

ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) বিকালে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া এলাকায় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় মেয়র আইভী, সাংবাদিকসহ শতাধিক মানুষ আহত হন। এদিন দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষের ঘটনায় পুরো এলাকা পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দুই শতাধিক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, নগরীর সৌন্দর্য অক্ষুণ্ন রাখতে সড়কের ফুটপাথগুলো হকারমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন মেয়র আইভী। এই সিদ্ধান্তে হকাররা প্রতিবাদ জানালে তাদের সমর্থন জানান শামীম ওসমান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বক্তব্য-পাল্টা বক্তব্য রাখার ঘটনাও ঘটে। সবশেষ মেয়র আইভী নগরীর ফুটপাথ থেকে হকারদের উচ্ছেদের ঘোষণা দিলে তাদের আবারও ফুটপাথে বসানোর ঘোষণা দেন শামীম ওসমান।

এর প্রতিবাদে নগর ভবন থেকে পায়ে হেঁটে মেয়র আইভী তার নেতাকর্মীদের নিয়ে মিছিলসহ চাষাঢ়া এলাকায় আসেন। তারা মুক্তি জেনারেল হাসপাতালে সামনে এলে শামীম ওসমানের সমর্থক ও হকাররা তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় মেয়র আইভী ও তার লোকজনকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে নিয়াজুল ইসলাম। নেতাকর্মীরা মানবঢাল তৈরি করে আইভীকে রক্ষা করেন। পরে লোকজন নিয়াজুলকে ধরে গণপিটুনিও দেয়।

পরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘শামীম ওসমানের নির্দেশে তার ক্যাডাররা আমার ও নিরীহ নগরবাসীর ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে আমিসহ নারায়ণগঞ্জের যুবলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন সম্পর্কে হকারদের সঙ্গে কথা বলতে নগর ভবন থেকে পায়ে হেঁটে চাষাঢ়া আসছিলাম। ফুটপাত হকারমুক্ত রাখার জন্য নির্দেশ পালন ও হকারদের বসানোর জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করার বিষয়ে কথা বলাই ছিল আমার উদ্দেশ্য। কিন্তু শামীম ওসমানের নির্দেশে তার সমর্থকরা কোনও কারণ ছাড়াই আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। জেলার ডিসি ও এসপির নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কারণে আমার লোকজনের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। আমি জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের প্রত্যাহারের দাবি জানাই।’ সূত্র-বাংলা ট্রিবিউন

না’গঞ্জে হকার বসতে ডিসির অনুমতি-হকারদের প্রত্যাখ্যান

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ হকার ইস্যু নিয়ে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনার একদিন পর নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া থেকে মেট্রো সিনেমা হল চত্বর পর্যন্ত হকারদের বসার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন।  তবে সন্ধ্যায় শহীদ মিনারে হকারদের সমাবেশ থেকে এ সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে হকার নেতারা। মেয়র আইভী ও সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের সঙ্গে আলোচনার পর হকারদের বসার এ অনুমতি দেন জেলা প্রশাসক মো. রাব্বী মিয়া।

বৈঠকে হকারদের জানানো হয়, মেয়র আইভী ও সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের অনুমতিক্রমে চাষাঢ়া থেকে মেট্রো সিনেমা হল চত্বর পর্যন্ত হকাররা বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বসতে পারবে। তবে কোনোভাবেই বঙ্গবন্ধু সড়কে কোনো হকার বসা যাবে না।

গত ২৫ ডিসেম্বর সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসন যৌথ উদ্যোগে নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক থেকে হকার উচ্ছেদ করে। এরপর থেকেই ফুটপাতে বসার দাবি জানিয়ে লাগাতার আন্দোলন করে আসছিল হকাররা।

মঙ্গলবার হকার ও শামীমপন্থীরা ফুটপাত দখল করতে গেলে মেয়র আইভীপন্থী ও নগরবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে শামীমপন্থী নিয়াজুল ইসলাম পিস্তল বের করে গুলি করতে গেলে গণপিটুনির শিকার হয়। এ সংঘর্ষে মেয়র আইভী, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরিফুদ্দিন সবুজসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়।

শামীম ওসমানের নির্দেশে হামলা চালানো হয়েছে-আইভী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আইভী বলেছেন, আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল আছি এবং থাকব। কোনোভাবেই ফুটপাতে হকারদের বসতে দেয়া হবে না। শামীম ওসমানের নির্দেশে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তারা আমাদের ওপর একতরফা হামলা চালিয়েছে। আমার ভাই, আমার আত্মীয়-স্বজন দেখে বেছে বেছে হামলা চালিয়েছে তারা। এ বিষয়ে আমি আইনি পদক্ষেপ নেব।

তিনি বলেন, আমাকে মেরে ফেললে আমার কোনো আপত্তি ছিল না। আমার লোকদের যেভাবে পিটিয়ে আহত করলো তা খুবই দুঃখজনক। হকার নেতারা আমার সঙ্গে মিটিং করেছে। তাদের বুঝিয়ে ফুটপাতে না বসে অন্য জায়গায় বসার জন্য বলেছি। তাদের বিষয় নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের সঙ্গে আমার আলাপ চলছিল। হঠাৎ করে শামীম ওসমান উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

এ সময় পুলিশ প্রশাসনের সমালোচনা করে মেয়র আইভী বলেন, পুলিশ প্রশাসনের সামনে আমার লোকজনের ওপর হামলা চালানো হলেও তারা কিছুই করেনি। পুলিশ প্রশাসন জানতো শামীম ওসমানের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালাবে। তারা যদি আমাকে আগে থেকে সেই তথ্য জানাতো তাহলে আমি লোকজন নিয়ে ফুটপাত দিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে কথা বলার চিন্তা করতাম না।

উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরে হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও এমপি শামীম ওসমান সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

সংঘর্ষের ঘটনায় মেয়র আইভীসহ উভয় গ্রুপের প্রায় অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হন। এ নিয়ে মেয়র আইভী ও এমপি শামীম ওসমান একে অপরকে দোষারোপ করেছেন।

বিএনপির ক্যাডাররা গুলি ছুড়েছেন-শামীম ওসমান

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ হকার ইস্যু নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও এমপি শামীম ওসমান সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাংসদ শামীম ওসমান। এ সময় বিএনপির ক্যাডাররা হকার ও আওয়ামী লীগের নেতাদের ওপর গুলি ছুড়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

শামীম ওসমান বলেন, নিয়াজুল কে এটা জানা দরকার। নিয়াজুল নারায়ণগঞ্জ শহরের একটি বিশাল মার্কেটের মালিক। নিয়াজুল এক সময়ের আমার কর্মী ছিল। সে হলো আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম সুইটের ছোট ভাই। বিগত বিএনপি সরকারের আমলে কারাগারে থাকা সুইটকে বাইরে এনে হত্যা করা হয়েছে। সেই সুইটের ভাই মঙ্গলবার বিকেলে একা একা হেঁটে আসার সময় মিছিল থেকে তিনবার মাটিতে ফেলে ১০ মিনিট ধরে পেটানো হয়। চতুর্থবার বাধ্য হয়ে নিয়াজুল লাইসেন্স করা পিস্তল বের করে। তার পিস্তলটি খোয়া গেছে কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। আর আইভীর বন্ধু আবু সুফিয়ান তার পেছন থেকে পিস্তল বের করেছে। এটা আমার কাছে ভিডিও ছবি রয়েছে।

তিনি আরও বলেছেন, মেয়র আইভী নিয়াজুলকে আমার লোক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। কিন্তু আইভী কাদের নিয়ে হকারদের বিপক্ষে মাঠে নেমেছেন? মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, বিএনপির ক্যাডার সুমন, আর জোড়া খুনের মামলার আসামির লোকজন বেষ্টিত হয়ে মিছিল নিয়ে আসলো আইভী। তাদের মিছিলটি চাষাঢ়ায় আসার পর সুমন নামের একজনকে গুলি করতে দেখা গেছে। কে এ সুমন? আইভীর পেছনে থাকা পিস্তল হাতে নিয়ে সুমন নামে যেই লোকটি গুলি করছেন সে যুবদলের।

রাইফেলস ক্লাবে বসে শামীম ওসমান আমার ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন-আইভী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, শামীম ওসমান আমার ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশ পেয়ে তার লোকজন ইট-পাটকেল ছোড়ে। এতে আমি আহত হই।

মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর সাধুপৌলের গির্জার কাছে হকারদের হামলায় আহত হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন মেয়র অাইভী।

এ সময় মেয়র আইভী অবিলম্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের পদত্যাগ দাবি করেন। মেয়র আইভী বলেন, ঘটনাস্থল চাষাড়ায় পুলিশ থাকলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। শামীম ওসমানের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল পুলিশ।

পুলিশের নীরব ভূমিকার ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার মইনুল হক বলেন, আমরা উভয় পক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছি। জানমালের নিরাপত্তা দিতে চেষ্টা করেছি। আমাদের কোনো গাফিলতি ছিল না।

নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষে অস্ত্রের শোডাউন

ডেস্ক নিউজঃ নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় রাস্তায় হকার বসানোকে কেন্দ্র করে  অস্ত্রের শোডাউন দেখা গেছে। এরমধ্যে দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্রের শোডাউন দেখা যায়।মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ এলাকায় উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে উত্তাপ শুরু হয়। এদিন বিকেলে প্রায় ঘণ্টাখানেক বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান। সে সময় তিনি ফুটপাতে হকারদের বসার নির্দেশ দেন।

পরে হকারদের ঠেকাতে মঙ্গলবার বিকেলে সেলিনা হায়াৎ আইভী নগর ভবন থেকে শত শত নেতাকর্মী নিয়ে শহরের চাষাঢ়ায় যান। পরে তিনি দোকানদারদের  সঙ্গে কথা বলে ফিরে যাচ্ছিলেন। এসময় নীল রংয়ের জিন্সের জ্যাকেট পরা নেওয়াজ অস্ত্র তাক করে সকলকে ভয় দেখান এবং হত্যার হুমকি দেন। এসময় আইভীর সমর্থকরা কৌশলে ওই ব্যক্তিকে প্রতিহত করে। এসময় তার অস্ত্র উধাও হয়ে যায়। পরে সাংসদ শামীম ওসমান ও মেয়র আইভীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া হয়।

ধলেশ্বরীতে নিখোঁজ দুদু মিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বক্তাবলীর নৌ-পুলিশ

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় শুক্রবার ভোর ৬টায় বক্তাবলী এলাকায় ধলেশ্বরী মাঝ নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া ট্রলারের নিখোঁজ যাত্রী দুদু মিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বক্তাবলী নৌ-পুলিশ।মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টায় বক্তাবলী ফেড়ি ঘাটের পূর্ব পার্শে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিখোঁজ দুদু মিয়া (৫৫) ফতুল্লার উত্তর নরসিংপুর এলাকার বাসেদ মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় একজন মাংস ব্যবসায়ী।

উলেখ্য,গত শুক্রবার ভোর ৬টায় ফতুল্লার এপার থেকে বক্তাবলী ফেরি ঘাটের ওপারে ১১ জন যাত্রী নিয়ে খেয়া পারাপারের ট্রলারটি যাওয়ার পথে অজ্ঞাত লঞ্চ মাঝ নদীতে ধাক্কা দেয়। এ সময় ট্রলারটি ডুবে যায়। এতে সকল যাত্রী সাতরিয়ে তীরে উঠলেও দুদু মিয়া ডুবে যায়।

 

আইভীর লোকজন হকারদের ওপর গুলি করেছে-শামীম ওসমান

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান বলেছেন, পুলিশের উপস্থিতিতে মেয়র আইভীর লোকজন হকারদের ওপর গুলি বর্ষণ করেছে।  মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে নগরীর সাধুপৌলের গির্জার কাছে মেয়র আইভী ও শামীম ওসমানের সমর্থক হকারদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনার পর চাষাড়ায় এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন শামীম ওসমান।
এ সময় শামীম ওসমান তার নেতা-কর্মীদের এ সংঘর্ষে না জড়াতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কোনো একটি পক্ষ আমাদের দুর্নাম করতে এ সংঘর্ষের সৃষ্টি করছে। তোমরা এ ফাঁদে পা দিও না। শান্ত থাকো। সুষ্ঠু আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করা হবে।
এর আগে নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ফুটপাত রক্ষায় নগর ভবন থেকে পায়ে হেঁটে চাষাড়া অভিমুখে রওনা দেন।
ওই সময় তারা নগরীর সাধুপৌলের গির্জার কাছে এসে পৌঁছলে চাষাড়া দিক থেকে আসা একদল লোক হামলা চালায়। এতে মেয়র আহত হয়ে মাটিতে পড়ে যান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার মইনুল হক বলেন, আমরা ঘটনাস্থলের মাঝখানে থেকে উভয় পক্ষকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি। সবার জানমালের নিরাপত্তার দিতে চেষ্টা করেছি। তবুও কয়েকজন আহত হয়েছে।