নিউজ প্রতিদিন ডটনেট : ৫ই আগষ্ট স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে গেলেও প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় তার চেলা-চামুন্ডারা রয়েছেন বহাল তবিয়তে। বিএনপি কেন্দ্রীয়ভাবে আওয়ামী দোসরদেরকে দলে না ভিড়ানোর কথা বললেও তা যেন কোনভাবেই কর্নপাত করছে সুবিধাভোগী বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
নারায়ণগঞ্জ সদরের প্রতিটি পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে লুকিয়ে থাকা কিংবা ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামীলীগের দোসররা একে একে বিএনপিতে যোগদান করছেন কৌশল অবলম্বন করে।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে নেকবর বেপারী এবং লিটন ৫ই আগস্টের পূর্বে এরা দুজনই ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম ও আলীরটেক ইউনিয়ন আওয়ামী ছাত্রলীগের সভাপতি শাহীন রাজু মেম্বারের সাথে আওয়ামীলীগের প্রতিটা মিছিল মিটিংয়ে সরব ও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে।
৫ই আগস্ট পরবর্তী নেকবর বেপারী ও লিটন গংরা নিজেদের বিএনপি নেতা পরিচয় দিয়ে মহানগর বিএনপি নেতা সাখাওয়াত ও টিপুর সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করতে দেখা যায়।
সেখানে দেখা যায়, আওয়ামীলীগের সক্রিয় সদস্য নেকবর বেপারী সভাপতিত্বে জিয়াউল রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী পালিত হচ্ছে। এতে অতিথি হিসেবে ছিলেন মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ। আওয়ামীলীগের সক্রিয় সদস্যরা যাতে বিএনপিতে আশ্রয়, প্রশ্রয় না পায় সেদিকেও খেয়াল রাখার কথা জানিয়েছে আলীরটেক ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এদিকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃকর্মীদের দাবী, পুরো মহানগর জুড়েই বিএনপির নেতৃবৃন্দরা বিভিন্ন সুযেগ-সুবিধার জন্য আওয়ামীলীগ দোসরদেরকে দলে ভিড়াচ্ছেন এবং বিগত সময়ে যারা পুলিশী হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন তারা সেই আগের মতই রয়েছেন। তাদেরকে কোন ভাগ্য পরিবর্তনে সহায়ক হচ্ছেনা।
তারা জানান, বিগত ১৭ বছরে আওয়ামী ব্যানারে যারা মাদক, ভুমিদস্যুতাসহ বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত ছিলো তাদেরকেই বেছে বেছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের প্রবেশ করাচ্ছে বিএনপির নেতৃবৃন্দরা। কেন্দ্র থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা, মহানগর-সদর উপজেলা ও থানা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের কাছে যে নির্দেশনা রয়েছে কোন আওয়ামীলীগ যেন দলে অনুপ্রবেশ না করায়।
তা যেন কর্নপাত করছে না বড় বড় পদে থাকা নেতারা। দলে থাকা নেতারা কেন্দ্রকে মানছেনা বরং আওয়ামী দোসরদের বিএনপিতে অনুপ্রবেশ করিয়ে তাদের কাছ থেকে সুবিধা নেয়ার পাশাপাশি বিগত ১৭ বছরে আওয়ামী দোসরদের যাবতীয় কাজগুলোও তাদের আয়ত্তে আনছেন এমনটাই দাবী করেন আওয়ামী দোসরদের অনুপ্রবেশের দায়ে দল থেকে সুবিধা বঞ্চিত নেতা-কর্মীরা।
এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর শহীদ জিয়া পরিষদের সভাপতি ও সাবেক নারায়ণগঞ্জ জেলা জিসাস এর সভাপতি ইকবাল মাহমুদ বলেন, বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা হয় তো জানতো না নেকবর বেপারী আওয়ামীলীগের সক্রিয় সদস্য, জানলে হয়তো তারা এইখানে আসতো না।
আর এইখানে আওয়ামীলীগের সক্রিয় সদস্য নেকবর বেপারী সভাপতিত্ব করায় আলীরটেক ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির ৪/৫ জন নেতা কর্মী ছাড়া বিএনপির কেউ উপস্থিত ছিলনা।
আলীরটেক ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতা কর্মীদের দাবি নেকবর বেপারী কখনো বিএনপির কোন মিটিং মিছিলে দেখিনাই। সে কিভাবে বিএনপির অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করে। দলের এমন পরিস্থিতি দেখে আলীরটেক ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে অনেকে ক্ষোভের সাথে বলেন, যেভাবে আওয়ামী দোসররা বিএনপিতে অর্ন্তক্তুক্তি হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে যে “আওয়ামীলীগ ছাড়া বিএনপি পুরোটাই অচল”।
তৃণমুলের রাজনীতিতে জড়িত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দরা দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনার অপেক্ষা রয়েছে যে, যারা আওয়ামী দোসরকে দলে অনুপ্রবেশ করাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে কোনরুপ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কিনা! যদি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে আমরা নিজেরাই ব্যবস্থা নেব।








