জয়ের বিরুদ্ধে ডলার পাচারের অভিযোগ নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের দায়িত্ব জয়ের, খালেদা জিয়ার নয় : রিজভী

74

প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০ মিলিয়ন ডলার অর্থ পাচারের যে অভিযোগ উঠেছে তা অসত্য প্রমাণ করার দায়িত্ব জয়ের, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার বেলা সোয়া ১১টারদিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

‘ব্যবসা করতে নয়, জনগণের কল্যাণ করতে এসেছি,- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী আহমেদ বলেন, তিনি ঠিকই বলেছেন, সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে তিনি দেশের বারোটা বাজিয়ে জয়ের কল্যাণ করতেই অধিকতর সময় ব্যয় করছেন। কারণ দেশের মানুষ এখনও শেয়ার বাজার লুটের টাকার হদিস পায়নি, দেশের ব্যাংকগুলোর লুটের টাকার সন্ধান পায়নি। রাজকোষের রিজার্ভের চুরি হওয়া টাকা কিভাবে পাচার হলো তা কিন্তু জনগণের জানতে বাকি নেই।

প্রধানমন্ত্রীর গুণধর পুত্রের গুণকীর্তন দেশে বিদেশে যেভাবে প্রচার হচ্ছে তাতে মনে হয় আওয়ামী তরী আর বেশিদিন পানিতে ভাসিয়ে রাখা যাবে না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার শিরপীড়া এখন জয়কে নিয়ে। জয়ের অপকীর্তি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। আর প্রধানমন্ত্রী যখন কোনো কিছু সামাল দিতে পারেন না তখন অত্যাচার হুমকি উৎপীড়নের পথ ধরে বিরোধী পক্ষের ওপর ক্রমাগত বিষাক্ত আক্রমণ চালাতে থাকেন।

রিজভী বলেন, ‘খালেদা জিয়া মে দিবসের জনসভায় আমেরিকান আদালতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের ব্যাংক একাউন্টে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের হদিস মিলেছে। গতকাল কুমিল্লা আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আওয়ামী অনুরাগী এক ভূইফোঁড় সংগঠনের নেতা কোটি টাকার মানহানির মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে- এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

তিনি আরো বলেন, ‘দেখা গেছে, সজীব ওয়াজেদ জয়ের একটি একাউন্টেই তিনশো মিলিয়ন ডলার তথা পঁচিশ শো কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এটি সন্দেহজনক লেনদেন। এই টাকার উৎস কী তা খালেদা জিয়া জানতে চেয়েছেন। এই ঘটনা শুধু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াই নয়, বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বের মানুষের মনে প্রশ্ন-জয়ের এই টাকার উৎস কী ?

বিএনপির এই নেতা বলেন, জয়ের একাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ যদি বৈধ হয় তাহলে তা জনসম্মুখে উপস্থাপন করতে সমস্যা না থাকারই কথা।

‘বিএনপি চেয়ারপারসনের বক্তব্যের পর শেখ হাসিনা তনয় যে বক্তব্য পেশ করেছেন তা এতটাই দুর্বিনীত, রুচি ও শিষ্টাচার বহির্ভূত যে তাতে রহস্য আরো বেশি ঘণীভূত হয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, চুরির মালের কথা প্রকাশ হয়ে যাওয়াতে জয় সাহেব অস্থির হয়ে পড়েছেন।’

জয় যদি কখনো রাষ্ট্রক্ষমতা হাতে পায়, তাহলে সজ্জন ভদ্রলোকদের দেশে বাস করাই কঠিন হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গত পরশু জয় তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সম্পর্কে অশোভন ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত মন্তব্য করেছেন। অবৈধ সরকার প্রধানের পুত্র যখন একটি রাজনৈতিক দলের প্রধানের বিরুদ্ধে অশোভন কথা বলেন তখন মানুষ হতবাক হয়ে যায়, তার পারিবারিক সংস্কৃতি নিয়ে বড়ধরনের প্রশ্ন চলে আসে। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে সম্বোধন করাও তিনি শেখেননি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল,  খায়রুল কবির খোকন, হারুন উর রশিদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, সহ-দফতর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, তাইফুল ইসলাম টিপু,  পিরোজপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিনা সুলতানা নিশিতা প্রমুখ।

(জাস্ট নিউজ)