সিদ্ধিরগঞ্জে সন্ত্রাসী হাকিম গ্রেফতার

132

নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সিদ্ধিরগঞ্জে হাজী ইয়াছিনের সক্রিয় সহযোগী সেই ১০ সন্ত্রাসীর এক সন্ত্রাসী,চাঁদাবাজ ও মাদক পাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা হাকিম ওরফে কালা হাকিম (৩৫) কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। গত মঙ্গলবার (৩ মে) দিবাগত ভোর রাতে মিজমিজি আবদুল আলীপুল এলাকা থেকে এস আই ওমর ফারুক তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত হাকিম দূধর্ষ অস্ত্রধারি সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও ছিনতাইকারী দলের প্রধান ও মাদারীপুর জেলার মৃত সোলেমান মিয়ার ছেলে। সে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়ার ক্যাডার বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড ও অস্ত্র ভান্ডারের নিয়ন্ত্রণকারী এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে ধনুহাজী রোডের মাথার আক্তার ফার্নিচারের মালিক ও সিদ্ধিরগঞ্জের মাদকের ডিলার আক্তারের অন্যতম ব্যবসায়ী পার্টনার । পুলিশ হাকিমকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মু: সরাফাত উল্লাহ জানান, হাকিম এক জন চাঁদাবাজ, অস্ত্রধারি সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী। সে সাহেবপাড়া,কান্দাপাড়া, মিজমিজি, মৌচাক ,ধনুহাজী রোড ও পাইনাদী এলাকায় চাঁদাবাজ হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি সাহেবপাড়া এলাকায় হুমায়ুন কবির নামে এক ব্যবসায়ীর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। না দিলে তাকে মারধর করে। ওই ঘটনায় ব্যবসায়ী হুমায়ন কবির একটি চাঁদাবাজির মামলা করে। যানং ২৩। সে ঐ মামলার এজাহার ভুক্ত আসামী। এ মালায় অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ওই চাঁদাবজির মামলায় তাকে গ্রেফতার করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জে কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করতে দেওয়া হবেনা। সে যেকোন দল বা ভাইয়ের লোক হউক। একটি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদক মুক্ত সিদ্ধিরগঞ্জ উপহার দিতে সকলের সহযোগীতা কামনা করছি।
একটি সূত্র মতে জানা যায়, গত ২ মাস আগে মাদারীপুর জেলা ডিবি পুলিশের হাতে মাদকসহ গ্রেফতার হয় হাজী ইয়াছিনের ৫ ক্যাডার ইয়াছিন আরাফাত রাসেল, রোকন মিয়া, লিটন, মনির ও হাকিম। পরে মাদারীপুর জেলা ডিবির একটি টিম অস্ত্র উদ্ধারে সিদ্ধিরগঞ্জ মিজমিজি ইয়াছিন বাহিনীর ক্যাডার রাসেলের বাড়িতে অভিযান চালায়। ডিবি পুলিশের অভিযানের আগেই রাসেলের বাড়ি থেকে অস্ত্র অন্য জায়গায় সরিয়ে পেলে আনোয়ার । এদিকে ইয়াছিন হাজীর সেনাপতি ক্যাডার বাহিনীর প্রধান আনোয়ার হোসেন আশিক মাদারীপুর গিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ইয়াছিন আরাফাত রাসেল, রোকন মিয়া, লিটন, মনির নামের ৪ ক্যাডারকে ৩৪ ধারায় চালান দিয়ে আদালত থেকে ছাড়িয়ে আনে। কিন্তু হাকিমকে ডিবি পুলিশ মামলা দিয়ে চালান দেয়। ১৫ দিন জেল খেটে জামিন নিয়ে আবার সিদ্ধিরগঞ্জে এসে ইয়াছিন হাজীর ক্যাডার বাহিনীতে যোগদেয়। এবং ১১এপ্রিল সাহেব পাড়া ব্যবসায়ী হুমায়নের বাড়িতে চাঁদার দাবিতে হামলা করে। এছাড়াও গত ১ মে সন্ধ্যায় হাকিম চক্রের শাহরিয়ার রহমান রাব্বিকে পুলিশ ৫‘শ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গ্রেফতার করে।হাকিমের কর্মচারী জনি ওই ইয়াবাগুলো রাব্বিকে দিয়েছিল বলে জানা গেছে। অপরদিকে একই রাত ৭ টায় এসআই আবুল কালাম আজাদ মিজমিজি ধনুহাজী রোড এলাকা থেকে হাকিমের কর্মচারী ইয়াবা সরবরাহকারী জনিকে একটি চুরির মামলায় গ্রেফতার করেছে। জনি ওই এলাকার কালু মিয়ার ছেলে। হাকিমের এক ভাই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, চাঁদাবাজি ও অস্ত্রবাজি করার কারনে মাদারীপুর জেলা পুলিশের সাথে ক্রসফায়ারে মারা যায়। এ ঘটনার পর থেকে হাকিম পালিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জে এসে মৌচাক এলাকার একটি মটরসাইকেল গ্যারেজ দিয়ে ধনুহাজী রোডের আক্তার ফার্নিচারের মালিক শীর্ষ মাদকের ডিলার আক্তারের সাথে সিন্ডিকেট করে মাদক পাচার ও ছিনতাইকারী বাহিনী গড়ে তুলে। সে ব্যবসার অন্তরালে অপরাধ কর্মকান্ড পরিচালনা করতো বীরদর্পে। পরে আনোয়ার হোসেন আশিকের সাথে পরিচয় হয়ে হাজী ইয়াছিন মিয়ার ক্যাডার বাহিনীতে যোগ দেয় এবং অস্ত্র ভান্ডারের নিয়ন্ত্রণকারী হয়ে যায়।