নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন নিয়ে সবর রাজনৈতিক অঙ্গন

84

মো. আব্দুর রহিম :   নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি ক্রমন্বয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি কিংবা জামাত সব দলেই চলছে এই নির্বাচন নিয়ে চলছে আলোচনা-পর্যালোচনা। রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে কর্মীদের মধ্যেও এ নিয়ে আলোচনার যেন কমতি নেই। আলোচনা থেকে দূরে সরে নেই সাধারন মানুষও। প্রায় ৫ বছর আগে নারায়ণগঞ্জ সিটি কনরপোরেশনের প্রথম নির্বানে যে পরিমান আলোচনা হয়েছে, এবারের আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে তারে চেয়ে কয়েকগুন বেশী আলোচনা হচ্ছে। তবে এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। বিগত নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচনের আগের রাতে মাঠ ত্যাগ কলেও এবারের নির্বাচনে মাঠ ছাড়ার ইচ্ছে নেই বিএনপির। এছাড়া এবারের নির্বাচনে সাংসদ শামীম ওসমানও প্রার্থী হচ্ছে না। তবে তিনি প্রার্থী না হলেও নির্বাচনে প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করাবেন বলে একাধিকবার জানিয়েছেন। অন্যদিকে এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নিয়ে অংশ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বর্তমান মেয়র আইভী। তবে এবারের ভোটের হিসেবে ভিন্ন হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষক মহল।

সূত্রমতে, যে পুরনো শহরটি নিজের ঐতিহ্যের বাইরে গিয়ে মাঝে মাঝেই সহিংস রাজনীতি, হত্যা-গুম-আর-খুনের কারণে সারাদেশের ঘুম হারাম করে দেয় তার নাম নারায়নগঞ্জ। প্রায় পাঁচ বছর আগে সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতির ঘরে-বাইরে যে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিলো সেটা আজও মনে আছে অনেকের। সেই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন এখনো দূরে থাকলেও রাজনীতির ছকে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন শামীম ওসমান এবং সেলিনা হায়াত আইভি। আগেরবার দলের সমর্থন ছাড়াই নির্বাচিত হলেও মেয়র আইভি এবার নৌকা প্রতীক নিয়েই নির্বাচনী লড়াইয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছেন। আর নিজে প্রার্থী না হলেও আইভিকে নৌকা পেতে দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিছেন সাংসদ শামীম ওসমান। তবে কে হবে সাংসদ শামীম ওসমানের সমর্থিত প্রার্থী এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। তবে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের নামই সবচেয়ে বেশী শোনা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ ক্লিন ইমেজের প্রার্থী খুঁজছে। সে ক্ষেত্রে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের নামই রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশী শোনা যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে যখন সাংসদ শামীম ওসমান ও মেয়র আইভীর মধ্যে প্রকাশ্যে দন্ধ শুরু হয়েছে, তখন বিএনপির এর সুফল ঘরে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিএনপি বিগত দিনের ভুল করতে চাচ্ছে না। তাই ক্ষমতাসীনদের দন্ধকে পুঁজি করেই এবারের নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। তবে বিএনপি সমর্থন কে পায় এ নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। দলের মধ্যে গুঞ্জন চলছে তৈমুর আলম খন্দকার ও সাবেক সাংসদ আবুল কালামকে নিয়ে। আলোচনা উঠে এসেছে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় আইনজীবী নেতা এড. শাখাওয়াত হোসেনও। তবে বিএনপির প্রার্থী কে হচ্ছে এ জন্য বিএনপির চেয়ারপারর্সন বেগম খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীকে।

নির্বাচন নিয়ে শামীম ওসমানের অভিমত, তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার কারণে সিটি নির্বাচন করবেন না, তবে নৌকা প্রতীক আইভিকেও পেতে দেবেন না। তিনি আরও যোগ করেন,‘সেলিনা হায়াত আইভি দলের থেকে নমিনেশন চাইবেন বলে আমার মনে হয়না। নৌকা প্রতীক নিয়েই এবারের নির্বাচন করবেন মেয়র আইভী। এ ব্যাপারে তিনি তার সিদ্ধান্ত অটঁল রয়েছেন। নিজের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রায় ৭০ ভাগ কাজ করেছেন জানিয়ে আইভি বললেন, নৌকা প্রতীক নিয়েই তিনি নির্বাচনী মাঠে থাকবেন। যেহেতু এখন নৌকা এবং ধানের শীষের খেলা হবে অবশ্যই দলের মতামত থাকবে, দলের কর্মীদের মতামত থাকবে। তবে নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে চমক থাকবে বলে ভিন্ন ভিন্ন সূত্রে জানাগেছে। তবে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরুর দিকে জাতীয় পার্টি থেকে প্রার্থীতা দেয়া নিয়ে জাপা নেতাদের চাপ থাকতে পারে বলেও বোদ্ধা মহলের ধারনা।