ফতুল্লা দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে ৫০ সন্ত্রাসী !

234

বিভিন্ন কারনে অনেকে ছিটকে পড়লেও ফতুল্লায় থেমে নেই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। এলাকায় প্রভাব ও বিভিন্ন সেক্টর দখলে রাখতে ওরা ছুটছে বেপরোয়া গতিতে। মাঝে মধ্যে প্রশাসন নড়ে বসলেও তা গায়েই মাখে না চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় নির্বিগ্নে নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে ক্যাডাররা।
সমাজ বিশ্লেষকদের মতে, অপরাধ করেও পার পেয়ে যাওয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠছে সন্ত্রাসীরা। অন্য জেলার থানার সাথে সংযোগ থাকায় বহিরাগত সন্ত্রাসীরাও এখানে এসে আশ্রয় নেয়।
গত বছরের শেষ দিকে পাগলায় মাদক বিক্রেতা বিল্লাল হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করে মোক্তার ওরফে কিলার মোক্তার। ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে ডিবি পুলিশের সাথে বন্ধুক যুদ্ধে সহযোগীসহ নিহত হলেও তার বাহিনীর অন্য সদস্যরা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি পশ্চিম মাসদাইরের সৈনিকলীগ নেতা মোকলেছকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা একই এলাকার কথিত যুবলীগ নেতারা। এ ঘটনায় সিআইডি ১০জনকে দায়ী করে অভিযোগপত্র দেয়।
এরা হলো মিজান ওরফে বড় মিজান, জামান, জসীম, তুহিন, জুয়েল প্রধান, হাসেম, গাফফার, মন্টু , দেলু ও মাসুদ ওরফে মাসুম।
প্রধান আসামীসহ অধিকাংশ এখনো জামিনে থেকে নানা অপকর্ম করছে। এই দশজনের সবাই মাদক সেবন করে, কেউ কেউ মাদক বিক্রি করে।
কবরীর আমলে ফতুল্লায় সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা শ্যুাটার সোহেল খুন হয় দলীয় আধিপত্যের কোন্দলে। এ মামলার আসামী কেউ কায়দা করে চার্জসিট থেকে রেহাই পেয়েছে। আবার কারো নাম থাকলেও তারা বীরদর্পে এলাকা চষে বেড়াচ্ছে।

বিশ্লেষকদের অনেকের মতে, খুন করার পর ছাড় পেয়ে গেলে অপরাধী আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। যা আমাদের সমাজে অহরহ ঘটছে। সমাজ থেকে অপরাধ প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে আনতে সকল অপরাধীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি কার্যকর করতে হবে। যাতে তারা পূনরায় অপরাধ কর্মকান্ডে জড়াতে সাহস না পায়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ‘৯৬ আমলে ফতুল্লায় প্রকাশ্যে গোলাগুলি করতো সৈয়দ মাসুদ ওরফে টুন্ডা মাসুদ। এখন টুন্ডা সে ছ্যাচড়া, চেয়ে চিন্তে খায়।
অন্যদিকে একসময়ের যুবদল ক্যাডার পিস্তল মিঠু খ্যাত তুষার আহমেদ মিঠু এখন লেবাস পাল্টে একটি স্কুল কমিটির সাথে জড়িত রয়েছে। তবে এখনো ফতুল্লা দাবড়ে বেড়ায় অনেক ভয়ংকর সন্ত্রাসী।
এ ছাড়াও ভূমি দস্যুতা, তেল চোর, ডাকাতি, ছিনতাই, ভাড়াটে খুনী ও মাদক বিক্রেতাদের অভয়স্থলে পরিণত হয়েছে ফতুল্লা।
এদের মধ্যে ফতুল্লার ফরহাদ, বাঘা আরিফ, পোস্টঅফিস সরদার পাড়া এলাকার ইয়াছিন, যুবদল ক্যাডার মুসলিম, দাপা এলাকার ডাকাত সেন্টু কাজী, জাকির, ডাকাত শহীদ, সেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি লিটনের ভাই মাসুম, রেলস্টেশন ব্যাংক কলোনী এলাকার পলাতক খেলাফত, ফেলা, বর্তমানে জেলে থাকা দিন ইসলাম ও লিপু, মাথা ফাটা জসীম, আলীগঞ্জের ডাকাত ফারুক, কিলার মতি, ইবু, পাগলা শাহী মহল্লার মীর হোসেন মীরু, ভাগনে শাকিল, লাঁলখার ডাকাত রতন, সাহাবুদ্দিন, তল্লা এলাকার আলী (মাস্টার দেলুর ভায়রা ), উত্তর মাসদাইর গাবতলীর নাডা শাহিন, রফিক, মাসদাইর এলাকার আব্দুল, আলী, স্বপন, ছোট মিজান, জহির, নাডা ফারুক, নাদিম, পশ্চিম দেওভোগের পোড়া মামুন, শাসনগাঁওয়ের ফেন্সী রাসেল, মিন্টু, রুবেল, এনায়েতনগরের রহমান, সুমন, কাশিপুরের ইকবাল শেখ, খোকা মেম্বার, নরসিংপুরের গেসু হাজী, তার ছেলে শামীম ও ইয়াবা জামান, আরিফ, আওলাদ, মাসুদ, ভোলাইলের সুরুজ মিয়া ও সুমন সহ তাদের সহযোগিরা স্ব স্ব এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অনেকের নামে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। কেউ কেউ নানা লেবাস ধরে সমাজে ভদ্রলোকের মুখোশ পড়ে আছে। আর এই মুখোশধারীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে আরো বড় লেবাসধারীরা। যাদের মধ্যে রাজনৈতিক দলের প্রভাশালী নেতা, ব্যবসায়ী নেতা, শ্রমিক নেতাও রয়েছে।
তবে প্রশাসনের কতিপয় সদস্যরাও সন্ত্রাসীদের সাথে আতাঁত করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে থানা কমিউনিটি পুলিশিং সমন্বয় কমিটির এক শীর্ষ নেতা নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, ফতুল্লা থানায় প্রতি রোজায় ইফতার পার্টির আয়োজনে নিমন্ত্রণ পায় তেল চোর ও সন্ত্রাসীরা। তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হয় বলে ক্ষুব্দ কন্ঠে জানান তিনি। সময় নারায়ণগঞ্জ