সোনারগাঁয় বৃদ্ধাকে ঘর ও আসবাবপত্র কিনে দিলেন এএসআই আজাদ

78

সোনারগাঁ প্রতিনিধি
সোনারগাঁয়ের সনমান্দী পূর্বপাড়া গ্রামে রুপবাহার (৭৫) নামে এক সহায়-সম্বল ও আত্মীয়স্বজনহীন বৃদ্ধাকে নিজ জিম্মায় সুচিকিৎসার পর পুলিশের ভবিষ্যত তহবিল (জিপিএফ) ফান্ডের জমানো টাকা উত্তোলণ করে একটি আধুনিক পরিবেশ বান্ধব ঘর ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র কিনে দিয়েছেন থানার আলোচিত এএসআই আবুল কালাম আজাদ। তার এই মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারণ।
গতকাল শনিবার উপজেলার সনমান্দী পূর্বপাড়া গ্রামে সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, গত ২৭ জানুয়ারি সোনারগাঁ থানার এএসআই আবুল কালাম আজাদ ওই এলাকার একটি মসজিদে মুসল্লীদের সঙ্গে জঙ্গী ও মাদক বিরোধী আলোচনা করতে আসেন। এ সময় তিনি জানতে পারেন ওখানে রুপবাহার (৭৫) নামে এক বৃদ্ধা রোগে শোকে আক্রান্ত হয়ে একটি ছোট্ট ডেরা ঘরে মানববেতর জীবনযাপন করছেন। বৃদ্ধার কোন আত্মীয়স্বজন না থাকায় তিনি অনেকটা যেন মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন। এ সময় এএসআই আবুল কালাম আজাদ এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে বৃদ্ধার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। তাকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন এবং পরে নিজ খরচে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করান।
এদিকে সম্প্রতি এএসআই আজাদ নিজের ভবিষ্যত তহবিল (জিপিএফ) ফান্ডের জমানো টাকা উত্তোলণ করে বৃদ্ধার সেই ছোট্ট ডেরা ঘরের স্থলে একটি আধুনিক পরিবেশ বান্ধব ঘর নির্মাণ করেছেন এবং এতে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রও কিনে দিয়েছেন। তাছাড়া ঘরের সামনে একটি ফুলের বাগান তৈরী করা হয়েছে। রোববার (৫ মার্চ) বিকেলে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে ঘরটি বৃদ্ধা রুপবাহারকে বুঝিয়ে দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
নানা ধরণের বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে সোনারগাঁ উপজেলাসহ সারাদেশে পুলিশের উপর জনগণের যে বিরুপ ধারণা রয়েছে, এএসআই আবুল কালাম আজাদ তা বদলে দিয়েছেন বলে সনমান্দী পূর্বপাড়া গ্রামবাসীর ধারণা। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোমেন জানান, যে কাজটি জনপ্রতিনিধিদের করা উচিৎ ছিলো এএসআই আবুল কালাম আজাদ তা করে দেখিয়েছেন। তিনি ইতিপূর্বে মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় ময়লার স্তুপ থেকে হাত-পা ভাঙ্গা অবস্থায় উদ্ধারকৃত এক মানসিক ভারসাম্যহীন বৃদ্ধাকে সুচিকিৎসার পর আত্মীয়স্বজনদের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন। তার এসব কর্মকান্ডে সারাদেশে পুলিশ সম্পর্কে মানুষের ধারণা পরিবর্তন হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
এ প্রসঙ্গে এএসআই আবুল কালাম আজাদ জানান, পুলিশ মানুষের সেবক। আমি এই নীতিকে বিশ্বাস করি। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দ অনুভব করি। মানুষের দোয়া ও ভালোবাসা আমাকে এই কাজে উৎসাহিত করে।