কুতুবপুরে আওয়ামী লীগের নেতাদের গোমর ফাঁস- কি বলবেন শামীম ওসমান?

357

নিউজ ডেস্ক: ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম ইসহাকসহ তার ছোট ভাই দেলোয়ার ও ইলিয়াসের নেতৃত্ব কুতুবপুরের বিভিন্ন এলাকায় ফেনসিডিল, গাঁজা, ইয়াবা, হিরোইনসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের ব্যবসা পরিচালনা হয়ে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কুতুবপুরের বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শতাধিক সেলসম্যানের মাধ্যমে কয়েক লক্ষাধিক টাকার মাদকের খুচরা ও পাইকারী ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন তারা। এমনকি দলের নাম ব্যবহার করে কুতুবপুর এলাকায় অবস্থিত কয়েকটি স্পট থেকে প্রতিদিন অর্ধলক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলেও উঠেছে অভিযোগ। অথচ দীর্ঘদীন ধরে ফতুল্লার ক্রাইমজোন এলাকা হিসেবে পরিচিত কুতুবপুরে দীর্ঘদীন ধরে প্রকাশ্যে ও গোপঁনে মাদকের ব্যবসা চালিয়ে আসলেও অধরা রয়ে গেছে আওয়ামীলীগ নেতা এইচ এম ইসহাকসহ তার ছোট ভাই দেলোয়ার ও ইলিয়াস। এদিকে দীর্ঘদীন ধরে মাদক ব্যবসা বাধাহীন ভাবে ইসহাকসহ তার ছোট ভাই দেলোয়ার এবং ইলিয়াসকে স্থাণীয় প্রশাসন গ্রেফতার করতে না পারার পেছনে দলীয় প্রভাবকে দায়ী করছে কুতুবপুরের আওয়ামীলীগের তৃনমূল নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে সাধারন জনতা। এছাড়াও আওয়ামীলীগ নেতা এইচ এম ইসহাকের পক্ষে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দের আর্শিবাদ থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। কুতুবপুরবাসী মনে করেন, স্থাণীয় যুব সমাজকে মাদকের ভয়াল থেকে মুক্ত রাখার জন্য স্থাণীয় সাংসদ একেএম শামীম ওসমানের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। অণ্যথায় স্থাণীয় সাংসদ শামীম ওসমানের মাদকের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষনা করা কতটুকু সফলতার মুখ দেখবে না বলেও তারা মনে করেন।

স্থাণীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ এবং সাধারন মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম ইসহাক সরকারী চাকুরিজীবি। ফতুল্লার কুতুবপুর পাগলা ভাবীবাজার এলাকায় তার বসবাস। একই এলাকায় বসবাস করেন তার ছোট ভাই দেলোয়ার এবং ইলিয়াস। আওয়ামীলীগ নেতা ইসহাক সরকারী চাকুরিজীবির অন্তরালে কুতবপুরের বিভিন্ন এলাকায় মাদকের ব্যবসার সাথে জড়িত। ইসহাকের সহযোগী হিসেবে তার ছোট ভাই দেলোয়ার এবং ইলিয়াসের মাধ্যমে কুতুবপুরের বিভিন্ন এলাকায় মাদকের বন্টন করা হয়ে থাকে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় অনেকটা নির্বিঘেœ মাদক বেচাকেনা হয়ে থাকে প্রকাশ্যে। আওয়ামীলীগ নেতা এইচ এম ইসহাক নিজেতো পাইকারী মাদকের ব্যবসা চালিয়ে আসলেও কুতুবপুরের বড় ধরনের কয়েকটি স্পট থেকে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা করে দলের নাম ব্যবহার করে চাঁদা তুলা হচ্ছে। কুতুবপুরের রেললাইন, ইটখোলা, আলীগঞ্জ ব্রীজ, পশ্চিম নন্দালালপুর, মেডিকেল গলিতে অবস্থিত মাদকের বড় স্পটগুলোতে প্রতিদিন অর্ধলক্ষ টাকা করে চাঁদা তুলা হচ্ছে। বিতর্কিত আওয়ামীলীগ নেতা এইচ এম ইসহাকের বিতর্কিত কর্মকান্ডের ফলে দলীয় ভাবমূতি ক্ষুন্ন হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সভা সমাবেশে স্থাণীয় সাংসদ শামীম ওসমানের মাদকের বিরুদ্দে জেহাদ ঘোষনা করা কতটুকু সফলতা পাবে তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। স্থাণীয় কুতুবপুরবাসী মনে করেন, ফতুল্লা থেকে মাদক নির্মূল করতে হলে প্রথমেই দলের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার মাধ্যমেই মাদকমুক্ত সম্ভব হবে ফতুল্লা। অণ্যথায় ফতুল্লা থেকে মাদক নিমূল করা কখনই সম্ভব হবে না।

কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজ্বী জসীম উদ্দিন জানান, ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম ইসহাকসহ তার ছোট ভাই দেলোয়ার এবং ইলিয়াস দীর্ঘদীন ধরে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কয়েক লাখ টাকার পাইকারী ও খুচরা মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছেন তারা।

আওয়ামীলীগ নেতা জসীম উদ্দীন আরো জানান, মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান না নেওয়ার জন্য এইচ এম ইসহাক তাকে মাসিক ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। তিনি ইসহাকের প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে। ইসহাকের একাধিক সেলসম্যানকে মাদকসহ পুলিশে দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ায় জীবনে মেরা ফেলার হুমকিও দিয়েছেন ইসহাক।

ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম ইসহাকের মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কে কি বলল এ বিষয়ে আমার ভাবার সময় নেই। আর আওয়ামীলীগ নেতা জসীম উদ্দীনের এমন অভিযোগে তিনি কোন ধরনের মন্তব করতে রাজী হননি।

ফতুল্লা মডেল থানার ওসি কামাল উদ্দিন জানান, মাদক ব্যবসায়ী কখানো কোন দলের হতে পারে না। একজন মাদক ব্যবসায়ী সমাজ এবং জাতির শত্রু। একজন মাদক ব্যবসায়ী যত বড়ই ক্ষমতাশালী ব্যাক্তি হউক না কেন কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।