আলোচিত ৫ খুন মামলায় মাহফুজের ফাঁসি

41

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ৫ খুন মামলার একমাত্র আসামি ভাগ্নে মাহফুজকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ভাগ্নে মাহফুজকে পাঁচবার ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেয়া হয়েছে তবে একবার ফাঁসি দিলেই এ আদেশ কার্যকর হয়ে যাবে।

সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ বেগম হোসনে আরা আক্তারের আদালত এ আদেশ দেন।
নারায়ণগঞ্জ জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, আলোচিত পাঁচ খুনের মামলায় ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করার বিজ্ঞ আদালত রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন। বিচারক সকল কিছু পর্যোলচনা করে মামলার একমাত্র আসামি মাহফুজের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, রায়ে প্রথমে তাসলিমাকে হত্যার দায়ে মাহফুজের ফাঁসি দেয়া হয়। বাকি চারজনকে হত্যায়ও তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেয়া হয়েছে। উচ্চ আদালতের অনুমতিক্রমে অাসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ঝুলিয়ে রাখার আদেশ দেয়া হয়।

এ রায়ে বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট, যত দ্রুত সম্ভব রায় কার্যকর করতে জোর দাবি জানানো হচ্ছে। তবে আসামি পক্ষের আপিল করার সুযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

নিহত তাসলিমার স্বামী মামলার বাদী শফিকুল ইসলাম জানান, মাহফুজ যেভাবে ৫ জনকে হত্যা করেছে তার জন্য আদালতের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে আদালতের এ রায় দ্রুত কার্যকর করার পরই পুরোপুরি খুশি হতে পারব।

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী রোকনউজ্জামান জানান, আসামির কোনো লোক না থাকায় ন্যায় বিচারের জন্য মাহফুজের পক্ষে আদালতে হাজির হয়েছি। এ রায়ে আসামি ন্যায় বিচার পায়নি। আসামিপক্ষের হয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে এবং আমি বিশ্বাস করি মাহফুজ খালাস পাবে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইল এলাকা থেকে তাসলিমা (৩৫), তার ছেলে শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫), তাসলিমার ছোট ভাই মোরশেদুল (২২) ও তার জা লামিয়ার (২৫) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরদিন ১৭ জানুয়ারি সকালে নিহত তাসলিমার স্বামী শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে তার ভাগ্নে মাহফুজ, ঢাকার কলাবাগানের নাজমা ও শাহজাহানের নাম উল্লেখ করে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।

ওইদিন রাতেই মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরদিন গ্রেফতার করা হয় মাহফুজ ও নাজমাকে। পরে ২১ জানুয়ারি আদালতে মাহফুজের দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি ছিল অনেকটাই গা শিউরে ওঠার মত। মামির সঙ্গে পরকীয়ার জেরে তার সঙ্গে আরও গভীর সম্পর্কে যেতে ব্যর্তোর ক্ষোভ থেকেই একে একে পাঁচজনকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে ভাগ্নে মাহফুজ।