চলতি বছরেই নবীগঞ্জে সেতু নির্মাণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবেন সেতুমন্ত্রী

54

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  নারায়ণগঞ্জ ও বন্দরের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করতে নবীগঞ্জ খেয়াঘাট দিয়ে আরো একটি সেতু নির্মাণের ব্যাপারে চলতি বছরেই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে বলে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে আশ্বস্ত করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অপরদিকে সেতু নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত বন্দর সেন্ট্রাল খেয়াঘাট ও নবীগঞ্জ খেয়াঘাট দিয়ে ফেরী সার্ভিসের মাধ্যমে যানবাহন ও সাধারণ যাত্রীদের নিরাপদে পারাপারের ব্যবস্থা করা হবে জানিয়েছেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহাজাহান খাঁন।
রোববার ২৯ অক্টোবর সকালে ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ের যোগাযোগ মন্ত্রনালয় ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের স্ব স্ব কার্যালয় কক্ষে নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষের চাহিদা ও দাবী নিয়ে মন্ত্রীদের সাথে আলোচনায় নারায়ণঘঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও শাহজাহান খাঁন এ আশ্বাস দেন।
মন্ত্রীদের সাথে আলোচনায় এমপি সেলিম ওসমান তার নির্বাচনী এলাকার আওতাধীন বন্দর থানা এলাকা থেকে প্রতিদিন শহরে আসা লাখো মানুষের নদী পারাপারে দুর্ভোগের কথা তুলে ধরেন। সেই সাথে সাধারণ মানুষের চাহিদার কথা উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে নবীগঞ্জ খেয়াঘাট দিয়ে আরো একটি পূর্ণাঙ্গ সেতু নির্মাণের ব্যাপারে ইতোপূর্বে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তার দেওয়া ডিও লেটারের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে জোর দাবী রাখেন।
পরিপ্রেক্ষিতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের চলতি বছরেই নবীগঞ্জ খেয়াঘাট দিয়ে সেতু নির্মাণের ব্যাপারে তাদের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে এমপি সেলিম ওসমানকে আশ্বস্ত করেন। এছাড়াও আগামী মাসের যে কোন দিন তিনি সরেজমিনে নবীগঞ্জ খেয়াঘাট ও বন্দর সেন্ট্রাল খেয়াঘাট পরিদর্শনে আসার কথা উল্লেখ করেন। একই দিন এমপি সেলিম ওসমানের আমন্ত্রনে বন্দর এলাকায় তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নির্মিত স্কুল গুলোর মধ্য থেকে মুছাপুর ইউনিয়নে শামসুজ্জোহা এমবি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়, মদনপুর ইউনিয়নে নাগিনা জোহা উচ্চ বিদ্যালয় ও ধামগড় ইউনিয়নে শেখ জামাল উচ্চ বিদ্যালয়টি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার ব্যাপারে মত দেন।
অপরিদকে সেলিম ওসমান নবীগঞ্জ খেয়াঘাট দিয়ে সেতু নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত সাধারণ যাত্রীদের নিরাপদে নদী পারাপার নিশ্চিত করতে বন্দর সেন্ট্রাল ও নবীগঞ্জ খেয়াঘাট দুটি দিয়ে অচীরেই ফেরী সার্ভিস চালু করার জন্য নৌ-পরিবহন শাহজাহান খাঁনের কাছে জোর দাবী রাখেন। পরিপ্রেক্ষিতে নৌ-মন্ত্রী নবীগঞ্জ ও বন্দর খেয়াঘাট দিয়ে যত দ্রæত সম্ভব ফেরী সার্ভিস চালু করার ব্যাপারে দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের প্রতিশ্রæতি প্রদান করেন।
এ সময় সেলিম ওসমানের সাথে ছিলেন বিকেএমইএ এর প্রথম সহ-সভাপতি মনসুর আহম্মেদ, দ্বিতীয় সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহ্সান।
শীতলক্ষ্যা নদীতে নবীগঞ্জ দিয়ে আরো একটি সেতুর ব্যাপারে সেলিম ওসমান সাংবাদিকদের বলেন, ইতোমধ্যে আমি সিটি করপোরেশনের মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভীর সাথে আলোচনা করে একমত হয়েছি যে জনগনের সুবিধার্থে এ ব্রিজটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ শহরের ভেতরের অপরিকল্পিতভাবে শিল্প কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠার কারনে নগরীতে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা সেই সকল শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সাথে আলোচনা করবো। আমাদের বন্দরে মদনগঞ্জে শান্তিরচরে অর্থনৈতিক অঞ্চল (প্রস্তাবিত নীটপল্লী) নির্মাণের কাজ দ্রæত এগিয়ে চলেছে। সৈয়দপুর-মদনগঞ্জ দিয়ে শীতলক্ষ্যা সেতু-৩ সম্পন্ন হলে ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, বন্দর ও সোনারগাঁও থানা এলাকা জুড়ে বিশাল শিল্পজোন তৈরি হবে যা কিনা সরাসরি চট্রগ্রামের সাথে সম্পৃক্ত হবে। শীতলক্ষ্যা সেতু-৩ একদিকে যেমন ঢাকার উপর চাপ কমাবে তেমনি নারায়ণগঞ্জের যানজট অনেকাংশে কমে যাবে বলে আমি মনে করি। নীটপল্লীর কাজ দ্রæত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বন্দর ও সোনারগাঁও এলাকায় অনেক অনাবাদী জমি অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে সেই গুলোতে পরিকল্পিতভাবে শিল্পায়ন করা হবে এবং সেটা ব্যক্তি উদ্যোগেও সম্ভব বলে আমি মনে করি। আর এসব কিছু বাস্তবায়নে সব থেকে বেশি প্রয়োজন নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ সহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দদের সহযোগীতা। সকলের আন্তরিক সহযোগীতা আগামী ১ বছরের মধ্যে নারায়ণগঞ্জকে একটি পরিকল্পিত নগরী গড়ে তোলা সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি। এর মধ্য দিয়েই প্রাচ্যেরডান্ডি নারায়ণগঞ্জ নগরী পুনরুজ্জীবিত হবে।