ফতুল্লার বক্তাবলীর শীর্ষ ৩ মাদক ব্যবসায়ী

1152

ডেস্ক নিউজঃ মাদকের কড়াল গ্রাসে আক্রান্ত ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডের অলিগলি। দিন দিন মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কিশোর, যুবক সহ সর্বপেশার মানুষ। মাদক বিক্রেতাদের নির্মূল করার কথা যে আইন শৃংখলা বাহিনী তাদেরই কিছু অপদার্থ পুলিশ মাদক বিক্রেতাদের সোর্স বানিয়ে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করাসহ ব্যাপক হারে মাদক বিক্রি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে এলাকাবাসী।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বক্তাবলী মাদক নির্মূল কমিটির শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতার আত্মীয় স্বজনরা মাদক বিক্রেতাদের কাছ থেকে মাসোহারা নিয়ে মাদক বিক্রি করতে সহযোগিতা করছে।

এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, বক্তাবলীতে মাদক বিক্রেতারা এতই সুসংগঠিত যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ভোটের কথা বিবেচনা করে মাদক নির্মূলে কঠোর ভুমিকা নেয়া হতে বিরত থাকেন। কেননা মাদক বিক্রেতারা প্রভাবশালী ও প্রতিজনের বংশে রয়েছে উল্লেখযোগ্য ভোট। এ জন্য তারা মাদক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ব্যবস্থা নেয়া হতে নীরব ভুমিকা পালন করে থাকে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমানে পুরো বক্তাবলী ৫০ জন মাদক সম্রাট ও প্রায় শতাধিক সহযোগীর নিয়ন্ত্রনে ইয়াবা, গাজা, ফেন্সিডিল কেনা বেচা চলে প্রতিদিন। মাদক বিক্রেতাদের উৎপাতে সাধারন মানুষ অতিষ্ঠ হলেও পুলিশের সহযোগিতায় মাদক ব্যবসা চালাচ্ছে কতিপয় মাদক বিক্রেতারা।

এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, ৫০ মাদক বিক্রেতার গডফাদার হচ্ছে রামনগর গ্রামের মৃত ছাবেদ আলীর পুত্র রহিম বাদশা। যিনি কয়েক মাস আগে পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়েছিল মাদক বিক্রি করবেনা। পুলিশের হাত থেকে হয়রানি যেন না হয় সেজন্য সরকারী দলের একজন অঙ্গ সংগঠনের নেতা দিয়ে নাটক সাজিয়ে ছিল। রহিম বাদশা ডিলার বক্তাবলীর মাদক সম্রাট হিসেবে পরিচিত। আর এই মাদক সম্রাটের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত মধ্যনগরের মৃত সেকান্দারের পুত্র হালিম ও রামনগরের মৃত মিন্নত আলীর পুত্র হবুল।

এর পরই রয়েছে একই এলাকার শরীয়ত উল্লাহ পুত্র জাকির হোসেন,মৃত লাল চানের পুত্র মোঃ হোসেন, মেন্দা জাকিরের পুত্র ওসমান, সাহাবুদ্দিনের পুত্র বাদশা,আব্দুুল আওয়ালের পুত্র জসিম উদ্দিন, আছমতের পুত্র কানা আজিজ, কছিমুদ্দিন কইচ্ছা,লক্ষীনগর গ্রামের মৃত জমশের আলীর পুত্র আছান মিয়া, একই গ্রামের মৃত আব্দু‍ুল মতিন, মৃত ফজল সরদারের পুত্র তৌহিদুল, বাচ্চুর পুত্র রবিউল ও রাসেল, নুরা মিয়া ফকিরের পুত্র মরা মুক্তার,কলিমউল্লাহ’র পুত্র রুবেল, হযরত আলীর পুত্র আলমগীর, আতাউল্লাহর পুত্র ইব্রাহীম, জমশেরের পুত্র মানিক, মুসলিম মিয়ার পুত্র আনোয়ার হোসেন,কানাইনগর গ্রামের হাবিজউদ্দিনের পুত্র শরীফ, একই এলাকার সোনা মিয়ার পুত্র দাদন ওরফে ডিলার দাদন, গংঙ্গানগর গ্রামের রহম আলীর পুত্র হানিফা, একই গ্রামের লালু কসাইয়ের পুত্র স্বপন, শাহজাহানের পুত্র মনির হোসেন,রাজাপুর গ্রামের মালেকের পুত্র অলি, একই এলাকার আহম্মেদের পুত্র মতিন, শাহজাহানের পুত্র ছালাউদ্দিন ছালু,হজিবলের পুত্র শফিক, চর প্রসন্ননগর গ্রামের তাজুল ইসলামের পুত্র রতন, প্রসন্ননগর গ্রামের জয়নাল ফকিরের পুত্র হোসেন ( রহিম বাদশার সহযোগী),মিজান,গোপালনগর গ্রামের মৃত ইলিয়াছের পুত্র মাউচ্ছা জাকির,একই এলাকার মৃত সিরাজ মিয়ার স্ত্রী সেলিনা,মৃত চান মিয়ার পুত্র আব্বাস, মধ্যনগর গ্রামের মৃত করিম মালের পুত্র শহীদ,মৃত মজিবরের পুত্র রফিকুল, চর বয়রাগাদী গ্রামে মৃত মোহর আলীর পুত্র দেলোয়ার হোসেন, মৃত দুখাই মিয়ার পুত্র শহীদ, মধ্যনগর গ্রামের মানিক কসাইয়ের পুত্র আমান ও জামান, মৃত: সেকান্দরের পুত্র হালিম, চর প্রসন্ননগরের মনসুর আলীর পুত্র সফিক, কানাই নগর পশ্চিম এলাকার জামাল, চর বয়রাগাদী এলাকার মৃত আনোয়ার আলীর ছেলে মনজুর, প্রসন্ন নগর গ্রামের আমিন উদ্দিনের পুত্র আব্দুল ও ছমিরনগর গ্রামের বাদশা উল্লেখ যোগ্য। এদের মধ্যে মতিন ও রাসেল ফতুল্লা মডেল থানার এএসআই তাজুল ইসলামের সোর্স হিসেবে কাজ করে। তাজুল ইসলামের নাম ব্যবহার করে রাসেল ও মতিন ইয়াবার ডিলার হলেও তাজুলের শেল্টার পেয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মাদক ব্যবসার পাশাপাশি নিরীহ লোকদের হয়রানি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। উল্লেখিত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা ধরাকে সরাজ্ঞান করে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে বক্তাবলী ইউপি চেয়ারম্যান হাজ্বী শওকত আলী বলেন, আমি মাদকের বিরুদ্ধে সদর উপজেলা আইন শৃংখলার মাসিক সভায় বহুবার বলেছি। কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা তা বোধগম্য নয়। আমি নিজে মাদকের বিরুদ্ধে এলাকার যুব সমাজকে রক্ষা করার দায়িত্ব সবার। এক সময় বক্তাবলী মেধাশূন্য হয়ে পড়বে মাদকের কারনে। ফতুল্লা মডেল থানার এএসআই তাজুল ইসলাম বলেন, আমি খারাপ লোকের সাথে মিশিনা। ওরা কাউকে হয়রানি করেছে এমন প্রমান থানায় দিতে পারলে ব্যবস্থা নিব। এ ব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)শাহ মঞ্জুল কাদের (পিপিএম)বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্সে। আমরা রুটিন মাফিক বক্তাবলীতে অভিযান চালাবো। দেশ উন্নত হচ্ছে যুব সমাজ মাদক সেবন করে ঝিমুবে তা হতে পারেনা।