ওসমান পরিবারের দুই যুবরাজের নাম ভাঙ্গিয়ে সৈয়দপুরে অবৈধ পশুর হাট!

140

ডেস্ক নিউজ: নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের দুই যুবরাজের নাম ভাঙ্গিয়ে নারায়ণগঞ্জ গোগনগর ইউনিয়নের সৈয়দপুর এলাকায় অবৈধ ভাবে গড়ে তোলা কোরবানীর দুটি পশুর হাট উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে সদর উপজেলা প্রশাসন।
রবিবার (১৯ আগষ্ট) বিকেলে পূর্ব সৈয়দপুর মাদ্রাসা সংলগ্ন মাঠে প্রজন্মলীগ নেতা পরিচয়দানকারী মো: দেলোয়ার হোসেনের এবং সৈয়দপুর পাঠান নগর বালুর মাঠে মো: লুৎফর রহমান পাখির পরিচালনাধীন কোরবানীর অবৈধ পশুর হাটে অভিযান চালায় সদর উপজেলা প্রশাসন।
এরপর এখান থেকে হাটের পশু গুলো স্ব উদ্যোগে অন্যত্র সরিয়ে নিতে আয়োজকদের রবিবার একদিনের সময় বেঁধে দেন।
কিন্তু প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার পরেও অবৈধ হাট দু’টিতে পশু বেচাকেনা অব্যাহত রেখেছেন আয়োজকরা।
এদিন সরেজমিন হাট দুটিতে গিয়ে দেখা ও জানাগেছে, প্রশাসনের কোন প্রকারের ইজারা ছাড়াই পাঠান নগর ও সৈয়দপুর মাদ্রাসা মাঠে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা কোরবানীর পশুর হাট দু’টি পরিচালনা ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের জাতীয় পার্টির প্রয়াত এমপি নাসিম ওসমানের পুত্র আজমেরী ওসমান এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামীলীগের এমপি শামীম ওসমানের পুত্র অয়ন ওসমানের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রভাব বিস্তার করছেন অবৈধ ইজারাদাররা।
শীতলক্ষ্যা নদী দিয়ে বেপারীরা গরু নিয়ে অন্যত্র যাওয়ার পথে জোরপূর্বক তাদের এখানে ধরে নিয়ে আসারও অভিযোগ উঠেছে পাঠান নগর হাটের তদারকির দায়িত্বে থাকা স্থানীয় চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী আরমান ও নাদিমের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সদর উপজেলা থেকে এই দু’টি স্থানে কোরবানীর পশুর হাটের কোন ইজারা দেয়া না হলেও আজমেরী ওসমান ও অয়ন ওসমানের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে এখানে হাট গড়ে তুলেছেন দেলোয়ার ও পাখি। হাট দু’টি শীতলক্ষ্যা নদী সংলগ্ন হওয়ায় নৌপথে এখান দিয়ে অন্য হাটে বেপারীরা গরু নিয়ে যেতে চাইলেও জোরপূর্বক ট্রলার আটকে তাদের এই অবৈধ হাটগুলোতে নিয়ে আসা হচ্ছে।
ফলশ্রুতিতে বৈধ হাটগুলোতে গুরুর সংখ্যা কম থাকলেও এই অবৈধ হাট দু’টিতে প্রচুর পরিমানে গরু দেখা গেছে।
সূত্রমতে জানাগেছে, ঈদের আগ পর্যন্ত এই হাট দু’টি পরিচালনায় জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিশেষ ভাবে ম্যানেজের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় এক সাবেক কাউন্সিলর। যার সাথে এই ওসমান পরিবারেরও গভীর সখ্যতা রয়েছে।
কিন্তু একই ইউনিয়নে স্বল্প দূরত্বের মধ্যে দু’টি অবৈধ হাট বেশ দাপটের সাথেই পরিচালিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তৎসংলগ্ন আরো দু’টি বৈধ হাটের ইজারাদাররা। তাদের অভিযোগ, ডিসি ইউএনও কে ম্যানেজ করেই বীরদর্পে অবৈধ হাট পরিচালনার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে আয়োজকরা। আর এই অবৈধ হাটের আয়োজকরা নিজেদের ওসমান পরিবারের দুই যুবরাজের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করায় স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন বলে জানান, সৈয়দপুর কয়লা ঘাট হাটের পরচিালনার দায়িত্বে থাকা এক ব্যাক্তি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসনে আরা বীনা জানান, অবৈধ ভাবে কোরবানী পশুর হাট পরিচালনার অভিযোগে রবিবার দুপুরে সৈয়দপুর পাঠান নগর বালুর মাঠ ও দেলোয়ারের হাটে অভিযান চালিয়েছিল সদর উপজেলা প্রশাসন। এদিন অবৈধ হাট পরিচালনাকারীদের হাট থেকে পশু অন্যত্র সরাতে একদিনের সময় দেয়া হয়েছে। যদি তারপরেও হাটের কার্যক্রম বজায় থাকে তাহলে সেই অবৈধ আয়োজনকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এব্যাপারে জানতে সৈয়দপুর পাঠান নগর বালুর মাঠের অস্থায়ী অবৈধ পশুর হাটের দাবীকৃত ইজারাদার মো: লুৎফর রহমান পাখি ও পূর্ব সৈয়দপুর মাদ্রাসা সংলগ্ন মাঠের হাটের ভূয়া ইজারাদার মো: দেলোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মুঠোফোনে সংযোগ পাওয়া সম্ভব হয়নি।