ফতুল্লার পাগলা বাজার নিউ পপুলারে ভুল চিকিৎসায় প্রসুতি মা ও শিশুর মৃত্যু, ৬জন আটক

114

নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় মা ও শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে শনিবার সকাল ৯টায় ফতুল্লার পাগলা বাজার এলাকায় অবস্থিত নিউ পপুলার হাসপাতালে এঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ছড়িয়ে পরলে বিক্ষুব্ধ জনতা ওই হাসপাতাল ঘিরে রাখে এবং ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ হাসপাতালের চার জন মালিক, একজন ডাক্তার ও নার্সকে আটক করেছে। নিহতের নাম শিল্পী বেগম (৩২)। তিনি ফতুল্লার পূর্ব দেলপাড়া এলাকার রং মিস্ত্রি আলমগীর হোসেনের স্ত্রী।

আটকরা হলেন— হাসপাতালের মালিক ডা. মজিবুর রহমান, মাসুম আহমেদ, আহম্মদ আলী খান, কামরুন্নাহার, মেডিকেল অফিসার ডা. জামিল আহমেদ ও নার্স সুরমা বেগম।

নিহতের স্বামী আলমগীর হোসেন জানান, তার স্ত্রী শিল্পী বেগম ৫ মাসের অন্তঃসত্বা ছিলেন। হঠাৎ অসুস্থবোধ করলে তাকে নিউ পপুলার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তার জেসিকা রিজভী তামান্না পরীক্ষা করে বলেন, গর্ভের বাচ্চা নরমাল আছে তবে পানি ভাঙছে। কয়েকদিন হাসপাতালে ভর্তি রাখতে হবে।

তিনি বলেন, ডাক্তারের পরামর্শে শিল্পীকে বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতালে ভর্তি করি। শুক্রবার দুপুর থেকেই হাসপাতালের লোকজন বলছেন, অপারেশন করতে হবে। তখন আমি জানতে চাই গর্ভের সন্তান নরমাল থাকলে অপারেশন কেন? তারা বললেন রক্ত নিয়ে আসেন দ্রুত। আমি রক্ত আনতে যাই। এরমধ্যে আমার স্ত্রীকে কোনো অনুমতি ছাড়াই অপারেশন করে সন্তান বের করে। এতে সন্তানসহ আমার স্ত্রী মারা যায়।

তিনি বলেন, আমি রক্ত নিয়ে এসে দেখি শিশুটির গলা কাটা আর আমার স্ত্রীর নিথর দেহ বেডে পড়ে আছে। নার্স ও ডাক্তাররা বলছেন, আপনার স্ত্রীকে ঢাকা মেডিকেলে নিতে হবে। তখন তারাই অ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে দেয়। এতে আমার সন্দেহ হয়। এরপর তাদের লোকজনই জানায় সে মারা গেছে। আমি এর বিচার চাই।

হাসপাতাল মালিক কামরুন্নাহার জানান, যখন পেটের পানি ভাঙা শুরু হয়েছে তখনই বলেছি রোগীকে অপারেশন করতে হবে রক্ত সংগ্রহ করেন। কিন্তু রোগীর স্বামী তা যথা সময় করেনি। রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় তাকে অপারেশন করা হয়। অপারেশনের সময় রোগী স্ট্রোক করেন। এরমধ্যেই অপারেশন করে ৫ মাসের শিশুটি পেট থেকে মৃত অবস্থায় বের করা হয়। তখন রোগীটির অবস্থা গুরুতর মনে হলে আমরা তাকে শুক্রবার রাত ১টায় ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করি। আমাদের চিকিৎসায় কোনো ভুল ছিলো না।

ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার এসআই দিদারুল আলম জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। হাসপাতাল কিছুটা ভাঙচুর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।