এম এম হাসান:ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা সংশোধন করতে ৭ দফা দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। সোমবার বেলা সোয়া ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। লিখিত বক্তব্যে এসব দাবি তুলে ধরেন ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আনাম।
মানববন্ধনে অংশ নেন বিভিন্ন পত্রিকায় কর্মরত ১৬ জন সম্পাদক। মাহফুজ আনাম বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি পাস হওয়ার আগ থেকে আমরা এর বিভিন্ন ধারা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। আমরা মনে করি, এই আইনটি স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মুক্ত গণমাধ্যমের পরিপন্থি। আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরোধী নই। কিন্তু বর্তমান এই আইনটি শুধু সাইবার জগতে নয়, স্বাধীন গণমাধ্যমেরও পরিপন্থি। আমরা চাই, আগামী সংসদ অধিবেশনে এই আইনটি সংশোধন করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিত করা হোক।’
দাবি সমূহ হলো- ১. সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ও বাক-স্বাধীনতা সুরক্ষার লক্ষ্যে এ আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা অবশ্যই যথাযথভাবে সংশোধন করতে হবে।
২. এসব সংশোধনী বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে আনতে হবে।
৩. পুলিশ বা কোনো সংস্থার মাধ্যমে কোনো সংবাদ মাধ্যম তল্লাশি চালানোর ক্ষেত্রে তাদেরকে শুধু নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু আটকে দেয়ার অনুমতি দেয়া যাবে, কিন্তু কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থা বন্ধ করার অনুমতি দেয়া যাবে না। তারা তখনই প্রকাশের বিষয়বস্তু আটকাতে পারবে যখন সংশ্লিষ্ট সাংবাদ প্রতিষ্ঠানের সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে কেন ওই বিষয়বস্তু আটকে দেয়া উচিত। সে বিষয়ে যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারবে।
৪. কোনো সংবাদ মাধ্যমের কম্পিউটার ব্যবস্থা আটকে দেয়া বা জব্দ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আদালতের আগাম নির্দেশ নিতে হবে।
৫. সংবাদ মাধ্যমের পেশাজীবীদের সাংবাদিকতার দায়িত্বের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথমেই আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করতে হবে, এবং সংবাদ মাধ্যমের পেশাজীবীদের কোনো অবস্থাতেই পরোয়ানা ছাড়া বা যথাযথ আইনি পক্রিয়া অনুসরণ ছাড়া আটক বা গ্রেফতার করা যাবে না।
৬. সংবাদ মাধ্যমের পেশাজীবীর দ্বারা সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের গ্রহণযোগ্যতা আছে কিনা তার প্রাথমিক তদন্ত প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে করা উচিত। এ লক্ষ্যে যথাযথভাবে প্রেস কাউন্সিলকে শক্তিশালী করতে হবে।
৭. বর্তমান সরকারের পাস করা তথ্য অধিকার আইনকে দ্ব্যর্থহীনভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওপর প্রাধান্য দেয়া উচিত। এ আইনে নাগরিক ও সংবাদ মাধ্যমের জন্য যেসব স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে সেগুলো সুরক্ষা অত্যাবশ্যক।