২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 234

মীর কাসেমের সাথে দেখা করে যা বললেন তার স্ত্রী

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকরের অপেক্ষায় থাকা জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর সঙ্গে দেখা করে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন তারা।

বেরিয়ে এসে মীর কাসেম আলীর স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুন বলেন, মৃত্যু ভয়ে ভীত নন মীর কাসেম আলী।  সন্ধ্যায় কাশিমপুর কারা ফটকে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা উনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসেছি। উনি মৃত্যু ভয়ে ভীত নন।  তিনি বলেছেন, এ মৃত্যু শহীদী মৃত্যু।  যারা তাকে ফাঁসিতে ঝুলাচ্ছে তাদের পরাজয় হবে।  এদেশে একদিন ইসলাম বিজয়ী হবে।

পরে মীর কাসেম আলীর স্বজনরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

এর আগে মীর কাসেমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার পরিবারের ৪৩ সদস্য কারাগারে যান।  চার দফায় ৩৮ জনকে তার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেন কারা কর্তৃপক্ষ।

বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ছয়টি মাইক্রোবাসে করে তারা কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর ফটকে পৌঁছেন।  এর পাঁচ মিনিট পর কারা কর্তৃপক্ষ সবাইকে কারাগারের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেন।

স্বজনদের সঙ্গে মীর কাসেম আলীর স্ত্রী খন্দকার আয়েশা খাতুনও ছিলেন।

সূত্র জানায়, কারাকর্তৃপক্ষ মীর কাসেম আলীর সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের দেখা করার জন্য ডেকে পাঠান।

এর আগে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল ইকবাল করিম কাশিমপুর কারাগারে যান।  সেখানে ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতি বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন।

ফাঁসি কার্যকরের সময়-ক্ষণ এখনো নির্ধারণ হয়নি।  তবে আজই যে ফাঁসি কার্যকর করা হচ্ছে তা অনেকটাই নিশ্চিত।

ফাঁসি কার্যকরের পদক্ষেপ হিসেবে কারা বিধি অনুযায়ী স্থানীয় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জনকে অবহিতকরণে চিঠি পাঠিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।  একই চিঠি পাঠানো হয়েছে মীর কাসেম আলীর গ্রামের বাড়িতেও।

কারাগারে মীর কাসেম আলীর সঙ্গে দেখা করতে বিপুল সংখ্যক স্বজনের উপস্থিতি, ফাঁসির নির্বাহী আদেশ কারাগারে পৌঁছে দেয়া, কড়াকড়ি নিরাপত্তা, পাশাপাশি ফাঁসির মঞ্চে তৃতীয় দফা ও শেষবারের মতো মহড়া সম্পন্ন করা- এসবই জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরের জানান দেয়।

মানবতাবিরোধী মামলায় এর আগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসি কার্যকর করার এ ধরনের প্রস্তুতির বেশ মিল পাওয়া যাচ্ছে।

যুদ্ধাপরাধের মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া আর কোনো আসামির ক্ষেত্রে শেষ পর্যায়ের সাক্ষাতের সময় এত বিপুল সংখ্যক পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের সাক্ষাৎ করতে দেখা যায়নি।  মীর কাসেম আলীর ক্ষেত্রে তা দেখা গেল।

এদিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের আশপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী বসায় কারা কর্তৃপক্ষ ও জেলা পুলিশ।  বিকেলে আরো অতিরিক্ত ৪ প্লাটুন বিজিবি কারাগারের চারপাশে মোতায়েন করা হয়েছে।

কারা সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে কাশিমপুরের দুটি কারাগারের ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।  শেষবারের মত জল্লাদদের মহড়াও সম্পন্ন করা হয়েছে।  যাদের দিয়ে মহড়া সম্পন্ন করা হয়েছে তারা হলেন জল্লাদ দীন ইসলাম, শাহজাহান ও শাহীন।

এ প্রসঙ্গে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক বলেন, সরকারের আদেশ পেলে যেকোনো একটি মঞ্চে মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করার জন্য প্রস্তুত।  এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

আজ রাতেই মীর কাসেম আলীর ফাসি!

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর রায় কার্যকরের নির্বাহী আদেশ গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছেছে।

কারাগারের জেল সুপার নাসির উদ্দিন জানান, শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল ইকবাল করিম রায় কার্যকরের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী আদেশ নিয়ে কারাগারে আসেন।

তবে কখন এই রায় কার্যকর করা হবে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়নি। প্রাণভিক্ষা না চাওয়ায় যেকোনো সময় ফাঁসি কার্যকর হতে পারে মীর কাসেমের।

শনিবার বিকালে কারা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মীর কাসেম আলীর সঙ্গে দেখা করতে গেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। কারাগারে পৌঁছেছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন।

এ ছাড়া ফাঁসির মঞ্চ ও জল্লাদরাও প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

গত ৩০ আগস্ট সকালে মীর কাসেমের পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ।

জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে-নারায়ণগঞ্জে বার্নিকাট

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্টদূত মার্সিয়া বার্নিকাট। আজ (৩ সেপ্টম্বর) সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিটে নগর ভবনে এ সাক্ষাৎ করেন।

সাক্ষাৎ শেষে বের হয়ে সাংবাদিকদের মার্সিয়া বার্নিকাট জানান, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে বাংলাদেশের আইনশৃংখলা বাহিনী যেভাবে কাজ করছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।

এরআগে সকাল ৯টা ২৪ মিনিটে নগর ভবনের সামনে এসে গাড়ী থেকে নামার পর রাষ্ট্রদূতকে ফুলের অভ্যর্থনা জানান সিটি মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভী। এরপর ফুলের পাপড়ী ছিটিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে নগর ভবনে বরণ করে নেন সিটি কর্পোরেশনের নারী কাউন্সিলরসহ সিডিসির নারী কর্মকর্তারা।

জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে, সতর্ক থাকার আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিকাট।

মার্সিয়া বার্নিকাট আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আইভীর সাথে আমার যতবার কথা হয়েছে, ততবারই আমি নারায়ণগঞ্জে আসার পরিকল্পনা করেছিলাম। কেননা, আমি জানি বাংলাদেশের ইতিহাসে নারায়ণগঞ্জ কেমন ভূমিকা রেখেছে, অর্থনীতিতে কেমন ভূমিকা রাখছে। তাই নারায়ণগঞ্জে আসতে আমি উদগ্রীব ছিলাম। আজ আসতে পেরে অনেক ভাল লেগেছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র হাইকমিশনের একটি প্রতিনিধি দল, নাসিক প্যানেল মেয়র-১ হাজী ওবায়েদ উল্লাহ, প্যানেল মেয়র-৩ শারমিন হাবিব বিন্নি, সচিব মাহমুদুল হক, প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ, নগর পরিকল্পনাবিদ মো: মঈনুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার এ সার্কেল মাসুদুর রহমান, ফতুল্লা সার্কেল শরফুদ্দীন, এএসপি (ট্রাফিক) বদরুল আলম মোল্লা, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান প্রমুখ।

প্রায় ঘন্টাব্যাপী মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপচারিতা শেষে সিটি মেয়র আইভী সাংবাদিকদের জানান, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে এটা মূলত সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। নারীদের উন্নয়নে সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে তাকে অবহিত করা হয়েছে।

ফতুল্লায় ২ ‘শ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ৪

ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ পৃথক পৃথক অভিযানে ২ ‌‍‍‍‌‌‘শ পিস ইয়াবাসহ ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে, শাসন গাও এলাকার ১ ‘শ পিস ইয়াবাসহ বিক্রেতা আব্দুর রহমান (৪০) ও সুমন (৩০) এবং আরও ১ ‘শ পিস ইয়াবাসহ শিবু মার্কেট এলাকার বিক্রেতা দিদার হোসেন(২৮)ও রিফাত হোসেন (২৭)কে গ্রেপ্তার করে।পুলিশ জানিয়েছে গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের টাকায় মন্ত্রীর ছেলের নামে হাসপাতাল!

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের টাকায় ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমানের ছেলের নামে হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার সিরতা গ্রামে এই হাসপাতাল নির্মাণের নীতিগত সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে অনুমোদিত হয়েছে।

জাতীয় সংসদ ভবনে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২১তম বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বৈঠক সূত্র জানায়, ধর্মমন্ত্রীর প্রয়াত ছেলে ডা. মো. মুশফিকুর রহমান শুভ মেমোরিয়াল ইসলামিক মিশন হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরস ১৯৭তম সভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আর এই বোর্ড অব গভর্নরসের চেয়ারম্যান পদাধিকার বলে ধর্মমন্ত্রী নিজেই। মন্ত্রীর চাপে বোর্ড এই অনুমোদন দিতে বাধ্য হয় বলে জানা গেছে।

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, কমিটির ১৯তম বৈঠকে কমিটির সদস্য সৈয়দ মুজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বলেন, ধর্ম বিষয়কমন্ত্রীর ছেলে যিনি ২০১১ সালে মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি তার প্রয়াত ছেলের ডা. মো. মুশফিকুর রহমান শুভর নামে মেমোরিয়াল ইসলামিক মিশন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, যা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে করা হচ্ছে। সৈয়দ মুজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী স্থায়ী কমিটিকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রস্তাব করলে সংসদীয় কমিটির সভাপতিসহ উপস্থিত সদস্যবৃন্দ সর্বসম্মতিক্রমে তাতে একমত পোষণ করেন এবং অফিসিয়ালি ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে দিক নির্দেশনামূলক একটি পত্র দেয়ার জন্য অবহিত করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সদস্য বজলুল হক হারুন বলেন, বিষয়টি মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে সংসদীয় কমিটি সিদ্ধান্ত দিয়েছিল। এরপর বোর্ড অব গভর্নরস অনুমোদন দেয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিটির এক সদস্য জানান, সরকারি টাকা ব্যয় করে জাতীয় কোনো নেতার নামে হাসপাতাল করা যায়। কিন্তু এ ধরনের কাজ করা নীতি বিরুদ্ধ। কিন্তু তবুও কেউ কেউ চাপে পড়ে এ ধরনের সিদ্ধান্তে একমত হয়েছে।

এ ব্যাপারে মন্ত্রীর মতামত জানার জন্য তাকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি।(জাস্ট নিউজ)

দুই মন্ত্রী সংবিধান রক্ষার শপথ ভঙ্গ করেছেন : সুপ্রিম কোর্ট

প্রধান বিচারপতি এবং বিচারাধীন বিষয়ে বিরূপ মন্তব্যের মাধ্যমে আদালত অবমাননার দায়ে দুই মন্ত্রীকে করা জরিমানার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার ৫৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন সর্বোচ্চ আদালত।

রায়ে আদালত বলেন, দুই মন্ত্রী সংবিধান রক্ষায় যে শপথ নিয়েছিলেন এর মাধ্যমে তারা আইন লংঘন করেছেন। শপথ ভঙ্গ করেছেন। আদালত বলেন, আমাদের সন্দেহ নেই যে তারা উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে ব্ক্তব্য রেখে সংবিধান রক্ষার শপথ ভঙ্গ করেছেন। এছাড়া রায় প্রদান প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে দুই মন্ত্রী সুপ্রিমকোর্টকে নিয়ে কুৎসা রটিয়েছেন। বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী এ রায় প্রদান করেন। তার সাথে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ অপর চার বিচারপতি একমত পুষণ করেন।

অন্যদিকে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী পৃথকভাবে রায় প্রদান করেন। তিনি তার রায়ে বলেন, কোন মন্ত্রীকে সাজা দেয়া এবং জরিমানার সাথে আমার দ্বিমত নেই। কিন্তু সংবিধান রক্ষায় শপথ ভঙ্গ করেছেন এই অভিমতের সাথে আমি একমত নই। তবে এই রায়ের সাথে অপর দুই বিচারপতি একমত পুষণ করেন।

এর আগে গত ২৭ মার্চ খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছিলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৮ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে সাতদিনের কারাদণ্ডের রায় দেন। রায়ে আদালত বলেন, মন্তব্যের মাধ্যমে আদালত অবমাননা করেছেন দুই মন্ত্রী। তাদেরকে সাতদিনের মধ্যে জরিমানার টাকা ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ও কিডনি ফাউন্ডেশনকে দিতে বলা হয়। পরে জরিমানার টাকা পরিশোধ করেন তারা।

গত ৫ মার্চ একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আলোচনা সভায় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে বাদ দিয়ে মীর কাসেম আলীর আপিল মামলার আপিল শুনানি পুনরায় করার দাবি জানান খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।

এ বক্তব্য মিডিয়ায় প্রকাশের পর গত ৮ মার্চ খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে তলব করেন পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। একইসঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে নোটিশ জারি করেন। সরকারের এ দুই মন্ত্রীকে ১৫ মার্চ সকাল ৯টায় সর্বোচ্চ আদালতে হাজির হয়ে তাদের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। অন্যদিকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয় ১৪ মার্চের মধ্যে। নোটিশে কেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না- তা দুই মন্ত্রীর কাছে জানতে চান আপিল বিভাগ।

সন্ত্রাস,জঙ্গীবাদ কারাও কাম্য হতে পারে না-এনায়েত হোসেন খোরশেদ

বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ সমাজ সেবক নারায়নগঞ্জ জেলা যুবলীগ ও ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগ নেতা ফতুল্লা ইউপি,র সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী  জননেতা এনায়েত হোসেন খোরশেদ বলেন, সন্ত্রাসবাদ,জঙ্গীবাদ কারাও কাম্য হতে পারে না। আওয়ামীলীগের  সভা নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। এসময় জঙ্গীরা দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। জঙ্গীবাদ নিমূলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তিনি আরো বলেন,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। গতকাল বিকাল ৫টায় ফতুল্লা রেলওয়ে স্টেশন মাঠে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ  নিমুল এক আলোচনা সভায় তিনি এই সব কথা বলেন।

বুধবার জামায়াতের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল

মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ডের প্রতিবাদে বুধবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলাম। বুধবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা এই কর্মসূচি চলবে।

মঙ্গলবার বিবৃতিতে একথা জানায় দলটি। বিবৃতিতে বলা হয়, মীর কাসেম আলীর রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগ খারিজ করে দেয়ার প্রতিবাদে এই হরতাল। তবে অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, ফায়ার সার্ভিস, হজযাত্রী পরিবহনে নিয়োজিত গাড়ি, সংবাদপত্রে গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।

মিথ্যা অভিযোগে মীর কাসেমের সাজা : খন্দকার মাহবুব

জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, আপিল বিভাগ মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে সাজা দিয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এর বিচার করবে। মঙ্গলবার মীর কাসেমের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন খন্দকার মাহবুব।

সকাল ৯টা ৪ মিনিটে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তাঁর পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে এ রায় দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ।

বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।

এ রায়ের বিষয়ে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, কিশোর জসিম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জসিম হত্যায় তিনি সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে কোনো প্রমাণ নেই। সাক্ষীরা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাতে মীর কাসেম আলী সরাসরি জড়িত ছিলেন, এ ধরনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

খন্দকার মাহবুব প্রশ্ন করে বলেন, মীর কাসেম একজন সমাজসেবক ছিলেন। তিনি বিভিন্ন হাসপাতাল, ব্যাংক, গণমাধ্যমের প্রতিষ্ঠাতা। পরবর্তী সময়ে যদি দেখা যায়, এ সাজা সঠিক হয়নি, তাহলে কী হবে?

খন্দকার মাহবুব বলেন, সাক্ষীরা জবানবন্দি দেওয়ার পর আদালত অসহায়ভাবে সাক্ষ্য গ্রহণ করে এ রায় দিয়েছেন। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত এ আইন তৈরি করা হয়েছিল ১৯৫ পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর বিচারের জন্য। কিন্তু এ আইনে বাংলাদেশের নাগরিকদের বিচার করা হচ্ছে।

মীর কাসেমের আইনজীবী বলেন, আদালত চত্বরে বিভিন্ন লোক স্লোগান ও ফাঁসির দড়ি নিয়ে হাজির হয়েছে। অথচ বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে একটু ‘টুঁ’ শব্দ হলেও বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর পাঠানো হতো।

মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা চার মিনিটে মীর কাসেমের পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে এ রায় দেন প্রধান  বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ।

বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।

রবিবার এ বিষয়ে শুনানি শেষে রায়ের জন্য এই দিন নির্ধারণ করা হয়। গত ২৪ আগস্ট মামলাটির শুনানি শুরু হয়। ওই দিন মীর কাসেমের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের করা সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি ঘোষণা করেন আদালত।

এর আগে ২৫ জুলাই রিভিউ শুনানির জন্য এক মাস সময় দেওয়া হয় মীর কাসেম আলীকে। তাঁর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন রিভিউ শুনানির জন্য দুই মাসের সময় আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এক মাসের সময় মঞ্জুর করেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সময় আবেদনের বিরোধিতা করেন।

গত ১৯ জুন আপিল বিভাগের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন মীর কাসেম আলী। এতে ১৪টি আইনি যুক্তি তুলে ধরে তাঁকে বেকসুর খালাস দেওয়ার আবেদন জানানো হয়।

জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় গত ৬ জুন প্রকাশ করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোর জসিমসহ ছয়জনকে হত্যার দায়ে গত ৮ মার্চ মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় বহাল রেখে আদেশ দেন আদালত। পরে ৭ জুন তাঁকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়।

মামলার সারসংক্ষেপ
২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের রায়ে মীর কাসেমের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১০টি প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে দুটিতে (১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগ) মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া চারটি অভিযোগে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়।

১১ নম্বর অভিযোগে রয়েছে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ ছয়জনকে আটক, নির্যাতন ও হত্যার বিষয়টি। এ অভিযোগে বিচারকরা সর্বসম্মতিক্রমে মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। ১২ নম্বর অভিযোগে রয়েছে রঞ্জিত দাস ও টুন্টু সেনকে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ। এ অভিযোগে বিচারকদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দেওয়া হয়। ১১ ও ১২ নম্বর ছাড়া বাকি ১২টিই অপহরণের পর আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ মীর কাসেমের বিরুদ্ধে।

প্রমাণিত অভিযোগগুলোর মধ্যে ২ নম্বরটিতে মীর কাসেমকে ২০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। ৩, ৪, ৬, ৭, ৯ ও ১০ নম্বর অভিযোগে তাঁকে সাত বছর করে মোট ৪২ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ১৪ নম্বর অভিযোগে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। এই আটটি অভিযোগে তাঁকে ৭২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। তবে ১, ৫, ৮ ও ১৩ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে এসব থেকে খালাস (অব্যাহতি) দেওয়া হয়।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় মীর কাসেম আলীর পক্ষে আপিল করেন জয়নুল আবেদীন তুহিন। মীর কাসেমের পক্ষে ১৮১টি যুক্তি দেখিয়ে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে এ আপিল করা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতায় ছাত্রসংঘের বাছাই করা সদস্যদের নিয়ে গঠিত সশস্ত্র আলবদর বাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার হিসেবে মীর কাসেম আলী মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটান, তা ট্রাইব্যুনালের রায়ে প্রমাণিত হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় ট্রাইব্যুনালের আদেশে ২০১২ সালের ১৭ জুন মীর কাসেম আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

এর আগে গত ৬ জানুয়ারি জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। এ মামলা এখন পূর্ণাঙ্গ রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে। এটি আপিলের ষষ্ঠ রায়।

এ ছাড়া আপিলে চূড়ান্ত পাঁচটি রায়ের পর চারটিতে জামায়াতের দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

আপিলের আরেক রায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়। রায় রিভিউ চেয়ে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ এরই মধ্যে আবেদন দাখিল করেছে।