২৩শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৮ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 51

সেই ভিক্ষুকের প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী 

নিউজ প্রতিদিন : শেরপুরের ঝিনাইগাতি গ্রামের সেই মানবিক ভিক্ষুক নাজিমুদ্দীনের ভূয়সী প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে রাজশাহী বিভাগের আট জেলার প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, চিকিৎসকসহ অন্যান্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময়কালে তিনি নাজিমুদ্দীনের প্রশংসা করেন।

নাজিমুদ্দিনের প্রসংশা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একজন ভিক্ষুক। সে কষ্ট করে ১০ হাজার টাকা জমা করেছিল। তার গায়ে ছেড়া কাপড়। তারপরও সেই মানুষ জমানো ১০ হাজার টাকা তুলে দিয়েছি করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য। সারা বিশ্বে এটা মহৎ দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন তিনি। এতো বড় মানবিক গুণ অনেক বিত্তশালীদের মধ্যেও দেখা যায়নি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই অবস্থার মধ্যেও শেষ সম্বল সে দান করেছেন। বাংলাদেশের মানুষের মাঝে এটা এখনো আছে। এটা বিত্তশালীদের মাঝেও পাইনা। শেরপুরের ঝিনাইগাতির নাজিমুদ্দীন যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।’

এ সময়, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

করোনার প্রভাবে কেমন আছেন মধ্যবিত্তরা?

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে  সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মহীণ এবং গৃহবন্দী হয়ে পরেছে সাধারণ মানুষ। এতে করে আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে গৃহবন্দী হয়ে পরা মানুষগুলোর। কিন্তু বন্ধ হয়নি তাদের ব্যয়ের পথ।এমনবস্থায় নিন্ম আয়ের মানুষগুলোর হাতে খাবার এবং প্রয়োজনীয় দ্রবাদী  তুলে দিচ্ছেন অনেকই।সরকার এবং বিভিন্ন সংগঠনগুলো নিন্ম আয়ের মানুষদের সহোযোগিতায় হাত বাড়িয়েছে।

তবে মধ্যবিত্ত শ্রেনীর পরিবারগুলোর পাশে কেউ নেই। উচ্চ বিত্তদের টাকার অভাব নেই ফলে তাদের অভাব ও নেই এবং তাদের কোন প্রকার টেনশন নেই। গরীবরা পাচ্ছে সরকারী- বেসরকারী বিভিন্ন সংগঠনের বরাদ্দকৃত ত্রাণ বা উপহার সামগ্রী আর মধ্যবিত্তদের নেই ব্যাংক ব্যালেন্স বা জমানো অর্থ,সাহয্য-সহোযোগিতার হাত বাড়াচ্ছেনা কেউ।ঘরে খাবার না থাকলে ও মধ্যবিত্তরা লজ্জায় কিছু বলতে পারছেনা।

যারা দৈনিক আয়ের উপর নির্ভরশীল ছিলো তারা পরেছেন সবচাইতে বেশী বিপদে।এ রকমই একটি পরিবারের কর্তার সাথে কথা হলে তিনি জানান,নারায়নগঞ্জের কালির বাজারে তার একটি কম্পিউটার দোকান রয়েছে সেখানে প্রতিদিন যা আয় হতো তা দিয়ে বাড়ী ভাড়া দিয়ে পাঁচ সদস্যের সংসার খুব ভালো ভাবেই চলতো। এমনকি গ্রামের বাড়ীতে ও তিনি বাবা- মায়ের জন্য মাসে মাসে টাকা পাঠাতে পারতেন।কিন্তু দেশের এই পরিস্থিতিতে গ্রামের বাড়ীতে টাকা পাঠানোতো দুরের কথা নিজেদেরই এখন না খেয়ে থাকার উপক্রম হয়েছে।তিনি আরো বলেন, কিছু টাকা জমানো ছিলো তাও শেষ হবার পথে অপরদিকে একদিন পরেই রমজান মাসের শুরু।অন্যসব মাসের তুলনায় রমজান মাসে সংসারের খরচটা একটু বেশী।এভাবে চলতে থাকলে করোনায় নয় না খেয়েই মরতে হবে আমাদের।কারন লাজ- লজ্জায় আমরা কারো নিকট সাহয্য চাইতে পারছিনা আবার কেউ সাহায্যের হাত ও বাড়িয়ে দিচ্ছেনা।

সকল কিছুর পরিচয় গোপন রেখে ফতুল্লা থানা এলাকার এক ব্যক্তি জানায়,চার সদস্যের সংসার তার।প্রতি মাসে তার ২৫- ৩০ হাজার টাকা আয় হতো।তা দিয়ে বাড়ী ভাড়া,ছেলে- মেয়েদের স্কুলের খরচ,টিউশন ফি সহ সাংসারিক খরচ করে মোটামোটি বেশ ভালো ভাবেই চলছিলো তাদের সংসার।কিন্তু করোনা তাদের পরিবারের কোনো সদস্যকে আক্রমণ না করলে ও করোনার প্রভাব পরেছে তাদের সংসার জীবনে।প্রায় এক মাসের মতো তার কোনো আয় নেই আছে শুধু ব্যয়।ইতিমধ্যেই ছেলে- মেয়েদের প্রাইভেট শিক্ষকদের পড়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।খুব সমস্যার মধ্যে পরে গেছেন তারা।না পারছেন কারো কাছে কিছু চাইতে। লজ্জায় আত্নীয়- স্বজনদের কাছে ও সাহায্যের কথা বলতে পারছেন না।

অপর এক ব্যক্তি বেশ আক্ষেপ নিয়ে বলেন,বড়োলোকের টাকা আছে,গরীবরা ত্রাণ পাচ্ছে আর মধ্যবিত্তরা না খেয়ে মুখ লুকিয়ে নীরবে চোখের জল ফেলছে।মধ্যবিত্তরা যেনো এ দেশের নাগরীকদের কাতারে পরে না।মধ্যবিত্তরা যদি সরকারের হিসেবের খাতায় থাকতো তাহলে সরকারী ভাবে তালিকা তেরী করে মধ্যবিত্তদের সহোযোগিতা করতো।তিনি আরে বলেন,ভাই আমি একজন বাবা,আমি না না খেয়ে থাকতে পারবো তিন বেলার জায়গায় দু বেলা খাচ্ছি কিন্তু ছেলে মেয়েদের দিকে তাকালে বুক ফেটে চিৎকার আসে।

মধ্যবিত্তদের মধ্যে এমন অনেকে আছে যারা দিন আনে দিন খায়, অথবা যাদের নিজেদের একটা ব্যবসা আছে অথবা চাকরি করে। করোনার এই সংকটের সময়ে তাদের সকল প্রকার আয় বন্ধ। কিন্তু আয় বন্ধ হলে কি হবে, খরচ ঠিকই হচ্ছে তার গতিতে। বাজার খরচ, ওষুধের খরচ, বাসা-ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল, এটা ওটা মিলিয়ে প্রতিনিয়ত খরচ তার গতিতে ঠিকই যাচ্ছে।

এই সময়ে বাংলাদেশের উচ্চবিত্তরা আল্লাহর রহমতে ভালোই আছে, কারণ তাদের কোন অভাব নেই। অন্যদিকে নিম্নবিত্তদের সাহায্য করার জন্য দেশে মানুষ এবং সংস্থারও অভাব নেই। সমস্যা হল এই মধ্যবিত্তদের নিয়ে। এদের সাহায্য করার জন্য কেউ এগিয়ে আসে না, আবার এরাও রাস্তায় দাঁড়িয়ে সাহায্য নিবার পাত্র নয়।

মধ্যবিত্তদের কাছে পেটের ক্ষুধার চেয়ে নিজেদের আত্মসম্মানটাই বড়। এরা না পারে ভিক্ষা করে খেতে আর না পারে অন্যের হক মেরে খেতে। ন্যায়-নীতি, সততা, আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচা এই মধ্যবিত্তরা আজকে ভালো নেই। চিন্তায় এদের এখন মাথায় হাত। না পারছে বলতে, না পারছে সইতে। এমন অবস্থায় কি করবে, কি করা উচিত হবে ভেবে উঠতে পারছেনা এরা।

মাস শেষে এমনিতেই মধ্যবিত্তদের হাতে টাকা পয়সা থাকে না আর লক ডাউনের এই সময়ে আরো বাজে পরিস্থিতিতে আছে তারা। কিছু দিন পরই তাদের ঘরের খাবার শেষ হয়ে যাবে হয়তোবা কারোর শেষও। কিন্তু তাতে কি, এরা তো হাত পাতারও মানুষ না। আরো কিছু দিন ডাল-ভাত খেয়ে বাঁচবে তবুও কারোর কাছে হাত পাতবে না। কিন্তু তারপর! তারপর আর কি, আল্লাহ ভালো জানেন।

এই মধ্যবিত্তরা চাইলেও ১/২ মাস উপার্জন না করে চলতে পারবেনা। আবার নিম্নবিত্ত বা গরীবদের মত অন্যের কাছে হাতও পাততে জানেনা। পারেনা লাইনে দাড়িয়ে কিছু আনতে। এই শ্রেণীটার লজ্জাবোধ সবসময়ই বেশি। নৈতিক মূলবোধ, আদর্শ কিংবা সামাজিক কারনে সবসময়ই নিজেদের গুটিয়ে রাখে এরা।

দেশের প্রধানমন্ত্রী আমাদের গরীব অসহায় এবং বড়লোক সহ গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্যও প্রণোদনা ঘোষনা করেছেন। এসব উদ্যোগ অব্যশই প্রশংসনীয় বটে। কিন্তু মধ্যবিত্তরা?  এখানে ও তাদের কে করা হয়েছে বঞ্চিত।

নারায়ণগঞ্জ জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকায় হতাশ প্রধানমন্ত্রী ও না’গঞ্জবাসী

নিউজ প্রতিদিন: নারায়ণগঞ্জের জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকায় হতাশ প্রধানমন্ত্রী ও নারায়ণগঞ্জ জেলাবাসী। চলমান করোনা সঙ্কটে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সে জেলার একজন মাত্র সাংসদ উপস্থিত ছিলেন। জেলার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার মতো কেউ ছিলেন না। উপস্থিত সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীকে ইতোমধ্যে নেয়া পদক্ষেপের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে প্রশংসাসূচক দু’চারটি কথা বলেন।

ক্রমশ অবনতির দিকে যাওয়া করোনা পরিস্থিতিতে এ জেলায় করোনা টেস্ট ল্যাব করার কথা জনপ্রতিনিধিরা দাবি করলেও বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সে তা মূলতঃ রাজনৈতিক বক্তব্য তা স্পষ্ট হয়েছে। উপরন্তু নারায়ণগঞ্জের মতো একটি জেলায় পূর্ণাঙ্গ ল্যাব না থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। নারায়ণগঞ্জে যাতে দ্রুত পরীক্ষা যেতে পারে সেইজন্য ল্যাব স্থাপনের নির্দেশ দেন প্রধাণমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা আসাটা তো এখন আরও কাছাকাছি হয়ে গেছে। যত দ্রুত এসে সাথে সাথে কাজ করা যায় সেজন্য কিছু লোককে দায়িত্ব দিয়ে দেন যাতে নারায়ণগঞ্জেরটা আগে করে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নের জবাবে নারায়ণগঞ্জে পরীক্ষাগার স্থাপনের মতো উপযোগী কোন প্রতিষ্ঠান এখানে নেই বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

পরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জে যাতে দ্রুত পরীক্ষা যেতে পারে সে ব্যবস্থাটা অন্তত নেন। নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা আসাটা তো এখন আরও কাছাকাছি হয়ে গেছে। যত দ্রুত এসে সাথে সাথে কাজ করা যায় সেজন্য কিছু লোককে দায়িত্ব দিয়ে দেন যাতে নারায়ণগঞ্জেরটা আগে করে দেওয়া হয়।

স্থানীয়দের দাবি, নারায়ণগঞ্জের সবকজন সাংসদ ও মেয়র যদি কনফারেন্সে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোরালো আবেদন জানাতেন তবে একটি পূর্ণাঙ্গ করোনা টেস্ট ল্যাব পেতে পারতো জেলাবাসী। সেই সাথে এ জেলার করোনায় উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্যান্য পদক্ষেপে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি নির্দেশনা ও সহায়তা পাওয়া যেত। নারায়ণগঞ্জে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির প্রতিনিধি ডা. জাহিদুল ইসলাম। এ সময়ের মধ্যে জেলায় তিনজন মারা গেছেন বলেও জানান তিনি। জেলায় এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত রোগী ২৬৪ জন। তাদের মধ্যে মোট মৃত্যু হলো ১৬ জনের এবং সুস্থ হয়েছেন ছয়জন।

ফতুল্লা থানা মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব রাসেল প্রধাণের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

নিউজ প্রতিদিন: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মিলন মেহেদীর পক্ষ থেকে ফতুল্লা থানা মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব মো.রাসেল প্রধাণের উদ্যোগে প্রাণঘাতী নোবেল করোনা-ভাইরাস কোভিড-১৯ এর কারনে সৃষ্ট অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিত‍্য প্রয়োজনীয় খাদ‍্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

মানুষের পাশে আছি, মানুষের পাশে থাকবো ‘এই স্লোগানকে সামনে রেখে রবিবার (১২ মার্চ) বাদ মাগরিব বক্তাবলী রাসেল প্রধাণের বাসভবনে বেকার, দিনমজুর, হতদরিদ্র ও অসহায় ১০০ পরিবারের মাঝে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে এবং একে অন‍্যের সহযোগিতায় পাশে থাকতে হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিরোধে সামাজিক দুরত্ব বজা রাখা, ঘনঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া,যেখানে সেখানে থু থু বা কফ না ফেলা, হাত দিয়ে নাক- মুখ–চোখ স্পর্শ না করা ও বেশি বেশি পানি পান করার আহ্বান জানান মো.রাসেল প্রধাণ।

এছাড়াও বিদেশ ফেরত প্রবাসী ও করোনা আক্রান্ত ব‍্যক্তির সংস্পর্শে থাকা ব‍্যাক্তিবর্গকে কোয়ারান্টাইন অথবা নিজ ঘরে আলাদা থাকারও অনুরোধ জানান তিনি।

রাসেল প্রধাণ আরো বলেন, আপনি সচেতন হউন, WHO ও সরকারি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মোতাবেক জীবনযাপনে অভ‍‍্যস্ত হোন। অযথা কেউ বাইরে যাবেন না এবং আশে পাশের সবাইকে সচেতন হতে সহায়তা করুন। আমরা এই দূর্যোগে আপনাদের পাশে রয়েছি।

সারাদেশে ৯ দিনে ২২৬৪ বস্তা ত্রাণের চাল চুরি

নিউজ প্রতিদিন : করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি না করার প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকলেও থেমে নেই ত্রাণের চাল চুরি। চাল চুরির ঘটনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাই বেশি জড়িত বলে অভিযোগ আছে। তাদের অনেকের বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে, অনেকেই আছেন পলাতক।

সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সারাদেশে ৯ দিনে অন্তত ২২৬৪ বস্তা সরকারি ত্রাণের চাল চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩০ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত ৯ দিনের ব্যবধানে এই চাল চুরির ঘটনাগুলো ঘটে।

স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে এখন পর্যন্ত, পাথরঘাটা উপজেলায় ৫৫০ বস্তা, বগুড়ায় ১০০ বস্তা, নাটোরে ১৩ বস্তা, জয়পুরহাটে ৭ বস্তা, যশোর ৮০ বস্তা, যশোরের মণিরামপুরে ৫৫৫ বস্তা, ঝিকরগাছায় ১ বস্তা, নওগাঁয় ৩৩৮ বস্তা, বাগেরহাটে ১৮ বস্তা, পটুয়াখালিতে ১০ বস্তা, ঝালকাঠিতে ৫০ বস্তা, সিলেটে ১২৫ বস্তা, ময়মনসিংহের ত্রিশালে ১৬ বস্তা, সারিয়াকান্দি উপজেলায় ২৮৮ বস্তা , গাবতলী উপজেলায় ১০০ বস্তা , বগুড়ার শিবগঞ্জ ১৩ বস্তা চাল চুরির তথ্য পাওয়া গেছে।

৩০ মার্চ

পটুয়াখালীতে ভিজিএফ এর ১০ বস্তা চাল চুরি করেছিলেন সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন।

৩০ মার্চ ১০ বস্তা চাল বিক্রয়কালে পুলিশ হাতে নাতে চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি বশির শিকদার ও সোহাগকে আটক করে জেলে পাঠায়। পরে এ মামলার প্রধান আসামী ইউপি চেয়ারম্যান মনির হোসেনকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

এপ্রিল

৩ এপ্রিল সিলেটের কাউন্সিলর এ কে এ লায়েকের মুন্সিপাড়া বাসা থেকে ১২৫ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। সিসিকের দুই কর্মকর্তা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাব ইন্সপেক্টর হুমায়ন কবীর ও পিন্টু রায় এই চাল উদ্ধার করেন।

একই দিন ৩ এপ্রিল বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার তাফালবাড়ি বাজারের একটি দোকানে অভিযান চালিয়ে ১৮ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার করে পুলিশ।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আবু সাইদ জানান, সরকারি চাল জব্দ ও একজনকে আটকের ঘটনায় উপজেলা খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে এক কর্মকর্তা বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় জড়িত ডিলার তারিকুল ইসলাম তারেককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এপ্রিল

২ এপ্রিল নওগাঁর রাণীনগর এলাকায় আয়াত আলী (৬০) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি থেকে ৩৩৮ বস্তা সরকারি ত্রাণের চাল উদ্ধার করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুনের নেতৃত্বে থানা পুলিশের সহায়তায় এসব ত্রাণের চাল উদ্ধার করা হয়। আয়াত আলী কালিগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য।

ময়মনসিংহের ত্রিশালে খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত ‘হতদরিদ্রদের জন্য খাদ্য বান্ধন কর্মসূচী’র ১৬ বস্তা চাল চুরির অভিযোগ পাওয়া যায় স্থানীয় ডিলার আবু খালেকের বিরুদ্ধে।

২ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) তরিকুল ইসলাম তুষারের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এ চাল উদ্ধার করা হয়।

এপ্রিল

৩ এপ্রিল বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নে জেলেদের ভিজিএফ চাল চুরির অভিযোগে চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টুকে আটক করে পুলিশ।

পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির জানান, চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টুর এলাকায় বরাদ্দকৃত ৪৪ মেট্রিকটন চালের মধ্যে মাত্র সাড়ে ১৬ মেট্রিকটন চাল বিতরণের সঠিক প্রমাণ দিতে পেরেছে। বাকি সাড়ে ২৭ [৫৫০ বস্তা] মেট্রিকটন চাল বিতরণের কোনো সঠিক প্রমাণ দিতে পারেনি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন পল্টু।

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাট্টা ইউনিয়ন পরিষদে ১৩ বস্তা চাল চুরি করে গোপনে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে উপি চেয়ারম্যান এস এম রুপমের বিরুদ্ধে।

৩ এপ্রিল ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য শাহনা বেগম এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় ইউপি চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যানের ভাই ডিলার মশিউর রহমান ওই মহিলা সদস্যকে মারধর করেন। এসময় স্থানীয় সংবাদ কর্মী শাজাহান আলী ছবি তুলতে এলে তাকেও মারধর করে হত্যার চেষ্টা করা হয়।

এপ্রিল

৪ এপ্রিল যশোরের মণিরামপুর উপজেলায় সরকারি গুদাম থেকে চুরি হওয়া ৫৫৫ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন।

পৌর এলাকার বিজয়রামপুরের ভাই ভাই রাইস মিলের গুদাম থেকে কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পের এই চাল জব্দ করা হয়।

এপ্রিল

ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও জেলা মেম্বারস ফোরামের সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান মনিরের বিরুদ্ধেও ৫০ বস্তা চাল চুরির অভিযোগ পাওয়া যায়।

৬ এপ্রিল ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে মেম্বার মনিরুজ্জামান মনিরের বাড়ি থেকে চুরি করা ত্রাণের এই চাল উদ্ধার করা হয়। মনির এখন পালাতক রয়েছেন।

এপ্রিল

৭ এপ্রিল যশোর শহরতলীর শানতলায় এক গুদামে অভিযান চালিয়ে সরকারি ৮০ বস্তা চাল জব্দ করেছে স্থানীয় ডিবি পুলিশ।

ডিবি পুলিশের ওসি মারুফ আহম্মদ জানান, ঘটনাস্থল থেকে রাকিব হাসান শাওন ও হাসিবুল হাসান নামে দুই যুবককে আটক করা হয়।

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ১০ নং শঙ্করপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ইজান চুরি করেন ১ বস্তা চাল।

নাটোরের সিংড়া উপজেলার সুকাশ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন শাহের বিরুদ্ধে ত্রাণের ১৩ বস্তা চাল চুরির অভিযোগ আছে।

এই অভিযোগে ভিত্তিতে ৭ এপ্রিল ১৩ বস্তা চালসহ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্যসহ তিনজনকে আটক করে উপজেলা প্রশাসন। তাদের বিরুদ্ধে সিংড়া থানায় মামলা করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন বানু।

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর বাজার চাল চুরির অভিযোগে গোপীনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ সাইদুর ও তার শ্যালক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

৭ এপ্রিল জয়পুরহাট র্যা ব-৫ ক্যাম্প কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাইমেনুর রশিদ অভিযান চালিয়ে তাদের কাছ থেকে ৭ বস্তা চাল উদ্ধার করেন।

গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম অভিযোগ করেন, হত দরিদ্রদের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ১০০ বস্তা চাল ভুয়া মাস্টাররোল তৈরি করে আত্মসাৎ করেছেন মহিষাবান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ডিলার মো. ওয়াজেদ হোসেন।

৭ এপ্রিল এ ঘটনায় ওয়াজেদ হোসেনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে ভুয়া মাস্টাররোল তৈরি করে ২৮৮ বস্তা চাল চুরি করেন কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গাজিউল হক গাজী।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া জানান, ৭ এপ্রিল ডিলার গাজী তার অপরাধ স্বীকার করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দারের বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ উঠে। জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল সরিয়ে নেয়ার অভিযোগ পেয়ে তা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান স্থানীয় সাংবাদিক সাগর চৌধুরী। এই অপরাধে এই সাংবাদিককে শারীরিক নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা দেন জসিম উদ্দিন হায়দারের ছেলে নাবিল হায়দার। পরে অবশ্য সাগর চৌধুরীকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতা নাবিল হায়দারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

একই ঘটনা ঘটে চাঁদপুরে। মতলব দক্ষিণ উপজেলার নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও এক সদস্যের বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ পাওয়া যায়। জাটকা রক্ষা কর্মসূচির আওতায় কর্মহীন নিবন্ধিত জেলেদের জন্য বরাদ্দ করা চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

৭ এপ্রিল একাধিক জেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় সেখানে চাল বিতরণ বন্ধ করে দেয় স্থানীয় প্রশাসন।

চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুন ও ইউপি সদস্য উত্তম কুমার দাস। তারা নিয়ম লঙ্ঘন করে ৪০ কেজি করে না দিয়ে ৩৫ কেজি করে চাল দেন। ওই চাল বিতরণ বাবদ তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০ থেকে ১০০ টাকা আদায় করেন।

এ ছাড়া নিবন্ধিত অনেক জেলেকেই চাল দেয়া হয়নি।

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে সরকারি ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের কথা তুলে ধরায় দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের প্রতিনিধি ও নবীগঞ্জ সাংবাদিক ফোরামের সাবেক সভাপতি শাহ সুলতান আহমেদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ আছে আউশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুন ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।

সরকারি ত্রাণ বিতরণের সময় ১০ কেজি চাল দেয়ার কথা থাকলেও এই চেয়ারম্যান দেন পাঁচ কেজি করে। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুক লাইভে সাধারণ মানুষের বক্তব্যসহ অনিয়মের কথা তুলে ধরেছিলেন সাংবাদিক সুলতান। এতেই চেয়ারম্যানের নির্যাতনের শিকার হন তিনি।

এদিকে, টিসিবির পণ্য পাচারের অভিযোগে বাগেরহাট শহরের তেল পট্টি এলাকার মুদি দোকান (সাহা ভান্ডার)কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ৫ এপ্রিল দুপুরে বাগেরহাট বাজারে এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খাদিজা আক্তার। এসময় সাহা ভান্ডারে তল্লাশী চালিয়ে টিসিবির মনোগ্রাম যুক্ত প্রতি বোতল ৫ লিটার করে ৭৪ বোতল এ মোট ৩৭০ লিটার ভোজ্যতেল জব্দ করা হয়।

ভিক্ষুক রেজাউল ত্রাণ দিলেন নিজ টাকায়

নিউজ প্রতিদিন : শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. রেজাউল হক (৪০) পেশায় একজন ভিক্ষুক। দুর্ঘটনায় নিজের একটি পা হারানোর পর চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থানে ভিক্ষাবৃত্তি করেই চলে তার সংসার। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে থাকেন নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন হিলভিউ রংপুর কলোনীতে।

চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসের কারণে অঘোষিত লকডাউন শুরু হলে বাসা থেকে আর বের হতে পারেননি রেজাউল। থেমে যায় রোজগার। যে কলোনীতে তিনি থাকেন সেখানকার সবাই পেশায় হয়ত রিকশাচালক, নয়ত দিনমজুর। সব বন্ধ থাকায় তাদেরও উপার্জন বন্ধ।

এদিকে, তারা পাননি কোন ত্রাণ কিংবা সাহায্য। ফলে অনাহারে, অর্ধাহারে জীবন কাটছে তাদের। প্রতিবেশীর এ কষ্ট সহ্য হয়নি রেজাউলের। গত কয়েক মাসে ভিক্ষা করে জমিয়েছিলেন ১২ হাজার টাকা। সিদ্ধান্ত নিলেন সে টাকা দিয়েই প্রতিবেশিদের করবেন সাহায্য। অন্য কারো ত্রাণের আশায় বসে না থেকে নিজের এ জমানো টাকা দিয়েই ৬০ জন প্রতিবেশিকে দিলেন চাল, আলু আর সাবান।

গতকাল শনিবার (৪ এপ্রিল) রংপুর কলোনীর সামনে ৬০ জনের কাছে রেজাউল নিজ হাতে তুলে দেন এসব ত্রাণ। ত্রাণের মধ্যে ছিল ৪ কেজি চাল, ১ কেজি আলু ও একটি সাবান। ত্রান পেয়ে খুশি পুরো কলোনীর মানুষ। একজন ভিক্ষুক হয়ে প্রতিবেশীদের ত্রাণ বিতরণে এলাকায়ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, রেজাউলের গ্রামের বাড়ি রংপুরের লালমনিরহাট জেলায়। ৯ বছর আগে চট্টগ্রামে এসেছিলেন ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে। তবে কোন কাজ না জোটায় ভিক্ষা করেই চালাচ্ছেন নিজের পরিবার। তবে অর্থের দিক দিয়ে দরিদ্র হলেও রেজাউলের মনটা যে অনেক বড় তা প্রমাণ করলেন দুঃসময়ে প্রতিবেশীদের পাশে থেকে।
জানতে চাইলে রেজাউল বলেন, আমি ভিক্ষা করে সংসার চালাই। আমার প্রতিবেশীরাও দিন এনে দিন খায়। ভাইরাসের কারণে সবার উপার্জন বন্ধ। আমাদের এখানে কেউ কোন ত্রাণও দেয়নি। আমার হাতে কিছু জমানো টাকা ছিল। তাই ভাবলাম, প্রতিবেশীদের সাহায্য করি। আমি একা খাবো, আর প্রতিবেশীরা উপোস থাকবে বিষয়টা ভাবতে পারছিলাম না। আজকে তাদের আমি সাহায্য করলাম, হয়ত একদিন তারাও আমার বিপদে এগিয়ে আসবে। সবাই মিলে এ যুদ্ধে জয়ী হতে হবে।

ত্রাণ পাওয়া রিকশাচালক মো. নাজির হোসাইন বলেন, রেজাউল আমাদের যে সাহায্য করল সেটা সারাজীবন মনে থাকবে। এ খাবারগুলো দিয়ে অন্তত এক সপ্তাহ আমাদের চলে যাবে। রেজাউলের মত বিত্তবানরা যদি আমাদের কথা একটু ভাবত তাহলে আমাদের আর না খেয়ে থাকতে হত না।

হয়ত রেজাউলের সামর্থ্য কম, ত্রাণের পরিমাণও বেশি নয়। কিন্তু একজন ভিক্ষুক হয়ে যে মহানুভবতা তিনি দেখালেন তা অবশ্যই বিরল। এ কঠিন সময়ে সরকারের পাশাপাশি এলাকার বিত্তবানরা যদি তাদের দরিদ্র প্রতিবেশীদের একটু খোঁজ নিতেন তাহলে ক্ষুধার জ্বালা নিয়ে কাউকে হয়ত রাত কাটাতে হত না।

নারায়ণগঞ্জের ডিসি,এসপি,সিভিল সার্জন ও ইউএনও সুস্থ আছেন

নিউজ প্রতিদিন : নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জসিম উদ্দিন সুস্থ রয়েছেন। কিছুটা শারিরিক অসুস্থতা দেখা দিলে তার করোনা (কোভিড-১৯) টেস্ট করা হলেও সেটির ফলাফল নেগেটিভ এসেছে, ফলে তিনি করোনা আক্রান্ত নন এবং সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন।

তবে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও জেলা করোনা বিষয়ক ফোকাল পারসন জাহিদুল ইসলাম করোনা আক্রান্ত হয়ে বাড়িতেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এদিকে জাহিদুল ইসলামের সাথে বিভিন্ন সময়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহ বিভিন্ন স্থানে বৈঠকে অংশ নেয়ায় সতর্কতামূলক হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) জায়েদুল আলম, জেলা সিভিল সার্জন (সিএস) মোহাম্মদ ইমতিয়াজসহ জেলার বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী। তবে তারা বাড়িতে থেকেও নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন তাদের দায়িত্ব পালন করার জন্য।

বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সেলিম রেজা, জেলা সিভিল সার্জন (সিএস) মোহাম্মদ ইমতিয়াজ ও জেলা করোনা বিষয়ক ফোকাল পারসন জাহিদুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সেলিম রেজা জানান, আমাদের জেলা প্রশাসকের যে সতর্কতামূলক টেস্ট হয়েছিল সেটির রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তিনি সুস্থ আছেন এবং আপাতত বাড়িতে থেকেই কাজ সম্পন্ন করছেন। জেলা প্রশাসনের সকল ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে, নিয়মিত অভিযান, টহল এবং অফিসিয়াল কাজও চলছে। জেলাবাসী যদি একটু সতর্ক হয় এবং ঘরে থাকে তাহলে এই সংকট থেকে আমরা দ্রুতই উত্তরণ করতে পারবো বলে আশা করছি।

এদিকে জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম, জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক সুস্থ রয়েছেন এবং তারা নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে এবং জনগনের সেবা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে জানান।

নারায়ণগঞ্জের ডিসি, সিভিল সার্জন, ইউএনও, আরএমও অসুস্থ !

নিউজ প্রতিদিন : সারা দেশের চাইতে অধিক মাত্রায়  গুরুত্ব দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলায় করোনা ভাইরাসের মোকাবেলা করছে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাগণ ।

দফায় দফায় বৈঠক নানা কার্যক্রমের মধ্যে এবার অসুস্থ হয়ে পরেছেন জেলা প্রশাসক মোঃ জসিম উদ্দিন,  নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  (ইউএনও) নাহিদা বারিক, সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার  (আরএমও) ডাঃ মোঃ আসাদুজ্জামানসহ আরো কয়েকজন ।

এরই মধ্যে সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ এবং আরএমও ডাঃ আসাদুজ্জামানকে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রণালয় ।  একই সাথে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক কে  হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ।

করোনা ভাইরাসের কারনে সিভিল সার্জন, আরএমও, ইউএনও সহ সদর হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক,  কয়েকজন নার্স,  কয়েকজন ওয়ার্ড বয়, বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার একতার কয়েকজন টেকনিশিয়ানকে আইসোলেশনে রাখা হলেও খোদ নারায়ণগঞ্জ জেলার  ডেপুটি কমিশনার   (ডিসি) ভিন্ন কারনে অসুস্থ হয়ে বিশ্রামে রয়েছেন ।

এমন খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মনিটরিং সেল ও কন্ট্রোল রুম থেকে মমিনুল হক ।

মমিনুল হক আরো বলেন, জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন প্রেসার জনিত কারনে অসুস্থ আছেন ।

অপরদিকে জেলা সিভিল সার্জন দপ্তরের কন্ট্রোল কক্ষ থেকে লুৎফর রহমান বলেন,  জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ  এবং আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার  (আরএনও) ডাঃ আসাদুজ্জামান করোনা ভাইরাসের কারনে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভীর সাক্ষাৎকারে ডিসি, সিভিল সার্জন, ইউএনও এর অসুস্থতার খবর প্রকাশের পর জেলাজুড়ে ব্যাপকভাবে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের প্রশ্ন  তাহলে কি করে চলছে নারায়ণগঞ্জের মতো গুরুত্বপূর্ণ এই জেলা ?

ফতুল্লায় ত্রাণের দাবীতে চেয়ারম্যানের বাড়ী ঘেরাও

নিউজ প্রতিদিন: ফতুল্লায় খাদ্যের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ফতুল্লা ইউনিয়নের ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডবাসী। খাদ্য সামগ্রী না পেয়ে ত্রাণের দাবীতে বিক্ষোভ করে রাস্তায় নেমে এসেছে নিন্ম আয়ের শত-শত নারী পুরুষ।

বুধবার দুপুর ৪ টায় নিন্ম আয়ের দরিদ্র শ্রেনীর শত-শত নারী পুরুষ ত্রানের দবীতে রাস্তায় নেমে এসে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ফতুল্লা থানা গেইট হয়ে ফতুল্লা চৌধুরীবাড়ীস্থ স্বপন চেয়ারম্যানের বাড়ীর সামনে অবস্থান গ্রহন করে। সামাজিক দুরুত্ব বজায় না মেনে শত-শত নারী পুরুষ এক হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে।বিক্ষোভরত সকল নারী পুরুষ খাবার চাই,খাবার চাই বলে শ্লোগান দিচ্ছিলো।

দীর্ঘক্ষন অবস্থান করার পর ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষধের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান থন্দকার লুৎফর রহমানর স্বপন তাদেরকে ত্রাণ দেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভরত জনগণ নিজ নিজ বাড়ীতে চলে যায়।

গতকাল দুপুরে লক ডাউন ভেঙ্গে ফতুল্লা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের নিন্ম আয়ের শত শত দরিদ্র নারী পুরুষ খাদ্র দ্রব্য ত্রাণের দাবীতে খাবার চাই চাই শোল্গান দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে রাস্তায়। এক পর্যায়ে তারা মিছিল নিয়ে ফতুল্লা থানা গেইটে এসে বিক্ষোভ করে থানা গেইটের বিপরীতে ফতুল্লা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খন্দকার লুৎফর রহমান স্বপনের বাড়ীর গেইটে গিয়ে অবস্থান সহ বাড়ী ঘিরে রাখে।

এ সময় কথা হয় ৩ নং ওয়ার্ডের বাসীন্দা দিনমজুর রহমতুল্লা,জোবেদা,আকলিমা এবং ২ নং ওয়ার্ডের বাসীন্দা জহুরা,রোজিনা সহ বেশ কয়েকজনের সাথে তারা সকলেই অভিযোগের সুরে বলেন গত কয়েক দিন পূর্বে সরকার দলীয় স্থানীয় নেতা এবং ইউপি সদস্যের লোকজন এসে ত্রাণ দেয়ার জন্য ভোটার আইডি কার্ডর ফটোকপি নিয়ে যায়। কিন্তু আজকের দিন পর্যন্ত তারা কোনো ত্রাণ পায়নি।

বক্তাবলীর রাধানগরে জলিল গাজীর উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

নিউজ প্রতিদিন: বক্তাবলী ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো.জলিল গাজীর উদ্যোগে প্রাণঘাতী নোবেল করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এর কারনে সৃষ্ট অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

মানুষের পাশে আছি, মানুষের পাশে থাকবো ‘এই স্লোগানকে সামনে জলিল গাজীর সার্বিক  ব্যবস্থাপনায় ও ড. আবুল কালাম আজাদ, মো. সোহরাব মাষ্টার, মো.রহিম ভেন্ডারের  তত্ত্বাবধায়নে বুধবার (৮ মার্চ) সকাল ১০ টায় বক্তাবলী ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ড রাধানগর জলিল গাজীর কার্যালয়ে বেকার, দিনমজুর, হতদরিদ্র ও অসহায় ১৪০ পরিবারের মাঝে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে এবং একে অন‍্যের সহযোগিতায় পাশে থাকতে হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিরোধে সামাজিক দুরত্ব বজা রাখা, ঘনঘন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া,যেখানে সেখানে থু থু বা কফ না ফেলা, হাত দিয়ে নাক- মুখ–চোখ স্পর্শ না করা ও বেশি বেশি পানি পান করার আহ্বান জানান জলিল গাজী।