ফাস্ট ফুডে বিল দেয়াকে কেন্দ্র করে ডিবি পুলিশের সাথে স্থানীয় জনতার ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আহত হয়েছে ডিবি পুলিশের সদস্য ও নারীসহ অন্তত ১০ জন। (২৬ আগষ্ট) রবিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর চৌরঙ্গি পার্ক সংলগ্ন মাই লাইফ কেয়ার নামক ফাস্ট ফুডে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষকালে গুরুতর আহত হয়েছে ডিবি পুলিশের এস.আই মিজান, এস.আই সায়েম, এ.এস.আই আমিনুল ও এ.এস.আই বকুল। তাদেরকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল ১শ শয্যা বিশিষ্ট (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত জখম হয়েছে শেখ রাসেল শিশু কিশোর নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সহ সভাপতি জালাল উদ্দিন (৪৮)। স্থানিয়রা তাকে খানপুর ৩শ শয্যা বিশিষ্ট হাপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। এদিকে গুরুতর আহত তার স্ত্রী রীনা ইয়াসমীন মর্জিনা (৪৫) ও বড় ছেলে আল আমিন (২৬) ও ছোট ছেলে রবিন (২৬) কে খানপুর হাপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আহতদের বিষয়ে খানপুর ৩শ শয্যা বিশিষ্ট হাপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাহমিনা নাজমিন জানায়, জালাল উদ্দিনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল পাঠানো হয়েছে। তার মাথায় ও ঠোটে আঘাত রয়েছে। এছাড়াও বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ভেঙ্গে গেছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা যাচ্ছে। আর বাকিরা আঘাত প্রাপ্ত হলেও আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। তারা শংকা মুক্ত রয়েছে। তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় উপর্যপুরি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এ ঘটনায় আহত রীনা ইয়াসমীন মর্জিনা অভিয়োগ করে বলেন, রাত সাড়ে ৭টায় ডিবি পুলিশ বরফকল চৌরঙ্গি পার্ক সংলগ্ন আমাদের মাই লাইফ কেয়ার ফাস্ট ফুডে লাচ্ছি খায়। এসময় খাওয়া শেষে বিল চাইলে আমাদের মাথায় বন্ধুক ঠেকিয়ে বলে পুলিশের কাছে বিল চাস। তার পরে তাকে বিল দেয়ার জন্য পুণরায় বললে আমাদের গায়ে হাত দেয়। এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন জরো হলে। ডিবি পুলিশের এস.আই মিজান, এস.আই সায়েম, এ.এস.আই আমিনুল ও এ.এস.আই বকুল আরো ফোর্সকে আসার জন্য খবর দেয়। তারপর ডিবির আরো ২-৩ টি গাড়িতে করে ডিবি পুলিশ এসে আমাদেরকে তাদের হাতে থাকা বন্ধুক ও রুলার দিয়ে মারধর করতে থাকে।
এসময় চৌরঙ্গি পার্কের মালিক কাজি আব্দুস সাত্তার এর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তিনি আরও বলেন, আমাদের দোকানটি চৌরঙ্গি পার্ক সংলগ্ন হওয়ায় পার্কের মালিক কাজি আব্দুস সাত্তার অনেক আগে থেকেই ষড়যন্ত্র করছে। ডিবি পুলিশের সাথে সাত্তারের খুব ভালো সম্পর্ক আছে। সাত্তার হেগো টাকা দেয়। এই পার্কে বিভিন্ন সময়ই ডিবি পুলিশ আইসা তার (সাত্তারের) সাথে দেখা সাক্ষাত করে যায়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মাই লাইফ কেয়ার ফাস্ট ফুডে পরিবার পরিজন নিয়ে খেতে যান এএসআই আমিনুল ও এএসআই বকুল। এ সময় মিল্ক সেইকটি ভাল হয়নি দাবি করে বিল দিতে রাজী হয়নি এ.এস.আই আমিনুল ও এ.এস.আই বকুল। এসময় তাদের সঙ্গে ফাস্টফুডটির মালিক আল আমিন ও রবিন বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় আল আমিনের পিতা যুবলীগ নেতা জালাল ও তার স্ত্রী রিনা ইয়াসমিন ঘটনাস্থলে আসলে ডিবির দুই এ এস আই মিলে তাদেরকে মারধর করে। পরে আশে পাশের লোকজন এগিয়ে এসে ওই দুই এ.এস.আইকেও বেধড়ক পিটুনী দেয়। এরপর ডিবি পুলিশের আরো সদস্যরা এলে ব্যাপক সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।
এ ব্যপারে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) নূরে আলম জানায়, আইনের উর্ধে কেউ নয়। আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিবো। অন্যায়কারীকে পালতে যাবো কেন। ঘটনাটি তদন্তের জন্য একটি ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।