২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৪ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 266

বায়োমেট্রিকে সিম নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়তে পারে

আঙুলের ছাপ (বায়োমেট্রিক) পদ্ধতিতে চলমান সিম নিবন্ধন কার্যক্রমের সময়সীমা বাড়তে পারে। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ‘সিম নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়াতে অপারেটরদের আবেদনের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো জনগণ কী চায়। জনগণ যদি মনে করে আরও সময়ের প্রয়োজন, তাহলে সরকার সেটি অবশ্যই বিবেচনা করে দেখবে।’ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে আগামীকাল বৈঠকে বসার কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ৭ কোটি ৩৩ লাখ সিম সফলভাবে নিবন্ধিত হয়েছে। আর এ সময়ে আঙুলের ছাপ ও তথ্য না মেলায় এক কোটির বেশি সিমের নিবন্ধন সফল হয়নি। বর্তমানে দেশে চালু থাকা মোট সিমের সংখ্যা ১৩ কোটি ৮ লাখ। সে হিসেবে মোট সিমের ৫৬ শতাংশ সফলভাবে নিবন্ধিত হয়েছে।

বিটিআরসির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৬২ লাখ ৮০ হাজার গ্রাহকের আঙুলের ছাপ না মেলায় সিম নিবন্ধন সফল হয়নি। পরিচয়পত্র পাওয়া না যাওয়ায় মেলেনি আরও ৩৪ লাখ ৯০ হাজার সিমের তথ্য। এ ছাড়া সার্ভারে ত্রুটির কারণে ৩ লাখ ৯০ হাজার এবং অন্যান্য কারণে আরও ৪ লাখ ৩০ হাজার সিমের নিবন্ধন সফল হয়নি।

আঙুলের ছাপ না মেলায় যাঁদের সিম নিবন্ধন সম্পন্ন হয়নি, সে সম্পর্কে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, ‘এমন ব্যবহারকারীরা গোটা বাংলাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। সারা দেশে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় অনুবিভাগের (এনআইডি) পাঁচ শতাধিক স্থানীয় কার্যালয় আছে। তাঁদের সেখানে যোগাযোগ করে পরিচয়পত্রে থাকা ত্রুটি দূর করতে হবে। এতে ব্যবহারকারীরা ভবিষ্যতের জন্য উপকৃত হবেন।’

মুঠোফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব টিআইএম নুরুল কবীর বলেন, সিম নিবন্ধনে গ্রাহক ও অপারেটরদের আগ্রহের কোনো অভাব নেই। তবে যে সময় এখন বাকি আছে, তাতে সব সিমের নিবন্ধন শেষ করা সম্ভব নয়। সিম নিবন্ধনের এ প্রক্রিয়া সফলভাবে সমাপ্ত করতে সময় তাই যৌক্তিকভাবে বাড়ানো দরকার।

প্রথম আলো নেয়া

৪নং ওয়ার্ড মেম্বার প্রার্থী হাজী ওমর ফারুকের পক্ষে গণজোয়ার

আসন্ন বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী হাজী ওমর ফারুক শুক্রবার ও শনিবার  তাদের নির্বাচনী এলাকায় বিশাল শোডাউন ও গণসংযোগ করেছেন।
৪নং ওয়ার্ড থেকে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছে। তারা হলেন, হাজী ওমর ফারুক, আক্তার হোসেন এবং মোঃ আলীম।এদের মধ্যে হাজী ওমর ফারুক প্রচার প্রচারনায় এবং ভোটের সমীকরনে এগিয়ে রয়েছে।হাজী ওমর ফারুকের রাজাপুরের পঞ্চায়েত কমিটি আক্তার হোসেনকে সমর্থন করলেও তার কোন প্রচার প্রচারনা নেই বললেই চলে। ৪নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন ভোটারদের সাথে আলাপকালে সাধারন ভোটাররা জানান, হাজী ওমর ফারুক একজন ন্যায় পরায়ন ব্যক্তি। তার মত যোগ্য প্রার্থী পেয়ে আমরা সত্যিই আনন্দিত। কারন হিসেবে তারা উল্লেখ করে বলেন,আমাদের সুপরিচিত মুখ হাজী ওমর ফারুককে আমরা সাধারন ভোটাররা বিপদে আপদে সব সময় কাছে পাই। তিনি যদি  নির্বাচনে জয়লাভ করে তাহলে আমাদের অবহেলিত এ ওয়ার্ডে ব্যাপক উন্নয়ন করবেন     বলে  আমরা আশাবাদী। তাছাড়া এলাকাবাসি ও ভোটারদের মাঝে রয়েছে তার জনসমর্থন। এলাকার সাধারন মানুষের নেই কোন অভিযোগ । যদি পঞ্চায়েত কমিটি পুনরায় বিবেচনা করে একক ভাবে হাজী ওমর ফারুককে সমর্থণ দেয় এবং দলীয় প্রভাব মুক্ত সুষ্ঠ নির্বাচয় হয় তাহলে হাজী ওমর ফারুক জয়লাভ করবে। এ বিষয়ে মেম্বার পদপ্রার্থী হাজী ওমর ফারুক বলেন, সাধারণ ভোটাদের কথা বিবেচনা করে সামাজিক ভাবে একক প্রার্থী হিসেবে আমাকে যদি সমর্থন করে এবং  দলীয় প্রভাব মুক্ত সুষ্ঠ নির্বাচন হয় তাহলে আমি আমার এলাকার সাধারন ভোটারদের মুল্যবান ভোটে জয়লাভ করবো ইনশাল্লাহ।

ভক্ষক নয় রক্ষক হয়ে এলাকার উন্নয়ন করতে চাই-জয়নাল আবেদীন

আসন্ন বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে  ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী  মোঃ জয়নাল আবেদীন শুক্র ও শনিবার তার নির্বাচনী এলাকায় বিশাল শোডাউন ও গণসংযোগ করেছেন। গণসংযোগকালে তিনি বলেন,মিথ্যা প্রতিশ্রুতি নয়, সত্যিকার অর্থে আপনাদের কল্যাণে কাজ করার উদ্দেশ্যে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। অনেকেই আপনাদের ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকার উন্নয়ন না করে নিজের উন্নয়ন করেছে।কিন্তু আমি তা করব না।আমি ভক্ষক না হয়ে রক্ষক হয়ে এলাকার সার্বিক উন্নয়নে কাজ করব।৮নং ওয়ার্ড থেকে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছে। তারা হলেন, মোঃ জয়নাল আবেদী,মোঃ মনির হোসেন ও সেকান্দর। এদের মধ্যে মোঃ জয়নাল আবেদী রয়েছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে।সরে জমিনে নির্বাচনী এলাকাতে ঘুরে ওয়ার্ডের বিভিন্ন ভোটারদের সাথে আলাপকালে সাধারন ভোটাররা জানান, মোঃ জয়নাল আবেদী একজন ন্যায় পরায়ন ব্যক্তি। তার মত যোগ্য প্রার্থী পেয়ে আমরা সত্যিই আনন্দিত।

বিভেদ ভুলে ঐক্য গড়ে তোলে ‘নতুন বছরে এদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে’

বিভেদ ভুলে ঐক্য গড়ে তোলার মাধ্যমে বাংলা নতুন বছরে দেশে ‘গণতন্ত্র ফিরে আসবে’ বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, ‘নতুন বছরে এদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। শান্তি এবং সুদিন আসবে, জনগণের কল্যাণ হবে, খুন-গুম থেকে মানুষ মুক্তি পাবে, দেশে বেকারদের কর্মসংস্থান হবে।

‘তবে সবচেয়ে বড় কাজ গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। সেইজন্য বিভেদ ভুলে ঐক্য গড়ে তুলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিএনপির অন্যতম অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস আয়োজিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এর আয়োজন করা হয়। এর আগে দুপুর আড়াইটায় জাসাস শিল্পীদের গান পরিবেশন করেন। বিএনপি চেয়ারপারসন সোয়া ৪টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন।

এ সময় উপস্থিত নেতা-কর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে প্রিয় নেত্রীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। বিএনপি নেত্রীও হাত নেড়ে নেতা-কর্মীদের অভিনন্দনের জবাব দেন।

খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে দেশবাসী, বিশ্ববাসী, প্রবাসীসহ প্রত্যেক রাজনৈতিক দল এবং এর নেতাদের, শিশু, মহিলা, সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।

তিনি বলেন, ‘আশা করি এই নববর্ষ বাংলাদেশের মানুষের জন্য সুদিন বয়ে আনবে, শুভ হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যেমন করে শহীদের রক্ত দিয়ে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এবাব দেশকে শান্তি ও উন্নয়নের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’

গণতন্ত্র ফেরাতে কাঁধে কাঁধ, হাতে হাত রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘অনেক বেদনা, অনেক কষ্ট ভুলে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’

বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে বিএনপি শীর্ষ নেতাদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আইন বিষয়ক সম্পাদক নিতাই রায় চৌধুরী, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম প্রমুখ।

বর্ষবরণের এই অনুষ্ঠানে নির্দিষ্ট সময়ের আগে থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি ও তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হতে শুরু করেন। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে জনস্রোত। জাসাস সভাপতি এম এ মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন জাসাসের সাধারণ সম্পাদক মনির খান।

রূপগঞ্জে উপজেলা চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে মামলা

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রচারণা নিয়ে প্রতিপক্ষের সমর্থককে রগ কেটে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে নিহতের মামি মাসুদা বেগম বাদী হয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান ভুঁইয়াকে প্রধান আসামি করে মামলাটি করেন। মামলায় শাহজাহান ভুঁইয়াসহ মুড়াপাড়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল জাব্বার মেম্বার, মতি, কাজল, আউয়াল, মিলনসহ ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি অজ্ঞাত আরও ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম মেহেদী মাসুদ জানান, সোমবার রাতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল জাব্বার মেম্বারসহ তার লোকজন প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী তোফায়েল আহাম্মেদ আলমাছের সমর্থক জাহাঙ্গীর মিয়াকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে পায়ের রগ কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করেছেন এমন অভিযোগ এনে মাসুদা বেগম মামলাটি করেন। এ ঘটনায় ফয়সাল মিয়া, মিলন মিয়া, সুমন মিয়া ও আউয়াল নামে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে বুধবার বিকালে জানাজা শেষে জাহাঙ্গীর মিয়ার লাশ মঙ্গলখালী সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। জানাজায় অংশ নেন স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ রফিকুল ইসলাম রফিক, আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী তোফায়েল আহাম্মেদ আলমাছ, ব্যারিস্টার আরিফুল হক ভুঁইয়া, মনজুর হোসেন ভুঁইয়া, আবুল হোসেন খান প্রমুখ।

মুড়াপাড়া ইউপি নির্বাচনের প্রচারণাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তোফায়েল আহাম্মেদ আলমাছসহ তার কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে বিদ্রোহী আবদুল জাব্বার মেম্বার ও তার কর্মী-সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে বড়ভিটা এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে মাসুদ মিয়া (২৫), রজব আলীর ছেলে রাজু মিয়া (২২), শাহজাহান মিয়ার ছেলে শাকিল মিয়া (২৭) ও ইলিয়াছ মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর মিয়াকে (৪০) বেঁধে রগ কেটে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে আবদুল জাব্বার মেম্বার ও তার লোকজন। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহাঙ্গীর মিয়া মারা যান।

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দল গোছাচ্ছে আ.লীগ ও বিএনপি

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কমিটি ঘোষণা করেছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে এসেছে পরিবর্তন। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখেইে দুই বড় দলের কমিটিতে অনেক পরিবর্তন আসছে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

বিএনপি ১৯ মার্চ কাউন্সিল করেছে। এরপর আংশিক কমিটি ঘোষণা করেছে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদকের ১৬ পদে আংশিক কমিটি। এর আগে মহাসচিব ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ঘোষণা করা হয়েছে। বিএনপিতে নতুন নেতৃত্বে আশায় নেতারা জেগে উঠছেন। নতুন নেতৃত্বের নেতারা সরকারকে আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এদিকে আওয়ামী লীগও কমিটি ঘোষণা। ঢাকা মহানগরকে উত্তর ও দক্ষিণে ভাগ করে আওয়ামী লীগের দুটি পৃথক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন যথাক্রমে এ কে এম রহমতুল্লাহ ও সাদেক খান। আর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন আবুল হাসনাত ও শাহে আলম মুরাদ।

দলের পুরনো ও ত্যাগী নেতাদের পাশাপাশি নতুনদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটিতে। এছাড়া বিভিন্ন সময় দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যারা বিজয়ী হয়েছেন, তাদেরও রাখা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের আসন্ন ২০তম জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে যে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হবে সেই কমিটিও পরবর্তী নির্বাচনকে মাথায় রেখে সাজানো হবে। মূলত দলকে গতিশীল করে পরবর্তী নির্বাচন এবং নির্বাচনকেন্দ্রিক বিরোধী শিবিরের আন্দোলন মোকাবিলার জন্যই এমনভাবে দল গোছানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা।
একাধিক নেতা জানান, দলকে গতিশীল রাখতে সব ধরনের নেতাকর্মীদের পদ দেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগে। যে কারণে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যেসব বিদ্রোহী প্রার্থী কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তাদের অনেককেও সদ্য ঘোষিত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদ দেওয়া হয়েছে। আবার যেসব সিনিয়র নেতা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন না; কিন্তু দলসমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা যেন জিততে না পারেন এমন চেষ্টা করেছিলেন, তারা বাদ পড়েছেন দল থেকে।
তবে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উত্তর ও দক্ষিণের কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে একটা বার্তা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, যাদের কারণে দল বিতর্কিত হয়েছে, যারা দায়িত্বশীল পদে থেকেও দলকে যথোপযুক্ত সহযোগিতা করেননি, তাদের দলীয় পদ টিকিয়ে রাখা খুব কঠিন হবে। উদাহরণ হিসেবে ওই নেতারা বলেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের কা-ারী ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া খুব চেষ্টা চালিয়েছিলেন মহানগরের কমিটিতে থাকার জন্য; কিন্তু দলের হাইকমান্ড তাকে কোথাও রাখেনি।
একইভাবে সদ্যঘোষিত কমিটিতে নেই খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম এবং তাদের অনুসারীরা। মূলত মহানগর আওয়ামী লীগকে কোন্দলমুক্ত রাখার জন্যই তাদের রাখা হয়নি বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। তবে মায়া চৌধুরী না থাকলেও তার ছোট ছেলে রাশেদুল হাসান চৌধুরী রনিকে মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রাখা হবে বলে জানা গেছে।
বিদ্রোহী প্রার্থীদের দলে নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দুই রকম মত দেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা। এক পক্ষ মনে করেন, দলের কর্মীদের ভুলত্রুটি থাকতেই পারে, তাই বলে একটি ভুলের কারণে আমরা তাদের আজীবন দলের বাইরে রাখতে পারি না। এছাড়া দলীয় ফোরামের মেজাজ বুঝে বিভিন্ন সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অপর পক্ষের ভাবনা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার কমিটি গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ড. আব্দুর রাজ্জাক কিছু এলাকায় তার নিজস্ব বলয় তৈরির জন্য সিটি নির্বাচনের বিদ্রোহী কাউন্সিলরদের পদ দিয়েছেন। কারণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত ছিল, নির্বাচনে যারা দলীয় মনোনয়ন পাবেন না, তাদের নগর কমিটিতে মূল্যায়ন করা হবে। অন্যদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করে যারা নির্বাচন করবেন তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা আরও জানান, দলের ২০তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ১০ ও ১১ জুলাই। ইতোমধ্যে সম্মেলন সফল করতে প্রস্তুতি কমিটিও গঠিত হয়েছে। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে যারা নেতা হবেন, তারাই পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন মোকাবিলা করবেন। সুতরাং সবদিক বিবেচনা করেই সম্মেলনপরবর্তী কেন্দ্রীয় কমিটি সাজানো হবে এবার। তবে আওয়ামী লীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার দাবি, ঈদুল ফিতর হওয়ার কথা ৬ অথবা ৭ জুলাই। সেক্ষেত্রে ঈদের পরপরই না-ও হতে পারে সম্মেলন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, আমি যতোটুকু বুঝি, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান, সবাইকে নিয়ে চলতে। তিনি সবার সমন্বয়ে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার পক্ষে। নেত্রীকে দেখেছি, বিন্দু ও সিন্ধু উভয়েরই মূল্যায়ন করেন তিনি। দলের জন্য যার বিন্দু পরিমাণ অবদান আছে তাকেও তিনি ভোলেন না আবার যার অবদান সিন্ধুর জলরাশির সমান তাকেও তিনি গুরুত্ব দিয়ে দেখেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের শরীরে মেদ জমে না। তারা ঠিকই আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে অংশ নেন। সেটি গত কয়েক বছরে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন মোকাবিলায় আমাদের কর্মীদের অংশগ্রহণ দেখলেই বুঝবেন।

একই বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর অন্যতম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, সবদিক বিবেচনা করেই দল সাজানো হচ্ছে, কমিটিগুলো গঠন করা হচ্ছে।

পর্যায়ক্রমে ঘোষণা করা হবে ক্ষমতার বাইরে থাকা দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি। ইতোমধ্যে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।  চলতি মাসেই দলটির ১৯ সদস্যের স্থায়ী কমিটি ঘোষণা হতে পারে।
জাতীয় কাউন্সিলের ২১ দিন পর তৃতীয় দফায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়া ১৫ নেতার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ২ পদে এ ১৫ নেতার মধ্যে ১২ জনই নতুন। ১০  এপ্রিল নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া মনোনীত ৭ জন যুগ্ম মহাসচিব ও ৮ জন সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন।

বিএনপির নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়া ৭ জন যুগ্ম মহাসচিবের মধ্যে আগের কমিটির ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকনই শুধু রয়েছেন। বাকি সবাই নতুন। নতুন কমিটিতে স্থান পাওয়া অন্য যুগ্ম মহাসচিবরা হলেন আগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান সারোয়ার, আগের কমিটির যুববিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আগের কমিটির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকন, আগের কমিটির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, আগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ ও আগের কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন আসলাম চৌধুরী।
এর আগে  ৩০ মার্চ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বিএনপির মহাসচিব ও রুহুল কবির রিজভীকে সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব পদে মনোনয়ন দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ ছাড়াও মিজানুর রহমান সিনহাকে বিএনপির কোষাধ্যক্ষ পদে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।

সংস্কৃতি ও ধর্ম: আরববিশ্ব ও বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে

বাইরের বিশ্বকে আমরা কিভাবে বিচার করি সেই শিক্ষাই দেয় সংস্কৃতি। ফলে শান্তি ও টেকসই উন্নয়নের যে অপরিহার্য উপাদান সহনশীলতা তারই উপলব্ধি মানবজাতি অর্জন করে সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে। বিশ্ব ইতিহাসে বিভিন্ন মানবগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের প্রতিযোগিতার ফলশ্রুতিতে যত হানাহানি এবং ঔপনিবেশিক শক্তি সৃষ্টি হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। এই সাংস্কৃতিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের ভেতর ধর্মও একটি অনুঘটকের কাজ করেছে নিঃসন্দেহে। কিন্তু এ কথা অনস্বীকার্য সংস্কৃতি একটি মানবগোষ্ঠীর অন্তর্গত শক্তি যার উপাদানগুলো হলো, মানুষের সাথে মানুষের ব্যবহার, তার খাদ্যাভ্যাস (রন্ধন প্রণালীসহ), ভাষা, বিনোদন ও অভ্যাস যা ঐ মানবগোষ্ঠীকে একটি সর্বজনীন একাত্মতার অনুভূতি এনে দেয় এবং এমনকি ঐ মানবগোষ্ঠীর পোশাক-পরিচ্ছদ ও পারস্পরিক ব্যবহারও এর অন্তর্ভুক্ত। ইংরেজিতে একে বলা হয় সভ্য ও সংস্কৃতিকবান হবার ইঙ্গিত বা ‘সেমিওটিক্স’। এর সাথে ধর্মীয় উৎসবও যুক্ত। ধর্ম ও সংস্কৃতির সহাবস্থান মানবজাতির জন্যই মঙ্গলজনক কারণ ধর্মের অনেক আচার অনুষ্ঠান যেমন কোনো একটি নির্দিষ্ট ভৌগলিক সীমারেখায় বসবাসকারী মানবগোষ্ঠীকে প্রভাবিত করে, তেমনি সেই ভৌগলিক সীমার অভ্যন্তরের সকল ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক কর্মকা-কে নিজেদের মধ্যে ধারণ করে থাকে। এটি অতি প্রয়োজনীয় কারণ কোনো মানবগোষ্ঠীই তার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে অস্বীকার করে টিকে থাকতে পারে না।

সম্প্রতি বাংলা নববর্ষ উদযাপন নিয়ে ধর্মীয় বক্তব্য সোচ্চার হচ্ছে। বাংলা বর্ষপঞ্জির সৃষ্টি ও এর ঐতিহাসিক পটভূমি বিশ্লেষণ না করেই আমি আমার কিছু অভিজ্ঞতার কথা ব্যক্ত করতে চাই। আমি দীর্ঘ চার বছর এক আরব দেশে ছিলাম। তা ছাড়াও আরও বেশ ক’টি আরব দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতাও আমার আছে। আমি দেখেছি সেই সব দেশে ইসলাম-উত্তর সাংস্কৃতিক আচার অনুষ্ঠানের প্রতুলতা। বিয়ে বা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে উলুধ্বনি দেয়া কিংবা বিয়ের গাড়ি সাজানোর জন্য বার্বিডল ব্যবহার করা থেকে শুরু করে মেয়েদের গান গাওয়া এবং নাচ। শুধু তাই নয়, আমি অনেক অনুষ্ঠানে বেলি-ডান্স’ও দেখেছি যেটি ইসলাম-উত্তর যুগে নীলনদের পাশ দিয়ে যে আরব সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল সেই ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে এই একবিংশ শতাব্দীতেও বর্তমান। উট ও ঘোড়-দৌড়ের প্রতিযোগিতায় এবং সেই উৎসবে মেয়েদের খোলা-চুলের নাচ ও পানাহারে (প্রধানত গাহোয়া বা চা) আমি উপস্থিত ছিলাম একাধিকবার। অনেকেই বলবেন এসব ইসলাম-বিরোধী। আমি বলব এই হলো মানবজীবন যাপনের নির্মল স্বতঃস্ফূর্ততা। কারণ হিজাব পরলেও যে নারীরা পশুর হাত থেকে রক্ষা পায় না তার জ্বলন্ত উদাহরণ তনু-পশু তো কারও কথা শোনে না-সে সভ্যতা ও সংস্কৃতিরও তোয়াক্কা করে না। ধর্মও তাকে সংযত করতে পারে না। তবে একথাও ঠিক পশুরাও অনেক বিচারে মানুষের চেয়ে সভ্য-যেমন তারা ধর্ষণ করে না। ইসলাম যে দেশ থেকে ভারতবর্ষে এসেছে, তা সে আরবদেশ থেকেই হোক বা পারস্য থেকেই হোক- সে দেশগুলোতে বিভিন্ন বিনোদন অনুষ্ঠান, যা তাদের অমূল্য উত্তারাধিকার, ইসলাম-পরিবর্তি যুগেও যুক্তিসঙ্গতভাবেই পালিত হচ্ছে। যেমন ইরানে ‘নওরোজ’ অনেক জাঁকজমকভাবে উদযাপন করা হয়। সৌদি আরবে জমাদ্রিয়া জাতীয় উৎসব পালিত হয় প্রতি ফেব্র“য়ারিতে রিয়াদ থেকে ত্রিশ মাইল দূরে জমাদ্রিয়া শহরে যেখানে লোকজ নাচ-গানসহ ঘোড়া ও উটের দৌড় প্রতিযোগিতা এবং স্বরচিত কবিতা পাঠের জন্য দূরদূরান্ত শহর ও গ্রাম থেকে নারী-পুরুষ একত্রিত হয় টানা দু’সপ্তাহের জন্যে। এ ছাড়াও সৌদি আরবে নিয়মিত বাজ উড়ানোর খেলা (ঋধষপড়হ’ং ভষরমযঃ মধসবং) হয় যেটি পুরাকালের আরব সংস্কৃতি। জুন-জুলাইয়ে জেদ্দা শহরে প্রায় দু’শ বিভিন্ন বিনোদন প্রদর্শনী হয়ে থাকে সৌদি আরবের ঐতিহ্যবাহী খাদ্যসামগ্রী ও আতশবাজী সহকারে। অপেক্ষাকৃত উদারপন্থী মুসলিম দেশ দুবাই এবং আমিরাতে হরহামেশাই ঘোড়-দৌড় এবং এমনকি জ্যাজ ফেস্টিভ্যাল হয়ে থাকে, যদিও জ্যাজ ইসলামী সংস্কৃতি নয়। এমন উদাহরণ আরও অনেক আছে, কিন্তু প্রশ্ন হলো ঐসব মুসলমান দেশগুলোতে কি এমন কোন ফতোয়াবাজ নেই? আমি ব্যক্তিগতভাবে এইসব উদাহরণ দিয়ে একাধিকবার যুক্তি খাড়া করতে চেয়েছি আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের পক্ষে, তখন যে মন্তব্য শুনতে হয়েছে তা এই: ‘ওরা খাঁটি মুসলমান না’। পরিহাসের বিষয় হলো আমার আরব দেশে বসবাসকালে অনেকবার এই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে, ‘তুমি কি মুসলমান?’ আমার সম্মতিসূচক উত্তরে ওরা বলেছে ‘তুমি আসলে তিন দিনের মুসলমান আর আমরা খাঁটি মুসলমান।’

যে কোন দেশ, ভৌগলিক অঞ্চল এবং সেখানে বসবাসরত মানবগোষ্ঠীর একটি অতীত আছে এবং সেই অতীতকে অস্বীকারের অর্থ নিজের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা। এই অতীতেরই একটি সিংহভাগ জুড়ে রয়েছে সেই মানবগোষ্ঠীর ঐতিহ্য চেতনা, উৎসব ও সংস্কৃতি। কোন ধর্মই উৎসবকে অস্বীকার করে না বলেই পূজা, বুদ্ধপূর্ণিমা, বড় দিন ও ঈদকে ধর্মীয় সংস্কৃতিতে স্থান দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমার জানামতে কোথাও উল্লেখ নেই অপরাপর সকল সাংস্কৃতিক কর্মকা-কে বিসর্জন দিতে হবে। তাই বাংলা নববর্ষকে বিসর্জন দেয়ার অর্থ বাঙ্গালিত্বকে বিসর্জন দেয়া, নিজেকে বিসর্জন দেয়া।

সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা।

নতুন বছরে জেগে উঠুক বিশুদ্ধ চেতনা

আজ নববর্ষ। নতুন বছর, নতুন দিন। নতুন বছর সবার জীবনে বয়ে আনুক সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি। মানুষ হিসেবে প্রত্যেকেই পুরনো জীর্ণ, হতাশা-ব্যর্থতা মুছে ফেলে জীবন চলতে চায়। আমরাও সেটা প্রত্যাশা করি। সেই সঙ্গে আল্লাহ তায়ালার দরবারে প্রার্থনা করি, নতুন বছরে সব আঁধার কেটে যাক, আসুক আলো, হিংসা-বিদ্বেষ ও হানাহানি টুটে যাক। সত্য-সুন্দরের সম্ভাবনায় শুরু হোক নতুন বছর, নতুন দিন।

এবার এমন এক সময়ে বাংলা নববর্ষের আগমন, যখন মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচনার শীর্ষে। বিষয় যাই হোক, তবুও আশায় বুক বাঁধি, নতুন বছরের আলোয় দূর হবে সব কালো। বাংলা নববর্ষ বাঙালি মুসলমানদের মনে-প্রাণে নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। কারণ বাংলা সন হিজরি সালেরই ঔরসজাত। ইতিহাস বলছে, বাংলাদেশ ভূখ-ে মুসলিম শাসন কায়েম হয়েছে ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির বঙ্গ বিজয়কাল থেকে। পরে খাজনা আদায়সহ রাজকার্যের সুবিধার জন্য মোগল সম্রাট আকবর হিজরির পাশাপাশি বাংলা সন প্রবর্তন করেন এবং অগ্রহায়ণের পরিবর্তে বৈশাখ থেকে বর্ষ গণনা শুরু করেন। বাংলা মাস পায় রাজকীয় মর্যাদা। এর আগে এই ভূখন্ডে মহাধুমধামের সঙ্গে ‘নওরোজ’ উৎসব পালিত হতো।

বাংলা সনের গণনা শুরু হয় ১৫৫৬ ঈসায়ি সালের ১১ এপ্রিল থেকে। তবে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও আমাদের দেশে সরকারিভাবে বাংলা সন-তারিখ ব্যবহার হয় না বললেই চলে। যদিও পহেলা বৈশাখ উদযাপন জাতীয় উৎসবের মর্যাদা পেয়েছে।

নতুন বছরে মানুষের মনে জাগে নতুন আশাবাদ। অতীতের ভুল-ভ্রান্তি, হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে মানুষ নবপ্রেরণায় নতুন করে জীবনকে বিকশিত করতে চায়। এমন ইতিবাচক চেতনার কারণে নানা দুঃখ-বেদনা ও যন্ত্রণার মধ্যে এখনও টিকে আছে আমাদের সমাজ। তবে সমাজকে, জীবনকে প্রগতির কাক্সিক্ষত পথে এগিয়ে নিতে হলে অতীতের বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণ ও সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন।

আসলে একটি বছরের বিদায় ও আগমনে প্রত্যেক বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কর্তব্য হলো, অতীত জীবন নিয়ে চিন্তা-ভাবনা তথা আত্মসমালোচনা ও অনুশোচনার মাধ্যমে জীবনের হিসাব-নিকাশ পর্যালোচনা করা। তাই বছর শেষে আমাদের হিসাব করে দেখতে হবে, কেমন ছিল গত বছরে আমার আমলনামা। যদি যথেষ্ট পরিমাণ নেক আমল করে থাকি, তাহলে আলহামদুলিল্লাহ; আল্লাহ তা কবুল করে নিন। ভবিষ্যতে তা অক্ষুন্ন রাখুন এবং আরও বেশি নেক আমল করার তওফিক দিন। আর যদি মনে হয়, অবস্থা তার উল্টো, গুনাহর পরিমাণ বেশি; তাহলে বছর শেষে আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত হয়ে তওবা-ইস্তেগফারের পাশাপাশি পুরনো পথে ফিরে না যাওয়ার পরিকল্পনা করা উচিত। মানবজীবনে ভালো-মন্দের হিসাব গ্রহণ ও ভবিষ্যৎ জীবনের নতুন সংকল্প ভীষণ জরুরি। কারণ প্রত্যেকটি রাত-দিন, সপ্তাহ, মাস, বছরের আগমন ও প্রস্থান এ সম্পর্কে আমাদের সচেতন করে। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা তাগিদ দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি সেই সত্তা যিনি দিন ও রাতকে পরস্পরের অনুগামী করে সৃষ্টি করেছেন। (কিন্তু এসব বিষয় উপকারে আসে কেবল) সেই ব্যক্তির জন্য যে উপদেশ গ্রহণ করতে ইচ্ছা রাখে কিংবা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে চায়।’ সূরা ফুরকান: ৬২

মুমিন মূলত দুটি আশঙ্কার মাঝে বসবাস করে। একটি আশঙ্কা হচ্ছে, গত জীবন সে জানে না, সেখানে আল্লাহ তার জন্য কী লিখে রেখেছেন। তাই প্রতিটি মানুষ নিজের জীবন থেকেই নিজের জন্য পাথেয় জোগাড় করুক। দুনিয়া থেকেই আখেরাতের সম্বল হাসিল করুক। বুড়ো হওয়ার আগে যৌবন ও সুস্বাস্থ্যকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করুক। সর্বোপরি মৃত্যু আসার আগে জীবনের সদ্ব্যবহার করুক।

মানবজীবনের সময়গুলো অত্যন্ত মূল্যবান। প্রতিটি মুহূর্ত আখেরাতের বিশাল জিন্দেগির জন্য পাথেয় তৈরির এক অপূর্ব সুযোগ। হাদিসে আছে, ‘সে-ই বুদ্ধিমান যে নিজের হিসাব কষে ও পরকালের জন্য তৈরি হয়।’ আর একজন সচেতন মুসলমানের গুণাবলির মাঝে রয়েছে, তার ধর্মীয় মূল্যবোধ, আখেরাতের প্রতি অবিচল বিশ্বাস, আল্লাহর প্রতি ভয় ও ভালোবাসা, ঐক্য, জাতীয়তাবোধ, আত্মত্যাগ, দেশপ্রেম, দায়িত্ববোধ ও দেশকে এগিয়ে নেওয়ায় প্রেরণা। আদর্শ নাগরিকের এ গুণগুলোকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তাই নতুন বছরের সূচনালগ্নে সবার কাছে প্রত্যাশা- আসুন, পুরনো বছরের হিংসা, বিদ্বেষ, শত্রুতা, হানাহানি ভুলে গিয়ে নতুন বছরে নিজেকে নতুনভাবে গড়ে তুলি। পুরনো বছরের পাপগুলো হিসাব করে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। আর নতুন বছরে পুরনো পাপগুলো দ্বিতীয়বার না করার দৃঢ় সংকল্প করি। সূত্র আমাদের সময়.কম

ধর্মকে আঘাত মুক্তচিন্তা নয়, নোংরামি: প্রধানমন্ত্রী

মুক্ত চিন্তা প্রকাশের নামে কোনো ধর্মের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত সহ্য করবেন না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে এলে তাদের উদ্দেশে তিনি একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। কেউ কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করবে না। ধর্মকে আঘাত করে লেখাকে অনেকে মুক্তচিন্তা বলেন। আমার কাছে এটা নোংরামি মনে হয়। আমি যে নবীকে মানি তাকে কটাক্ষ করে কোনো কথা বলা হলে সেটি মানা সম্ভব নয়।
পহেলা বৈশাখ উদযাপন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সকাল থেকে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে দেশবাসীর আনন্দ উদযাপন দেখে ভাল লাগছে। বছরটা সুন্দরভাবে শুরু হয়েছে, এটা যেন অব্যাহত থাকে।
তিনি বলেন, সবসময়ই দুঃশ্চিন্তায় থাকি, কখন কী ঘটে যায়। আশা করি কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই আমরা পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে পারব।শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বলেছি বিকেল পাঁচটার মধ্যে প্রকাশ্য-বহিরাঙ্গনের অনুষ্ঠানগুলো শেষ করতে হবে। এতেই কারো কারো আপত্তি। কিন্ত কেন? যেহেতু আমাদের নিরাপত্তা দিতে হবে, কিছু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই তা সম্ভব। আমাদের একটা দায়িত্ব রয়েছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সেটা কোন পথে কিভাবে দিতে পারবো, তার নির্দেশনা সরকারই দেবে। আর আশা করি সকলেই এই নির্দেশনা মেনে চলবে

তারানা হালিমকে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে হত্যার হুমকি

নববর্ষের ‘গিফট বক্সে’ কাফনের কাপড় পাঠিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। বুধবার রাতে অজ্ঞাতরা মোটরসাইকেলযোগে তার গুলশানের বাসায় একটি প্যাকেট পাঠিয়ে চলে যায় বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।

তারানা হালিম বলেন, ওই প্যাকেটে হুমকি দিয়ে লেখা ছিল, ‘এবার তোর পালা, মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হ। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের নাম ব্যবহার করে ওই প্যাকেট পাঠানো হয় বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী। রাত ৯টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে একজন এসে বাসার দারোয়ানকে প্যাকেটটি দিয়ে যায়।

তারানা হালিম জানান, তিনি গিফট নেন না। আগুন্তক জোর করে দিতে চাইলে দারোয়ান বলেন, ‘দাঁড়ান স্যারকে ফোন করি’। তখন ওই ব্যক্তি কৌশলে মোটরসাইকেল পার্কিং করার কথা বলে প্যাকেটটি দারোয়ানের হাতে দিয়ে চলে যায়।’ লাল কাপড়ে মোড়া ওই প্যাকেটে কাফনের কাপড়, ধুপসহ কাফনের কাজে ব্যবহৃত আনুসঙ্গিক জিনিসপত্র ছিল।

তারানা হালিম বলেন, জোর করে প্যাকেটটি রেখে যাওয়ায় বোমা বা অন্য কিছু আছে কিনা সন্দেহে তারা প্যাকেটটি খোলেন।

তিনি আরও বলেন, আমি বাইরে থেকে বাসায় এসে প্যাকেটটি নিয়ে দেখি নারায়ণগঞ্জের মেয়রের (সেলিনা হায়াৎ আইভি ) নাম ব্যবহার করা হয়েছে।

গত বছরের ডিসেম্বরে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন শুরুর পর বিভিন্নভাবে হুমকি পেয়ে আসছিলেন তারানা হালিম। তিনি বলেন, এসব হুমকিতে ভয় পাই না, একটুও চিন্তিত নই। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানিয়েছেন। তারা একটি জিডি করতে বলেছে।

গুলশান থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে তারা প্রতিমন্ত্রীর বাসায় গিয়েছেন। তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। কারা প্যাকেটটি দিয়েছে তা আশপাশের সিসিক্যামেরার ফুটেজ থেকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। সূত্র আমাদের সময়.কম