৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 258

ত্রিমুখী ষড়যন্ত্রে সেলিম ওসমান

স্টাফ রিপোর্টারঃ টেলিফোন করে এমপি সেলিম ওসমানকে বন্দরের পিআর সাত্তার লতিফ হাইস্কুলে ডেকে আনেন দেলোয়ার চেয়ারম্যান। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, স্কুল কমিটি, এলাকার হেফাজত ভোট এই ৩ চক্রের চক্রান্তে পড়ে যান সেলিম ওসমান। ষড়যন্ত্রে পিআর সাত্তার লতিফ হাইস্কুল কমিটি সভাপতি ফারুকুল ইসলাম ও জেলা জাপা সভাপতি আবু জাহেরের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে সবচেয়ে বেশি। আর তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, জাতীয় পার্টির আরেক নেতার ভাতিজা টগর। যে মাইকে এলাকাবাসীকে ডেকে এনেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার অনেক ব্যক্তি এসব কথা জানিয়েছেন। আর স্কুলে পৌঁছে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত না নিতে পেরে উপস্থিত জনতাকে সামাল দিতেই সেলিম উসমান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে চড় মারেন। ধর্ম অবমাননার বিষয়টি একটি গুজব।

বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, এমপি সেলিম ওসমানকে বন্দর ঘটনাস্থলে ডেকে নেওয়ার মিশনে এ দুজনের সঙ্গে সম্প্রতি জাতীয় পার্টিতে যোগদানকারী কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আসন্ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন দেলু প্রধানও জড়িত। সংশিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সেদিন প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে পিটুনিরও মূল নায়ক কলাগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান। স্কুলের মিটিং চলার সময় সভাকক্ষের দরজা খুলে বাইরে থেকে কিছু লোক নিয়ে ঢুকে দেলোয়ার প্রধান। তারাই তাকে পিটুনি দেয়। পরে তারাই বাইরে গিয়ে প্রচার করে শিক্ষক ধর্ম অবমাননা করেছেন। মাইকে এই ঘোষণা দেয়। দেলোয়ার প্রধান এবার কলাগাছিয়া ইউনিয়নে পুনরায় নির্বাচিত হতে লাঙ্গল মার্কার প্রার্থী হয়েছেন। সেদিন ধর্মের নামে উন্মত্ত চার-পাঁচ হাজার লোক স্কুল মাঠে জড়ো করতে আবু জাহের ও ফারকুল ইসলামের সঙ্গে দেলোয়ার হোসেন ও এমপি সেলিম ওসমানকে বন্দরে ডেকে নেওয়ার ষড়যন্ত্রে যোগ দেন। একই ষড়যন্ত্রে এরা তিনজন একত্রিত হলেও তাদের উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন ভিন্ন। যেমন স্কুল কমিটি সভাপতি ফারুকের উদ্দেশ্য ছিল, তার ছোটবোন স্কুল শিক্ষক পারভিন আক্তারকে প্রধান শিক্ষক বানানো। এ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন বর্তমান প্রধান শিক্ষককে তাড়ানো। এ কারণে স্কুল সভাপতি ফারুক একটি অজুহাত খুঁজছিলেন। ৮ মে রিফাত নামের এক ছাত্রকে মারধর করায় ফারুক অজুহাত পেয়ে যান। এবার উদ্দেশ্য কার্যকর করতে সে আবু জাহেরের সঙ্গে হাত মেলান। এতে জাপা নেতা আবু জাহেরের স্বার্থ পারভিন আক্তারকে প্রধান শিক্ষক করতে পারলে ভোটপ্রাপ্তি এবং এলাকায় নিরঙ্কুশ প্রভাব প্রতিষ্ঠা হয়। ওদিকে, চার-পাঁচ হাজার ভোটার স্কুল মাঠে উপস্থিত দেখে দেলোয়ার চেয়ারম্যান মনে করেন, এমপি সাহেবকে নদীর এ পারে এনে তাকে দিয়ে যদি হেড মাস্টারকে শায়েস্তা করা যায়। এই লোকগুলো যেহেতু ধর্ম অবমাননার ঘোষণায় সমবেত হয়েছে। তাদের কাছে হেডমাস্টারকে শায়েস্তা করে ধর্ম রক্ষার নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যায় এবং এই নিয়ে যদি এমপি সাহেব সমবেত জনতাকে আসন্ন নির্বাচনে তাকে ভোট দিতে অনুরোধ করেন, তাহলে তিনি নির্বাচিত হতে পারবেন। মূলত, এ উদ্দেশ্যেই দেলোয়ার প্রধান ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে হাত মেলান।

ইবাদত বন্দেগিতে শবে বরাত পালিত

ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে রোববার মহিমান্বিত রাত ‘শবে বরাত’ পালিত হয়েছে। সারা দেশে মসজিদে বা ঘরে রাত জেগে ইবাদত বন্দেগি করছেন মুসুল্লিরা। অনেকে দিনের বেলা রোজাও রেখেছিলেন। অনেকে মসজিদের বাইরে বসে থাকা গরিব-অসহায় মানুষদের সহায়তাও করেছেন।

মহিমান্বিত এই রাতে সারা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পরম করুণাময় আল্লাহর অনুগ্রহের আশায় নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, জিকিরে মগ্ন ছিলেন। জীবনের পাপ মার্জনা এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করেন।

ইবাদত-বন্দেগির পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি হরেক রকমের হালুয়া, ফিরনি, রুটিসহ উপাদেয় খাবার তৈরি হয়েছে। এসব খাবার বিতরণ করা হয় আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও গরিব-দুঃখীর মধ্যে। সন্ধ্যার পরে অনেকে কবরস্থানে গিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত আপনজনদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন।

শপথ অনুষ্ঠানে মমতার আমন্ত্রণ, শেখ হাসিনার না

শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদে দ্বিতীয় দফায় শপথ নেবেন মমতা ব্যানার্জি। সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হবার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। কিন্তু ওই দিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচী থাকায় সে অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না তিনি।

তবে, দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের একটি সূত্র বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী আসতে না-পারলেও তার মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ কোনও সদস্যকে কলকাতার ওই অনুষ্ঠানে পাঠাবেন। গত ১৯ মে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী ফল প্রকাশের পর বিপুল গরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যের ক্ষমতায় ফিরেছিল মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস।

সে দিন দুপুরেই নিজের বাসভবনে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের জন্য তিনি যে সাংবাদিক সম্মেলন করেন, সেখানেই মিস ব্যানার্জি বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রিত্বের এই মেয়াদে তিনি প্রতিবেশী সব রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও বন্ধুত্বপূর্ণ করে তুলতে চান।

অপরাধী কে এমপি সেলিম ওসমান নাকি শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত?

এই মুহুর্তে দেশের প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছেন শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত এবং সেলিম ওসমান এমপি। শিক্ষককে সেলিম ওসমান চরম অপমান করেছেন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন শ্যামল কান্তি।

বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ চলছে। অনেকে হাস্যকর প্রতিবাদও দেখাচ্ছেন। শ্যামল কান্তি বনাম সেলিম ওসমানের ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক খেলাও শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরেছেন। এখন বিষয়টি তিনি সমাধান করবেন এমন বিশ্বাস অসংখ্য জনতার।

গ্রামে একটি প্রবাদ বাক্য আছে। সেটি হলো বিনা বাতাসে গাছের পাতা নড়ে না। এমপি সেলিম ওসমান যা করেছেন সেটি কেউ সমর্থন করতে পারে না। তবে শিক্ষক শ্যামল কান্তি কী কোনও অপরাধ করেননি? সে বিষয়টি নিয়ে কার কোনও কথা নেই। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তা অস্বীকার করেছেন শ্যামল কান্তি। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, একজন ছাত্রকে তিনি মারধর করেছেন। অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে মাথায় পানি ঢেলে সুস্থ করেছেন। চিকিৎসা দিয়েছেন। ছাত্রের মার কাছে দু:খ প্রকাশ করেছেন।

এখন প্রশ্ন হল একজন প্রধান শিক্ষক হয়ে এভাবে একজন শিক্ষার্থীকে মারধর করাটা কী অপরাধ নয়? শিক্ষার্থীর অপরাধ সে শিক্ষকের ডাকে সাড়া দিয়ে দাড়াঁয়নি। ছাত্র রিফাত বলেছে সে শুনতে পায়নি তাই দাড়ায়নি।

আমার বিশ্বাস সেলিম ওসমান এমপি না হলে বিষয়টি নিয়ে এভাবে হইচই হত না। সেলিম ওসমান সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি বিষয়টি নিয়ে ক্ষমা চাইবেন না। এখন সমাধান কী হতে পারে? যারা সেলিম ওসমানের বিচার চাইছেন তাদের কেউ আদালতে যেতে পারেন। অপরদিকে শিক্ষার্থীকে মারধর করার অপরাধে শিক্ষক শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধেও পাল্টা মামলা করতে পারেন কেউ। আদালতই সিদ্ধান্ত নেবেন।

একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই পারে ওসমান পরিবারের সিদ্ধান্ত নিতে

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, ‘একমাত্র প্রধানমন্ত্রীই পারে ওসমান পরিবারের ব্যাপারের সিদ্ধান্ত নিতে। সারা দেশ শ্যামল কান্তি ভক্তের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের এভাবেই দাঁড়াতে হবে।’

আজ শুক্রবার সকালে যশোর প্রেসক্লাবে ‘চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অবসানে সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় শাহরিয়ার কবির এসব কথা বলেন।

শাহরিয়ার কবির বলেন, যশোরের চৌগাছা, অভয়নগরসহ কয়েকটি স্থানে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে সামনে রেখে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে পত্রিকায় খবর এসেছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক এবং দেশের ভাবমূর্তির বিষয়। এই ঘটনাগুলো সরকারের বিরুদ্ধে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়গুলোর প্রতিকারের জন্য আলাদা সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও পৃথক সংখ্যালঘু কল্যাণ মন্ত্রণালয় করতে হবে। এ ছাড়া জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশনও করতে হবে, যা ভারত, এমনকি পাকিস্তানেও আছে। এগুলো করতে পারলে সংখ্যালঘুরা যেভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে, তা চিহ্নিত করে সমাধান করা সম্ভব হবে।’

মতবিনিময় সভায় ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সম্পাদকম-লীর সদস্য মমতাজ লতিফ, সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

গণজাগরণ মঞ্চ, যশোরের আহ্বায়ক কাজী আবদুস শহীদ লালের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের সভাপতি ডি এম শাহিদুজ্জামান, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দীপংকর দাস রতন, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি ইকবাল কবীর জাহিদ, কমিউনিস্ট পার্টির জেলা সেক্রেটারি গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

মতবিনিময় সভা শেষে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতারা যশোরের চৌগাছায় সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে শাহরিয়ার কবির বলেন, মতবিনিময় সভা থেকে পাওয়া তথ্য ও ঘটনাস্থল পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা নিয়ে তাঁরা ঢাকায় ফিরে পুলিশের মহাপরিদর্শক ও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বসবেন।

আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষক শ্যামল কান্তির ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে-তাহরিকে খাতমে নবুওয়্যাত বাংলাদেশ

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছনার ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই ইসলামকে কটূক্তির বিষয়টি চাপা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশে তাহরিকে খাতমে নবুওয়্যাতসহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতারা। তারা বলেছেন, আল্লাহকে কটূক্তি করার সূত্র ধরেই ওই ঘটনার সূত্রপাত। এ কারণে ওই শিক্ষকের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে। একই সময়ে শিক্ষককে পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বাতিলসহ শিক্ষামন্ত্রী পদত্যাগ না করলে নারায়ণগঞ্জ থেকে হরতাল, অবরোধসহ কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা করা হবে।
শুক্রবার দুপুরে জুমআর নামাজের পর শহরের ডিআইটি মসজিদের সামনে বঙ্গবন্ধু সড়কে ‘নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের মুসলিম জনতা’ ইসলামকে কটূক্তির প্রতিবাদে ওই সমাবেশে এই আলটিমেটাম দেওয়া হয়। পরে একটি মিছিল শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এদিকে জুমআর নামাজের পর থেকেই শহরের বিভিন্ন মসজিদ থেকে মুসল্লিরা মিছিল নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে ওই সমাবেশে যোগ দিতে থাকে। দুপুর ২টা থেকে বিকেল সোয়া ৩টা পর্যন্ত ওই সমাবেশে বৃষ্টির মধ্যেই কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত হন।

‘যে ঘটনা নিয়ে সূত্রপাত আমরা ইতোমধ্যে সেই ছেলের (রিফাত) সঙ্গে কথা বলেছি। সে মসজিদে বসে আমাদের কাছে স্বীকার করেছে যে- ইসলাম নিয়ে ওই শিক্ষক কটূক্তি করেছেন। তাই নারায়ণগঞ্জের মুসলিম জনতা এ ব্যাপারে আর বসে থাকছে না। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যদি শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের শাস্তি, শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ এবং শিক্ষক পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত বাতিল না হয় তাহলে নারায়ণগঞ্জে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে সারাদেশ অচল করে দেওয়া হবে।’

আমি সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করলাম-সেলিম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ থেকে ফিরে : সংসদ সদস্য পদসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদধারী সেলিম ওসমান সেসব পদে দায়িত্ব পালন না করার ঘোষণা দিয়েছেন।

নারায়গণগঞ্জ পিয়ারা সাত্তার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের কান ধরে উঠবোস ঘটনাকে কেন্দ্র করে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সেলিম ওসমান এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। ভাল কথা। তিনি তো মন্ত্রী। আমি কিন্তু শিক্ষককে বরখাস্তের কথা বলিনি। বলেছিলাম, তদন্ত করতে। প্রয়োজনে বরখাস্ত করা যেতে পারে। এটা তো কোনো সাংবাদিক ভাইরা লেখেননি। তবে আমি বলে দিচ্ছি, আমি সেলিম ওসমান সংসদ সদস্য, বিকেএমইর সভাপতি, আরও কিছু ব্যবসায়িক সংগঠনের উচ্চপদে আছি। আমার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে। এই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি সেসব পদে দায়িত্ব পালন করব না। এটাকে বলে পদত্যাগ। আমি পদত্যাগ করলাম। সংসদেও যাব না, যতদিন তদন্ত শেষ না হবে।’

নারায়গণগঞ্জ ক্লাবে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়েছিল।

সরকারি তদন্ত কমিটি শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে ‘ধর্মীয় অবমাননার’ অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পায়নি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সেলিম ওসমান বলেন, তদন্ত কমিটির কেউ তো আমার সঙ্গে কথা বলেনি। শিক্ষামন্ত্রী তো আমার সঙ্গে কথা বলেননি। শিক্ষামন্ত্রী তার মতো করে কথা বলেছেন। আমার কাছে যথেষ্ট প্রমাণ আছে- ওই শিক্ষক কটূক্তি করেছেন। তিনি নিজে আমার কাছে অপরাধ স্বীকার করেছেন। তার পরিবার আমার কাছে লিখিত দিয়েছে’।

সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রে ফেঁসে যেতে পারেন বিএনপির একাধিক নেতা

ইসরায়েলের লিকুদ পার্টির নেতা মেনদি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের কথা স্বীকার করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী। তবে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সহযোগিতায় বাংলাদেশে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে আলোচনা না হলেও সংখ্যালঘুদের বিষয়ে কাজ করার জন্য দুজনের মধ্যে আলোচনা হয় বলে দাবি করেছেন তিনি। এদিকে তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, জিজ্ঞাসাবাদে ষড়যন্ত্রের কথা সরাসরি কবুল না করলেও ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যে তার যোগাযোগ দীর্ঘদিনের তা তারা নিশ্চিত। আর ইসরায়েলের সঙ্গে তিনি যে সংযোগ রক্ষা করতেন তা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সম্মতি নিয়েই।

তদন্ত সূত্রগুলো জানায়, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টের সঙ্গে আসলাম চৌধুরীর কতবার ও কোথায় কোথায় বৈঠক হয়েছে এবং তাতে কারা উপস্থিত ছিলেন এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বৈঠকে কী কী আলোচনা হয়েছে এবং সিদ্ধান্তের বিষয়টিও বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদে। তবে শুধু আসলাম চৌধুরী নন, ষড়যন্ত্রের সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতারা জড়িত বলে সন্দেহ কর্মকর্তাদের। যদিও জিজ্ঞাসাবাদে আসলাম চৌধুরীর জবাব হচ্ছে, ভারতের একটি সংগঠনের দাওয়াতে তিনি আগ্রার ওই সেমিনারে যোগ দিয়েছিলেন। ওই সেমিনারেই মেনদির সঙ্গে তার প্রথম পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে আলোচনা হয়। আসলাম চৌধুরী দাবি করেন, রাজনীতির বাইরেও নিজে ব্যবসায়ী হওয়ার কারণে ইসরায়েলের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ব্যবসা করার বিষয়টিও উঠে আসে তাদের আলোচনায়।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার জানান, রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদে আসলাম চৌধুরী গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের সঙ্গে আসামির দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে তিনি জানান, মোসাদের সঙ্গে বৈঠকে আসলাম চৌধুরী ছাড়াও আর কারা কারা উপস্থিত ছিলেন এবং কতবার বৈঠক হয়েছে এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রবিবার রাতে আসলাম চৌধুরী ও তার সহযোগী আসাদুজ্জামান মিয়াকে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির নেতা মেনদি এন সাফাদির সঙ্গে ভারতে বসে বাংলাদেশে বর্তমান সরকারকে উৎখাতের উদ্দেশে ষড়যন্ত্রমূলক বৈঠক করেছেন। তাদের দুজনের একসঙ্গে তোলা ছবিও রয়েছে। মেনদি সাফাদি ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট বলে কথিত আছে। এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, বহির্বিশ্বে দলটিকে কোণঠাসা করার উদ্দেশেই আসলামের সঙ্গে সাফাদির ছবিকে বড় করে দেখানো হচ্ছে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, আসলাম চৌধুরীর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় অন্য কারও নাম পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তাদের কাছে খবর রয়েছে, ব্যবসার আড়ালে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন আসলাম চৌধুরী। মোসাদ এজেন্টের সঙ্গে তার একাধিক বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিএনপিকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়।

আসলামের সঙ্গে দেখা হয়েছিল : ইসরায়েলি রাজনীতিক মেনদি এন সাফাদি স্বীকার করেছেন যে ভারতে তার সঙ্গে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর দেখা হয়েছিল। সেই সঙ্গে দাবি করেছেন, তাদের মধ্যে কোনো গোপন বিষয়ে কথা হয়নি। ইসরায়েল থেকে মঙ্গলবার টেলিফোনে বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি, সেখানে সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে কথা বলেছি, তাও সেটা প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে। আমরা বাংলাদেশে সামরিক অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করছিলাম বা সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছিলাম এর চেয়ে হাস্যকর কিছু হতেই পারে না। তিনি বিবিসি বাংলাকে আরও বলেন, আগ্রার যে অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে আসলাম চৌধুরীর সম্প্রতি দেখা হয়েছিল তাতে তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ভারতে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির যুব শাখা। প্রতিবেশী দেশের একটি রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে আসলাম চৌধুরীও সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন। দুজনের আগে থেকে কোনো পরিচয় ছিল না। একই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত দুই অতিথি হিসেবে তাদের মধ্যে স্বাভাবিক আলাপ হয়েছিল মাত্র। উনি শুধু ভারতে এসে একজন ইসরায়েলির সঙ্গে কথা বলেছেন। আসলাম চৌধুরী তার দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন নিয়ে সরব হয়েছেন বলেই তাকে হেনস্তা করা হচ্ছে বলে আমার ধারণা। তিনি বলেন, আমি সারা পৃথিবীতেই সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কথা বলি। তাদের জন্য লড়ি। বাংলাদেশও তার কোনো ব্যতিক্রম নয়। ইত্তেফাক

আ.লীগের ১০ বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী বহিষ্কার

দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ১০ চেয়ারম্যান প্রার্থীকে বহিষ্কার করেছে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ।

মঙ্গলবার (১৭ মে) রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃতরা হলেন- দেওয়ানগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাসুদুর রহমান, দেওয়ানগঞ্জ সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সামিউল হক, চর আম খাওয়া ইউনিয়নের সভাপতি আজিজুর রহমান আকন্দ, দেওয়ানগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম, বাহাদুরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আল আমিন, ডাংধরা ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান, হাতিভাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য শাহাজাহান আলী আকন্দ, পাররামরামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক লেমন সিদ্দিকী, ইউনিয়ন কৃষক লীগের আহ্বায়ক সুরুজ্জামান, কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসতিয়াক হোসেন দিদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিকে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৮ মে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উল্লেখিত ব্যক্তিদ্বয় দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্ব-স্ব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদের বহিষ্কার করা হয়।

নির্বাচন হতে পারে ২০১৮ সালে, অংশগ্রহণে অযোগ্য হবেন বিএনপির অনেক নেতা

সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার ব্যাপারে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে। এই নির্বাচন সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত না করছে ততক্ষণ পর্যন্ত সরকারের উপর থেকে চাপ কমানো হবে না। এই চাপ বিরোধী রাজনৈতিক দল, জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের। পাশাপাশি ভোটাররাও চাইছেÑ তারা ভোট দিতে পারবে এমন একটা নির্বাচন হোক।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন, তিনটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচন ও সব শেষে পৌরসভা নির্বাচন। এই সব নির্বাচনের ব্যাপারে নানা মহল থেকেই নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু না হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তারপর সব দিকের চাপের কারণে সরকার নিজেও বুঝতে পারছেÑ নির্বাচন একটা করতে হবে। সেটা হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ জন্য সরকারও এমন একটি নির্বাচন করতে চাইছে যে নির্বাচনটাকে আন্তর্জাতিক মহলের মেনে নিতে হবে যেÑ নির্বাচন সুষ্ঠুু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচনে বিএনপির র্শীষ নেতা যারা মামলার আসামি তারা যেন কেউ অংশ নিতে না পারেন সেই চেষ্টাও চলছে। সরকারের সব পরিকল্পনা ঠিক থাকলে আগামী ২০১৮ সালে একটি নির্বাচন হবে। ওই নির্বাচন কোন মাসে হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী ২০১৯ সালের ৪ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। সংবিধান মতে সরকারের মেয়াদ পূর্তির তিন মাস আগে সরকার নির্বাচন করতে পারে। সেই হিসাবে সরকার ২০১৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা না করে আগামী ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে একটি নির্বাচন করার পরিকল্পনা নিয়েছে। সরকার মনে করছে, এতে আগাম নির্বাচনও করা হবে আবার ওই সময়ে নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে। এই কারণে নির্বাচন কমিশন নিয়ে যে বিতর্ক রয়েছে সেটা সরকারের সামনে থাকবে না। আন্তর্জাতিক মহলেরও চাপ থাকবে না। এমনভাবে নির্বাচন করা হবে যাতে সবাই মনে করে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। এ জন্য সরকার সব করবে।

বিশ্বস্ত সূত্র আরও জানায়, শেখ হাসিনার ইচ্ছে হচ্ছে আগামী ২০২১ সালে তিনি বাংলাদেশের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করবেন তার সরকারের আমলে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন করবেন। আওয়ামী লীগ এই দুই অনুষ্ঠানের পাশাপাশি দেশের উন্নয়নও করতে চাইছে। ২০১৮ সালে পদ্মাসেতু উদ্বোধন করতে চাইছে। এত সব কাজের সাফল্য কোনোভাবেই বিএনপিকে নেওয়ার সুযোগ দিতে চায় না আওয়ামী লীগ। এ জন্য আরও একটি মেয়াদের জন্য যেমন করেই হোক তাদেরকে ক্ষমতাসীন হতেই হবে। আরেক মেয়াদে ক্ষমতায় আসার জন্য যত ধরনের কৌশল করা দরকার সবই সরকার করবে। এখন যে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক কাজগুলো করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারে একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রীও কাজ করছেন। তাকে বিশেষভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আইনিভাবে এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যার ফলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর একাধিক মামলায় কমপক্ষে দুই বছরের শাস্তি নিশ্চিত হয়। তারা কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা না রাখেন। তাদের মামলা কেবল নিম্ন আদালতেই শেষ হলে হবে না, হাইকোর্টে ও আপিল বিভাগেও যেন মামলা শেষ করা যায় সেই হিসাবে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, তাদেরকে যে আমরা পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনের বাইরে রাখার জন্য এগুলো করছিÑ বিষয়গুলো এমন নয়। তারা যে কৃতকর্ম করেছেন এর বিচার হওয়া প্রয়োজন। আর সেজন্য বিচার করতে হলে অবশ্যই তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। সেটাই আমরা করছি। এমনতো নয় যে তারা অপরাধ করেনি। তারা তো অপরাধ করেছেন। যদি তারা অপরাধ না করে থাকেন তাহলে তারা আদালতে প্রমাণ করুক যে তারা অপরাধ করেননি। আইনের বিচারে তারা নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে এলে আমাদের কিছুই বলার থাকবে না। কিন্তু আমরা জানি তারা আইনের বিচারে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবেন না। এই কারণে তারা যতই চেষ্টা করুক না কেন তাদেরকে এই ব্যাপারে আইনের যে বিধান সেই বিধানে শাস্তি পেতেই হবে। জনগণ এটা দেখতে পাবে।

তিনি বলেন, আমরা তাদের প্রতি আক্রোশের বশে কোনো কাজ করছি না। বরং তারা জানে যে মামলা নিষ্পত্তি হলে তাদের শাস্তি হবে। এ জন্য তা ঠেকাতেও কালবিলম্ব করতে বার বার নানা আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে। এতে কোর্টের সময় নষ্ট হচ্ছে। এটা করে অপরাধ ঢাকা যাবে না।

এদিকে বিএনপির একটি ঘনিষ্ট সূত্র বলছে, বিএনপি চেয়ারপারসন, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, মহাসচিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবÑ এরা অপরাধ না করলেও এদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা করা হয়েছে। এই মামলাগুলো সরকার ইচ্ছা করেই করেছে। কারণ সরকার আবারও বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে চাইছে। সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে বিএনপির সিনিয়র সবাইকে মাইনাস করে একটি নির্বাচন করা। তাদেরকে বাদ দিয়ে ও নির্বাচনের বাইরে রেখে অন্য যারা থাকবে তাদেরকে ম্যানেজ করে নির্বাচনে নেওয়া। ওই নির্বাচনে বিএনপিকে কয়েকটি আসন দিয়ে বিরোধী দলে রাখা। আর না হলে একটি দল হিসেবে কয়েকজন সংসদ সদস্য দিয়ে তাদেরকে সংসদে রাখা। যাতে তাদের বাইরে রাখার কারণে এখনকার মতো কোনো চাপে পড়তে না হয়।

বিএনপির প্রথম সারির কয়েকজনের শাস্তি সরকার নিশ্চিত করতে পারলে বিএনপি ক্ষমতাসীন হতেও পারবে না। আর এতে করে সরকার বিএনপিকে সংসদে রাখলে আন্তর্জাতিক মহলও কোনো চাপ দিতে পারবে না। কারণ তারা দেখবে যে দুর্নীতির কারণে তাদের শাস্তি হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের জন্য আগামী দিনে দেশ পরিচালনা করা সহজ হবে।

সূত্র জানায়, বিএনপি যতই চেষ্টা করুক আর আন্তর্জাতিক মহল যতই সরকারের ওপর, প্রধানমন্ত্রীর ওপর এবং আওয়ামী লীগের ওপর একটি আগাম নির্বাচন করার জন্য চাপ তৈরি করুক তাতে কোনো লাভ হবে না। কারণ এতে সরকার বা শেখ হাসিনা তার সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন করবেন না। তিনি তার পরিকল্পনামতো কাজ করবেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ এবার ক্ষমতা হারালে আগামীতে ক্ষমতায় আসার সুযোগ অত্যন্ত ক্ষীণ বলে সরকার নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে ইতিহাসে কোনো স্বৈরশাসকদের ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। তিনি আরও বলেছেন, ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের পর জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে শাসন ক্ষমতায় এসে বর্তমান ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

তিনি বলেন, সরকারকে ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করতে হবে। আমাদের নামে মিথ্যা ও রাজনৈতিক যেসব মামলা দেওয়া হয়েছে এগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। কারণ মানুষ বুঝতে পারছে সরকারের অবস্থা। সরকার এত পরিকল্পনা না করে সত্যিকার অর্থে একটি গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিক আমরা ২০০’র বেশি আসন পেয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসব। এটা সরকার জানে বলেই ভয় পায়। আর ভয় পায় বলেই ওই ধরনের একটি নির্বাচন দেবে না। আবারও তারা ৫ জানুয়ারির মতো একটি নির্বাচন করার চেষ্টা করবে। এবার হয়তো কৌশলে তারা কিছুটা ভিন্নতা আনবে। আগে তারা বিএনপিকে বাইরে রেখে যে ভুল করেছিল এবার হয়তো সেই ভুল করবে না। তবে বিএনপি ভাঙার যে ষড়যন্ত্র চলছে তা সফল হবে না। বিএনপি ভাঙা এত সহজ হবে না। এর আগে যারা এই চেষ্টা করেছে সবাই ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপির ভেতরকার কোনো কোনো নেতাও বাইরে গিয়েছে। দল করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হতে পারেনি। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে এতে করে মানুষের মধ্যে ভোট না দেওয়ার প্রবণতা তৈরির চেষ্টা করছে। আর প্রার্থীদের মধ্যে বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ তৈরি করছে। এই সংস্কৃতি আগামী দিনের জন্য ভালো হবে না। এখন যেভাবে চলছে এইভাবে তো চলতে পারে না। এখানে পরিবর্তন দরকার। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আহমেদ আজম খান বলেন, সরকার আমাদের দুইশ’ নেতাকে আগামী নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে পারেন বলে আমাদের কাছে খবর রয়েছে। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলেই হয়তো সরকার নির্বাচনের চিন্তা করবে। এই জন্য আমাদের নেতাদের নামে এত মামলা করা হচ্ছে।