কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষনা করুন–প্রধানমন্ত্রীকে এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী

900

নিউজ প্রতিদিন:তাহরিকে খাতমে নুবুওয়্যাত বাংলাদেশের আমির আল্লামা ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী বলেছেন, দ্বীন ইসলামের দাওয়াতে আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে নবী ও রাসূলগণকে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। নুবুওয়্যাতের ধারাবাহিকতায় সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী ও রাসূল হিসাবে আখেরী নাবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর আগমন ঘটে আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে। ওনার আগমনের মাধ্যমে আজ থেকে দেড় হাজার বছর আগে আল্লাহ তায়ালা নুবুওয়্যাত ও রিসালাতের দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন। ওনার পরে আজ পর্যন্ত পৃথীবিতে অবশ্যই কোন প্রকারই নাবী কিংবা রাসূল আসে নাই এখনো নাই এবং কিয়ামত পর্যন্ত আসবে না। এ আক্বিদা বা বিশ্বাসকেই বলা হয় আক্বিদায়ে খাতমে নুবুওয়্যাত। এই আক্বিদায়ে খাতমে নুবুওয়্যাত হল ইসলামি আক্বিদার মূল ভিত্তি। এই আক্বিদা অস্বীকারের দ্বারা গোটা কুরআন কারিমকেই অস্বীকার করা হয়। তাই এই আক্বিদা খাতমে নুবুওয়্যাত যে বা যারাই বিশ্বাস করবে না নিঃসন্দেহে তারা কাফের ও অমুসলিম । তাদেরকে যারা কাফের বলবে না তারাও কাফের ও অমুসলিম । যেহেতু কুখ্যাত কাফের কাদিয়ানী সম্প্রদায় আক্বিদা খাতমে নুবুওয়্যাতকে বিশ্বাস করে না তাই তারা কাফের ও অমুসলিম। তাদেরকে রাষ্ট্রীয় ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবী আদায় করা সকল মুসলমানদের ঈমানী ও নৈতিক দায়িত্ব। আর সে দাবী পূরণ করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। শুক্রবার ( ১৪ ফেব্রুয়ারী ) সকালে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে কুখ্যাত কাফের কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয় ভাবে অমুসলিম ঘোষনার দাবীতে আন্তর্জাতিক খাতমে নুবুওয়্যাত ইসলামী মহা সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন। সম্মেলনে প্রধান অতিথী শায়খুল ইসলাম, আল্লামা ক্বারী হাফেজ তৈয়্যব সিদ্দিকী আল-কোরাইশী (ইউ.পি ভারত)।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্যে করে বলেন,আপনার পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭১’র যুদ্ধের পর বলেছিলেন যে,বাংলাদেশের কাদিয়ারীদেরকে কাফের ঘোষনা করবেন। কিন্তু তার এ কথার বাস্তবায়নের আগে মারা যান। তিনি আরও বলেন,আপনার পিতা বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা এবং জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকারম প্রতিষ্ঠা করে দেশের মুসলমানদের যে সুনাম অর্জন করেছেন ঠিক তেমনীভাবে কাদিয়ানীদেরকে অমুসলিম ঘোষনা করে আপনিও দেশের মুসলমানদের মনের কোঠায় ঠাই নিন।
সভাপতির বক্তব্যে পীর সাহেব জৌনপুরী আরো বলেন ইসলামের সোনালী যুগে আর্থাৎ প্রায় দেড় হাজার বৎসর আগে দ্বীনের পক্ষে কাফের ও মুশরেকদের পরিচালিত সম্মিলিত যুদ্ধে ১০ বছরে ইসলামের পক্ষে ও বিপক্ষে মোট নিহত হয়েছিল মাত্র ১০১৮ জন, অথচ হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) যামানায় ইয়ামানে কুখ্যাত মুসায়লামাতুল কাজ্জাব যখন মিথ্যা নুবুওয়্যাত দাবী করেছিল তখন এই ভন্ড নবী মুসায়লামাকে নির্মুল করতে ২৪০০ সাহাবী শাহাদাত বরণ করেছেন। যার মধ্যে ৭০০ সাহাবী কুরআনে হাফেজ ছিলেন। ভন্ড মুসায়লামা ও তার অনুসারীদের ধ্বংসের মাধ্যমে হযরত আবু বকর (রাঃ) কর্তৃক সে সময় উম্মাতকে আক্বিদায়ে খাতমে নুবুওয়্যাত বিরুধী চক্রান্ত থেকে রক্ষা করেছিলেন। যুগে যুগে খাতমে নুবুওয়্যাতের আক্বিদার বিপক্ষে মিথ্যা নুবুওয়্যাত দাবীদারদের উদ্ভব দেখা দিলে সে যুগের মুসলমানগণ তাদের ব্যপারে এক মূহুর্তের জন্যেও আপোষ করনেনি। সকল চক্রান্ত সহ তাদেরকেও নির্মূল করেছেন । ইসলামের মূল ভিত্তি আক্বিদায়ে খাতমে নুবুওয়্যাতের বিপক্ষে সবচেয়ে জঘন্য চক্রান্ত করেছে কুখ্যাত ইংরেজ বেনীয়ারা। কাদিয়ানের কুখ্যাত কাফের কাজ্জাব মির্জা গোলাম কাদিয়ানীর বিরুদ্ধে সমসাময়িক আলেম ওলামাদের মেহনত ও প্রচার প্রচারণার কারণে ইংরেজদের মদদ পুষ্ট হয়েও মির্জা গোলাম কাদিয়ানীর সকল চক্রান্ত নস্যাৎ হয়ে যায়। কাদিয়ানের কাজ্জাব মির্জা গোলাম শয়তান কাদিয়ানী কুখ্যাত কাফের সে লানত প্রাপ্ত হয়ে জাহান্নামের কুকুরে পরিনত হয়েছে। কাদিয়ানীরা যেহেতু তার অনুসারী সেহেতু তারাও অমুসলিম ও কাফের। কাদিয়ানীরা ইসরাইল ও ব্রিটেনের মদদে খাতমে নুবুওয়্যাতের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। সরকার, বিরোধী দল, মিডিয়া সহ বিভিন্ন স্থানে ঘাপটি মেরে বসে আছে। কাদিয়ানীরা ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে তারা কুফরী মতবাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে আর.এফ.এল, প্রাণ পাবলিক স্কুল নামে ফ্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরী করেছে। মানুষকে ধোকা দিয়ে কাফের ও অমুসলিম বানাতে সারা দেশে প্রায় ৮৪ টি সেন্টার তৈরি করেছে। অতঃপর ১৪ কোটি মুসলমানদের প্রানের দাবী অনতিবিলম্বে বাংলাদেশে কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয় ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। উক্ত আন্তর্জাতিক মহা সম্মেলনে পীর সাহেব জৌনপুরী ৪ দফা দাবী তুলে ধরেন । @ রাষ্ট্রীয় ভাবে কাদিয়ানীদেরকে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে @ কাদিয়ানী সম্প্রদায় ইসলাম ও মুসলমানদের কোন পরিভাষা যেমন আহমদি ও মুসলিম এরকম শব্দ ব্যবহার করতে পারবেনা । সে জন্য সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে @ কাদিয়ানীরা তাদের উপাসনালয়কে মসজিদ বলতে ও লিখতে পারবে না । কারণ তারা অমুসলিম আর অমুসলিমদের উপাসনালয় মসজিদ হতে পারে না @ কাদিয়ানীদের ব্যবসার আয় ইসলাম ও মুসলমানদের বিপক্ষে খরচ হয় বিধায় তাদের পন্য যেমন- প্রাণ, সিজান, আর.এফ.এল., প্রথম আলো, ডেইলি ষ্টার, ভিষণ এবং কাদিয়ানী সম্পাদক যেসব পত্রিকায় আছে, যেমন-কালের কন্ঠ সহ অন্য যেসব পত্রিকা তা নিষিদ্ধ ও বাজেয়াপ্ত কিংবা রাষ্ট্রয়াত্ব করতে হবে।
উক্ত মহা সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন – আল্লামা সুমামা আহমাদ সিদ্দিকী (নাদওয়াতুল উলামা লাক্ষনৌ) ভারত, আল্লামা সাইয়্যেদ এমদাদুল্লাহ আব্বাসী জৌনপুরী, আল্লামা ক্বারী হাবিবুল্লাহ বেলালী, আল্লামা সাইয়্যেদ এহসান উল্লাহ আব্বাসী জৌনপুরী, আল্লামা ড. সৈয়দ হাসান আল-আজহারী, আল্লামা পীর মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত্ব-তাহেরী, আল্লামা মুফতি ড. হুজ্জাতুল্লাহ নকশেবন্দী, আল্লামা সাইয়্যেদ নেয়ামাতুল্লাহ আব্বাসী জৌনপুরী, আল্লামা ড. শাহ আতাউল্লাহ বোখারী, আল্লামা সাইয়্যেদ ওবায়দুল্লাহ আব্বাসী জৌনপুরী, আল্লামা মুফতি আলাউদ্দিন জিহাদী, আল্লামা সাইয়্যেদ নেসার আহমাদ, আল্লামা পীরজাদা নাঈমুর রহমান, আল্লামা মুফতি জহিরুল ইসলাম ফরিদী, আল্লামা মুফতি আব্দুর রাজ্জাক ওসমানী, আল্লামা আবু বকর সিদ্দিক কাশেমী, আল্লামা শা নাদিমুর রশিদ আল-কাদরী, আল্লাম মোশারফ হোসেন হেলালী, আল্লামা তাজুল ইসলাম চাঁদপুরী, আল্লামা হাসানুর রহমান হুসাইন নকশেবন্দী, আল্লামা মুফতি নেসার আহমাদ আল-কাদরী।