মাদক, ইভটিজিং, কিশোর গ্যাং, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যুতা পলিটিশিয়ানদের তৈরি-শামীম ওসমান

49

নিউজ প্রতিদিন ডটনেট : নারায়ণগঞ্জ সব সময় পথ দেখিয়েছে। চলুন, আমরা সারা বাংলাদেশকে পথ দেখানোর আহবান জানালেন নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা শামীম ওসমান এমপি।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের দ্বিতীয় তলায় একটি রেস্তোরাঁয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ আহবান জানান।

শামীম ওসমান বলেন, ‘আমরা শুধু নারায়ণগঞ্জকে সুন্দর করতে চাই। এমন একটি নারায়ণগঞ্জ দেখতে চাই, যেখানে রাত ১২টায় আমাদের মেয়েরা যেন নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারে।

শামীম ওসমান বলেন, এক্ষেত্রে ‘আমাদের প্রশাসনের দরকার নেই। আমরাই এ জন্য যথেষ্ট। তখন দেখবেন, পুলিশ অযথা কাউকে ধরবে না। আর ধরলে কাউকে সহজে ছাড়বে না। কারণ আমরা সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে কাজ করবো। আমি মনে করি, আমাদের সমাজে ভালো মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু সমাজের অল্পসংখ্যক খারাপ মানুষের কাছে ৯০ বা ৯৫ শতাংশ খারাপ মানুষ জিম্মি হয়ে থাকে। তবে এই প্রশ্নে আমি আল্লাহ ছাড়া কারও সঙ্গে আপস করবো না। মাথা নত করবো না।

তিনি বলেন, মাদক, সন্ত্রাস, ইভটিজিং, চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যুতা বন্ধ করতে হবে। মূলত মাদক থেকে এই চারটি বিষয় এসেছে। এই মাদক থেকে কিশোর গ্যাং, কিশোর গ্যাং থেকে সন্ত্রাস আর সন্ত্রাস থেকে চাঁদাবাজি ও ভূমিসদ্যুতা এসেছে। এগুলো কারা তৈরি করেছে? পলিটিশিয়ানরা তৈরি করেছে। হয়তো আমার আশেপাশের লোকজন এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে। হয়তো অনেক সাংবাদিক জড়িত রয়েছে। সমাজের বিভিন্ন পেশার হোয়াইট কালারের লোকেরা জড়িত রয়েছে। তারা সরাসরি কাজ করে না, পেছন থেকে কাজ করছে। পুলিশ- প্রশাসন জড়িত রয়েছে।’

সাংবাদিকদের নিয়ে মাঠে নামতে চান উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, ‘আমি মাঠে নামতে চাইছি। আমাকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সাংবাদিকরা কথা দিয়েছিলেন তারা আমার উদ্যোগে থাকবেন। আমি এই কাজটি করছি শুধু আল্লাহকে খুশি করার জন্য। আমি আমার কাজ শুরু করতে চাই। আমি কোনও দল দেখবো না এ কাজে, সব দলকে এতে আমন্ত্রণ জানাবো। আমি সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে আহ্বান জানাবো। প্রথমে আমরা নারায়ণগঞ্জ-৪ ও ৫ আসনে কাজ শুরু করবো। এই দুই আসনে ৮৪টির মতো ওয়ার্ড আছে। আমরা যদি প্রতি ওয়ার্ড থেকে এক হাজার করে লোক নিই তাহলে ৮৪ হাজার লোক হয়। এর সঙ্গে তাদের পরিবারের সদস্যদের যোগ করলে চার লাখ লোক হবে। তারা যদি চান নারায়ণগঞ্জে মাদক বিক্রি হবে না। আমার তো মনে হয় না, কেউ সাহস করতে পারবে।’

শামীম ওসমান বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রত্যাশা সংগঠনের ক্লাব করে ‘আমি একা কাজ করে যাবো। আর আমি যখন ভালো কাজ করবো তখন অনেকে এগিয়ে আসবেন। এর মধ্যে অনেকে রাজনীতি খোঁজার চেষ্টা করবে। আমি আল্লাহর নামে শপথ করে বলতে চাই, এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই।

শামীম ওসমানের মতে, সাংবাদিক, রাজনীতিক ও শিক্ষক সমাজ যদি একসঙ্গে এগোয়– আমি বিশ্বাস করি, এক মাসের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের কোথাও মাদক বেচা সম্ভব হবে না। আমার মুখ যদি সত্য কথা বলে, আমার ক্যামেরা যদি সত্য কথা বলে এবং কলম যদি সত্যি লেখে তাহলে আমি বিশ্বাস করি, আমাদের নারায়ণগঞ্জকে কলুষিত করার ক্ষমতা কারও নেই।

‘এটি আমাদের নারায়ণগঞ্জ, এটি আমাদের জন্মভূমি– আমরা এখানে মারা যাবো। সুতরাং চলুন, আমরা সবাই সামনের দিকে এগোই। আমি প্রথম দাওয়াতটা প্রেসক্লাবকে দিলাম। আমি প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আমরা প্রত্যাশা সংগঠনের ক্লাব করবো। এটির মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন– নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপু, সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান বাদল,রুমন রেজা, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুস সালাম এবং জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা।