নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে শিশু হত্যা

94

খুলনার পর এবার নারায়ণগঞ্জে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়েছে সাগর বর্মণ নামের দশ বছরের এক শিশুকে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার যাত্রামুড়া এলাকায় অবস্থিত জোবেদা স্পিনিং মিলে রোববার দুপুর দুইটায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। তাই শিশুটিকে কারা কেন এমন নৃশংসভাবে হত্যা করলো তা জানা সম্ভব হয়নি। ঘটনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পাচজনকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার সন্ধায় জোবেদা সাইজিং, স্পিনিং এন্ড টেক্সটাইল মিলের বসে ছিলেন লাবণ্য বর্মণ। নিহত সাগর বর্মণ তার ছেলে। তখনো তিনি জানেন না তার ছেলে আর নেই। কারো সাথে কথা বলছিলেন না তিনি। কোন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন না। শুধু চোখ দিয়ে পানি পড়ছিলো তার। ঘটনার পরে মিলে ঢোকার ব্যাপারে বেশ কড়াকড়ি করে কতৃপক্ষ। সুতা সেকশনের কাজ বন্ধ রাখলেও মিলের অন্য সব সেকশনের কাজ চলছিলো। তবে মিলের সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা লোকজন জানান, মিলে কোন কর্মকর্তা নেই। কেউ কোন কথা বলবে না। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন নিজেদের নামটিও বলেননি। মিলে কথা বলার মতো কোন কর্মকর্তা, ঘটনার কোন প্রত্যক্ষদর্শী বা শ্রমিকদের কাউকেই পাওয়া যাচ্ছিলো না। এলাকার নান্নু মিয়া জানান, দুপুর একটার দিকে তিনি মিলের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় মিলের সামনে খুব হৈ চৈ শুনতে পান। একটি শিশুকে মিল থেকে বের করে কাঁচপুরের শুভেচ্ছা ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পেট অস্বাভাবিক ফোলা ছিলো। ছেলেটির বাবা রতন বর্মনকে তিনি চেনেন। সে-ও এই মিলে কাজ করে। নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুড়ি উপজেলার রাজিবপুর গ্রামে রতন বর্মণের বাড়ি। তার তিন ছেলে। সবার ছোট সাগর বর্মণ। তারা মিলের পাশে জিগাবো এলাকায় ভাড়া থাকে। শিশুটির বাবা সে সময় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ছিলেন বলে তিনি জানান। শিশুটির বাবা রতন বর্মণ মোবাইল ফোনে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, সাগর বর্মণকে প্রথমে কাঁচপুর শুভেচ্ছা ক্লিনিকে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতলের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে বিকেল সাড়ে তিনটায় সেখানে তার মৃত্যু হয়। তিনি জানান, দুপুরে আমি খবর পাই আমার ছেলের পায়ুপথে বাতাস ঢোকানো হচ্ছে। এ খবর পেয়ে দৌড়ে আমি সেখানে গিয়ে অন্যদের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। আমার ছেলে এই মিলের সুতা সেকশনে কাজ করতো। রাত আটটায় মিলের পালা বদলের সময় মনে হলো মিলের শ্রমিকদের সিংহভাগ শিশু শ্রমিক। এ ব্যাপারে জোবেদা গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লায়ন মোজাম্মেল হক ভুঁইয়ার সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আমার প্রতিষ্ঠানে এমন একটি দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে বলে আমি শুনেছি। তবে কারা কেন করলো এর বিস্তারিত জানিনা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, ঘটনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পাচজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি কে বা কারা কেন ঘটিয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তার বাবার সাথেও আমরা কথা বলছি। মিলের কোন শ্রমিক ঘটনা ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে আমরা তথ্য পেয়েছি।