১৫ আগস্ট খালেদা জিয়া জন্মদিনের কেক কাটবেন না

349

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ৭১তম জন্মদিন সোমবার। দেশের এই চলমান সঙ্কট, বর্ন্যাত মানুষের প্রতি সহমর্মিতা, জঙ্গিবাদ, দলের নেতা কর্মীরা জেল, হামলা, মামলা গুম ও হত্যার দিক বিবেচনা করে দলীয় নেতা কর্মীদের জন্মদিন পালন করতে নিষেধ করেন তিনি। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন বছর আগে খালেদা জিয়ার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সময়ও ১৫ আগস্ট শোকের দিন কেক না কাটার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সর্বশেষ গত ৪ আগস্ট খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তাকে ১৫ আগস্ট জন্মদিনের কেক না কাটতে পরামর্শ দেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। এছাড়া এবার জাতীয় ঐক্যে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান সরকার প্রত্যাখ্যান করার পর বিএনপি সমর্থক অন্যতম পেশাজীবী নেতা জাফরুল্লাহ চৌধুরীও কেক না কাটতে খালেদা জিয়াকে পরামর্শ দিয়েছিলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের এ্ই সিদ্ধান্তের কারণে সোমবার দিবাগত রাতে কেক কেটে তার জন্মদিন উদযাপন করা হচ্ছে না। প্রতি বছর ১৫ আগস্টে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আসা কেক কেটে নিজের জন্মদিন পালন করলেও এ বছর এ ধরণের সকল অনুষ্ঠান বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এরআগে গত বছর জন্মদিনের প্রথম প্রহরে কেক না কেটে নিজের জন্মদিন আগামীতে পালন না করার বিষয়ে ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। তবে ওই বছরের ১৫ আগস্ট শনিবার সন্ধ্যায় রাজনৈতিক কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে কেক কাটেন তিনি। চলতি বছরের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, জাতীয় নেতাদের বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে হবে। তাদের নিয়ে বিতর্ক বন্ধ করতে হবে।

এদিকে চেয়ারপারসনে কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রতি বছর খালেদা জিয়া নেতাকর্মীদের আনা কেক কেটে নিজের জন্মদিন পালন করতেন। গ্রহণ করতেন নেতাকর্মীদের ফুলেল শুভেচ্ছা। কাটা কেক তিনি এতিমখানাসহ দরিদ্র অনেকের মাঝে বিলিয়ে দিতেন। তবে এবার সেটি হচ্ছে না। দেশের বর্তমান সংকট, বন্যা পরিস্থিতি মিলিয়ে তিনি নিজের জন্মদিন উদযাপন বাতিল করেছেন।

সূত্র আরও জানায়, দেশের সঙ্কটময় পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্যে রেখে তার প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর জন্মদিনও তিনি পালন করা থেকে বিরত থাকেন তিনি  ও দলের নেতাকর্মীরা।

র্দীঘদিন আওয়ামী লীগসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ বিএনপি নেত্রীকে জাতীয় শোকের দিনে তার জন্মদিন পালন না করার আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, উত্তরাঞ্চল-মধ্যাঞ্চলে ব্যাপক বন্যায় মানুষের দুর্দশা, সর্বত্র গুম-খুনে মানুষের লাশ আর লাশ, দলের নেতা-কর্মীদের ওপর গ্রেফতার-নিপীড়ন-নির্যাতনের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করেই ম্যাডামের জন্মদিনে এবার আমরা কেক কাটার অনুষ্ঠান করছি না। খালেদা জিয়ার এই নির্দেশনা পাওয়ার পর যুবদল, মহিলা দল ও ছাত্রদল সহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতারা জানান, এবছর কেক কাটার কোনো কর্মসূচি রাখেনি। তবে তারা বিভিন্ন মসজিদ ও মন্দিরে প্রার্থনা সভা করবে বলে জানিয়েছে।

গত দুই যুগ ধরে ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন উদযাপন হলেও তার আরও কয়েকটি জন্মদিনের হদিস পাওয়া যায়। তার জন্ম সাল নিয়েও দুই রকম তথ্য পাওয়া যায়। খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৬ সালে বলে তার নতুন করা পাসপোর্টে থাকলেও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় গত বছর জানান, তার নেত্রীর জন্ম ১৯৪৫ সালে। বাংলা পিডিয়াসহ খালেদা জিয়ার জীবনীর ওপর রচিত কয়েকটি গ্রন্থে তার জন্ম বছর ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দেখানো হয়েছে।