তারেক রহমানের সাথে ঘনিষ্ঠতা ছিল তামিমের-উইকলি বি-জড’র পত্রিকা

197

নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়া এলাকার একটি জঙ্গি আস্তানায় শনিবার (২৭ আগস্ট) যৌথবাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছে গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী। কথিত ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বাংলাদেশ প্রধাণ ছিলেন তিনি। তামিমের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্যতম বিরোধীদল বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব ও দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানের ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। লন্ডনের জনপ্রিয় পত্রিকা ‘উইকলি বি-জড’র অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছিল। তারেক রহমানের সঙ্গে বাংলাদেশের কথিত শীর্ষ পর্যায়ের আইএস নেতা তামিম চৌধুরী ওরফে শেখ আবু ইবরাহিম আল হানিফের বেশ ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। তারা দুজনেই মেয়েদের ছদ্মনামে চিঠি চালাচালি করতেন। যেগুলো বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের উত্থানে ব্যাপক ভুমিকা রেখেছে। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের একটি গোয়েন্দা সংস্থা তামিমকে পাঠানো তারেকের একটি চিঠি পায়। ওই গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র ধরে লন্ডনের জনপ্রিয় সপ্তাহিক ট্যবলয়েড পত্রিকা ‘উইকলি বি¬জড’ এ তথ্য প্রকাশ করেছে। তবে ওই গোয়েন্দা সংস্থার নাম প্রকাশ করেনি পত্রিকাটি। উইকলি বি¬জড এর চলতি সংখ্যায় ‘তারেক-তামিম কানেকশন এক্সপোজড’ শিরোনামে ওই সংবাদে বলা হয়, ২০০৮ সালে চিকিৎসার জন্য তারেক রহমান যুক্তরাজ্য যান এবং লন্ডনে বসবাস করা শুরু করেন। ২০১২ সালে বিএনপির এক নেতার মাধ্যমে তারেকের সঙ্গে কানাডায় বসবাসরত তামিম চৌধুরীর পরিচয় হয়। পাশাপাশি তারেক রহমান সেসময়ে কানাডায় বসবাসরত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যকারী এবং মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এক পলাতক আসামীর সঙ্গেও ঘনিষ্ট যোগাযোগ রক্ষা করে এসেছেন। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক ওই গোয়েন্দা সংস্থাটি আরও জানায়, তারেক ও তামিমের সম্পর্কটি ছিল অত্যন্ত সাবলিল। ’তামান্না’ ছদ্মনামে তারেকেরে সঙ্গে নিয়মিত চিঠি চালাচালি এবং মোবাইলে মেসেজ আদান প্রদান করতেন তামিম। এদিকে তারেক রহমানের ছদ্মনাম ছিল ‘কনিকা’। ২০১৩ সালের মাঝামাঝি কোন এক সময়ে তামিম কানাডা থেকে ‘নিখোঁজ’ হয়ে যায়। পরে সে ইরাকে গিয়ে আইএসে যোগ দেয়। কম্পিউটারে টাইপ করা তামিমের ‘তামান্না’ নামের চিঠিগুলো প্রথমে ইরাক থেকে তুরস্ক যেত এবং সেখান থেকে কুরিয়ার বা মেইলের মাধ্যমে লন্ডনে আসতো। এরপর কোন ব্যক্তির মারফত তারেকের লন্ডনের বাসায় পৌঁছে যেত। একই পদ্ধতিতে তারেক তামিমকে চিঠি পাঠাত বলে ওই গোয়েন্দা সংস্থাটি বি¬টজকে জানায়। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে তারেক (কনিকা) একটি টাইপ করা চিঠি পাঠিয়েছিল তামিমকে (তামান্না) দূর্ভাগ্যক্রমে সেই চিঠি তামিমের হাতে পৌঁছাবার আগেই গোয়েন্দা সংস্থাটির হস্তগত হয়। আর তখনই বেরিয়ে আসে তারেক তামিমের বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যৌথ ষড়যন্ত্রের কথা। চিঠিটিতে তারেক (কনিকা) তামিমকে (তামান্নাকে) সম্বোধন করেছিল ‘মাই ডিয়ারেষ্ট বাডি’ হিসেবে। দুই পৃষ্টার কম্পিউটারে টাইপ করা চিঠিতে তারেক লিখেছিল, উইকলি বি¬টজ ওই চিঠিটির পুরো অংশ না পেলেও গোয়োন্দা সংস্থাটির বরাত দিয়ে জানিয়েছে চিঠিটিতে মোট আটটি প্যারাগ্রাফ ছিল এবং চিঠিটি ছিল ২ হাজার ৩৭৮ শব্দের। চিঠিটিতে তারেক রহমান বাংলাদেশে আইএসের অভ্যুদয় ঘটলে বিএনপি সর্বোচ্চ সমর্থন দেবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিল। বাংলাদেশ ও ভারতের গোয়েন্দারা তারেক ও তামিমের মধ্যের ওই সম্পর্কের বিষয়টি কতখানি অবগত তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। তামিম চৌধুরী একজন কানাডিয়ান বাংলাদেশী যিনি আইএসের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা। বাংলাদেশের আইএস কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। আইএসের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত ‘দাবিক’ নামে পরিচিত ওয়েবসাইটে তার নিয়মিত লেখা ও সাক্ষাতকার প্রকাশিত হয়ে আসছে বলে ওই সংবাদটিতে বর্ণনা করা হয়েছে।