একুল-ওকুল দু’কুলই হারাতে পারে তৈমূর

70

মহানগর বিএনপির কমিটি গঠনের বিষয়টি সম্ভবত আগে থেকেই আঁচ করতে পেরেছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি এড. তৈমূর আলম খন্দকার। যেই কারনে ‘এক নেতার এক পদ’ হিসেবে তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হয়েও সম্প্রতি পদত্যাগ করেন। তবে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতা কর্মীরা বলছেন, বড় পদ পেলেও তৈমূর নিজের প্রভাব বিস্তার টিকিয়ে রাখতে নারায়ণগঞ্জ ছাড়বেন না। সেই কারণে সম্মেলন ছাড়া কেন্দ্র থেকে চাপিয়ে দেয়া কমিটি মেনে না নেয়ার হুঁশিয়ারীও দেন। ইতিমধ্যেই নিজেকে সভাপতি হিসেবে রেখে মহানগর বিএনপির ১৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির তালিকা করে দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার হাতে সরাসরি পৌঁছে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সাংসদ এড. আবুল কালাম। যা এখন শুধুমাত্র আছে অনুমোদনের অপেক্ষায়। তাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যদি খালেদা জিয়া এড. আবুল কালামকে সভাপতি করে মহানগর বিএনপির কমিটি অনুমোদন দিয়ে দেন তাহলে এড. তৈমূর আলম খন্দকারের গলায় দঁড়ি দেয়ার মতই হবে। কেননা, দলীয় চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার মত পদ পেয়েও যিনি জেলার মায়া ভুলতে পারেননি, তিনি যদি এখন মহানগর বিএনপির সভাপতি হতে না পারেন তাহলে জেলার নতুন কমিটির সভাপতির পদ থেকেও ছিটকে পড়তে পারেন। যেমনটাই এখন বেশ জোরেসোরে শোনা যাচ্ছে বিএনপির তৃণমূলের মাঝে। এমনটাই চাউর হচ্ছে যে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির আরেক সদস্য নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদের। যিনি কিনা নারায়ণগঞ্জ জেলায় বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করতে উক্ত জেলা হতে কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঠাঁই পাওয়া অপর ১০ সদস্যকে নিয়ে একটেবিলে বসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই এখন খালেদা জিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে যদি আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ আর মহানগর বিএনপির সভাপতি এড. আবুল কালামকে নির্বাচিত করে কমিটির অনুমোদন দেন তাহলে এটা তৈমূর আলমের গলায় দঁড়ি দেয়ার মতই হবে বলে মন্তব্য করেন তৃণমূলের নেতৃবৃন্দরা। আর জেলার মোহ ত্যাগ করে তখন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টার পদ নিয়েই এড. তৈমূর আলম খন্দকারকে তুষ্ট থাকতে হবে। তিনি সম্প্রতি উপদেষ্টার পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে পদত্যাগ পত্র জমা দিলেও এব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত জানায়নি বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। উল্লেখ্য, গত ১৭ অক্টোবর গুলশানে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার হাতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির ১৭১ সদস্যের কমিটি জমা দেন এড. আবুল কালাম। যেই কমিটির তালিকায় সভাপতি হিসাবে রয়েছেন তিনি নিজেই। আর সাধারন সম্পাদক হিসাবে আছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান। সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসাবে রয়েছেন নগর বিএনপির বর্তমান সাধারন সম্পাদক এটিএম কামাল। এছাড়া সহ-সভাপতি, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে তৈমূর আলম, গিয়াস উদ্দিন এবং শাহ-আলম পন্থী নেতাদেরও নাম রয়েছে।