রূপগঞ্জ প্রতিনিধি
রূপগঞ্জে দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে স্থানীয় চাঁদাবাজরা বাড়ি ঘরে হামলা, লুটপাট ও বাদীর বৃদ্ধ মা-বাবাকে কুপিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয় থানায় মামলা করতে গেলে এসআই’য়ের দাবীকৃত ২০ হাজার টাকা না দিতে পারায় অভিযোগ নথিভুক্ত না করারও অভিযোগ রয়েছে। নিজের কিডনি বিক্রি করে টাকা জোগারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও জানান বাদী। এমনকি পুলিশের পক্ষ থেকে বাদীকে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে অভিযুক্তদের সাথে আপোষ করার জন্য। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের আতলাশপুর এলাকায় ঘটে এ ঘটনা।
হামলার শিকার হওয়া আতলাশপুর এলাকার জমির উদ্দিনের মেয়ে নাসরিন আক্তার জানান, একই এলাকার সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ আলমগীর, জাহাঙ্গির, আরিফ, রাশিদুলসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘ দিন ধরে তার পিতা জমির উদ্দিনের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। তাদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা না দেয়ার গত ১৬ এপ্রিল রোববার সকালে উক্ত সন্ত্রাসীরাসহ আরো অজ্ঞাত ৪/৫ জন দেশীয় অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নাসরিনদের বাড়িতে প্রবেশ করে বাড়ি-ঘর ভাংচুর শুরু করে। এ সময় তার মা মালেকা বেগম ভাংচুরে বাঁধা প্রদান করলে সন্ত্রাসীরা তাকে দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। মালেকা বেগমের ডাক-চিৎকারে তার স্বামী জমির উদ্দিন বাঁচাতে এগিয়ে এলে চাঁদাবাজরা তাকেও কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। তাদের ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা চলে যায়। পরে স্থানীয়রা আহতদেরকে গুরুতর অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। আতহদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করলেও টাকার অভাবে বাধ্য হয়ে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালেই চিকিৎসা নিচ্ছেন । এদিকে আহতের মেয়ে আইনি সহায়তা নিতে থানায় গেলে কর্তব্যরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) সবজেল হোসেন প্রথমে বাদীনির কাছে ২০ হাজার টাকা দাবী করে। দাবীকৃত টাকা না দিতে পারায় গত ৫ দিন যাবত থানায় অভিযোগটি নথিভুক্ত করেনি পুলিশ।
ফের বৃহস্পতিবার সকালে একই কায়দায় বাড়িতে প্রবেশ করে বাড়ির আসবাবপত্রাদি ভাংচুর করে ও ২টি টিনশেড ঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। বাড়িতে প্রবেশ করলে পরিবারের লোকজনকে কেটে টুকরো করে শীতলক্ষ্যায় ভাসিয়ে দিবে বলে হুমকী দিয়ে যায়। এমন অবস্থায় পরিবারের লোকজন ভয়ে বাড়ি ছাড়া রয়েছে। অপরদিকে আহত জমিরউদ্দির ও তার স্ত্রী মালেকা বেগম চিকিৎসা নিচ্ছেন রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স্রে। বাদীনি নাসরিন বেগম টাকা জোগার করতে কিডনি বিক্রি করার চেষ্টায় ঢাকার একটি বেসরকারী হাসপাতালে গিয়েছেন। ২য় বারের মত থানায় অভিযোগ নিয়ে গেলেও পুলিশের দাবীকৃত ২০ হাজার টাকা না দিতে পারায় তা নথিভুক্ত করেননি থানা পুলিশ।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রূপগঞ্জ থানায় দারোগা সবজেল হোসেন বলেন, বাদীনিকে মীমাংসার প্রস্তাব দিয়েছি মাত্র। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি মিটিংয়ে আছি, পরে কথা বলবো।