গুনী ব্যক্তিদের সম্মান জানানোর পরামর্শ এমপি সেলিম ওসমানের

69

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জে সরকারী তোলারাম কলেজ, নারায়ণগঞ্জ কলেজ, খানপুর ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নির্মাণে হিন্দু সম্প্রদায়ের যে সকল ব্যক্তিরা অবদান রেখেছেন তাদেরকে সকলকে সম্মান প্রদর্শন সহ তাদের জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী অবশ্যই পালন করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।

শনিবার ২৩ মার্চ সন্ধ্যা মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দে মহাষ্টমী পূর্ণউৎসবের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেছেন।

সেলিম ওসমান বলেছেন, এই শহরটির নাম নারায়ণগঞ্জ। নদীটির নাম শীতলক্ষ্যা, আজকে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে লাঙ্গলবন্দে আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি। এই শহর আপনাদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবান ধর্ম যার যার উৎসব সবার। এই শহরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনেক ভূমিকা রয়েছে। দেখা গেছে এখন অনেকেই আমরা কেউ জানিনা। তোলারাম কলেজ অধ্যক্ষ খগেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী নির্মাণ করেছেন, জীবন কানাই চক্রবর্তী নারায়ণগঞ্জ কলেজ নির্মাণ করেছেন, রনদা প্রসাদ সাহা খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের জন্য জমি দান করেছেন। তাঁদের কর্মকান্ডের জন্য আমাদের সকলের উচিত তাঁদের সবাইক সম্মানিত করা। প্রত্যেকের জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী পালন করে তাঁদের জন্য দোয়া করা সহ বর্তমান প্রজন্মের কাছে স্মরনীয় করে রাখা উচিত।

তিনি আরো বলেন, আমি যখন প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছি তখন আমি এই লাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী স্নান কষ্টের মধ্য দিয়ে শুরু করেছি। সে বছর ১০জন মানুষের প্রাণহানী হয়ে ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে লাঙ্গলবন্দের প্রতি বিশেষ নজর দিয়েছেন। লাঙ্গলবন্দের উন্নয়নে তিনি হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্প দিয়েছেন। গত কয়েক বছরের তুলনায় লাঙ্গলবন্দে ব্যাপক উন্নয়নে হয়েছে। আজকে সকালে আমি একাই সকল স্ননঘাট পরিদর্শন করে পূর্ণ্যাথীদের সাথে কথা বলেছি। গত কয়েক বছর আগে যারা লাঙ্গলবন্দে এসেছিলেন তারা এ বছর লাঙ্গলবন্দকে চিনতেই পারছে না। স্নানের আয়োজন এবং ব্যবস্থাপনায় তারা অত্যন্ত খুশি। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি যারা এ বছর লাঙ্গলবন্দে স্নান করে গেলেন তারা আগামী বছর এই লাঙ্গলবন্দকেও চিনতে পারবেন না। ইতোমধ্যে প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ চলে এসেছে। কিছুদিন পর নতুন ৫টি ঘাট নির্মাণ কাজ শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে লাঙ্গলবন্দ হবে একটি দৃষ্টি নন্দন আর্ন্তজাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আসনে নৌকা মার্কা না দিয়ে আমাকে লাঙ্গল মার্কায় বিজয়ী করেছেন। আমার বড় ভাই নাসিম ওসমানকেও ৪ বার এই আসনে লাঙ্গল মার্কায় বিজয়ী করেছেন। বিজয়ী হওয়ার পর আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে গিয়ে প্রশ্ন করে ছিলাম। কেন উনি আমাকে লাঙ্গল মার্কায় পাঠালেন। উনি আমাকে উত্তর দিয়ে ছিলেন তোমার ওখানে লাঙ্গলবন্দ নামে একটি জায়গা আছে জানো? সেখানে গিয়ে লাঙ্গল বন্ধ হয়ে গিয়ে ছিলো। তাই ওই আসলটি লাঙ্গলের জন্যই রাখা হয়েছে।

এ সময় উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে সেলিম ওসমান বলেন, আগামী নির্বাচনে এই আসন থেকে আসন থেকে কি চান লাঙ্গল নাকি অন্য কিছু? এ সময় সবাই চিৎকার করে বলেন লাঙ্গল।

সেলিম ওসমান তার বক্তব্যে আরো বলেন, বাংলাদেশ এখন আর তলি বিহীন ঝুড়ি না। বাংলাদেশ আজকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হয়ে উন্নয়শীল দেশে পরিনত হয়েছে। এই ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে। বাংলাদেশকে আগামী ৫ বছরে ২৫ বছর এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুনরায় সরকার গঠন করতে হবে। আর যদি শেখ হাসিনা সরকার গঠন করতে না পারেন তাহলে দেশ আগামী ৫ বছরে বর্তমানের থেকেও আরো ১৫ বছর পেছনে চলে যাবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরবর্তী সরকার গঠন না হলে যারা ৭১ সালের মানুষ হত্যা, নারীদের নির্যাতন, লুটপাট করে যে পাপ করেছে। সেই পাপীদের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দিয়ে যারা জাতির কাছে অপরাধ করেছে সেই অপরাধী আর পাপীরা ক্ষমতায় বসে দেশকে আবারো তলি বিহীন ঝুড়িতে পরিনত করবে। তাই আজকে এই মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দে পাপমোচনের মহাষ্টমী পূর্ণ্যা স্নানে এই প্রার্থনাই করবো সেই সকল পাপীদের যেন মৃত্যু হয় আর অপরাধীদের যেন সাজা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় সরকার গঠন করে যেন দেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিনত করতে পারেন।

লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন পরিষদের আহবায়ক সরোজ কুমার সাহার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন, বরিশাল-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ, জাতীয় সংসদের নারী সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বাবলী, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাব্বি মিঞা, জেলা পুলিশ সুপার মঈনুল হক, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, হিন্দু বৌদ্ধ খিস্ট্রান ঐক্য পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি গোপি নাথ দাস, এফবিসিসিআই এর পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা, বন্দর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা পিন্টু বেপারী, লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি পরিতোষ কান্তি সাহা, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শঙ্কর কুমার সাহা।

আরো উপস্থিত ছিলেন, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীন মন্ডল, মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান মুন্না, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ, গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নওশেদ আলী, লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব, সুজিত কুমার সাহা, সদস্য শিপন সরকার শিখন, স্বপন দাস, শঙ্কর দাস, রিপন ভাওয়াল, বিশ্বজিত দাস, রিপন ঘোষ, উত্তম সাহা, সুশিল দাস সহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দরা।