বক্তাবলিতে এডিসি আসার খবরে পালিয়ে গেলেন প্রধান শিক্ষক আমজাদ মাস্টার।

450

শিক্ষক মানুষ গড়ে/ সে কী আবার দুর্নীতি করে?’-আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এ প্রশ্নের উত্তর-ই শুধু দেননি স্থানীয়দের বিস্মিত করেছেন কানাইনগর ছোবহানীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন। ৯ বছরের মেয়াদকালে তাঁর দুর্নীতির খতিয়ান যেন রূপকথার গল্পকেও হার মানায়।দুর্নীতির অভিযোগে (৪ জুলাই) বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় এডিসি শিক্ষার স্কুল পরিদর্শনে আসার খবর পেয়ে প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন তার কক্ষ তালা দিয়ে পালিয়ে যান।এ সময় এডিসি শিক্ষা রেজাউল বারী এলাকাবাসী ও ছাত্রছাত্রীর অভিযোগের পেক্ষিতে বিদ্যালয়ের প্রতিটি শ্রেনী কক্ষ ঘুরে দেখেন এবং আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা পান। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।এ সময় ইংরেজী শিক্ষক কাদির খান সহ ১২ টার সময় বিদ্যালয় আসার কারনে ৬জন শিক্ষককে হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত দেখান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বক্তাবলি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক কামরুল ইসলাম,২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন,ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্নসাধারন সম্পাদক আলীম, ফতুল্লা থানা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেনসহ এলকার গন্যমান্য ব্যাক্তি ও বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী।

স্কুলটির সাবেক শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে দুর্নীতির এ মহাকাণ্ড! অনিয়ম দূর্নীতি শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্যের কারণে শিক্ষা ব্যবস্থা একেবারে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। অভিযোগ উঠেছে, তিনি তাঁর মেয়দকালে ২ কোটি ৩৪ লক্ষ ৬০ হাজার ১শত ৬৭ টাকা দূর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন।

এ কারণে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনের পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্নখাতে তাঁর দুর্নীতির খতিয়ান জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবি তুলেছেন-বিদ্যালয়ের ১৯৯৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। এ দাবিতে এলাকায় বেশ কয়েক মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছে ’৯৭ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারীদের দেয়া তথ্যমতে, আমজাদ হোসেন স্কুলের পূন:ভর্তি বাবদ ৩২ লক্ষ ৭৬ হাজার, বিলম্ব অনুপস্থিত বাবদ ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা, খেলাধুুলা খাতে ৯ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, নির্মাণ খাতে ৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, গ্রায়াচুটি বাবদ ১২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৮ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা, মিলাদ বাবদ ৮ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা, দূস্থ: তহবিলের ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা, পাঠাগারের ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা, গবেষণার ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা, সাংস্কৃতিক খাতে ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা, স্কাউটের ৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা, উন্নয়নের ৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা, কম্পিউটারের ৬ লক্ষ ৩০ হাজার, মসজিদ ফান্ডের ৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা, অগ্রগতি পত্র বাবদ ৫লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা, মনোগ্রাম বাবদ ৫ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা, এসএসসি পরিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরন বাবাদ অতিরিক্ত ২৮ লক্ষ ৩ হাজার ১ শত ৬৭ টাকা, কৃষি ও গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা বাবদ ৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা, উপবৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্র ছাত্রীদের সরকারি অনুদানের ৫ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ করেন। এর প্রমাণ হিসেবে স্কুলের রশিদ ও ব্যাংক এ্যাকাউন্ট সহ নানা তথ্য-উপাত্ত্ব তুলে ধরা হয়।

এই বিষয়ে সামাজিক সংগঠন-আলোকিত বক্তাবলীর সাধারণ সম্পাদক আঃ আজিজ বলেন, প্রধান শিক্ষক সহ কয়েকজন শিক্ষকের লাগামহীন অনিয়ম দূর্নীতির কারণে বিদ্যালয়টির শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস হয়েছে। বিষয়টির বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
সাবেক ছাত্রনেতা মাশফিকুর রহমান শিশির বলেন

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যথাযথ তদন্ত করে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে বিদ্যালয়টির শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানন।