মাদক দিয়ে শওকত চেয়ারম্যানের ছেলে হৃদয়কে ফাঁসানো হয়েছে দাবি এলাকাবাসি ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

596

র‌্যাব-১১ এর হাতে আটককৃত শওকত চেয়ারম্যানের ছেলে হৃদয়কে মাদক দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন ফতুল্লার স্থানীয় এলাকাবাসি ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এলাকাবাসি দাবি করে বলেন, বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী দীর্ঘদিন যাবৎ সততার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ফতুল্লা এলাকায় তার ক্লীন ইমেজ রয়েছে। তার ছেলে মোঃ সাব্বির আহমেদ হৃদয় একটি বেসরকারী ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করছেন। সে একজন মেধাবী ছাত্র। মাদকের সাথে কোন রকম সম্পৃক্ততা এলাকাবাসী কখনো দেখেনি বলে দাবি করেন। শওকত আলীকে সমাজে তার সুনাম ক্ষুন্ন করতে একটি কুচক্রি মহল তার ছেলে হৃদয়কে ফাসিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে প্রকৃত ঘটনা সঠিক তদন্ত করে বের করার দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে র‌্যাবের ভাষ্য মতে হৃদয় ও তাদের গাড়ির ড্রাইভার হাবিবের কাছ থেকে ১৯ বোতল ফেন্সিডিল পাওয়া গেছে। যার মূল্য ৩৮ হাজার টাকা। এসময় তাদের কাছ থেকে মাদক বিক্রির ১৬০ টাকা ও ব্যবহৃত ৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। র‌্যাব আরো দাবি করে তারা দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।
হৃদয় দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ব্যবসায় করছে বিষয়টি সঠিক নয় বলে জানায় হৃদয়ের পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসী। এমন কোন বিষয় এলাকাবাসীর কখনো চোখে পরেনি। র‌্যাবের এমন মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তাদের মন্তব্যে প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে এলাকাবাসীর মাঝে। তারা বলছে মাদক বিক্রির ১৬০ টাকা কিভাবে হয়। র‌্যাবের মতে ৩৮ হাজার টাকা মাদকের মূল্য হলে একটা ফেন্সিডিলের মূল ২ হাজার টাকা।তাহলে ১৬০ টাকা হয় কিভাবে? ন্ধদয় যদি দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ব্যবসায় করে থাকে। তাহলে অবশ্যই আমাদের একটু হলেও চোখে পরতো। আর ফতুল্লা থানা পুলিশ ও সোর্সদের কাছেও তথ্য থাকতো। হৃদয়ের নামে কোন থানায় কিংবা কোন জায়গায় মাদক বিক্রি করার অভিযোগ নেই। তাহলে কিভাবে সে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক বিক্রি করে আসছে। হৃদয়দের ড্রাইভার হাবিব ২ মাস যাবৎ তাদের এখানে চাকরী করছেন।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শওকত চেয়ারম্যানের ড্রাইভারকে আটকের সময় হৃদয় সেখানে ছিল না। ড্রাইভারকে দিয়ে গাড়ি চালু করার কথা বলে তাকে ঘটনাস্থলে ফোন করে আনা হয়। ফোন পেয়ে ঘনাস্থলে আসার পর হৃদয়কে র‌্যাব আটক করে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি মঞ্জুর কাদের বলেন, র‌্যাবের হাতে আটককৃত মোঃ সাব্বির আহমেদ হৃদয়ের বিরদ্ধে অতীতে মাদক বিক্রির অভিযোগ নেই। তার বিরুদ্ধে থানায় কোন প্রকার মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে মামলা নেই। যেহেতু র‌্যাব আটক করে ফতুল্লা থানায় মামলা দিয়েছে। বিষয়টি আমি তদন্ত করে এর সত্য ঘটনা বলতে পারবো।
র‌্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ আর এসপি বাবুল আক্তার জানান, আটককৃত হৃদয়ের নামে থানায় মাদক মামলা বা অভিযোগ আছে কিনা তা আমরা জানিনা। আমরা আমাদের সোর্সদের তথ্য নিয়ে হৃদয়কে তার ড্রাইভার সহ আটক করি। সে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ব্যবসা করে আসছে বিষয়টি আমরা সোর্সের মাধ্যমে জানতে পারি।
ধৃত সাব্বির হোসেন (হৃদয়) সম্পর্ক ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাজী সৈয়দ ওবায়েদ উল্ল্যাহ্, ফতুল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সভাপতি মোঃ নূরুল ইসলাম (নূরু),যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মোঃ খোকন প্রধান, ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাবের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক কুতুবে আলম, ফতুল্লা মডেল প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক শহীদুল ইসলাম (শহীদ), ফতুল্লা থানা কমিউনিটি পুলিশং ফোরামের সভাপতি আলহাজ্ব মীর মোজাম্মেল আলী, ফতুল্লা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোঃ ইকবাল হোসেন জানায়, আমাদের জানামতে শওকত আলী চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলে সাব্বির হোসেন মাদক ব্যবসায়ী নয়, এই ছেলেটা হয়তো কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে বলো তাদের দাবী। ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাজী সৈয়দ ওবায়েদ উল্ল্যাহ্ বলেন, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী সাহেবের ছেলে সাব্বির হোসেন (হৃদয়) মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত নয় এটা আমি শতভাগ নিশ্চিত তবে আমি শুনেছি ইদানীং কয়েক জন মাদক সেবী বন্ধুদের সাথে হৃদয় চলাফেরা করছে। ফতুল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সভাপতি মোঃ নূরুল ইসলাম (নুরু) বলেন, শওকত আলী চেয়ারম্যানের ছেলে হৃদয় মাদক ব্যবসা কিনবা মাদকের সাথে জড়িত এটা সত্য নয়, আমার জানামতে এবং বিভিন্ন তথ্যের মতে হৃদয়ের মাদকের সাথে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাবের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ও স্হানীয় শিক্ষক কুতুবে আলম জানায়, শওকত আলী সাহেবের ছেলে হৃদয় কে আমি ছোট বেলা থেকে চিনি এবং জানি, মাদকের সাথে তার কোনো সংশ্লিষ্ঠতা নেই, আমার ধারনা শওকত আলী সাহেবের রাজনৈতিক ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে একটি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তার ছেলে সাব্বির হোসেন (হৃদয়) কে ফাসাঁনো হয়েছে। ফতুল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটি’র যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মোঃ খোকন প্রধান জানায়, শওকত আলী সাহেব বক্তাবলী ইউনিয়নের সফল ও স্বর্ণ পদক প্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হিসাবে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন, আমার বিশ্বাস একটি অদৃশ্য মহল শওকত আলী মানে আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগ মানে শামীম ওসমান এটা চিন্তা করেই শওকত আলীর ছেলে সাব্বির হোসেন (হৃদয়) কে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে মাদক দিয়ে ফাসিঁয়েছে, এটি শওকত আলী, এমপি শামীম ওসমান এবং আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টার একটি অংশ বলে আমি মনে করছি। আমার জানা মতে সাব্বির হোসেন (হৃদয়) মাদকের সাথে কোনো ভাবেই জড়িত নয়, এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের দাবী জানাচ্ছি । ফতুল্লা মডেল প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক শহীদুল ইসলাম (শহীদ) বলেন শওকত আলী চেয়ারম্যান একজন জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তি, একটি মহল শওকত আলী, এমপি শামীম ওসমান এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ষড়যন্ত্র করে সাব্বির হোসেন হৃদয় কে মাদক দিয়ে ফাসিঁয়েছে । আমার জানা মতে হৃদয় মাদকের সাথে কোনো ভাবেই জড়িত নয় এটা আমি হলফ করে বলতে পারি। ফতুল্লা থানা কমিউনিটি পুলিশং ফোরামের সভাপতি আলহাজ্ব মীর মোজাম্মেল আলী বলেন আমার জানা মতে শওকত আলী চেয়ারম্যানের ছেলে সাব্বির হোসেন হৃদয় মাদকের সাথে জড়িত নয়। ফতুল্লা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, শওকত আলী চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলে সাব্বির হোসেন (হৃদয়) মাদক ব্যবসায়ী নয় আর সে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত এমন কথা আগে কখনো আমি শুনি ও নাই।
প্রসঙ্গত, গতকাল মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪ টায় ফতুল্লা থানধীন ডিআইটি মাঠ এলাকায় র‌্যাব-১১ এর অভিযানে শওকত চেয়ারম্যানের ছেলে হৃদয় ও তার ড্রাইভার হাবিবকে ১৯ বোতল ফেন্সিডিল সহ আটক দেখানো হয়। পরে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। বুধবার দুপুরে তাদের আদালতে আনা হলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে প্রেরন করেন।