লাহোরে খ্রিস্টানদের সমাবেশে বোমা হামলা॥নিহত অন্তত ৭০

48

পাকিস্তানের লাহোরে খ্রিস্টানদের ইস্টার সানডে উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে বোমা হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন। এ হামলায় আহত হয়েছেন আরও আন্তত তিন শতাধিক মানুষ।
রোববার বিকালে পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরের দক্ষিণ পশ্চিমে গুলশান-ই-ইকবাল পার্কে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
নিহতের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। নিহতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তেহরিকে তালেবান পাকিস্তানের একাংশ জামাত-উল-আহরার ওই বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে।
লাহোরের খ্রিস্টান বাসিন্দাদেরকে ইচ্ছে করেই লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে -এই জঙ্গি সংগঠনটি।
এক বিবৃতিতে জামাত-উল-আহরারের মুখপাত্র এহসানুল্লাহ এহসান বলেন, ‘খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়। আমরা প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের কাছে এই বার্তা দিতে চেয়েছি যে, আমরা লাহোরে প্রবেশ করেছি। তিনি যা খুশি চান তা-ই করতে পারেন, কিন্তু তিনি আমাদের আটকাতে পারবেন না। আমাদের বোমা হামলাকারীরা এমন হামলা চালিয়ে যাবেন।’
ইকবাল টাউনের পুলিশ সুপার ড. মোহাম্মদ ইকবাল জানান,বিস্ফোরণস্থলটি লাহোরের একটি অন্যতম আবাসিক এলাকা। ইস্টার সানডে উপলক্ষে পার্কে প্রচুর মানুষের ভিড় ছিল। এ সময় সেখানে অনেক শিশু ও নারী উপস্থিত ছিলেন।149027-pakistan-mosque-bomb-blast
ডিআইজি (অপারেশন) ক্যাপ্টেন (অব.) মুহাম্মদ উসমান আত্মঘাতী বোমা হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হামলাকারীর বিচ্ছিন্ন মাথা খুঁজে পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে বল বেয়ারিংও উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পার্কের ভেতর রক্ত আর রক্ত। চারদিকে মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছড়িয়ে আছে। যেদিকেই দেখা যাচ্ছে আহত ও নিহত মানুষ পড়ে আছেন। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘আমরা আহতদের রিকশা ও ট্যাক্সিতে করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’
বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীরা। উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করতে সেনাবাহিনীও যোগ দিয়েছে।
পাঞ্জাবের প্রাদেশিক সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সালমান রফিক জানিয়েছেন, হাসপাতালে বেশ কয়েকজন আহত ব্যক্তিকে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নিহতের সংখ্যা অনেক বাড়তে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।
স্থানীয় সবগুলো হাসপাতালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসাইন ও প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
এছাড়া নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন নওয়াজ শরিফ।
এ ঘটনায় পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকার এ ঘটনায় তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে।
এদিকে, পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ওই হামলায় নিন্দা জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউজের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র নেড প্রাইস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে পাকিস্তানের জনগণ এবং সরকারের পাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আমরা পাকিস্তান এবং ওই অঞ্চলে আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে সন্ত্রাসের শেকড় উপড়ে ফেলতে কাজ করে যাব।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওই হামলার নিন্দা জানিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেছেন। মোদি যে কোনও প্রয়োজনে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।