সবার দৃষ্টি গণভবনের দিকে

47

রাজাধানী থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামেও বইতে শুরু করেছে নির্বাচনী আমেজ। সম্ভাব্য প্রার্থীদের নানামুখী প্রচারে এখন মুখর প্রত্যন্ত জনপদ। আরেকটি ভোটের আয়োজনে ব্যস্ততা বাড়ছে নির্বাচন কমিশনেরও। এমনই এক আবহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কাউন্ট ডাউন শুরু হচ্ছে আজ থেকে।

কেননা আজ ৩০ অক্টোবর থেকে আগামী বছরের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট করতে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিলের ঘোষণার কথা জানিয়েছে ইসি।

এদিকে ইসি সূত্রে জানা গেছে, ১ নভেম্বর বিকাল ৪টায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে নির্বাচন কমিশন। আর সাক্ষাতের পর যে কোনো দিন তফসিল ঘোষণা করবে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। আর ৪ বা ৮ নভেম্বরের মধ্যে তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন ইসির কর্মকর্তারা।

সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা বিষয়ে সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার  (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, অক্টোবরের ৩০ তারিখের পর থেকে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে। অর্থাৎ ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত এই সময় রয়েছে। নভেম্বরের দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। তবে নির্দিষ্ট তারিখ এখনো ঠিক হয়নি। কমিশনের বৈঠকে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আর ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন, গত সংসদের প্রথম অধিবেশন হয়েছিল ২৯ জানুয়ারি। সে হিসাবে এবার ভোটের ৯০ দিনের ক্ষণগণনা শুরু হবে ৩০ অক্টোবর।

এদিকে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসলেও এখনও অধরা রাজনৈতিক সমঝোতা। কী হবে নির্বাচনে, সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, না-কি আরেকটি ৫ জানুয়ারির নির্বাচন, শেখ হাসিনার অধীনে নাকি ভিন্ন ধারার সরকারের অধীনে নির্বাচন, কী হবে কারাবন্দি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার ইস্যু, এমন সব প্রশ্নই জনমনে।

এসব প্রশ্ন ঘিরে রাজনীতিতে নতুন আশার আলো হলো সংলাপ আলোচনাতে। ক্ষমতাসীন দলের অনীহা থাকলেও আলোচনার আবেদন উঠেছে সর্বমহল থেকে। দীর্ঘদিন ধরে সরকার আর বিরোধী জোটের বৈঠকের তাগিদ দিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক মহলও।

অবশেষে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বহু প্রতীক্ষিত সংলাপ।  ১ নভেম্বর ক্ষমতাসীন দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপে বসছে প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বিএনপি, নাগরিক ঐক্য, জেএসডি এবং বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ১ নভেম্বরের বৈঠকে সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমঝোতার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে। আওয়ামী লীগ ও ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ সম্পর্কে তিনি বলেন, এই সংলাপে কোনো সমঝোতা হলে ইসি আইনের মধ্য থেকে তা গ্রহণ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।

অপর একটি সূত্র বলছে, সংলাপের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখবে ইসি। সংলাপে সমঝোতা হলে পিছিয়ে যেতে পারে তফসিল ঘোষণাও। এ বিষয়ে ইসি কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, অতীতে তফসিল ঘোষণার পরও রাজনৈতিক দলের দাবির কারণে পিছিয়ে দেওয়ার নজির রয়েছে। সবকিছুই নির্ভর করছে সংলাপের ভবিষ্যতের ওপর।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপি বর্জনের মধ্যে অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন পেয়ে জয়লাভ করে।