৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 200

শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে‍ : আমাকেও হত্যা করতে পারে-শামীম ওসমান

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান বলেছেন, আমাদের গণতন্ত্রকে ধংস করতে উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে থামাতে প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে। আমাকেও হত্যা করা হতে পারে সে আশংকাও আছে। কিন্তু আমি আমাকে নিয়ে চিন্তিত না। আমি শামীম ওসমান মারা গেলে কিছু হবে না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে দেশের স্বার্থে উন্নয়নের স্বার্থে গণতন্ত্রের স্বার্থে।

আমাদের সকলকে এখন ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি ১৫ আগস্ট দুপুরে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আলাদা দুটি অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান এসব কথা বলেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা তাঁতী লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শওকত আলী, সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক জসিমউদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক শওকত ওসমান সরকার রিপন, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন,সিদ্ধিরগঞ্জ থানা তাঁতীলীগগের সভাপতি লিটন আহমেদ প্রমুখ।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে খ্যাতিমান ব্যক্তি ও মিডিয়ার বাণী…..

আবুল কালাম আজাদ:
১. ‘আমি হিমালয় দেখিনি, বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি’ – ফিদেল ক্যাস্ট্রো।
২. ‘আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের মত তেজী ও গতিশীল নেতা আগামী বিশ বছরের মধ্যে এশিয়া মহাদেশে আর পাওয়া যাবে না’- হেনরি কিসিঞ্জার।
৩. শেখ মুজিবকে চতুর্দশ লুইয়ের সাথে তুলনা করা যায়। জনগণ তাঁর কাছে এত প্রিয় ছিল যে লুইয়ের মত তিনি এ দাবি করতে পারেন ‘আমি ই রাষ্ট্র’- পশ্চিম জার্মানির পত্রিকা।
৪. ‘শেখ মুজিব নিহত হলেন তাঁর নিজেরই সেনাবাহিনীর হাতে অথচ তাঁকে হত্যা করতে পাকিস্তানীরা সংকোচবোধ করেছে’ – বিবিসি, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫
৫. ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হচ্ছেন সমাজতন্ত্র প্রতীষ্ঠার সংগ্রামের প্রথম শহীদ। তাই তিনি অমর’ – সাদ্দাম হোসেন।
৬. ‘শেখ মুজিবের মৃত্যুতে বিশ্বের শোষিত মানুষ হারাল তাদের একজন মহান নেতাকে, আমি হারালাম একজন অকৃত্রিম বিশাল হৃদয়ের বন্ধুকে’ —ফিদেল কাস্ট্রো।
৭. ‘আপমহীন সংগ্রামী নেতৃত্ব আর কুসুম কোমল হৃদয় ছিল মুজিব চরিত্রের বৈশিষ্ট্য’ — ইয়াসির আরাফাত।
৮. মুজিব হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না, যারা মুজিবকে হত্যা করেছে তারা যে কোনো জঘন্য কাজ করতে পারে’- নোবেল বিজয়ী উইলিবান্ট।
৯. ‘শেখ মুজিবুর রহমান ভিয়েতনামী জনগণকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন’ — কেনেথা কাউণ্ডা।
১০. ‘শেখ মুজিব নিহত হবার খবরে আমি মর্মাহত। তিনি একজন মহান নেতা ছিলেন। তাঁর অনন্যসাধারণ সাহসিকতা এশিয়া ও আফ্রিকার জনগণের জন্য প্রেরণাদায়ক ছিল’– ইন্দিরা গান্ধী।
১১. ‘বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে বাঙলাদেশই শুধু এতিম হয়নি. বিশ্ববাসী হারিয়েছে একজন মহান সন্তানকে’- জেমসলামন্ড, ব্রিটিশ এমপি।
১২. প্রভাবশালী ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের মতে, ‘শেখ মুজিব ছিলেন এক বিস্ময়কর ব্যক্তিত্ব।’
১৩. ফিন্যান্সিয়াল টাইমস বলেছে, ‘মুজিব না থাকলে বাংলাদেশ কখনই জন্ম নিত না।’
১৪. ভারতীয় বেতার ‘আকাশবাণী’ ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট তাদের সংবাদ পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে বলে, ‘যিশু মারা গেছেন। এখন লক্ষ লক্ষ লোক ক্রস ধারণ করে তাঁকে স্মরণ করছে। মূলত একদিন মুজিবই হবেন যিশুর মতো’।
১৫. একই দিনে লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ লোক শেখ মুজিবের জঘন্য হত্যাকাণ্ডকে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করবে।’
১৬. নিউজ উইকে বঙ্গবন্ধুকে আখ্যা দেয়া হয়, ‘পয়েট অফ পলিটিক্স’ বলে।
১৭. ব্রিটিশ লর্ড ফেন্যার ব্রোকওয়ে বলেছিলেন, ‘শেখ মুজিব জর্জ ওয়াশিংটন, গান্ধী এবং দ্যা ভ্যালেরার থেকেও মহান নেতা।’
১৮. জাপানি মুক্তিযোদ্ধা ফুকিউরা আজও বাঙালি দেখলে বলে বেড়ান, ‘তুমি বাংলার লোক? আমি কিন্তু তোমাদের জয় বাংলা দেখেছি। শেখ মুজিব দেখেছি। জানো এশিয়ায় তোমাদের শেখ মুজিবের মতো সিংহ হৃদয়বান নেতার জন্ম হবে না বহুকাল।’
১৯. ‘শেখ মুজিব দৈহিক ভাবেই মহাকায় ছিলেন, সাধারণ বাঙালির থেকে অনেক উঁচুতে ছিলো তাঁর মাথাটি, সহজেই চোখে পড়তো তাঁর উচ্চতা। একাত্তরে বাংলাদেশকে তিনিই আলোড়িত-বিস্ফোরিত করে চলেছিলেন, আর তাঁর পাশে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হয়ে যাচ্ছিল তাঁর সমকালীন এবং প্রাক্তন সকল বঙ্গীয় রাজনীতিবিদ। জনগণকে ভুল পথেও নিয়ে যাওয়া যায়; হিটলার মুসোলিনির মতো একনায়কেরাও জনগণকে দাবানলে, প্লাবনে, অগ্নিগিরিতে পরিণত করেছিলো, যার পরিণতি হয়েছিলো ভয়াবহ। তারা জনগণকে উন্মাদ আর মগজহীন প্রাণীতে পরিণত করেছিলো। একাত্তরের মার্চে শেখ মুজিব সৃষ্টি করেছিলো শুভ দাবানল, শুভ প্লাবন, শুভ আগ্নেয়গিরি, নতুনভাবে সৃষ্টি করেছিলেন বাঙালি মুসলমানকে, যার ফলে আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম’- হুমায়ুন আজাদ।
২০. মরহুম মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীও বলেছিলেন, ‘টুঙ্গিপাড়ার শেখ মুজিবের কবর একদিন সমাধিস্থলে রূপান্তরিত হবে এবং বাঙালির তীর্থস্থানের মতো রূপলাভ করবে।’
২১. ১৯৭৫ সালে জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় তখন তিনজনের একটা আন্তর্জাতিক সাংবাদিকের টিম বাংলাদেশে এসেছিলেন। তাদের একজন ব্রায়ান ব্যারন।  দেশে ফিরে ব্যারন লিখেছিলেন- ‘১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে লিখিত তার সংবাদ বিবরণীতে বলা হয়, শেখ মুজিব সরকারিভাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে এবং জনসাধারণের হৃদয়ে উচ্চতম আসনে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবেন। এটা শুধু সময়ের ব্যাপার। এটা যখন ঘটবে, তখন নিঃসন্দেহে তাঁর বুলেট-বিক্ষত বাসগৃহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্মারক-চিহ্ন এবং তাঁর কবরস্থান পুণ্য তীর্থে পরিণত হবে’। (দি লিসনার, লন্ডন, ২৮ আগস্ট, ১৯৭৫)।
২২. বঙ্গবন্ধুর নিহত হবার সংবাদ শুনে মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত এতটাই দুঃখ পেয়েছিলেন যে, তিনি আক্ষেপ করে বলেছিলেন ‘তোমরা আমারই দেয়া ট্যাঙ্ক দিয়ে আমার বন্ধু মুজিবকে হত্যা করেছ! আমি নিজেই নিজেকে অভিশাপ দিচ্ছি।’
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর শোকে পাথর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে আসার জন্য জার্মানির একটি এয়ারপোর্টে তাঁর পাসপোর্টটি ইমিগ্রেশন অফিসারকে দেখালে সেই অফিসার পাসপোর্টটি দেখেই শেখ হাসিনাকে বললেন ‘ছিঃ তোমরা বাংলাদেশিরা খুব জঘন্য একটি জাতি, যেই মানুষটি তোমাদেরকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন তাঁকেই তোমরা হত্যা করে ফেললে?’।
এর পরের ঘটনা আরও বেদনাদায়ক, সেই সময়ের পুরো এয়ারপোর্টের মানুষরা দেখল শাড়ি পড়া এক নারী চিৎকার করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন।

মনির মেম্বারের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবরের ৪২ তম শাহাদাৎ বাষির্কী পালিত

বক্তাবলীর ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোহাম্মদ মনির হোসেনের নেতৃত্বে মঙ্গলবার বাদ যোহর লাল মিয়ার চর ব্রীজ সংলগ্ন স্থানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবরের ৪২ তম শাহাদাৎ বাষির্কী পালন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন-মোঃ আলী হোসেন, মোঃ জাকির হোসেন মেম্বার, হাজী মোঃ তাইজুল ইসলাম, মোঃ মনোয়ার হোসেন, মোঃ নাছির উদ্দিন, জিয়াউর রহমান, মোঃ ছোট জাকির সহ এলাকার গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ।

মহানবীর ‘ছাতুল মক্কা’ আর ‘জয় বাংলা’ একই: নৌমন্ত্রী শাজাহান খান

‘জয় বাংলা’কে ভারত থেকে আনা শব্দ বলে অনেকে মনে করে’ উল্লেখ করে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, মহানবী হযরত মুহম্মদ (স.) মক্কা বিজয়ের পর ‘ছাতুল মক্কা’ বা জয় মক্কা বলেছেন। ভাষাগত পার্থক্য থাকলেও ‘ছাতুল মক্কা’ ও ‘জয় বাংলা’ একই।

মঙ্গলবার রাজধানীতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সম্মেলন কক্ষে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘জয় বাংলা নিয়ে অনেকের রিজার্ভেশন (অনিচ্ছা বা বর্জন) আছে। অনেকে অনেক কথা বলেন। আমাদের দেশের ইসলামপন্থী দলগুলো বলে, জয় বাংলা নাকি ভারতের কথা। ভারতের জয় হিন্দি এ রকম আরকি বলতে চান।’

শাজাহান খান বলেন, ‘কিন্তু আমি একজন মুসলমান হিসেবে একটা ইতিহাসের কথা আপনাদের জানাতে চাই। সেটি হলো, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (স.) যখন মক্কা বিজয় করলেন ঠিক সেই মুহূর্তে তিনি একটি শব্দ উচ্চারণ করেছিলেন- ছাতুল মক্কা, ছাতুল মক্কা। একই ভাবে সাহাবিরা সমস্বরে উচ্চারণ করেছিলেন, ছাতুল মক্কা। ছাতুল শব্দের অর্থ কী? ছাতুল শব্দের অর্থ হলো- জয়। নবীজিও (স.) বলেছিলেন জয় মক্কা।’

‘আমরা যারা মুসলমান তারা নবীর এই কথা যদি স্মরণ করি তাহলে স্বীকার করতে হবে যে, ছাতুল মক্কা আর জয় বাংলার মধ্যে শব্দগত কোনো পার্থক্য নেই, ওটা আরবি ভাষা আর এটা বাংলা ভাষা। যারা আমাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন, তারা একটা উদ্দেশ্য নিয়ে এটা করছেন’ বলেন শাজাহান খান।

তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু একজন সাধারণ মানুষ নন, একজন মহামানব। মহামানবের মধ্যে যেসব গুণাবলি থাকে বঙ্গবন্ধুর মধ্যে সেগুলো ছিল। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন দুর্যোগে সৃষ্টিকর্তা এই মহামানবদের সৃষ্টি করেন এবং তারা তাদের দর্শন ও আদর্শের মাধ্যমে স্বপ্ন বাস্তবায়নে মানুষকে উজ্জীবিত করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুও তাই করেছেন।’

মন্ত্রী বলেন, ‘আগস্ট মাস এলেই বাংলার মানুষকে আতঙ্কে থাকতে হয়। একদিকে যেমন আমাদের শোকের দিন অপরদিকে এই আগস্ট মাসেই ষড়যন্ত্রকারীরা বারবার আক্রমণ করে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য সিরিজ গ্রেনেড হামলা করা হয়েছিল’।

‘আজ ১৫ আগস্ট, আজও ষড়যন্ত্র হয়েছিল। পান্থপথের একটি হোটেলে জঙ্গিরা অবস্থান করছিল, পুলিশ জানতে পেরে সেখানে যখন ঘেরাও করে তখন জঙ্গিরা গ্রেনেড নিক্ষেপ করে, একজন নিহত হয়। আগস্ট মাস এলেই তারা হত্যাকাণ্ডের চেষ্টা করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে উৎখাতের জন্য বিএনপির বহু নেতা বহু কথা বলেছেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মতো লোক বলেছেন, আরেকটি ১৫ আগস্ট ঘটবে। তাহলে বিষয়টি কী? বিষয়টি হলো ষড়যন্ত্রকারীরা কিন্তু বসে নেই। তারা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। সকল মানুষকে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।’

নৌ-পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের পর্যবেক্ষণে যেসব কথা বলা হয়েছে সেগুলো কিন্তু অপ্রাসঙ্গিক। এর কারণে আমরা যেমন প্রতিবাদ করছি, ঠিক পাশাপাশি বিএনপি এটিকে ঐতিহাসিক রায় বলছে। তার মানে তারা মনে করছেন বিচার বিভাগ পাকিস্তানের মতো এই সরকারের বিরুদ্ধে একটা অবস্থান নিক। বাংলাদেশ কিন্তু পাকিস্তান নয়। বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানি জনগণ নয়। বাংলাদেশের মানুষ রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে। এখানে কোনো পাকিস্তানি ভাবধারা চলতে পারে না।

তিনি বলেন, যারা পাকিস্তানে বিশ্বাস করেন তারা দয়া করে পাকিস্তানে চলে যেতে পারেন। যারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী গোষ্ঠী আছেন তাদের বলতে চাই- ‘আপনারা সাবধান হোন। আমরা বাংলার জনগণ, যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম তারা ধ্বংস হয়ে যাইনি। মুক্তিযুদ্ধের ধারা আমাদের রক্তে প্রবাহিত।’

নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর এম মোজাম্মেল হক, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান জ্ঞান রঞ্জন শীল, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্ত্তী, নৌপরিবহন অধিদফতরের মহাপরিচালক কমডোর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন। (আমাদের সময় ডট কম)

নারায়ণগঞ্জে জাতীয় শোক দিবস পালিত

১৯৭৫ সালের আজকের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে মর্মান্তিক ভাবে হত্যা করে বিপদগামী কিছু সেনাকর্মকর্তা। তাই আজকের এই দিনটি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে সারা দেশব্যাপি। এরই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জেও নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে দিবসটি।

এ দিবসকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ায় অবস্থিত বিজয় স্তম্ভে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অস্থায়ি প্রতিকৃতিতে ফুলের শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া, জেলা পুলিশ সুপার মঈননুল হক, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমান সহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ। অপরদিকে মাহানগর আওয়ামী লীগের উদ্দোগে দুস্তদের মাঝে খাদ্য বিতরনের কর্মসূচি পালন করছে নেতাকর্মীরা।

এছড়াও এ দিবসকে সামনে রেখে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চিত্রাংকন , আবৃত্তি ,বঙ্গবন্ধুর স্মরনে রচনা লেখা ,নাটক সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়। এসকল সকল প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থিরা। সরকারি তোলারাম কলেজে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেয়ালিকা প্রতিযোগীতার অয়োজন করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, প্যাগোটায় দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।ফলে প্রার্থনার আওয়াজে মুৃখরিত শহরের অলিগলি।

এছাড়াও শহরের বিভিন্ন স্পটে মাইকে বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষন প্রচার করা সহ দেশাত্ববোধক গানে মুখরিত আজ পুরো শহর। যেন ৪২ বছর আগের সেই শোকাবহ দিন ফিরে এসেছে। আজো বঙ্গবন্ধু জাতীর স্মৃতিতে এক মহান নেতা হয়ে উজ্জিবীত আছে। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করেছে বিশেষ ক্রোরপত্র।

নারায়ণগঞ্জ প্রি-পারেটরি স্কুলে শিশুদের জন্য আয়োজিত সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণকারী এক শিক্ষার্থী আশালতা ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগীতায় মুক্তিযোদ্ধা সেজেছে আশা। এমনি করে অজস্্র শিক্ষার্থী বিভিন্ন প্রতিযোগীতার মাধ্যমে ইতিহাস সম্পর্কে অবগত হচ্ছে। ফলে এ উদ্যোহকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অভিভাবকরা। তারা বলেন, এসকল প্রতিযোগীতার মাধ্যমে একদিকে যেমন শিশুর পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন দিকে প্রতিভা বিকশিত হচ্ছে তেমনি তার মনো যগতে দেশের প্রতি এক গভির মমোত্ববোধ তৈরী হচ্ছে। যা ইতিবাচক।

সিদ্ধিরগঞ্জে জাতীয় শোক দিবস পালিত

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে আওয়ামীলীগ, সহযোগী সংগঠন, ব্যবসায়ী সংগঠন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জে দিবসটি পালন করা হয়। মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত পাঠানতুলী, আইলপাড়া, চৌধুরীবাড়ি, ২নং ঢাকেশ্বরী বাসষ্ট্যান্ড, এসও রোড, সুমিলপাড়া, আদমজী সিএমবি ব্যবসায়ী সমাজ, মিজমিজি. মৌচাক, সানাড়পাড়, মুক্তিনগর, হিরাঝিল, জালকুড়ি, সিদ্ধিরগঞ্জ কবরস্থান সংলগ্ন ঈদগাঁ মাঠসহ ২শতাধিক স্থানে কোরআন খানি, মিলাদ মাহফিল ও গরীব- দুঃখিদের মাঝে খাবার বিতরন বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।  এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় শ্রমিকলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল মতিন মাষ্টার, মহানগর আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কাজী আতাউর রহমান সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মজিবুর রহমান, সহ সভাপতি সাদেকুর রহমান,আলহাজ্ব শাহ আলম, সাধারন সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, যুগ্ন-সম্পাদক জহিরুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক, কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান মতি, কাউন্সিলর রুহুল ‍আমীন, কাউন্সিলর ইতেখার আহম্মেদ খোকন, কাউন্সিলর মোঃ হাসান, থানা শ্রমিকলীগের সভাপতি আবদুল সামাদ ব্যাপারী, ঢাকা বিভাগ শ্রমিকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মহিলা সম্পাদক শামীম আরা লাভলী, থানা কৃষক লীগের সাধারন সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, সেচ্ছা সেবক লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান, নাসিক ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিল রুহুল আমিন মোল্লা, ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডল, পাঠানটুলী আইলপাড়ায় যুবলীগ নেতা, শাহজাহান, শহিদুল্লাহ, সাইদুল ইসলাম, এমদাদ হোসেন, মোতালিব, নাছিরসহ দলের নেতাকর্মীরা। বামষ্ট্যান্ড এলাকায় বাংলাদেশ ট্যাংকলরী ওনার্স এসোসিয়সনের উদ্যোগে মিলাদ মাহফিল ও রান্না করা খাবার বিরতন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ট্যাংকলরী ওনাস এসোসিয়সনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মেহেদী, সাধারন সম্পাদক মাসুদ পারভেজ, ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়নের পদ্মা শাখার সভাপতি জাহিদ হোসেন, সাধারন সম্পাদক ফারুক হোসেন। এদিকে বিকাল সাড়ে ৫ টায় ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক শিক্ষানুরাগী আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেনর নিজ উদ্যোগে নাসিক ১নং ওয়ার্ড মিজমিজি কবরস্থান ঈদগাঁ মাঠে মিলাদ মাহফিল ও বঙ্গবন্ধু ও সকল শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা মধ্যে দিয়ে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয় । এ সময় তিনি মাদ্রাসার ছাত্র ও গবীর দুঃখিদের মাঝে রান্না করা তবারক বিতরন করা হয়। এদিকে আদমজী সিএমবি ব্যবসায়ী সমাজের উদ্যোগে সংগঠনের কার্যালয়েগবীর দুঃখি মানুষের মাঝে রানাœ করা খবার বিতরন করা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন,সভাপতি লিটন আহমেদ,সহ সভাপতি ওয়াছেক, সাধারন সম্পাদক স্বপন আহমেদ,সাংগঠনিক সম্পাদক বাদল,সহ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। দুপর ২ টায় আদমজী কোমল মিনিবাস মালিকÑশ্রমিক যৌথ উদ্যোগে সংগঠনের কার্যালয় প্রাঙ্গনে মিলাদ মাহফিল ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানসহ সকল শহিদদের প্রতি বিশেষ দোয়া ও খাবার বিতর করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, মালিক সমিতির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, এমডি জাহাঙ্গীর আলম, তৌহিদ ভুঁইয়া, আমানুর হক মন্ডল, আলিম, মাহবুব, ইব্রাহিম, শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সালাউদ্দিন, সহ সভাপতি জাহাঙ্গী আলম, সাধারন সম্পাদক শাহাজালাল, যুগ্ন সম্পাদক সামসুল, সাংগঠনিক সম্পাদক রহম আলী, অর্থ সম্পাদক সাত্তার, প্রচার সম্পাদক নবী হোসেন, সহ প্রচার সম্পাদক রাসেল, মিলন। বিকালে শিমরাইল মোড়ে রেন্ট এ কার ষ্ট্যান্ডে মালিক সমিতির উদ্যোগে মিলাদ মাহফিল অনুষ্টিত হয়। এসময় বঙ্গবন্ধুর জন্য দোয়া করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সমিতির সভাপতি আমিনুল কহ রাজু, সাধারন সম্পাদক সালাউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক বিশু বাবু, মাইন উদ্দিন, সাইফুলম লিটন প্রমুখ। অপরদিকে, সিদ্ধিরগঞ্জ মিজমিজি কবরস্থান ঈদগাহ মাঠে মাদ্রাসার ছাত্র, এতিম, দুস্থ ও গরিবদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগি ও সমাজ সেবক হাজ্বী আনোয়ার ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মুজিবুর রহমান, সাধারন সম্পাদক হাজ্বী ইয়াছিন মিয়া, সোহেল পারভেজ। এসময় বঙ্গবন্ধুর রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এর আগে হাজ্বী আনোয়ার ইসলাম দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত নারায়নগঞ্জ-৪ আসনের মাননীয় সাংসদ আলহাজ্ব এ.কে.এম শামীম ওসমানের সাথে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতাকর্মী কর্তৃক আয়োজিত শোক দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

বঙ্গবন্ধু স্মরণে বঙ্গভবনে মিলাদ

ডেস্ক নিউজঃ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বঙ্গভবনে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাদ জোহর বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এ মাহফিলের আয়োজন করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নিহত সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মিলাদ মাহফিলে রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্যরা, সংশ্লিষ্ট সচিব, সামরিক কর্মকর্তা ও বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।

বঙ্গভবন জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ সাইফুল কবির মোনাজাত পরিচালনা করেন।

এর আগে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতর প্রযোজিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র দরবার হলে প্রদর্শন করা হয়।

বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী‘র ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে তার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৩৩ মিনিটে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সেখান থেকে ফিরে যাওয়ার পর স্থানটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। তখন সেখানে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শাখা, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে।

বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত হিজলতলা এখনো রয়েছে সেভাবেই

ডেস্ক নিউজঃ ছোট খাল। সময়ের ব্যবধানে আরও ছোট হয়ে আসছে। তবে বর্ষা হওয়ায় খালটি পানিতে টুইটম্বুর। পানি যেন উপচে পড়ছে। টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মধ্য দিয়ে যাওয়া খালটি আজও যেন তার নাম ধরে ডাকছে। এ খালেই সাঁতার কাটতেন তিনি। শৈশব-কৈশোরে এ খালেই ডুব-সাঁতারে ঝড় তুলতেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধুর বাড়ির একেবারেই পাশ ঘেঁষে খালটি প্রবাহিত হয়েছে। ছোট হলেও বেশ পরিপাটি করে রাখা খালের দু’পাশ। দু’পাড় সবুজে ভরা। ব্লক দিয়ে পিচিং করে শাসন করা হয়েছে খালটি। বঙ্গবন্ধুর বাড়ির পার্শ্ববর্তী পাড় বাঁধাই করা। শান বাঁধানো ঘাট করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ধরে রাখতেই।

Bisk Club
jagonews24

আজ বঙ্গবন্ধু নেই, আছে তার সেই প্রিয় ঘাট পাড়। আছে সেই হিজল গাছ। ঘাটের দু’পাশে তাল গাছ। ঘাটে হিজল গাছটি এখনও ঠায় দাঁড়িয়ে। হিজল গাছটি ঠিক যেন বঙ্গবন্ধু স্মৃতিকথার সাক্ষী হয়ে আছে। আর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আজও ডুকরে কাঁদছে প্রিয় মানুষটির জন্য।

ঘাট পাড়ে লেখা ‘এই তো- সেই হিজলতলা। যেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা বাল্যকালে গোসল করতেন’।

ঘাট প্রসঙ্গে কথা হয় শেখ হাসিনার মামা শেখ বোরহান উদ্দিনের সঙ্গে। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শৈশব এবং কৈশোরে এ ঘাটেই গোসল করতেন। এমনকি পরিণত বয়সে তিনি গ্রামে আসলেও এ ঘাটেই গোসল করতেন। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানাও বাল্যকালে এ ঘাটে গোসল করতেন, সাঁতার কাটতেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছোটবেলায় দেখেছি, এই ঘাট থেকেই বঙ্গবন্ধু নৌকা করে বের হতেন। এখানে বড় বড় নৌকা ভিড়ত। শেখ বাড়ির নিজস্ব একটি বড় নৌকাও ছিল। ওই নৌকায় গিয়েই নদীতে লঞ্চে উঠতেন। এ ঘাট পাড়ে এলেই বঙ্গবন্ধুর কথা মনে পড়ে যায়। এ ঘাটেই মিশে আছে জাতির জনকের নানা স্মৃতিকথা।’

বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে

টানা ভারী বর্ষণ ও ভারতের পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলে তলিয়ে গেছে দেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলা। বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পানিতে ডুবে মারা গেছে অন্তত ২৬ জন। ঢাকার সাথে রেল ও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

নিহতদের মধ্যে দিনাজপুরে ১৪, কুড়িগ্রামে ৬, লালমনিরহাটে একই পরিবারে ৪ জনসহ ৫ ও ঠাকুরগাঁয়ে ১ জন রয়েছে। গত দুই দিনে পানিতে তলিয়ে অন্তত ১৫০২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ রাখা হয়েছে ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পরীক্ষা।

লালমনিরহাটে রেল লাইনের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। একই সঙ্গে বেশ কিছু এলাকায় সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও বন্ধ হয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী আগামী কয়েকদিন পানি আরো বাড়তে পারে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর বাংলাদেশ অংশ ও মেঘনা নদীর অববাহিকায় পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও তা বিপদসীমার সামান্য নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া, তিস্তা-ধরলা-দুধকুমার অববাহিকার ভারতীয় অংশে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে এই তিন নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তা বেসিনে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

সবচেয়ে বেশি পানি বৃদ্ধি পেয়েছে যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি ও সিরাজগঞ্জ স্টেশনে। যমুনা এবং মেঘনা নদীর পানি অব্যাহতভাবে বাড়ছে। একই সঙ্গে এর শাখা নদী সুরমা, কুশিয়ারা, ভোগাই কংস নদীতেও পানি বাড়ছে।

লালমনিরহাটের ৫ উপজেলার তিস্তা, ধরলা, সানিয়াজান, সিঙ্গীমারী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। রেললাইনের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় ঢাকা-লালমনিরহাট রুটে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। সদর উপজেলার তিস্তা রেলস্টেশন সংলগ্ন ও জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার কয়েক জায়গায় রেললাইনে উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় লাইনের নিচে বিশাল আকার গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এতে বর্তমানে লালমনিরহাট-বুড়িমারী রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ৯ উপজেলার ৬০ ইউনিয়নের প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ। ঘর-বাড়ী ছেড়ে বানভাসীরা আশ্রয় নিয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ উঁচু জায়গায়।

পানির প্রবল তোড়ে ভেসে গেছে প্রায় দুই শতাধিক ঘর-বাড়ি। সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ১৩২ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার,
নুন খাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার এবং পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমারের পানি বিপদসীমার ১৩৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়কের সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকার উপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় কুড়িগ্রামের সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়েছে। অন্যদিকে
কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী সড়ক তলিয়ে কয়েকটি পয়েন্টে ধ্বসে যাওয়ার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ী উপজেলাসহ সোনাহাট স্থল বন্দরের যোগাযোগ ব্যবস্থা।

ঠাকুরগাঁওয়ে প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। পুরো জেলায় ৬৫ টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১২ হাজার মানুষ । ঠাকুরগাও জেলা ত্রান ও পূর্নবাসন অফিসের তথ্য মতে জেলার ৫ টি উপজেলায় ৪০ টি ইউনিয়নে পানিবন্দি হয়ে পরেছে কয়েক লাখ মানুষ ।

টঙ্গন, সেনুয়া ও শুক নদীসহ আঞ্চলিক নদীগুলোতে রোববার সকাল থেকে পানি বিপদসীমার ৪০ মিলিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে জেলার প্রায় ১ হাজার গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামে বন্যার পানির আতঙ্কে রেহেনা পারভীন নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার টাঙ্গন নদীর তীরে অবস্থিত ডিসি বস্তিতে প্রবল স্রোতের মুখে আটকা পরা বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করেছে রংপুর ডিভিশন সেনাবাহিনী। তবে এখনো রিয়াদ (২০) নামে একজন নিখোঁজ রয়েছে। পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁওয়ের রেলপথের নয়ন ব্রিজ এলাকায় ২ কিলোমিটার রেলপথ ডুবে যাওয়ায় ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় থেকে ট্রেন চলাচল দুই দিন থেকে বন্ধ রয়েছে।

জয়পুরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় জেলার পাঁচবিবি, ক্ষেতলাল, আক্কেলপুর ও সদর উপজেলার কমপক্ষে ১০টি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

দিনাজপুরে পানির তোড়ে ভেঙে গেছে শহররক্ষা বাঁধ। দিনাজপুর জেলায় পানিতে ডুবে, দেয়াল চাপায় ও সাপের কামড়ে অত্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভেঙে গেছে শহররক্ষা বাঁধসহ বেশ কয়েকটি নদীর বাঁধ। বাড়ি-ঘর ডুবে গিয়ে গৃহহীন হয়ে পড়েছে জেলার প্রায় সাত লাখ মানুষ।

রোববার দুপুর থেকে বৃষ্টি থেমে গেলেও ঢলে নেমে আসা পানিতে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে বিভিন্ন এলাকা।দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে দিনাজপুর সদর, বিরল, কাহারোল, বীরগঞ্জ, খানসামা,ঘোড়াঘাট,নবাবগঞ্জ চিরিরবন্দর ও পার্বতীপুর উপজেলা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ।

পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অসংখ্য মানুষ। গৃহহীন এসব মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন বাঁধ,উচু এলাকা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠনে। জেলার দুই হাজার ৯৩০টি শিক্ষা প্রতষ্ঠানের অধিকাংশই বানভাসী মানুষের আশ্রয় কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম।