আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুলতানা কামালকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরের সহ-সভাপতি জুনায়েদ আল হাবীব বলেছেন, সুলতানা কামালকে তসলিমা নাসরিনের মতো দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেন। তার দেশ বাংলাদেশ নয়।
শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে আয়োজিত সুপ্রিমকোট থেকে ভাস্কর্য অপসারণের দাবিতে হেফাজতে ইসলামের এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এই দাবি জানান।
মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, ‘ভাস্কর্য থাকতে না দিলে মসজিদ থাকতে দেয়া হবে না- এমন কথা বলার সাহস হলো কিভাবে সুলতানা কামালের। সুলতানা কামাল রাজপথে নেমে দেখুন, হাড্ডি-গোস্ত রাখা হবে না।’
তিনি বলেন, বদরের যুদ্ধ এই রমজান মাসে হয়েছে। মক্কায় যত মূর্তি সরনো হয়েছে, সেটা রমজান মাসেই সরানোর হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি মূর্তি কি এখান থেকে সরাবেন? নাকি আমরা আসব? যদি আমাদের আসতে হয়, বাংলাদেশে পূজা মণ্ডপ ছাড়া আর কোথাও মূর্তি রাখা হবে না।
প্রশাসন ও সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলন, আমরা যে আসতে পারি, আপনাদের নিশ্চয় তা জানা আছে। ২৪ ঘণ্টায় কোটি মানুষ ঘেরাও করবে হাই কোর্ট। মেহেরববানি করে আমাদের আসতে বাধ্য করবেন না। আমরা যে দিন আসব, পুলিশ ঠেকাতে পারবে না। আমরা যে দিন আসব, কাফনের কাপড় হাতে নিয়ে আসব।
হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ স্পষ্টভাবে দু’টি শিবিরে বিভক্ত। একটি মূর্তির পক্ষে, অন্যটি মূর্তির বিরুদ্ধে। সুপ্রিম কোর্টের সামনে মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে ভিনদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য। সুপ্রিম কোটের কোন স্থানেই মূর্তি থাকতে দেয়া হবে না।
ঢাকা মহানগর হেফাজতের সহ সভাপতি মুজিবুর রহমান পেশওয়ারী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, আপনি কলা ঝুলিয়ে মুলা খাওয়ালেন। তিন চারজন লোকের কারণে আপনার ভোট বাক্স কমছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সামনে আশা করবেন না। আগামী নির্বাচনে স্বয়ং মোদি এসে আপনাকে ক্ষমতায় বসাতে পারবেন না।
মাওলানা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘ওরা বলে ভাস্কর্য আর মূর্তি এক জিনিস না। মূর্তির চেয়ে ভাস্কর্য আরো খারাপ। মূর্তির পূজা করে সামান্য গুটি কয়েক হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা। আর ভাস্কর্য পূজা করে মৃণাল হক, সুলতানা কামাল, শাহরিয়ার কবির, ইমরান এইচ সরকাররা। এসব নাস্তিক-মুরতাদরা ভাস্কর্য পূজা করে। এসব ডিজিটাল নাস্তিকদের বাংলার জমিন থেকে ভাস্কর্যসহ ভারতে পাচার করে দেয়া হবে। মৃণাল হক সুপ্রিম কোর্টের সামনে জঙ্গিবাদ শুরু করেছে। সুপ্রিম কোর্টের সামনে দেবীর হাতে তরবারি দিয়েছে। এদের গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা নূর হোছাইন কাসেমী বলেন, ‘গ্রিক দেবী অপসারণের কারণে আমার গত শুক্রবার ধন্যবাদ জানিয়েছিলাম প্রধানমন্ত্রীকে। কিন্তু অত্যন্ত ব্যথা বেদনার সঙ্গে আজ আমাদের প্রতিবাদ সমাবেশে সমবেত হতে হয়েছে। মূর্তি অপসারণের পর আবার প্রতিস্থাপন তামাশা, এছাড়া আর কিছু নয়। অনতিবিলম্বে মূর্তি অপসারণ করা হোক, না হলে রমজানের পরে বৃহৎ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী, জ্বালাও-পোড়াও এ বিশ্বাসী না।’