আলহামদুলিল্লাহ বিগতকালেও মিলাদ কিয়াম নিয়ে বহু বাহাস হয়েছে। ফলাফলে মিলাদ কিয়াম কারীদের পক্ষেই প্রায় সকল স্থানে বিজয় এসেছিল আলহামদুলিল্লাহ।
আমাদের শায়েখ আল্লামা মুফতী ড. সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী আল কোরাইশী পীর সাহেব হুজুর ইসলাম ও মুসলমানের পক্ষে বহুবার মিলাদ কিয়াম নিয়ে বাহাস করে বীর মুজাহিদের বেশে বিজয়ী হয়েছিলেন।
যার প্রমানঃ সৈয়দপুরের বাহাস,বাউফল বাহাস,তিতাসের বাহাস,লাকসামের বাহাস,ফরিদপুরের বাহাস নামে এখনো ইন্টারনেটে রয়েছে।প্রতিটি বাহাসই তৎকালিন সময়ে টপ অফ দা কান্ট্রি ছিল।অনেকে আবার এই চিরন্তন সত্যটাকেও মিথ্যার ছাই দিয়ে ডাকার ব্যর্থ চেষ্টাও করেছিল।
যেই আলেমের পাহার সমপরিমাণ অভিজ্ঞতা রয়েছের তিনিই ভাল বুঝেন কাকে বাহাসে রাখা ঠিক হবে আবার কাকে না রাখাটা ভাল হবেনা।তাই এটা নিয়ে নাক গলানোইটাই ভাল কারণ মিলাদ কিয়ামের পক্ষে যে মোটা হুজুরের নাম বলা হয়েছে তিনি ইতিপূর্বে বহু বার বিশেষ করে নড়াইলের বাহাসে এবারতে ধরা গেয়েছেন,এটা বেমালুম ভুলেগেলে হবেনা।
অনেকে বলে বাহাস করে লাভ কি?
তাদের প্রতি বলতে চাই, আমরা চরম শান্তিগামী আমরা ফেৎনা উৎখাত করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করায় বিশ্বাসী কিন্তু যারা প্রচার করে থাকে ” মিলাদ কিয়াম কারীরা হল জাহান্নামী “। তাদের এই জাহালতেকে দূরিভূত করার লক্ষেই বাহাস প্রয়োজন। তবে এইবার যে বাহাস হতে যাচ্ছে সেটা নিয়ে মিথ্যাচারের কোন সুযোগ নাই। সেটা জাতীয়ভাবে হবে আর তাতেই সমাধান আসবে ইনশাআল্লাহ।
আসুন বাহাস সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেইঃ-
আগামী ২৫শে মে ২০১৭ইং, রোজ বৃহস্পতিবার, সকাল ১০ ঘটিকায়, বাইতুল মুকাররম (ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে)” মিলাদ কিয়াম মুস্তাহাব” বিষয়ে ক্বওমী উলামাদের সাথে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের সুন্নি আলেমদের বাহাস অনুষ্ঠিত হবে-স্টেম্প অনুযায়ী যা লিখিত হয়েছে।
১ম পক্ষের মুনাজির হিসেবে থাকবেন ◢◢
১- আল্লামা মুফতী ড. সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী পীর সাহেব জৌনপুরী।২-আল্লামা মুফতী ড. সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ এরশাদ বুখারী সাহেব,ইসলামি রিচার্জ সেন্টার দিনাজপুর।৩- আল্লামা এবি এম হুজ্জাতুল্লাহ নকশেবন্দী সাহেব পীর সাহেব,চান্দ্রা দরবার শরীফ,চাঁদপুর।৪- আল্লামা মুফতী মাঞ্জুর হোসাইন সাহেব প্রধান মুফতী,মারকাজু তাহরিকে খাতমে নুবুওয়্যাত কারামাতিয়া মাতলাউল উলুম মাদ্রাসা।৫- মুফতি হাবিবুল্লাহ ইবনে ইউসুফ আদ-দিয়াড়ী। পরিচালক, ইফতা বিভাগ, মারকাযু তাররিকি খতমীন নবুওয়াত, কারামতিয়া মাতলাউল উলুম মাদ্রাসা, নারায়নগঞ্জ। ৬- একে এম ইলিয়াস সিদ্দিকী সাহেব,পরিচালনা বোর্ডের সদস্য, ডোবরা আল গফুরিয়া, দ্বীনিয়া ম্রাদাসা, ফরিদপুর।
২য় পক্ষের মুনাজির হিসেবে থাকবেন ◢◢
১-আল্লামা মুফতী দেলোয়ার হুসাইন (দা.বা.),পরিচালক, আকবর কমপ্লেক্স ঢাকা।২- আল্লামা মুফতী মীযানুর রহমান সাঈদ (দা.বা.),পরিচালক, শায়খ যাকারিয়া রিচার্স সেন্টার, ঢাকা। ৩-আল্লামা মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম (দা.বা.), পীর সাহেব চরমোনাই। ৪-আল্লামা মুফতী শফী কাসেমী (দা.বা.),মুহাদ্দিস, বগুড়া জামিল মাদরাসা। ৫- আল্লামা মুফতী সামসুদ্দোহা আশরাফী (দা.বা.),পরিচালক, জামিয়া ইসলামিয়া রওজাতুল উলূম বাওনিয়াবাদ, মিরপুর ঢাকা।
৬- আল্লামা মুফতী লুৎফুর রহমান ফরায়েজী (দা.বা.),তালীমুল ইসলাম এন্ড রিচার্স ইনিস্টিটিউট, রামপুরা।
মিলাদ কিয়াম বিষয়ে বাহাসের চুক্তিনাম
✍ আল্লামা মুফতী ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী সাহেবের পক্ষ থেকে বাহাসের চ্যালেঞ্জকারী ১ম পক্ষ মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আল মাহদি ছাত্র, অনার্স (২য় বর্ষ), ঢাকা কলেজ।
✍ মুফতী লুৎফুর রহমান ফরায়েজীর পক্ষ থেকে চ্যালেঞ্জ গ্রহণকারী মিলাদ কিয়াম বিরোধী ২য় পক্ষ আব্দুস সবুর খান সুমন পরিচালক, তালীমুদ্দীন ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
✔ ১ম পক্ষের দাবীঃ
তাওয়াল্লুদ তথা আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মের বৃত্তান্ত বর্ণনা করে দাঁড়িয়ে তাঁর সম্মানে সালাম পেশ করা মুস্তাহাব, মুস্তাহসান। এ পদ্ধতির মিলাদ কিয়াম বিরোধীরা ফিত্তীন তথা ফিতনাবাজ।
✔ ২য় পক্ষের বক্তব্যঃ
উপরোক্ত প্রচলিত বিশেষ পদ্ধতিতে মিলাদ ও কিয়াম এর মুস্তাহাব ও মুস্তাহসান তথা বিশেষ সওয়াব হবার কোন প্রমাণ কুরআন ও হাদীসে বিদ্যমান নেই। তাই এটিকে বিশেষ সওয়াবের কাজ মনে করা বিদআত-পরিত্যাজ্য।
উভয়পক্ষের সম্মতিক্রমে বাহাসের নির্ধারিত শর্তাবলী ✎✎✎
১-১ম পক্ষের দাবীকৃত বিশেষ পদ্ধতির প্রচলিত মিলাদ কিয়াম মুস্তাহাব, মুস্তাহসান তথা বিশেষ সওয়াবের কাজ হবার প্রমাণ কুরআন থেকে কিংবা সনদের বিচারে বিশুদ্ধ হাদীস কিংবা ইজমা কিংবা এগুলোর আলোকে কিয়াস দ্বারা পেশ করবেন।
২-“মুস্তাহাব”-এর সংজ্ঞাটি কুরআন থেকে কিংবা সনদের বিচারে বিশুদ্ধ হাদীস কিংবা ইজমা কিংবা এগুলোর আলোকে কিয়াস থেকে উদ্ধৃত করবেন।
৩-“বিদাআত”-এর সংজ্ঞাটি কুরআন থেকে কিংবা সনদের বিচারে বিশুদ্ধ হাদীস কিংবা ইজমা কিংবা এগুলোর আলোকে কিয়াস থেকে উদ্ধৃত করবেন।
৪-প্রচলিত মিলাদ কিয়ামটি হুকুমসহ কুরআন থেকে কিংবা সনদের বিচারে বিশুদ্ধ হাদীস কিংবা ইজমা কিংবা এগুলোর আলোকে কিয়াস বক্তব্যের আলোকে উল্লেখ করতে হবে।
৫-দলীলের উৎস হবে কেবল কুরআন থেকে কিংবা সনদের বিচারে বিশুদ্ধ হাদীস কিংবা ইজমা কিংবা এগুলোর আলোকে কিয়াস বক্তব্য। হাদীস উল্লেখ করলে, তার বিশুদ্ধতা জরাহ তাদীলের গ্রহণযোগ্য কিতাবের আলোকে বিশুদ্ধ প্রমাণ করতে হবে।
৬-উপরোক্ত তিনটি দালিলীক উৎস ছাড়া খাইরুল কুরুন পরবর্তী কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত আমল, বা বক্তব্য [আরব, অনারব, দেওবন্দী, বেরেলভী, লা-মাযহাবী যেকোন দল হোক] দলীল হিসেবে উল্লেখ করা যাবে না। করলে তা অনর্থক কাজ হিসেবে সাব্যস্ত হবে। তবে আদিল্লায় আরবায়ার পক্ষে যার বক্তব্য মিল পাওয়া যাবে তার কথা গ্রহনযোগ্য হবে। এখানে উল্লেখ যে, আদিল্লায় আরবায়ার (যেহেতু আমরা উভয়ই হানাফী ফিকহের অনুসারী) হানাফী ফিকহের গ্রহনযোগ্য কিতাবের মুফতাবীহি বক্তব্যও উল্লেখ করতে হবে।
৭-নির্দিষ্ট বিষয় ছাড়া অন্য কোন বিষয়ের অবতারণা করলে বা নির্দিষ্টকৃত দলীলের ভিত্তি ছাড়া অন্য কোন দলীল পেশ করলে তা অগ্রহণীয় ও অহেতুক কাজ হিসেবে সাব্যস্ত হবে।
৮-উভয় পক্ষকে কথা বলার সমান সুযোগ প্রদান করতে হবে।
৯-পুরো বাহাস ভিডিও হবে। ইন্টারনেটে ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার হবে। এক্ষেত্রে কোন পক্ষ বাঁধা প্রদান করতে পারবে না।
১০-আন্তরিক ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠানটি হতে হবে। কোন প্রকার শোরগোল ও হৈ চৈ করা যাবে না।
১১-চুক্তিনামায় নির্ধারিত মুনাজির ও বিচারক ছাড়া অনুষ্ঠানে অন্য কারো জন্য বাহাস চলাকালীন সময়ে কথা বলার অধিকার নেই।
১২-প্রশাসনিকভাবে নিরাপত্তার পূর্ণ গ্যারান্টি থাকতে হবে। উভয় পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যাপারটি অবহিতকরণ পূর্বক সেখানে নিরাপত্তার ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে হবে।
১৩-বাহাস অনুষ্ঠানের যাবতীয় খরচ (ব্যায়ভার) উভয়পক্ষ সমানভাবে বহন করবে।
১৪-নির্ধারিত সময়ে কোন পক্ষ অনুপস্থিত থাকলে তারা পরাজিত বলে সাব্যস্ত হবেন।
১৫-বাহাসে পরাজিত দল বিজয়ী মত গ্রহণ করে তওবা করতে হবে।
বিচারক হিসেবে থাকবেন
১.ড. আব্দুল্লাহিল মারুফ সাহেব (দা.বা.)প্রফেসর, ইসলামী স্ট্যাডিজ বিভাগ , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
২.ড. মুশতাক আহমদ, উপ পরিচালক, অনুবাদ ও সংকলনবিভাগ, ইসলামী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
স্থান : ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তন, বাইতুল মোকাররম, ঢাকা
তারিখঃ ২৫ই মে, ২০১৭ ইং বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা। শেষ সময়- বিকাল ৪টা।প্রতিপক্ষের আলোচনার সময় হল-
উভয় পক্ষের ১ম বক্তা ৩০ মিনিট করে, পরবর্তী বক্তারা ১৫ মিনিট করে।
প্রত্যাশাঃ আলোচনা হোক। কমুক দূরত্ব,সত্য প্রকাশ পাক,সৃষ্টি হোক সৌহার্দ্রতা ভ্রাতৃত্ব,আল্লাহ তা’লা আমাদের সকলকে সু্ন্নতের উপর আমল করার তৌফিক দান করুন ।আল্লাহুম্মা আমিন।
উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে যা কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে তার ভিডিও লিংক আপনাদেরকে দেওয়া হল…https://youtu.be/TtZWeybHUXE।