২২শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৭ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 236

মিথ্যা অভিযোগে মীর কাসেমের সাজা : খন্দকার মাহবুব

জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, আপিল বিভাগ মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে সাজা দিয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এর বিচার করবে। মঙ্গলবার মীর কাসেমের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন খন্দকার মাহবুব।

সকাল ৯টা ৪ মিনিটে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর রায় বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তাঁর পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে এ রায় দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ।

বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।

এ রায়ের বিষয়ে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, কিশোর জসিম হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জসিম হত্যায় তিনি সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে কোনো প্রমাণ নেই। সাক্ষীরা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাতে মীর কাসেম আলী সরাসরি জড়িত ছিলেন, এ ধরনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

খন্দকার মাহবুব প্রশ্ন করে বলেন, মীর কাসেম একজন সমাজসেবক ছিলেন। তিনি বিভিন্ন হাসপাতাল, ব্যাংক, গণমাধ্যমের প্রতিষ্ঠাতা। পরবর্তী সময়ে যদি দেখা যায়, এ সাজা সঠিক হয়নি, তাহলে কী হবে?

খন্দকার মাহবুব বলেন, সাক্ষীরা জবানবন্দি দেওয়ার পর আদালত অসহায়ভাবে সাক্ষ্য গ্রহণ করে এ রায় দিয়েছেন। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত এ আইন তৈরি করা হয়েছিল ১৯৫ পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর বিচারের জন্য। কিন্তু এ আইনে বাংলাদেশের নাগরিকদের বিচার করা হচ্ছে।

মীর কাসেমের আইনজীবী বলেন, আদালত চত্বরে বিভিন্ন লোক স্লোগান ও ফাঁসির দড়ি নিয়ে হাজির হয়েছে। অথচ বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে একটু ‘টুঁ’ শব্দ হলেও বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর পাঠানো হতো।

মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর রায় বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা চার মিনিটে মীর কাসেমের পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে এ রায় দেন প্রধান  বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ।

বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।

রবিবার এ বিষয়ে শুনানি শেষে রায়ের জন্য এই দিন নির্ধারণ করা হয়। গত ২৪ আগস্ট মামলাটির শুনানি শুরু হয়। ওই দিন মীর কাসেমের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের করা সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি ঘোষণা করেন আদালত।

এর আগে ২৫ জুলাই রিভিউ শুনানির জন্য এক মাস সময় দেওয়া হয় মীর কাসেম আলীকে। তাঁর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন রিভিউ শুনানির জন্য দুই মাসের সময় আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এক মাসের সময় মঞ্জুর করেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সময় আবেদনের বিরোধিতা করেন।

গত ১৯ জুন আপিল বিভাগের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেন মীর কাসেম আলী। এতে ১৪টি আইনি যুক্তি তুলে ধরে তাঁকে বেকসুর খালাস দেওয়ার আবেদন জানানো হয়।

জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় গত ৬ জুন প্রকাশ করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোর জসিমসহ ছয়জনকে হত্যার দায়ে গত ৮ মার্চ মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায় বহাল রেখে আদেশ দেন আদালত। পরে ৭ জুন তাঁকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়।

মামলার সারসংক্ষেপ
২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের রায়ে মীর কাসেমের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা ১৪টি অভিযোগের মধ্যে ১০টি প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে দুটিতে (১১ ও ১২ নম্বর অভিযোগ) মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া চারটি অভিযোগে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়।

১১ নম্বর অভিযোগে রয়েছে কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিমসহ ছয়জনকে আটক, নির্যাতন ও হত্যার বিষয়টি। এ অভিযোগে বিচারকরা সর্বসম্মতিক্রমে মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। ১২ নম্বর অভিযোগে রয়েছে রঞ্জিত দাস ও টুন্টু সেনকে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ। এ অভিযোগে বিচারকদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রায় দেওয়া হয়। ১১ ও ১২ নম্বর ছাড়া বাকি ১২টিই অপহরণের পর আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ মীর কাসেমের বিরুদ্ধে।

প্রমাণিত অভিযোগগুলোর মধ্যে ২ নম্বরটিতে মীর কাসেমকে ২০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। ৩, ৪, ৬, ৭, ৯ ও ১০ নম্বর অভিযোগে তাঁকে সাত বছর করে মোট ৪২ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ১৪ নম্বর অভিযোগে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। এই আটটি অভিযোগে তাঁকে ৭২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। তবে ১, ৫, ৮ ও ১৩ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে এসব থেকে খালাস (অব্যাহতি) দেওয়া হয়।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় মীর কাসেম আলীর পক্ষে আপিল করেন জয়নুল আবেদীন তুহিন। মীর কাসেমের পক্ষে ১৮১টি যুক্তি দেখিয়ে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে এ আপিল করা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগিতায় ছাত্রসংঘের বাছাই করা সদস্যদের নিয়ে গঠিত সশস্ত্র আলবদর বাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার হিসেবে মীর কাসেম আলী মানবতাবিরোধী অপরাধ ঘটান, তা ট্রাইব্যুনালের রায়ে প্রমাণিত হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় ট্রাইব্যুনালের আদেশে ২০১২ সালের ১৭ জুন মীর কাসেম আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

এর আগে গত ৬ জানুয়ারি জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ। এ মামলা এখন পূর্ণাঙ্গ রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে। এটি আপিলের ষষ্ঠ রায়।

এ ছাড়া আপিলে চূড়ান্ত পাঁচটি রায়ের পর চারটিতে জামায়াতের দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

আপিলের আরেক রায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়। রায় রিভিউ চেয়ে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ এরই মধ্যে আবেদন দাখিল করেছে।

৬ রূপের ভয়ংঙ্কর জঙ্গি কে এই তামিম?

অবশেষে নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় পুলিশের হামলায় নিহত হলেন দীর্ঘ দিন যাবত গা-ঢাকা দিয়ে থাকা জঙ্গি নেতা কানাডা প্রবাসী তামিম আহমেদ চৌধুরী। শনিবার (২৭ আগস্ট) সকালে শহরের পাইকপাড়া বড় কবরস্থান এলাকার একটি ৩ তলা ভবনে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট এর `অপারেশন হিট স্ট্রং ২৭` নামক অভিযানে নিহত হয় তামিম। তবে কে এই ছদ্দবেশী তামিম?

কানাডায় বেড়ে ওঠা তামিম আহমেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে জঙ্গিদের নতুন ধারায় তৎপরতার নেপথ্য ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছিল পুলিশ।

গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে নজিরবিহীন হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২২ জনকে হত্যার পর মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে এই তামিমকেই চিহ্নিত করেছিল পুলিশ।

গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় ঘরছাড়া তরুণ-যুবকদের জড়িত থাকার তথ্য প্রকাশের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিখোঁজ ১০ জনের যে প্রথম তালিকা দিয়েছিল, তাতে সিলেটের তামিমের নাম আসে।

এর আগে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস বাংলাদেশে দলের শাখা প্রধান হিসেবে যে আবু ইব্রাহিম আল হানিফের নাম ঘোষণা করেছিল, সেই ব্যক্তিই তামিম বলেই অনেকে মনে করছিলেন।

তবে গুলশান হামলার পরই তামিমের নামটি ব্যাপক আকারে আলোচনায় আসে।

তামিম সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের বড়গ্রামের প্রয়াত আব্দুল মজিদ চৌধুরীর নাতি। মজিদ চৌধুরী একাত্তরে শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন বলে স্থানীয়দের তথ্য।

তামিমের বাবা শফি আহমদ জাহাজে চাকরি করতেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তিনি সপরিবারে কানাডায় পাড়ি জমান। কানাডার উইন্ডসরে থাকার সুবাদে ৩০ বছর বয়সী তামিমের বেড়ে ওঠাও সেখানে।

পরিবার সম্বন্ধে বিস্তারিত জানা না গেলেও গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তামিম তিন সন্তানের জনক।

তামিমের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার শুরু কীভাবে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি।

বলা হচ্ছিল, ২০১৩ সালে বাংলাদেশে ফেরার পর থেকে তিনি নিখোঁজ।

তিনি ২০১৩ সালের অক্টোবরে দুবাই হয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন বলে গত ২ অগাস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

গুলশান হামলার পর তামিমের খোঁজে নামে পুলিশ। তখন বলা হচ্ছিল, তামিম দেশেই রয়েছেন।

আইএস-সংশ্লিষ্টতার দাবি প্রত্যাখ্যান করে আইজিপি শহীদুল এক সংবাদ সম্মেলনে তামিমকে ‘নব্য জেএমবি’র শীর্ষনেতা বলে চিহ্নিত করেন।

তিনি বলেছিলেন, “এখানে (গুলশান হামলা) মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী। নিও জেএমবির নেতৃত্ব সে দিচ্ছে। এই তামিম চৌধুরীর পর যারা দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রধান তাদেরকেও আমরা চিহ্নিত করেছি।”

আইজিপি বলেছিলেন, গুলশান হামলাকারীদের তামিমই ‘রিক্রুট’ করেছিলেন।

“ঘটনার আগে সে তাদের ব্রিফিং দিয়েছে, তাদেরকে পাঠিয়েছে এবং ঘটনার সময় তাদেরকে এগিয়ে দিয়েছে, আমরা সে তথ্য পেয়েছি।”

গুলশান হামলার পর ঢাকার কল্যাণপুরে যে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নয়জন নিহত হয়েছিলেন, সেখানেও তামিমের অবস্থান ছিল বলে মনিরুল জানিয়েছিলেন।

এরপর তামিমের বিষয়ে তথ্য দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ।

এর মধ্যেই শনিবার (২৭ আগস্ট) সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় একটি তিন তলা বাড়ি ঘিরে অভিযানে নামে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা, যার নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন হিট স্ট্রং টুয়েন্টি সেভেন’।

সকাল সাড়ে ৯টা থেকে এক ঘণ্টার অভিযানে তামিমসহ তিনজন নিহত হন বলে মনিরুল জানান।

তবে তামিমকে গ্রেপ্তার করা গেলে জেএমবির ‘নতুন ধারার’ তথ্য বেরিয়ে আসতো বলে আশা করেছিলেন পুলিশ প্রধান শহীদুল হক।

অভিযানের সময় উপস্থিত নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “অভিযান শুরুর পর জঙ্গিরা বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, তারা নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলেছে।”

তবে অভিযানের পর ওই এলাকা পরিদর্শনে যাওয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, “তামিম চৌধুরীর অধ্যায় এখানেই শেষ হল।”

তারেক রহমানের সাথে ঘনিষ্ঠতা ছিল তামিমের-উইকলি বি-জড’র পত্রিকা

নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়া এলাকার একটি জঙ্গি আস্তানায় শনিবার (২৭ আগস্ট) যৌথবাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছে গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী। কথিত ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বাংলাদেশ প্রধাণ ছিলেন তিনি। তামিমের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্যতম বিরোধীদল বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব ও দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানের ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। লন্ডনের জনপ্রিয় পত্রিকা ‘উইকলি বি-জড’র অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছিল। তারেক রহমানের সঙ্গে বাংলাদেশের কথিত শীর্ষ পর্যায়ের আইএস নেতা তামিম চৌধুরী ওরফে শেখ আবু ইবরাহিম আল হানিফের বেশ ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। তারা দুজনেই মেয়েদের ছদ্মনামে চিঠি চালাচালি করতেন। যেগুলো বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের উত্থানে ব্যাপক ভুমিকা রেখেছে। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের একটি গোয়েন্দা সংস্থা তামিমকে পাঠানো তারেকের একটি চিঠি পায়। ওই গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র ধরে লন্ডনের জনপ্রিয় সপ্তাহিক ট্যবলয়েড পত্রিকা ‘উইকলি বি¬জড’ এ তথ্য প্রকাশ করেছে। তবে ওই গোয়েন্দা সংস্থার নাম প্রকাশ করেনি পত্রিকাটি। উইকলি বি¬জড এর চলতি সংখ্যায় ‘তারেক-তামিম কানেকশন এক্সপোজড’ শিরোনামে ওই সংবাদে বলা হয়, ২০০৮ সালে চিকিৎসার জন্য তারেক রহমান যুক্তরাজ্য যান এবং লন্ডনে বসবাস করা শুরু করেন। ২০১২ সালে বিএনপির এক নেতার মাধ্যমে তারেকের সঙ্গে কানাডায় বসবাসরত তামিম চৌধুরীর পরিচয় হয়। পাশাপাশি তারেক রহমান সেসময়ে কানাডায় বসবাসরত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যকারী এবং মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এক পলাতক আসামীর সঙ্গেও ঘনিষ্ট যোগাযোগ রক্ষা করে এসেছেন। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক ওই গোয়েন্দা সংস্থাটি আরও জানায়, তারেক ও তামিমের সম্পর্কটি ছিল অত্যন্ত সাবলিল। ’তামান্না’ ছদ্মনামে তারেকেরে সঙ্গে নিয়মিত চিঠি চালাচালি এবং মোবাইলে মেসেজ আদান প্রদান করতেন তামিম। এদিকে তারেক রহমানের ছদ্মনাম ছিল ‘কনিকা’। ২০১৩ সালের মাঝামাঝি কোন এক সময়ে তামিম কানাডা থেকে ‘নিখোঁজ’ হয়ে যায়। পরে সে ইরাকে গিয়ে আইএসে যোগ দেয়। কম্পিউটারে টাইপ করা তামিমের ‘তামান্না’ নামের চিঠিগুলো প্রথমে ইরাক থেকে তুরস্ক যেত এবং সেখান থেকে কুরিয়ার বা মেইলের মাধ্যমে লন্ডনে আসতো। এরপর কোন ব্যক্তির মারফত তারেকের লন্ডনের বাসায় পৌঁছে যেত। একই পদ্ধতিতে তারেক তামিমকে চিঠি পাঠাত বলে ওই গোয়েন্দা সংস্থাটি বি¬টজকে জানায়। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে তারেক (কনিকা) একটি টাইপ করা চিঠি পাঠিয়েছিল তামিমকে (তামান্না) দূর্ভাগ্যক্রমে সেই চিঠি তামিমের হাতে পৌঁছাবার আগেই গোয়েন্দা সংস্থাটির হস্তগত হয়। আর তখনই বেরিয়ে আসে তারেক তামিমের বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যৌথ ষড়যন্ত্রের কথা। চিঠিটিতে তারেক (কনিকা) তামিমকে (তামান্নাকে) সম্বোধন করেছিল ‘মাই ডিয়ারেষ্ট বাডি’ হিসেবে। দুই পৃষ্টার কম্পিউটারে টাইপ করা চিঠিতে তারেক লিখেছিল, উইকলি বি¬টজ ওই চিঠিটির পুরো অংশ না পেলেও গোয়োন্দা সংস্থাটির বরাত দিয়ে জানিয়েছে চিঠিটিতে মোট আটটি প্যারাগ্রাফ ছিল এবং চিঠিটি ছিল ২ হাজার ৩৭৮ শব্দের। চিঠিটিতে তারেক রহমান বাংলাদেশে আইএসের অভ্যুদয় ঘটলে বিএনপি সর্বোচ্চ সমর্থন দেবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিল। বাংলাদেশ ও ভারতের গোয়েন্দারা তারেক ও তামিমের মধ্যের ওই সম্পর্কের বিষয়টি কতখানি অবগত তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। তামিম চৌধুরী একজন কানাডিয়ান বাংলাদেশী যিনি আইএসের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা। বাংলাদেশের আইএস কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। আইএসের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত ‘দাবিক’ নামে পরিচিত ওয়েবসাইটে তার নিয়মিত লেখা ও সাক্ষাতকার প্রকাশিত হয়ে আসছে বলে ওই সংবাদটিতে বর্ণনা করা হয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জে পশুরহাট নিয়ে বিভক্তিতে মুক্তিযোদ্ধারা

সিদ্ধিরগঞ্জে কোরবানীর হাট নিয়ে ত্রিমূখী চক্রান্তে দু”ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে এ নিয়ে তাদের মধ্যে মত পার্থক্য দেখে দিয়েছে। এনিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের একপক্ষ অপর পক্ষকে ঘায়েল করতে সংবাদ সম্মেলন করেছে। এ সময় তারা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ইউনিটের কমান্ডার শাজাহান ভূইয়া (জুলহাস) এর কঠোর সমালোচনা করেন।

শনিবার দুপুর ২টায় গোদনাইল চৌধুরী বাড়ি একটি চাইনিজ হোটেলে এ সংবাদ সম্মেলন করে তারা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোহর আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর হোসেন মোল্লা, বীরমুক্তিযোদ্ধা আক্তার হোসেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা এহসান কবির রমজান, বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ সাউদ, বীরমুক্তিযোদ্ধা সামসুদ্দিন প্রধান, বীরমুক্তিযোদ্ধা অব্দুল আলী, বীরমুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আহম্মেদ, বীরমুক্তিযোদ্ধা মোখলেসুর রহমান, বীরমুক্তিযোদ্ধা শুক্কুর আলী, বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ, বীরমুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিন, বীরমুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান, বীরমুক্তিযোদ্ধা নরুল ইসলাম, বীরমুক্তিযোদ্ধা মাসুদা সুলতানা, বীরমুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান, বীরমুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক প্রমূখ।

এসময় বীরমুক্তিযোদ্ধা নুর হোসেন মোল্লা বলেন, আমদের ১০ ও ৮নং ওয়ার্ডে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের অবগত না করে বীরমুক্তিযোদ্ধা বহুমুখি সমবায় এর প্যাড ব্যবহার করে ব্যক্তি নামে কোরবানির পশুর হাটের ইজারা নেওয়া হয়েছে। তাই আমরা সকল মুক্তিযোদ্ধাদের জুলহাস ভূইয়ার নামের এই হাট অন্যকেউ যদি পরিচালনা করে তাতে আমাদের কোন আপত্তি থাকবেনা। আমরা চাই এলাকার সকলে মিলে হাট পরিচালনা করতে।

তিনি বলেন, জুলহাস ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছে। সে সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে। হাট পাওয়ার পরে জুলহাস ভূইয়াকে বলি হাট করার জন্য টাকা কোথায় পেলেন ? তিনি (জুলহাস) বলেন কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা দিয়েছে।

বীরমুক্তিযোদ্ধা সামসুদ্দিন প্রধান বলেন, সমিতির নামে হাট এনে বহিরাগত ব্যক্তিদের দিয়ে হাট পরিচালনা করা হবে তা আমরা বীরমুক্তিযোদ্ধারা মানিনা। তাই আমাদের অবগত না করায় আজকের সংবাদ সমম্বেলন ডাকা হয়েছে।

বীরমুক্তিযোদ্ধা মজিদ সাউদ বলেন, কিছু দিন আগে আমাকে বলেছিল হাট করবে। তার পর আর জানায়নি। আজ ৬ দিন হওয়ার পরেও কোন বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মিটিং করেনি।

বীরমুক্তিযোদ্ধা এহসান কবীর রমজন বলেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা সমিতির প্যাড ব্যবহার করে নিজ নামে হাট এনে ব্যাক্তি স্বার্থে হাট এনে কারো সাথে কথা না বলে নিজে চালানোর কথা বলে। তাই আমরা হাট পরিচালনার জন্য অন্য কাউকে দিলে আমাদের বীরমুক্তিযোদ্ধাদের কোন আপত্তি থাকবেনা।

এদিকে গত মঙ্গলবার ৮নং ওয়ার্ডে ইব্রাহিম টেক্সটাইল মিলস্ বালুর মাঠে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বীরমুক্তিযোদ্ধা বহুমূখী সমবায় সমিতির ব্যানারের ২৫ লাখ টাকায় কোরবানীর হাট পায়। সে হাটটি দখল করতে মঙ্গলবার থেকেই এলাকার ক্ষমতাশিন দলের লোকেরা মহড়া দিতে থাকে। এনিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তাই প্রেক্ষিতে ক্ষমতাশিন দলের লোকেরা বীরমুক্তিযোদ্ধাদের দিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করিয়েছে বলে একাধিক বীরমুক্তিযোদ্ধা জানিয়েছে।

সোনারগাঁয়ে সন্ত্রাসী হামলা, বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট, আহত-৫

পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাজিপাড়া গ্রামে শুক্রবার রাতে একই পরিবারের পাচঁজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসীরা জানান, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের কাজিপাড়া গ্রামের মাহাবুব মিয়ার সঙ্গে একই গ্রামের ঈসমাইল মিয়ার দীর্ঘ দিন ধরে পাওনা টাকা নিয়ে দ্বন্ধ চলে আসছিল। শুক্রবার রাতে ঈসমাইল মিয়া তার পাওনা টাকা চাইতে গেলে দুজনের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এর জের ধরে মাহাবুব মিয়ার নেতৃত্বে অমিত মিয়া, সানি মিয়া, জাহাঙ্গীর হোসেনসহ ৮/১০ জনের একটি দল ছেনা, ছুরি, রামদা, লাঠি, লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঈসমাইল মিয়ার পরিবারের উপর হামলা চালায়। এ সময় হামলায় ঈসমাইলের বাবা শাহআলম ভাই ইসরাফিল মিয়া, ফুলবাহার বেগম, শরীফ মিয়াকে এলোপাথারী কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাতœকভাবে আহত করে বাড়ীঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে ঘরে থাকা বিভিন্ন মালামাল সহ নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। আহতদের উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ঈসমাইল হোসেন বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দয়ের করেছেন।

ঈসমাইল হোসেন জানান, পাওনা টাকা চাওয়ার জের ধরে সন্ত্রাসী মাহাবুব মিয়া ও তার সহযোগীরা আমার পরিবারের পাচঁজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে বাড়ি ঘর ভাংচুর করে নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। অপরদিকে মাহাবুব মিয়া জানান, এ ঘটনায় তিনি ও তার লোকজন জড়িত নন।

সোনারগাঁ থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের জানান, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রূপগঞ্জে রপ্তানীমুখী কারখানায় দু’পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, আহত-১২

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসীস্থ সিটি গ্রুপ রপ্তানীমুখী কারখানায় সিকিউরিটি গার্ডের দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে। ওভারটাইমসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত সিকউিরিটি গার্ডদের মধ্যে শনিবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় আবারো সংষর্ষের ঘটনা ঘটেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও কারখানা সিকিউরিটি গার্ড কমান্ডার মকবুল, মান্নান, ফারুক, হানিফ, নাজিম জানায়, রূপসীস্থ এলাকার সিটি গ্রুপ কারখানার নিরাপত্তার পহরি দায়িত্বে রয়েছেন প্রায় সাড়ে ৩ শতাধীক সিকিউরিটি গার্ড। কারখানায় সিকিউরিটি গার্ডদের প্রধান হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন মাজিদুর রহমান। মাজিদুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

তারা আরো জানান, প্রধান মাজিদুর রহমান তার নিজ এলাকা রাজশাহী থেকে নিজস্ব প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জনকে নগদ নারায়নে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে চাকুরি দিয়েছেন। মাজিদুর রহমানের নিয়োজিত সিকিউরিটি গার্ডদের ওভারটাইমসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিলেও অন্যদের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে আসছে।
এ বিষয় নিয়ে শনিবার সকাল ৯টার দিকে সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত সিকিউরিটি গার্ড রানা ও রাকিবুল সিকিউরিটি প্রধান মাজিদুর রহমানের কাছে ওভারটাইমসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দাবি করেন। এসময় ক্ষিপ্ত হয়ে মাজিদুর রহমানসহ তার নিয়োজিত লোকজন রানা ও রাকিবুলকে পিটিয়ে আহত করে। এক পর্যায়ে সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত সিকিউরিটি গার্ডদের সঙ্গে সিকিউরিটি প্রধানের নিয়োজিত লোকজন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসময় কারখানায় কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কাজ ছেড়ে ছুটাছুটি করতে শুরু করেন শ্রমিক, কর্মচারীরা। প্রায় দেড় ঘন্টা ধরে চলে রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষ।

উভয় পক্ষের সিকিউরিটি গার্ড প্রধান মাজিদুর রহমান, কমান্ডার আল-আমিন, সাহিন মিয়া, মেহেদী হাসান, সবুজ মিয়া, রানা, রাকিবুলসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় ও রাজধানীর বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে সংর্ঘষ নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে কারখানার ডিজিএম জাকির হোসেন ও ফ্যক্টরীর দায়ীত্বরত সাত্তার মাহাজন সুবিধা বঞ্চিতদের সুযোগ-সুবিধা দিবেন বলে আশ্বাস দেন। পরে উত্তেজিত সিকিউরিটি গার্ড সবাই কাজে যোগ দেন।

রূপগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

ফতুল্লায় সোর্স রনি দাসের বিরুদ্ধে ২ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজীর মামলা

ফতুল্লায় আবারও সোর্স রনি কুমার দাসের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর মামলা । গতকাল শনিবার ফতুল্লা মডেল থানায় গার্মেন্টস ব্যবসায়ী শামীম বাদী হয়ে রনিসহ ৫ জনকে আসামী করে ২ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজীর মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অন্য আসামীরা হলো জুট সন্ত্রাসী আব্দুল, মো: আলী, সাইফুল ওরফে বরিশাইল্যা সাইফুল, সুমন । মামলা নং- ৯১(৮)১৬। এর আগে ফতুল্লা ধর্মগঞ্জ শীষ মহল এলাকায় হিন্দুদের ঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ও মোবাইল চুরির এবং নাশকতার মামলা রয়েছে । এ মামলা সূত্রে জানাযায়, ফতুল্লা মাসদাইর শেরে বাংলাসড়কের মো. সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মো. শামীম মিয়া। সে গার্মেন্টস ব্যবসা করে আসছে। এই ব্যবসায়ীকে নিয়ে মাসদাইর পাকারপুল এলাকার আ. জব্বারের ছেলে জুট সন্ত্রাসী মো.আব্দুলের সাথে বিরোধ চলে আসছে। গত ২৪ আগস্ট রাত সোয়া ৯টায় শামীম ব্যবসায়ীক কাজে ধর্মগঞ্জ শীষ মহল এলাকায় তার বন্ধু পলাশের বাসায় যায়। পলাশের সাথে কথা বার্তা শেষ করে শামীম তার বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।এমন সময় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ঔৎ পেতে থাকা মাসদাইর পাকাপুল এলাকার আ.জব্বারের ছেলে আব্দুল, মো.আলী, সোর্স রনি কুমার দাস, সাইফুল ওরফে বরিশাইল্যা সাইফুল, সুমন গংরা শীষ মহল মাঠে শামীম পৌছানো মাত্রই সন্ত্রাসী কায়দায় মারপিট করে। এরপর রনি অব্দুল গংরা শামীমকে মারপিট করে আটক রেখে বাসা থেকে ফোন করে নগদ ২লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে । তাদের ২লক্ষ টাকা চাঁদা দিলে শামীম কে ছেড়ে দেয়ার প্রতিশ্রæতি দেয়। যদি টাকা না দেয় তাহলে শামীম মেরে ফেলার হুমকী দেয়। এরপর শামীমের পরিবার তাকে খুজেঁ না পেয়ে শামীমে পরিবারের লোকজন ফতুল্লা মডেল থানায় এসে অভিযোগ করে পুলিশ নিয়ে ঘটনা স্থলে যায়।পুলিশের টের পেয়ে রনি ও আব্দুল গংরা শামীমকে শীষ মহল মাঠে ফেলে পালিয়ে যায়।এঘটনা যাচাই করে তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশ জুট সন্ত্রাসী আব্দুল ,পুলিশের সোর্স কথিত সাংবাদিক রনিকুমার দাস সহ ৫জনকে আসামী করে শামীম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় চাঁদাবাজী মামলা দায়ের করেছেন। সূত্রে জানাযায়, ফতুল্লা মডেল থানার সাবেক এস আই হারুন আর রশিদের সোর্স ছিলেন ফতুল্লার পঞ্চবটি হরিহর পাড়া এলাকার রনি কুমার দাস। সেই থেকে পুলিশের সাথে সখ্যতা রেখে সাধারন মানুষকে ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক ফাও না দেওয়ায় পুলিশ দিয়ে তাদের ধরিয়ে দিত। চলতি বছরের ২৬ ও ২৭ ফেব্রæয়ারী ফতুল্লা ধর্মগঞ্জ শীষ মহল এলাকায় রাতে নিতাইচন্দ্রের ঘরে এবং সত্যচন্দ্র দাসের নারিকেলের শলার গোডাউনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ২ মার্চ রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় অমর চন্দ্র দাস বাদী হয়ে সোর্স রনি কুমার দাসকে প্রধান আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলানং ৬(৩)১৬। প্রায় ৩ মাস পূর্বে ড্যান্ডিবার্তার সম্পাদক হাবিবুর রহমান বাদলের মোবাইল চুরির দায়ে অভিযোগ দায়ের হয়। পরে তার বাবা ও মার অনুরোধে অভিযোগটি প্রত্যাহার করেন। এছাড়া জামাত শিবিরের নাশকতার মামালা ও রয়েছে সোর্স রনির বিরুদ্ধে। ওই দুটি মামলা জেল খেটে জামিনে বের হয়ে আরো বেপোয়ারা হয়ে যায় সোর্স রনি। এরপর গত ২৪ আগষ্ট গার্মেন্টস ব্যবসায়ী শামীমের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজীর অভিযোগে গতকাল এ মামলাটি দায়ের হয়।

না:গঞ্জে ‘হিট স্ট্রং ২৭’ অভিযানে নিহত ২ জঙ্গির পরিচয় মিলেছে

নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ার একটি ৩ তলা ভবনে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট এর `অপারেশন হিট স্ট্রং ২৭` অভিযানে নিহত হওয়া অপর দুই জঙ্গি সদস্যের পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে একজন হলেন মানিক (৩৫) আরেকজন ইকবাল (২৫)। এদের মধ্যে মানিক পাইকপাড়ার ওই বাসাটি ভাড়া নিয়েছিল। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিটের এক সদস্য প্রাথমিকভাবে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা শনিবারের অভিযানে অংশ নেন। অভিযানের পর তিনি জানান, তাৎক্ষণিকভাবে মানিকের পরিচয় বিস্তারিত জানা যায়নি। গত ঈদের আগে মানিক দুই কক্ষের ওই বাসাটি ভাড়া নিয়েছিল। তার মাধ্যমেই ওই বাড়িতে ওঠে গুলশান হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ তামিম চৌধুরী।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, কল্যানপুর থেকে গ্রেফতার হওয়া রিগ্যানকে নিহত মানিক ও ইকবালের ছবি দেখানো হয়েছে। রিগ্যান তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেছে। তিনি আরও জানান, কল্যানপুরের অভিযানের সময় ইকবাল একে-২২ রাইফেল নিয়ে পালিয়েছিল। শনিবারের অভিযানে ওই রাইফেলটি পাওয়া গেছে। এদিকে নিহত জঙ্গিদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে এ্যাম্বুলেন্স আনা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফারুক হোসেন জানান, লাশের সুরতহাল প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য কোথায় নেয়া হবে তা চুড়ান্ত হয়নি। তবে নিহত অপর দুই জঙ্গির পরিচয় সনাক্তের ব্যাপারে তিনি কিছু জানাতে পারেননি।

উল্লেখ্য, পাইকপাড়া বড় কবরস্থান এলাকায় শনিবার দিবাগত রাত ৩টায় সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিটের সদস্যরা। অভিযানে গুলশান হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ তামিম চৌধুরীসহ তিন জঙ্গি নিহত হয়। শনিবার (২৭ আগষ্ট) সকাল ৯টা ২৫ মিনিট থেকে ১০ টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত চলমান ‘হিট স্ট্রং’-২৭’ এর অভিযানে এই জঙ্গিরা নিহত হয়।

“অপারেশন হিট স্ট্রং ২৭` এ নিহতরা ‘নিউ জেএমবি’র সদস্য”- আইজিপি

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল ইসলাম বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় `অপারেশন হিট স্ট্রং ২৭` অভিযানে নিহতরা ‘নিউ জেএমবি’র সদস্য। প্রায় একমাস পূর্বে ঔষধ ব্যবসায়ী পরিচয়ে নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়েছিল জঙ্গিরা। অভিযান চালানো যৌথ বাহিনীকে বলেছিলাম জঙ্গিদের সারেন্ডার করার আহবান জানাতে। কিন্তু জঙ্গিরা সে আহবান না শুনে যৌথ বাহিনীকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালায়। তখন সকাল ৯:২৫ থেকে ১০:২৫ পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে তিন জঙ্গি নিহত হয়েছে।

শনিবার (২৭ আগষ্ট) সকাল পৌনে ১১ টায় নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় ‘অপারেশন হিট স্টর্ম-২৭’ পরিচালনার পর আইজিপি শহিদুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গণমাধ্যমকে এতথ্য জানান।

তিনি আরও বলেন, নিহত এক জঙ্গির চেহারার সাথে সরকারের পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ জঙ্গি তামিমের চেহারার মিল পাওয়া গেছে। বাকী দুইজনের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে একটা একে-৪৭, তিনটা পিস্তল ও পাঁচটি লাইট গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে। রাজধানীর গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় জড়িত ‘নিউ জেএমবি’র সদস্য এরা। প্রায় একমাস আগে তারা ঔষধের ব্যবসায়ী পরিচয়ে পাইকপাড়া বড় কবরস্থান এলাকার নুরুদ্দিন দেওয়ানের তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলা ভাড়া নেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে আজকের এই অভিযান `অপারেশন হিট স্ট্রং ২৭` পরিচালিত হয়।