১৯শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৪ঠা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 164

দক্ষিণ কোরিয়ায় হাসপাতালে আগুনে নিহত-৩৩

দক্ষিণ কোরিয়ার একটি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ৩৩ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো বহু। এর মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। খবর বিবিসি।

দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মিরাং এলাকার ওই হাসপাতালটি রাজধানী সিউল থেকে ২৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

সেজং নামের ওই হাসপাতালটিতে বেশির ভাগই বৃদ্ধদের সেবা দেয়া হয়। আগুন লাগার সময় হাসপাতালে ২০০ রোগী ছিলেন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রধান চোই ম্যান-য়ু বলেণ, আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। তবে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।

তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত হওয়া ৪০ জনের জনের মধ্যে ১১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। যাদের উদ্ধার করা হয়েছে তাদের অন্য হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন এ ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে নিহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছেন।

গত বছর জেচেন শহরের একটি সরকারি শরীর চর্চাকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৯ জন নিহত হয়েছিলেন।

আওয়ামী লীগ জিতলে হাতে চুড়ি পরব : কাদের সিদ্দিকী

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়ার পর যদি আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে তবে হাতে চুড়ি পরবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

বৃহস্পতিবার নাটোর শহরের কানাইখালী পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে নাটোর জেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি আরো বলেন, ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে মাত্র ১৩ পার্সেন্ট ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনার মানায় না। দলটি এই রকম নির্বাচন আরেকবার করলে তাদের স্থান হবে মাটির নিচে।

আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসে না, তারা ভালবাসে ক্ষমতা। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখন আর আওয়ামী লীগ করে না বলেই সেই দলে বঙ্গবন্ধু হত্যার জন্য দায়ী হাসানুল হক ইনু আর বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে জুতার বানানোর শ্লোগান দেয়া মতিয়া চৌধুরীর মতো মন্ত্রী আছে।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমাকে ইনু-মতিয়ারের সাথে বেহেশতে যেতে বললেও যাবো না। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার পরে জাসদ যা হত্যা না করেছে আওয়ামী লীগ নিজেরাই নিজেদের লোককে তার চেয়ে অনেক বেশি হত্যা করেছে।

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, আগামী দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এভাবে ক্ষমতায় এলে তিনি হবেন মহিলা স্বৈরাচার। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর মহিলা স্বৈরাচার উপাধি নেওয়া উচিত হবে না।

তিনি নাটোরের রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করতে গিয়ে বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে তিনি নাটোরে আটদিন অবস্থান করে আব্দুল কুদ্দুসকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাজ করে গেছেন। আর পরে নিজ দলের কাজে আহম্মদপুর স্কুল মাঠে তাঁবু খাটিয়ে থাকার সময় সেই আব্দুল কুদ্দুসই গুন্ডা বাহিনী পাঠিয়ে তাদের তাঁবু ভেঙ্গে দেন।

তিনি বলেন, আব্দুল কুদ্দুসের মতো নিমক হারাম আর আছে বলে আমার জানা নাই।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, তিনি নাটোরে তার দলের জন্য গামছার বীজ বপণ করতে এসেছেন। এই বীজ থেকেই এক সময় হাজার হাজার গামছার কর্মী-সমর্থক তৈরি হবে ইনশাআল্লাহ, আশাবাদ তার।

নাটোর জেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আহবায়ক শহীদুল ইসলাম মুন্সির সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীর প্রতিক হাবিবুর রহমান তালুকদার, কেন্দ্রীয় যুব শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুন নবী সোহেল, স্থানীয় নেতা মুক্তিযোদ্ধা তমসের আলী, সাইফুল ইসলাম, কায়সার জামান খান, এসএম আয়নাল হোসেন ও সোহরাব হোসেন।

জামিনে মুক্ত চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমূর আলম

উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাড.তৈমূর আলম খন্দকার।

২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও জেলা ইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড.সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে একদল আইনজীবীসহ শতাধিক নেতাকর্মী তৈমূরকে ফুলের মালা পুড়য়ে শুভেচ্ছা ও অভিন্দন জানান। এ সময় কারামুক্ত তৈমূর মহান আল্লাহর দরবারে শোকরিয়া এবং বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

পরে মাসদাইরের বাসায় ফিরে শুকরিয়া নামাজ আদায় শেষে উপস্থিত নেতাকর্মীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ। এছাড়া আদালত প্রাঙ্গনে দলমত নির্বিশেষে আইনজীবিরা আমার জন্য যে ভূমিকা রেখেছেন তা নারায়ণগঞ্জে ইতিহাস হয়ে থাকবে।

তৈমুর আরো বলেন, হামলা মামলা করে জেলে দিয়ে আমাকে গনতন্ত্র পুনুরুদ্ধারের আন্দোলন থেকে বিরত রাখা যাবে না। তৃণমূলের হাজার লক্ষ্য নেতাকর্মীকে সাথে নিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গনতন্ত্র পুনুরুদ্ধারের সংগ্রাম অব্যাহত রাখবো। আল্লাহ ছাড়া কোন রক্ত চক্ষুকে পরোয়া করি না। রাজপথে ছিলাম, আছি এবং আগামী দিনেও রাজপথে থাকবো। আমার জন্ম রাজপথে, মৃত্যুও হবে রাজপথে।

এর আগে এদিন সকালে বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. খুরশীদ আলম সরকারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আদেশ দেন। বিকেলে জামিনের আদেশ নারায়ণগঞ্জ কারা কতৃপক্ষের কাছে পৌছারে কারা কতৃপক্ষ তাকে মুক্তি দেন।

উল্লেখ্য, গত ২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ নারায়ণগঞ্জ আদালত পাড়া থেকে তৈমুর আলম খন্দকারকে গ্রেপ্তার করেছিল।

খতমে নুবুওয়াতের আকিদা মানা ঈমানের শর্ত -এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী

তাহরিকে খাতমে নুবুওয়াত বাংলাদেশের আমির ও জৌনপুরী পীর সাহেব আল্লামা মুফতী ড. সাইয়্যেদ মুহাম্মদ এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী বলেছেন, দুনিয়া ও আখেরাতের প্রধান বিষয় ঈমান। কিয়ামতে নাযাত পাবে প্রকৃত ঈমানদার মুমিনগণ। রসুল (সা.) সর্বশেষ নবী কিয়ামত পর্যন্ত আর কোন নবী আসবেন না । ঈমান ও ইসলামের প্রধান ভিত্তি হচ্ছে তাওহীদ ও রিসালাত অর্থাৎ খাতমে নুবুওয়াতের আকিদা। এটা মানা ঈমানের অংশ। যারা এটা মানবেনা তারা মুসলমান থাকতে পারে না এবং কাফির হয়ে যাবে।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) ঐতিহাসিক সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে তাহরিকে খাতমে নুবুওয়াত সিলেট বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত বিশাল আন্তর্জাতিক মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

পীর সাহেব বলেন, খাতমে নুবুওয়াতের আকিদা সম্পর্কে সুস্পষ্ট কুরআনের আয়াত ও হাদিস রয়েছে। পবিত্র কুরআনের সূরায়ে আহযাবে ৪০ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, রসুল (সা.) সর্বশেষ নবী । অর্থাৎ রসুল (সা.) নবী না হলে মহান আল্লাহ তায়ালা তার একজন পুত্র সন্তানকে জীবিত রেখে তাকে পরবর্তী নবী নির্বাচিত করতেন। সুতরাং রসুল (সা.) সর্বশেষ নবী রসুল (সা.) বলেছেন আমি সর্বশেষ নবী আমার পরে কোন নবী আসবে না (বুখারী, মুসলিম, তিরমীযি শরীফ)

পীর সাহেব আরো বলেন, ইসলাম প্রতিষ্ঠায় ৮০টি জিহাদে মোট নিহত হয়েছে সাহাবি ও বিরোধীপক্ষসহ ১০১৮ জন। জিহাদ মানুষ হত্যার জন্য নয়। অপরদিকে খাতমে নুবুওয়াত বিরোধী কাজ্জাবের বিরুদ্ধে জিহাদে মোট সাহাবি নিহত হয়েছিলেন ২৪০০ জন। সুতরাং খাতমে নুবুওয়াতের জিহাদ সব চেয়ে বড় জিহাদ ও আন্দোলন।

রসুল (সা.) এর চাচা হামজা (রা.) এর হত্যাকারী ওয়াসী, খাতমে নুবুওয়াত বিরোধী কাজ্জাবকে হত্যা করায়, রসুল (সা.) তাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। সুতরাং খাতমে নুবুওয়াতের মর্যাদা অনেক বেশি। হযরত ঈসা (আ.) দামেস্কের জামে মসজিদে অবতরণ করে মসজিদে প্রবেশ করলে ইমাম মাহাদী (আ.) তাকে আসরের নামাযের ইমামতি করার কথা বলবেন তখন হযরত ঈশা (আ.) বলবেন, আমি নবী হিসেবে নয়, উম্মত হিসেবে আগমন করেছি। আপনি ইমামতি করেন। সুতরাং আবারো তিনি প্রমাণ করবেন রসুল (সা.) সর্বশেষ নবী । তাই খাতমে নুবুওয়াতের অস্বীকার কারীদের প্রতিহত করতে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে ও আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং কাদিয়ানীদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা করার দাবি আদায় করতে হবে।

হাফেজ মাওলানা শফিকুল ইসলাম মিয়াজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আরো বয়ান করেন, ভারতের জৌনপুর থেকে আগত হাদীয়ে বাঙ্গাল শাহ্ কারামত আলী জৌনপুরীর অন্যতম আওলাদ, আল্লামা আবু মুসা আশয়ারী সিদ্দিকী আল কোরইশী পীর সাহেব জৌনপুরী (ভারত)। আল্লামা মুফতী এহসান উল্লাহ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী জৌনপুরী, আল্লামা ক্বারি সাইয়্যেদ ওবায়েদুল্লাহ আব্বাসী ওয়া সিদ্দিকী জৌনপুরী, আল্লামা ওমার আহম্মদ সিদ্দিকী আল কোরাইশী জৌনপুরী। মাহফিলের সমন্বয়কারী ছিলেন জনাব ফয়েজ আহমেদ উজ্জল, বিমান প্রকৌশলী ও বদ্দরুল ইসলাম আকন।

রাজনৈতিক মামলার হাজির দিলেন বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ

সোনারগাঁ থানার রাজনৈতিক মামলায় নারায়ণগঞ্জ দায়রা জজ আদালতে হাজিরা দিলেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহ আলম,সাবেক এমপি মোঃ গিয়াস উদ্দিন , সোনারগাঁ থানা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আতাউর রহমান,জেলা যুবদল নেতা শহীদুল ইসলাম স্বপন, সোনারগাঁ থানা ছাত্রদল নেতা মোঃ আশ্রাফ মোল্লা, মোঃ রুবেল হোসাইন ।

বৃহস্পতিবার ( ২৫ জানুয়ারি ) সকাল সাড়ে ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা দায়রা জজ আদালত মোহাম্মদ আনিসুর রহমানের আদালতে সোনারগাঁ থানা মামলা নং (২৪ -১০-১৭ ইং) মামলার হাজিরা দেন তারা ।

আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন,জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, এড. জাকির হোসেন, এড. সরকার হুমায়ুন কবীর, এড. খোরশেদ আলম মোল্লা, এড. মশিউর রহমান শাহীন, এড. রকিবুল হাসান শিমুল, এড. বোরহানউদ্দিন সরকার, এড. আবুল কালাম আজাদ জাকির, এড. এইচএম আনোয়ার প্রধান, এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, এড. শরিফুল ইসলাম শিপলু সহ বিএনপি পন্থী আইনজীবীরা ।

বর্তমান সরকার দেশ উন্নয়ন করছে-প্রাণিজ সম্পদ মন্ত্রী

সোনারগাঁ প্রতিনিধি: মৎস ও প্রাণিজ সম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, বর্তমান সরকার সামগ্রিকভাবে দেশ উন্নয়ন করে যাচ্ছে। ২০২১ সালে দেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি হবে। দেশ স্বাধীন না হলে আমরা কলোনীর মতো হয়ে যেতাম। আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। সরকার আসে সরকার যায়। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। তিনি গতকাল মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা আমিনপুর মাঠে প্রাণিজ সম্পদ অধিদপ্তরের আয়োজনে প্রাণি সম্পদ সেবা সপ্তাহ ২০১৮ উপলক্ষে প্রজেনী প্রদর্শনী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, প্রাণিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় দুটি লক্ষ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে একটি হলো দুধের যোগান দেওয়া অন্যটি হলো মাংসের যোগান দেওয়া।

প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রেজাউল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ লিয়াকত হোসেন খোকা, সংরক্ষিত সাংসদ হোসনে আরা বাবলি, প্রাণিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব ওয়াছি উদ্দিন, মহাপরিচালক আইনুল হক, সোনারগাঁ পৌরসভার মেয়র সাদেকুর রহমান, উপজেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুল ইসলাম ভুইয়া, ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম প্রমূখ।

দেশে ৩য় বারের মতো প্রদর্শনীটির আয়োজন করা হয়। প্রদর্শনীতে ১৯০টি ফার্মের গরু প্রদর্শন করা হয়।

শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে ভিসিকে উদ্ধার ছাত্রলীগের, আহত ১০

ছাত্রী নিপীড়নে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কারের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে উদ্ধার করেছে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। মঙ্গলবার বিকালে এই ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হন।

এর আগে বেলা ১২টার দিকে ৫ দফা দাবিতে ফটক ভেঙে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় উপাচার্য নিজ কার্যালয়ে ছিলেন। শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে তিনি সেখান থেকে বের হতে পারছিলেন না।

বিকালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে সংগঠনের ২০-২৫ জনের একটি দল উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে যান। এরপর ছাত্রলীগের আরো নেতা কর্মী সেখানে এসে শিক্ষার্থীদের ওপর কয়েক দফা হামলা চালিয়ে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।

শিক্ষার্থীরা বের হওয়ার সময় বিভিন্ন ফটকের সামনে থাকা ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের ওপর আবারো হামলা চালায়। ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি লিটন নন্দীসহ কয়েকটি বাম ছাত্র সংগঠনের নেতাদের বেধড়ক মারধর করে।

হামলায় আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন রাজিব কুমার দাস, তাজুয়ার, জহর লাল রায়, অপু, আরশাদ, উম্মে হাবিবা বেনজীর, রায়হান, জাফরুল নাদিম, রাসেল ও লিটন নন্দী।

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গত ১৫ জানুয়ারি উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে ছাত্রলীগ নেতারা ছাত্রদের হুমকি-ধমকি ও ছাত্রীদের ওপর নিপীড়ন করে আন্দোলন নস্যাৎ করে দেন। এর প্রতিবাদে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীরা ১৭ জানুয়ারি প্রক্টর কার্যালয়ের ফটক ভেঙে প্রক্টরকে অবরুদ্ধ করেন। পরদিন অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জনকে আসামি করে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর থেকে টানা আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-প্রক্টরের পদত্যাগ, ছাত্র প্রতিনিধিসহ ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনার তদন্ত করা, অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতাদের বহিষ্কার করা ও প্রশাসনের করা মামলা তুলে নেওয়া।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এড.তৈমুর গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের আদালতপাড়া থেকে নাশকতার মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে তৈমুর আলম খন্দকারকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে আদালতে বিক্ষোভ করেছে বিএনপি পন্থি আইনজীবীরা।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সরফুদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তার বিরুদ্ধে সদর থানার নাশকতার দুটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় একাধিক নাশকতার মামলাও রয়েছে।
এদিকে তৈমুর আলম খন্দকারকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে বিক্ষোভ করেছে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।

তাদের অভিযোগ, তৈয়মুর আলম খন্দকার জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে আদালতপাড়ায় প্রচারণার কাজে ছিলেন। এ সময় পুলিশ আইনজীবীদের সামনে থেকে টেনে-হেঁচড়ে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, এভাবে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে একজন সাধারণ মানুষকেও গ্রেফতার করা আইন বহির্ভূত। তৈমুর আলমকে পুলিশ শত শত আইনজীবীর মধ্য থেকে যেভাবে টেনে-হেঁচড়ে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়, এটা আইন বহির্ভূত। আমরা দ্রুত তৈমুর আলম খন্দকারের মুক্তি দাবি করছি।

এক রাষ্ট্রপতি দাড়িয়ে আরেক রাষ্ট্রপতি বসে এমন ছবি না তুললে কী এমন ক্ষতি হতো? : কাদের সিদ্দিকী

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি অবসরের পর প্রথম বিদেশ সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার এ সফরে আমরা খুবই খুশি হয়েছি। বহু বছর থেকেই আমি তার পারিবারিক বন্ধু। তিনি আমার এক পরম হিতৈষী। লৌকিকতার বেড়াজাল ভেঙে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আমরা খুবই বাস্তবের কাছাকাছি। তাকে ক্ষমতাবান দেখেছি, দেখেছি কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত রাজনৈতিক ঘূর্ণিপাকে কষ্টকর সময় পাড়ি দেওয়া একজন রাজনীতিক হিসেবে। রাষ্ট্রপতি ভবনে যেমন দেখেছি, তেমন এস-৩০ গ্রেটার কৈলাসে নিজস্ব ছোট্ট বাড়িতে দেখেছি। তার ছেলেমেয়ে অভিজিৎ, ইন্দ্রজিৎ ও শর্মিষ্ঠা মুখার্জি তিনজনকেই বেশ শিশুকালে দেখেছি।

শর্মিষ্ঠা মুখার্জিকে কোলে নিয়েছি কিনা খেয়াল নেই। কিন্তু কয়েক বছর তাকে গল্প শুনিয়েছি। ইন্দ্রজিৎ মুখার্জি পিন্টু ভীষণ দুষ্টু ও খুবই ছোট ছিল। জোর করেই কোলে বসে থাকত। বাচ্চাদের কোলের সঙ্গে কাঁধে-পিঠে চড়ার একটা সম্পর্ক থাকে। কতবার কাঁধে চড়েছে, পিঠে চড়েছে হিসাব করতে গেলে ভালো অঙ্ক শিখতে হবে। কোনো ঠুনকো কাচের মতো আমাদের সম্পর্ক নয়। সম্পর্কটা অনেক শক্ত।

শুভ্রা মুখার্জি বেঁচে থাকতে তা ছিল আরও শক্ত। ধর্মীয় ভিন্নতা ছাড়া আমি অমন মায়ের মতো মহিলা খুব একটা দেখিনি। তালকাটরা রোডের বাড়ি সে ৭ নম্বরই হোক আর ১৩ নম্বরই হোক, ২ নম্বর জন্তর-মন্তর আবার তালকাটরা, সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি ভবন— কোথাও তার গায়ে গরম লাগার কোনো লক্ষণ পাইনি। রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রথম যেদিন গিয়েছিলাম প্রণবদার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনবার খবর পাঠিয়েছিলেন, ‘বাঘা যেন আমাকে না দেখে না যায়।’ তখন তিনি খুবই অসুস্থ। ভালো করে বিছানায় উঠে বসতেও পারতেন না।

সে অবস্থায়ও আমি যখন তার বিছানার পাশে বসে ছিলাম তখন তিনি চেয়ারে না বসে তার পাশে বিছানায় বসতে বলেছিলেন। বার বার আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলেন, ‘ভগবানের ওপর ভরসা রেখো, তোমার আল্লাহ যা নির্ধারণ করেছেন কেউ তোমাকে তা থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না। বাংলাদেশে আমরা বঙ্গবন্ধু আর তোমাকেই আপন জানি। নেতা, মহানেতা, মন্ত্রী সে তো আজ আছে কাল নেই। কিন্তু সারা দুনিয়ার নিপীড়িত মানুষের হৃদয়ে তোমার যে সংগ্রামী ছবি আঁকা আছে তা কেউ মুছতে পারবে না।

দেখো বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে আজ কত বছর, এই দিল্লিতে একজন জীবিত বীর বাঙালির নামও যদি কেউ মনে করে সে হচ্ছো তুমি। নেতাজি সুভাষের পর পশ্চিমবঙ্গে তোমার নাম সবার আগে উচ্চারিত হয়। তোমার থেকে অনেক বড় বড় বাঙালি এই পৃথিবীতে আছে। কিন্তু তোমার মতো সংগ্রামী বাঙালি, তোমার মতো ভালোবাসার বাঙালি দ্বিতীয় কেউ নেই।’

কথাগুলো যখন ভাবী তখন শিহরিত হই। একজন মানুষ কত উদার ও দরদি হলে ওভাবে বলতে পারেন। তাই তাকে হারিয়ে বড় অভাববোধ করি। জানি, কেউ চিরদিনের জন্য নয়, কিন্তু তবু যারা ভালোবাসেন, স্নেহ করেন তাদের অভাব বড় বেশি করে হৃদয়ে বাজে। মুখার্জি পরিবারের সঙ্গে পরিচয় সেও প্রায় ৪০ বছর। তাদের ব্যবহারে কোনো পরিবর্তন দেখিনি। মানুষ হিসেবে একই রকম আচরণ করেছেন। পুরো পরিবারের সঙ্গে এ রকম ঘনিষ্ঠতা সবার হয় না। আমিও তো দেখি, আমি যাদের স্নেহ করি আমার ছেলেমেয়েরা হয়তো তাদের পছন্দ করে না। একজন করলে আরেকজন করে না। কিন্তু প্রণবদার বাড়িতে তা দেখিনি। প্রণবদা রাষ্ট্রপতি হওয়ার দু-তিন বছর আগের কথা। আমি কেবল গেছি হীরালাল এসে দাদার কাছে নিয়ে যাচ্ছিল। হীরালাল প্রণবদার বহু বছরের কর্মী।

বাড়িতে দেখা-সাক্ষাতের দায়িত্ব তার। কী এক অসুখে একসময় কুঁজো হয়ে গিয়েছিল। পরে ধীরে ধীরে অনেকটাই সোজা হয়েছে। বড় ভালো মানুষ সে। দাদা তখন তার অফিসে কাজ করছিলেন। দিদিকে যারা দেখাশোনা করেন তাদের মধ্যে রাধা বা লক্ষ্মী কেউ একজন ছুটে গিয়ে দিদিকে বলেছিল, ‘বিবিজি, আপকা রাজা ভাই হ্যায় না? ও আয়া।’ আমি দিদির ড্রইংরুমে গিয়ে বসতেই ছুটে এসে বলছিলেন, ‘বাঘা তুমি জানো, ওরা তোমাকে কী বলে? ওরা মনে করে তুমি কোনো রাজা।’ এ রকম অনেক ঘটনা অনেক সময় ঘটত। প্রণবদা তখন রাষ্ট্রপতি। গিয়েছিলাম প্রদ্যুৎ গুহের ছেলের বিয়েতে। রাষ্ট্রপতি ভবনের এক মাঠে আয়োজন করা হয়েছিল।

আমাদের এক পরম হিতৈষী তপন চক্রবর্তীর সঙ্গে সেখানে দেখা হয়েছিল। দুর্দিনে ভদ্রলোক আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। অনেককে থাকতে দিয়েছেন, খেতে দিয়েছেন। এক অভাবনীয় লোক ছিলেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে যখন প্রণবদা এলেন, আমি যেতে যেতেই পাশে বসিয়েছিলেন। আমি, তার ছেলে অভিজিতের মেয়ে এই তিনজন। কয়েক মিনিট পর উঠে আসতে চেয়েছিলাম। ১৫-২০ মিনিট উঠতে দেননি। তাই বসে ছিলাম। যখন যেখানে দেখা হয়েছে সেখানেই এক আলাদা গুরুত্ব দিয়েছেন।

এই তো সেদিন ১৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির পদ ছেড়ে প্রথম বিদেশ সফরে ঢাকা এসেছিলেন। আমি ১২ জানুয়ারি রাতে ফোন করে আমার বাড়িতে আসতে পারবেন কিনা জিজ্ঞাসা করেছিলাম। বলেছিলেন, ‘এ যাত্রায় আর হবে না। সবাইকে নিয়ে তুমি এসো।’ ১৫ তারিখ সকালে সোনারগাঁওয়ে ফোন করেছিলাম। দু-তিন বার ফোন করে দাদাকে পাইনি। কারণ তার রুমে ফোন দেওয়া বারণ ছিল। মেয়ে মুন্নী এসেছিল। তাকেও পাইনি। বহু বছর দাদার কাজ করে পদম। শেষে তাকে ফোন করেছিলাম। পদম ছিল না, ওর বউ ছিল। সে বলেছিল, আমি জানাচ্ছি। প্রণবদার তখন ধানমন্ডিতে যাওয়ার কথা ছিল।

তারপর গণভবনে, তারপর খুব সম্ভবত অর্থমন্ত্রীর নৈশভোজ, তারপর হোটেলে ফেরা। আমার ধারণা ছিল তার পরদিন অথবা ১৭ তারিখ দেখা হবে। কিন্তু ৭টার দিকে অ্যাম্বাসি থেকে ফোন পেলাম, সোয়া ৯টায় সাবেক রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় দেওয়া হয়েছে। সেভাবেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম। মানিক মিয়া এভিনিউয়ে এত জ্যাম বলার মতো না। পরে পিছিয়ে এসে সংসদ ভবনের ভিতর দিয়ে খামারবাড়ি হয়ে সোনারগাঁওয়ে গিয়েছিলাম। ৫-৬ মিনিট দেরি হয়েছিল। দেরি হয়ে ভালোই হয়েছিল।

আমি যখন করিডর দিয়ে যাই তখন হাসানুল হক ইনু বেরিয়ে আসছিলেন। ঠিক সময়ে গেলে হয়তো ৪-৫ মিনিট বসে থাকতে হতো। তা হয়নি। প্রায় ৪০ মিনিটের মতো ছিলাম। আরও থাকলেও হয়তো আপত্তি ছিল না। কত কথা আর বলা যায়। একসময় চলে এসেছিলাম। দিদি মারা যাওয়ার পর দাদাকে দেখাশোনার কিছুটা হলেও অভাব বা ব্যত্যয় ঘটেছে। একজন মানুষ বিছানায় পড়ে থাকলেও যে বাড়ির কাজ দেখাশোনা করতে পারেন, শুভ্রা মুখার্জি তার উজ্জ্বল প্রমাণ। তিনি অনেক দিনই তেমন কাজকর্ম করতে পারতেন না। কিন্তু যারা বাড়িতে ছিল বা থাকত তারা ত্রুটিমুক্ত কাজ করত। কোনো কাজের ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যেত না। এখন তিনি নেই, ত্রুটি আছে কিনা বলতে পারব না।

কিন্তু দাদার দেখাশোনার কিছুটা যে অযত্ন হয় না, তা বলতে পারব না। ব্যক্তিগতভাবে যে পর‌্যায়ে আমাদের সম্পর্ক সেখানে অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করতে কোনো বিধিনিষেধ নেই। আমরা উভয় পরিবারই খুবই খোলামেলা। সেদিন আমার স্ত্রী, ছেলেমেয়েরা মুন্নীর সঙ্গে যে কথাবার্তা বলেছে তাও ছিল খোলামেলা। আমার স্ত্রীর দেওয়া শাড়ি ওর যে খুবই পছন্দ হয়েছে তা বলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনি। গত ২০ বছরে যখনই গেছি তখনই প্রণবদাকে গামছা উপহার দিয়েছি। এবারও দিয়েছিলাম। আমাদের কথাবার্তার সমস্ত সময়ই তিনি গামছা গলায় নিয়েই ছিলেন এবং কয়েকবার চোখে-মুখে গামছা লাগানো দেখে অভিভূত হয়েছি।

পত্রপত্রিকায় এসেছে নির্বাচনের আগে আগে তার এই সফর আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিশেষ করে আওয়ামী লীগ নেত্রীর সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে বোঝাপড়া। আমার সঙ্গেও তো বেশ অনেকক্ষণ কথা হয়েছে। আমার কিন্তু তেমনটা মনে হয়নি। পত্রপত্রিকা ও ফেসবুকে নানা ধরনের মন্তব্য দেখেছি। সত্যিই আমরা অনেক সময় কাউকে নিঃস্বার্থ সম্মান দিতে পারি না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন নিয়ে প্রণব মুখার্জি সম্পর্কে যতটা বলা হয়, অতটা তিনি করেননি। ভোটার ছাড়া অমন নির্বাচন অন্ততপক্ষে প্রণব মুখার্জি যে চাননি, তা আমি জোর গলায় বলতে পারি।

অন্যরা সবাই চেয়েছিলেন আমার কাছে তেমনও মনে হয় না। কারণ শিবশঙ্কর মেননকে আমি ব্যক্তিগতভাবে জানতাম। তিনি অসম্ভব ধরনের মেধাবী ছিলেন। হ্যাঁ, সুজাতা সিংসহ আরও কয়েকজন ছিলেন, যারা যেনতেনভাবে ভারতীয় স্বার্থে নির্বাচনী কার্যকলাপ এগিয়ে নিয়েছেন। সে যাই বলুক, ২০১৪ সালের নির্বাচনী প্রহসন গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে আওয়ামী লীগকে শত বছর পিছিয়ে দিয়েছে।

সেই সঙ্গে পাহাড়প্রমাণ বদনামের ভাগিদার হয়েছেন ভারতীয় নেতৃবৃন্দ। পৃথিবীর কোথাও এ ধরনের নির্বাচনকে কেউ কখনো স্বীকার করেনি, করবেও না। আমাদের দেশে দুর্বল বিরোধী দলের কারণে পাতানো নির্বাচনের বিষফোঁড়া থেকেই গেল। সেটা ফেটে এখনো বিষবাষ্প বেরিয়ে যেতে পারছে না। যে বঙ্গবন্ধু গণতন্ত্রের জন্য সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন, সেই বঙ্গবন্ধুর দলের এ রকম একটি নিন্দনীয় পদক্ষেপ সবার মাথা হেঁট করে দিয়েছে।

নিশ্চয়ই নির্বাচন নিয়ে ভারত তার কথাবার্তা বলছে বা বলবে। কিন্তু তা প্রণব মুখার্জির মাধ্যমে নয়। মনে রাখতে হবে, বিজেপি সরকারে প্রণব মুখার্জি মোটেই কিছু নন। প্রণব মুখার্জি নিঃসন্দেহে ভারতের একজন প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা। তাকে নিশ্চয়ই বিজেপিও সম্মান করে। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক পরিকল্পনার ক্ষেত্রে বিবেকানন্দ ফাউন্ডেশনের সাধারণ একজন থিঙ্কার যা ভাবেন, প্রণবদা অন্তত বিজেপির কাছে তার চেয়ে বেশি নন।

ভারতের একমাত্র বাঙালি সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির এই সফর অসাধারণ সুন্দর সৌহার্দ্যের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বলা যেত, শুধু ভারতীয় হাইকমিশনে তার সঙ্গে দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ওইসব ছবি না তুললে অনেক ভালো হতো। সাবেক রাষ্ট্রপতিকে যেভাবে জানি, চিনি তার মধ্যে কোনো অহংকার নেই, উচ্চনাসিকা নেই। তিনি সবসময় একই রকম জীবনযাপন করেছেন। আমি কখনো তাকে উত্তেজিত দেখিনি। তার সংসারে যে জোয়ার-ভাটা যায়নি, তা কিন্তু নয়। তার পরও একজন অত্যন্ত সংযত মানুষ হিসেবে তাকে সবসময় পেয়েছি। ছবির কথা, সারা জীবনে তার সঙ্গে আমার ছেলেমেয়ে, ভাইবোন কত ছবি তুলেছি তার কোনো হিসাব নেই। কিন্তু কখনো এমন হয়নি যে, আমি সামনে বসি তোমরা পেছনে দাঁড়াও।

শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী যেভাবে পাশে বসে ছবি তুলেছেন অতটা কাছাকাছি মা-ছেলে একত্রে বসে। তাহলে এখানে হাইকমিশনে অমন হলো কেন? শুধু একা প্রণব মুখার্জি চেয়ারে বসলেন আর সবাই পেছনে দাঁড়িয়ে, প্রণবদার মতো একজন সাবেক রাষ্ট্রপতিও দাঁড়িয়ে ছিলেন। এটা কী করে হলো? চাণক্যের দেশ ভারত। তাদের কূটনৈতিকরা এটুকুও কী বোঝেন না, ও রকমভাবে ফটোসেশন করায় মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হবে। ওভাবে ছবি তুলতে প্রণব মুখার্জি কখনো উৎসাহী ছিলেন এটা গলায় গামছা নিয়ে বললেও (নামাবলি প্রণাম) আমি মেনে নেব না।

কারণ এক দিনে কারও চরিত্র বা অভ্যাস বদল হয় না। প্রণব মুখার্জি ও ধরনের মানুষই নন। তাই যে-ই করে থাকুক পরিকল্পনাটি কাঁচা হাতের খুবই কম বুদ্ধির। অমন ছবি দুই দেশের সম্পর্কের জন্য অসম্ভব ধরনের ক্ষতিকর। ওতে কী বোঝা যায়? বোঝা যায় বড় ভাই, ছোট ভাই অথবা মুরব্বিপনা। আমি তো এক দিনও তাদের বড় ভাই সাজা বা মুরব্বিপনার আভাস পেলাম না। কতবার কতজনের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয়েছে, কথাবার্তা হয়েছে। আমরা যেমন সুসম্পর্ক চাই, তারাও তেমন চান।

খুব বেশি যে মাতব্বর হতে চান, তা তো কখনো মনে হয়নি। যা সত্য আমি সবসময় তাই বলার চেষ্টা করেছি। যতক্ষণ বেঁচে থাকব ততক্ষণ তাই বলব। এতে লাভ-ক্ষতি যা হওয়ার হবে। দেশের ক্ষতি না হলেই হলো। বেশ কয়েক বছর আগে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গিয়েছিলেন। ছয়জন রাঁধুনি সঙ্গে নিয়েছিলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি তখন রাষ্ট্রপতি ভবনে। তিনি তাকে একবার রেঁধে খাইয়েছিলেন। আমি খুব মর্মাহত ও অসম্মানবোধ করেছিলাম। দিল্লিতে গিয়ে তাকে রেঁধে খাওয়ানো ঠিক হয়নি।

কিন্তু সেদিন যে তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন এখানে ৫০বার তাকে রেঁধে খাওয়ালেও সেটা সম্মানের হতো, বাঙালি জাতির গৌরবের নিদর্শন হতো। যখন যেখানে যেটা মানায় সেটাই করা উচিত। সাবেক মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আমাদের দেশের একজন সাবেক রাষ্ট্রপতিসহ অন্যান্য প্রবীণ নেতাকে ওভাবে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা জাতীয় অবমাননার শামিল। এই ক্ষয় কত দিনে ঘুচবে বা মিটবে তা স্রষ্টাই জানেন, আমরা কেউ জানি না। সূত্র-বাংলাদেশ প্রতিদিন

নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নারায়ণগঞ্জ শহরের ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে থানায় লিখিত দেওয়া হয়েছে। এতে নয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আরও এক হাজারজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে সিটি করপোরেশনের আইন বিষয়ক কর্মকর্তা জিএম এ সাত্তার বাদী হয়ে ওই অভিযোগটি দায়ের করেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, আইভীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার জন্যই গত ১৬ জানুয়ারি লাঠিসোটা, অস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয়।

অভিযোগে প্রধান আসামি করা হয়েছে ঘটনার দিন অস্ত্র বের করা নিয়াজুল ইসলামকে। এছাড়া অভিযুক্ত অন্যরা হলেন অস্ত্র প্রদর্শন করা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, ঘটনাস্থলে থাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি মিজানুর রহমান সুজন, যুবলীগ নেতা জানে আলম বিপ্লব, আওয়ামী লীগ নেতা নাছির উদ্দিন ও চঞ্চল মাহমুদ।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের দায়িত্বরত ওসি আবদুর রাজ্জাক জানান, একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখনো মামলা রেকর্ড করা হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

নারায়ণগঞ্জ শহরের ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ নিয়ে গত ১৬ জানুয়ারি সংঘর্ষ হয় মেয়র আইভী ও সাংসদ শামীম ওসমানের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। এতে সিটি মেয়র আইভীসহ অন্তত অর্ধশত আহত হন। সেদিন মানবঢাল তৈরি করে আইভীকে রক্ষা করেন তার কর্মী-সমর্থকেরা। এ সময় আইভীর গায়ে ঢিল লাগে বলে অভিযোগ করা হয়। পরে আইভী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, এই ঘটনার জন্য শামীম ওসমান সরাসরি দায়ী।

ঘটনার দুদিন পর গত ১৮ জানুয়ারি বিকালে মেয়র আইভী সিটি ভবনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওইদিন বিকাল পৌনে পাঁচটার দিকে তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এনে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর তাকে রাখা হয় নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ)। তার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক ড. বরেণ চক্রবর্তী, আবদুজ জাহেদসহ পাঁচ সদস্যের মেডিকেল টিম গঠন করা হয়।

দুই দিন পর্যবেক্ষণ শেষে গত ২০ জানুয়ারি রাত আটটার দিকে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয় বলে জানান অধ্যাপক ড. বরেণ চক্রবর্তী। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মেয়র আইভী হাসপাতাল থেকে রিলিজ পাবেন বলে জানা গেছে। এর আগে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, ঘটনার দিন অস্ত্র প্রদর্শনকারী নিয়াজুল ইসলাম খান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজামসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত প্রায় ৯০০ থেকে ১০০০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।