নিউজ প্রতিদিন: ‘মানুষ মারার কারখানা’ খ্যাত সদর উপজেলার বক্তাবলীতে অবৈধ রাজিয়া নার্সিং হোমটি এখনও বন্ধ হয়নি। তিন দফা সীলগালা করে দিলেও বারবার রহস্যজনক কারণে তা আবার খুলে যায়। ভুক্তভোগী স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়েকদফা সীলগালা করা হলেও এ প্রতিষ্ঠানটি কী করে আবার ব্যবসা পেতে বসে! তাদের দাবি, বক্তাবলীর গোপালনগর বাজারে হাজী চাঁন প্লাজায় অবস্থিত ওই ক্লিনিকটি ভবন মালিক ইদ্রিস আলীর যোগসাজসেই বারবার চালু হয়। অভিযানের পর তিনিই বারবার তদবীর করে তা খুলে দেবার ব্যবস্থা করেন। সবশেষ গত বছরের ২১ নভেম্বর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অভিযান চালানোর সময় তিনিই কয়েকদিনের দায়িত্ব নিয়ে ওই টিমকে বিদেয় করেন।
২১ নভেম্বর ওই টিমের অভিযানে খবরে সেদিন রোগী রেখেই পালিয়ে যায় রাজিয়া সহ ক্লিনিকের সকলেই। তারপর কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয় ক্লিনিকটি।
অনিয়মের অভিযোগে উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কমকর্তা ডাঃ জাহিদের নেতৃত্বে একটি টিম পরিদর্শনে এসে অভিযোগের সত্যতা পান। অভিযানের খবরে পালিয়ে যায় রাজিয়া। পরে ভবন মালিক এসে টিমের কাছে কয়েকদিনে সময় চান। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য অফিসে রাজিয়াকে যেতে নির্দেশ দেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন যাবৎ রাজিয়া ক্লিনিক খুলে এমআর, ডিএনসি, ডেলিভারীর কাজ করে আসছে। ডেলিভারী করতে গিয়ে অনেক প্রসূতি মৃত্যুবরণ করেছে। নারায়ণগঞ্জে কর্মরত থাকা অবস্থায় আলোচিত কর্মকর্তা গাউছুল আজম দুইবার প্রতিষ্ঠানটিকে সীলগালা করে দেন।
রাজিয়া নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিলে গাউছুল আজমের অভিযানে সময় পঞ্চম শ্রেণী পাস সনদপত্র ও মেডিস্টার ক্লিনিকে আয়ার কাজের সার্টিফিকেট ছাড়া কিছু দেখাতে পারে নাই।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ জাহিদ বলেন, অভিযানের সময় পালিয়ে যাওয়ার কারণে তার কাগজপত্র দেখতে পারি নাই। তখন তাকে তিনদিন সময় দেয়া হয়েছিল।
কিন্তু ক্লিনিকটি আবারও চালু হয়েছে কীভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ক্লিনিক চালানোর কোন কাগজপত্র ও অনুমোদন তার নেই। উনি আইনত ক্লিনিক চালাতে পারেন না। তাকে ওই ক্লিনিকে বিলবোর্ড নামিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। কারণ ক্লিনিক চালানোর মতো সরকারী বিধি অনুযায়ী তার কোন সরঞ্জাম বা জনবল নেই।
ডা: জাহিদ আরো বলেন, তবে রাজিয়া একজন প্রশিক্ষিত দাই। নরমাল ডেলিভারি তিনি করতে পারেন। তবে ওই প্রতিষ্ঠানে সিজার বা ক্লিনিকালি অন্যান্য কার্যক্রম অবৈধ। যদি এমন কোন তথ্য আপনার কাছে থাকে, আমাকে জানান ব্যবস্থা নিব।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য রাজিয়া আক্তারকে বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অন্যদিকে ভবন মালিক ইদ্রিস আলীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
(সূত্রঃ প্রেস বাংলা)