নাসিক নির্বাচনের সকল কেন্দ্রই অতি ঝুঁকিপূর্ণ : রিটার্নিং অফিসার

59

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার নুরুজ্জামান তালুকদার বলেছেন, আমার দৃষ্টিতে ১৭৪টি কেন্দ্রের মধ্যে কোনো একটি কেন্দ্রও নিরাপদ নয়। শুধু ঝুঁকিপূণ নয়, অতি ঝুঁকিপূর্ণ। তবে নির্বাচনের পরিবেশ এখনো ভালো আছে। মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়ার ক্ষেত্রে এখনো কোন অভিযোগ উঠেনি কোনো প্রার্থীর পক্ষ থেকে। এমন পরিস্থিতি বিরাজমান থাকলে সেনাবাহিনীর প্রয়োজন হবে না বলে মন্তব্য করেন।

রবিবার মেয়র প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাই অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

তিনি ঝুঁকিপূর্ণ-অতি ঝুঁকিপূর্ণ কথার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, এ কথা বলার অর্থ হলো যাতে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জনবল পাই। আমি চাই নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়।

নির্বাচনের সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ বলতে তিনি বোঝান, আইন কানুন দুই পক্ষকে মানতে হবে। ভোটাররা যাকে খুশি তাকে ভোট দিবেন। এমনকি সারাদিন ভোট কেন্দ্র ঘুরে কাউকে ভোট না দিয়ে চলে আসবে ভোটার, সেটা হলো অবাধ। নিরপেক্ষ শুধু আমরা।

নুরুজ্জামান তালুকদার আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জের চ্যালেঞ্জিং নির্বাচন হিসাবে দাবি করে নুরুজ্জামান তালুকদার বলেন, এখানকার নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং নির্বাচন। কারণ আমি বন্দর এলাকাতে গিয়েছিলাম। সেখানে যাতায়াতের রাস্তা একটা চ্যালেঞ্জ। এ প্রথম দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হচ্ছে সেটা একটি চ্যালেঞ্জ। তবে নারায়ণগঞ্জ অন্য কোন কারণে চ্যলেঞ্জিং না। নির্বাচনের আমার অধীনে ১০ হাজার কর্মকর্তা কাজ করবেন।

বৈধ ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে নুরুজ্জামান তালুকদার বলেন, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বৈধ অস্ত্র সংগ্রহ করা যাদের কাজ তাদেরকে বলবো স্বচ্ছতার সঙ্গে এ কাজ করতে। তাছাড়া অবৈধ অস্ত্র ও সন্ত্রাস বিষয়ে যারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তাদের সঙ্গেও আলোচনা করবো। তাদের কাছ থেকে জানবো তারা কিভাবে কাজ করছে।

দলবাজ নির্বাচন কর্মকর্তা প্রসঙ্গে নুরুজ্জামান তালুকদার বলেন, আপনারাই গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করুন। দলবাজ কর্মকর্তা থাকলে তাদের সম্পের্ক জানান। যদি এমন কেউ থাকে তাহলে শক্ত ভাবে ধরবেন যাতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। না হলে তারা তখন আপনাদের বিরুদ্ধে কাজ করবে। নির্বাচন একটা যুদ্ধ। সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং হবে। তাই সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে।

এ সিটির নির্বাচনের ভোট হবে ২২ ডিসেম্বর। আর ৪ ডিসেম্বর হলো মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ।

একজন মেয়রের সঙ্গে ২৭টি সাধারণ ও ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ভোট হবে। মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩৯২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪১ হাজার ৫১৪ এবং নারী ২ লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৮। ভোটার বেড়েছে প্রায় পৌনে এক লাখ। সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্র ১৭৪টি ও ভোটকক্ষ ১৩০৪টি। তবে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জানা গেছে। ২০ নভেম্বরের মধ্যে ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত হবে। ১৬৩ প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ১২১৭ সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ২৪৩৪ জন পোলিং কর্মকর্তা ভোট নেবেন।

চলতি বছরের ২৬ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটির মেয়াদ শেষ হবে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আইন অনুযায়ী, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে।

নারায়ণগঞ্জে সিটি করপোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরুর পর এটি দ্বিতীয় ভোট। তবে দলীয় প্রতীকে ভোট হবে এবারই প্রথম। ২০১১ সালে নির্দলীয় ওই নির্বাচনে শামীম ওসমানকে এক লাখের বেশি ভোটে হারিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র হন সাবেক চেয়ারম্যান আইভী। সে বছরের ৫ মে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা, সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভা ও বন্দরের কদমরসুল পৌরসভা বিলুপ্ত করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন গঠন করা হয়। পরে ওই বছরের ৩০ অক্টোবর সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন হয়।