আড়াইহাজারে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছেন দুগ্ধ খামারিরা

331

আড়াইহাজার প্রতিনিধি
ন্যায্য দাম না পাওয়া, কাঙ্খিত উৎপাদন না হওয়া ও গো খাদ্যের সংকটসহ বিভিন্ন কারণে লোকসানের মুখে পড়ে খুঁড়িয়ে খুঁিড়য়ে চলছিল স্থানীয় দুগ্ধ খামারগুলি। লোকসানে পড়ে অনেকেই খামার গুটিয়ে ফেলে ছিলেন। তিন বছরের ব্যবধানে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক চাহিদা সৃস্টি হওয়ায়, দুধের ন্যায্য দাম পাওয়া এবং কাঙ্খিত উৎপাদনের ফলে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জিমিয়ে পড়া দুগ্ধ খামারিরা আবারও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। নতুন করে এশিল্পের সঙ্গে জড়িত হয়ে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হচ্ছেন অনেক যুবক। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস জানায়, উপজেলার দুইটি পৌরসভা ও দশটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নিবন্ধিত ৬২৩ টি খামার এছাড়াও ছোট, বড় প্রায় অনিবন্ধিত আরো প্রায় দুই শতাধিক দুগ্ধ খামার গড়ে উঠেছে। খামারে ফ্রিজিয়ান, শাহীয়াল, সিন্দি ও দেশীয় শংকরজাতসহ স্থানীয় বিভিন্ন জাতের গাভী পালন করা হচ্ছে। জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অনেকে গরু মোটাজাতা করেও স্থানীয় পর্যায়ে বছর জুড়ে মাংসের জোগান দিয়ে যাচ্ছেন। এতে বাড়তি টাকা আয়ের পাশাপাশি হ্রাস পাচ্ছে বেকারত্ব। তবে খামারিদের দাবী পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধা পেলে এশিল্পে আরও অগ্রগতি হতো। অনেকে পুঁজির অভাবে খামারের পরিধি বাড়াতে পারছে না। দুগ্ধ খামারে প্রতিদিন প্রায় ৪৭ হাজার লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি লিটার দুধ গড়ে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রতিটি খামারি লাভের মুখ দেখছেন। প্রতিটি বছর শেষে বকনা বাছুর বিক্রি করেও লাখ টাকা আয় করছে খামারিদের। উৎপাদিত দুধ স্থানীয় পর্যায়ে চাহিদা মিঠিয়ে উপজেলার আপশাশের বিভিন্ন এলাকায়সহ রাজধানীতে রপ্তানী করা হচ্ছে। উৎপাদন ধরে রাখতে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর থেকে খামারিদের পরার্মশ দিয়ে সাহায্য দিয়ে যাচ্ছেন। জানা গেছে, গত কোরবানীর ঈদে এই উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজার গরু মোটাজাতা করা হয়। এতে স্থানীয় চাহিদা মিঠিয়ে উদ্বৃত্ত হয়েছিল। এছাড়াও বছর জুড়ে ছাগল, খাসি ও ভেড়া, ষাঁড় পালন করে অনেকেই দারিদ্রতাকে গুডবাই জানিয়েছেন। প্রাকৃতিক পদ্ধতির পরিবর্তে প্রযুক্তি নির্ভর (কৃত্রিম) পদ্ধতিতে প্রজনন করায় উন্নত জাতের গাভীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াসহ বাছুর মৃত্যুর হার করেছে। প্রান্তিক পর্যায়ের দারিদ্র খামারিদের বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে কৃষি নাশক ওষধ। স্থানীয় বিভিন্নœ তফসিলী ব্যাংক থেকে বকনা বাছুর প্রকল্পের অধিনে ৫ পার্সেন সুদে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়া হচ্ছে। উপজেলা যুবউন্নয়ন অধিদফত থেকে বেকার যুবক-যুবতীকে গাভী পালনের ওপর প্রশিক্ষণ প্রদানসহ ঋণ দেয়া হচ্ছে।
সম্ভবনাময় এই শিল্পটি নিয়ে অনেকে সোঁনালী দিনের স্বপন বুনছেন। ইচ্ছা আর কঠোর পরিশ্রমে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে তারা এখন সঞ্চয় মুখী হয়ে উঠেছেন। এসব পরিবার দারিদ্রতার অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে প্রতিনিয়তই আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছেন। প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চলে দারিদ্রতার কষাঘাতে জর্জরিত এসব পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতার পাশাপাশি পূরণ হচ্ছে প্রোটিন ও আমিষের চাহিদা। পুষ্টিহীতায় আক্রান্ত সন্তানদের খাওয়াতে পারছেন দুধ-ভাত। খামারের মালিকের অধিকাংশই শিক্ষিত ও এক সময়ের বেকার যুবক। পুরুষদের সাথে তাল মিলিয়ে সংসারের কাজের পাশাপাশি অনেক গৃহবধূ বাড়িতে গড়ে তোলেছেন ক্ষুদ্র দুগ্ধ খামার। ক’দিন আগেও যাদের নূন আনতে পানতা ফুরাতো, তারা এখন আদরের সন্তানদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করাচ্ছেন। গাভী পালন করে তারা দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন। খামারগুলিতে শ্রমিকের কাজ করে অনেকের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন। দুধ দিয়ে দই, মিষ্টি, মাখন ও ঘি-সহ দুগ্ধজাত বিভিন্ন খাবার তৈরি করে বাজারজাত করছেন। এতেও অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃস্টি হয়েছে। প্রতিটি খামারি গোবর সার থেকে তৈরি জৈবসার দিয়ে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজির চাষ করছেন। সেখান থেকেও তারা বাড়তি টাকা আয় করছেন।
দুগ্ধ খামারে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠেছেন সদাসদীর সিরাজ মিয়া, হযরত আলী, নোয়াব আলী, বারেক, নজরুল, সুবেদ আলী, মানিক, আয়ুবুর রহমান, আনিছ, আবু দায়েরন, কুদ্দুস, আরিফ, মনির,আহাদ মিয়া, মোতাহর হোসেন, নাজিরুল ইসলাম, আমজাত হোসেন, ফারুক,কবির হোসেন, মোক্তার, শাহাজালাল, সফর আলী, গৃহবধূ ইয়াছমিন, ফজিলা ও পারভীনের মত আরো অনেকে।
আড়াইহাজার পৌরসভাধীন বাগানগর এলাকার দুগ্ধ খামারি ইয়াছমিন জানান, স্বামী ছাদেক মিয়া পাওয়ালুমের শ্রমিক। সপ্তাহ শেষে যে টাকা পেতেন। তা দিয়ে সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হতো। তিনি ২০০২ সালে স্থানীয় গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ১টি গাভী পালন করেন। প্রথম বছরেই তিনি লাভের মুখ দেখতে পান। পরে তিনি ঋণ নিয়ে আরো ৩টি গাভী কেনেন। তার খামারে ৬টি গাভী রয়েছে। এখন শ্রমিকের কাজ ছেড়ে ছাদেক মিয়া স্ত্রীকে সাহায্য করছেন। তিনি আরও জানান, ৩ বছর আগে দুধের ন্যাষ্য দাম পাওয়া যায়নি। এতে লোকসান দিতে হয়েছে। এলাকায় অনেকে খামার বন্ধ করে দিয়েছিল। প্রতিদিন তার খামারে প্রায় ৪০ লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি লিটার দুধ ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে প্রতি মাসে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করে এবং সংসারের সকল খরচ মিটিয়ে বভিষ্যতের জন্য তিনি মাসে ১ হাজার টাকা সঞ্চয় করছেন। এবছর তিনি ৩টি বাছুর বিক্রি করেও প্রায় ১ লাখ টাকা আয় করেছেন। খামারে মানিক নামে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধি শ্রমিক মাসিক ৭ হাজার টাকা বেতনে কাজ করছেন। তিনি কোনো প্রকার প্রশিক্ষণ ছাড়াই খামার পরিচালনা করছেন। তার ১ ছেলে ১ মেয়ে। ছেলে ইমন স্থানীয় স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছেন। মেয়ে হাবীবা আক্তার পড়ছেন দ্বিতীয় শ্রেণিতে। গোবর সার দিয়ে শাক-সবজির চাষ করেছেন। সেখান থেকেও বাড়তি টাকা আয় করছেন তিনি।
২০১১ সালে এনজিও থেকে মাত্র ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে একটি দেশীয় প্রজাতির গাভী কিনে বিশ্বনন্দী এলাকার বারেক মিয়ার জীবন সংগ্রাম শুরু হয়। বছর না ঘুরতেই গাভীটি জন্ম দেয় একটি বকনা বাছুর। এটিকেও লালন-পালন করে বড় করে তোলেন তিনি। ২০১২ সালে ফের ১ লাখ টাকা ঋণ নেয় বারেক। লালন-পালন করা দেশীয় প্রজাতির দুটি গাভী স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে ঋণ নেয়া অর্থে সঙ্গে ওই টাকা সমন্বয় করে ফ্রিজিয়ান প্রজাতের চারটি মাঝারি আকারের গাভী ক্রয় করে গড়ে তোলেন একটি খামার। এরপর থেকে  বারেক মিয়ার পরিবারকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। চারটি থেকে আজ তার খামারে অস্ট্রেলিয়ান প্রজাতির ১১টি গরু রয়েছে। এর মধ্য ৪টি গাভী এবং চারটি ষাঁড়। এর আয় থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় মিঠিয়ে দুই সন্তান লেখাপড়া করছেন।
উচিৎপুরা এলাকার খামারি ফারুক জানান, স্থানীয় পশু সম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি তার খামারের পরিচর্যা করে থাকেন। বাড়তি কোনো খরচ হয় না তার খামারে। গাভীগুলিকে খাওয়ানো  হচ্ছে খড়, ভুসি, খৈল, কাঁচাঘাস, ক্যাটেল ফিড দিয়ে থাকেন তার খামারের গরুকে। প্রতিদিন তার খামার থেকে প্রায় ১৮০ লিটার দুধ উৎপাদন হয়, যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রতি লিটার ৬০ টাকা হিসাবে ১০ হাজার আটশ’ টাকা। প্রতিদিন খাবার ও ওষুধসহ নানা খরচে ব্যয় হয়  ৬ হাজার টাকা। বাকি টাকা উদ্বৃত্ত থেকে যায়। ফারুক আরও জানান, খামারের আয় দিয়ে বেশ কিছু জমিও ক্রয় করেছেন তিনি। সঠিক পরিচর্যা আর মনোবল তাকে চলার পথ দেখিয়েছে। বর্তমানে তার খামারে স্থানীয় একজন মহিলাসহ তিনজন সহযোগী রয়েছেন। তাদের প্রতি মাসে দুই জনকে ১৮ হাজার টাকা বেতন দিচ্ছেন। তার খামারে বর্তমানে পূর্ণবয়স্ক ২২টি গাভী রয়েছে। প্রতিবছর ১৫টি বকনা বাছুর বিক্রি করে তিনি লাখ টাকা আয় করছেন।
একই এলাকার কবির সংসারে অসচ্ছলতায় যখন হতাশায় ভুগছিলেন, ঠিক তখনই পাশের গো খামারি আনিসের পরামর্শে গাভী পালন শুরু করেন তিনি। মাত্র ৭ বছরের ব্যবধানে আজ তিনি একটি গো খামারের মালিক। স্বাবলম্বী এ যুবক জানান, পাঁচ সদস্যের পরিবার তার। বাবার একার আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। এ সময় প্রতিবেশী আনিসের গাভী পালন দেখে নিজেই ইচ্ছা পোষণ করেন গাভী পালনের। সেই থেকে পথচলা। তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। নিজের ইচ্ছাশক্তি আর দৃঢ় মনোবল নিয়ে ২০১১ সালের শেষ দিকে আনিসের কাছ থেকে একটি অস্ট্রেলিয়ান গাভী নিয়ে শুরু করেন উন্নয়নের যাত্রা। এখন তার ৮টি গাভী ও চারটি বাছুর রয়েছে। গাভী থেকে প্রতিদিন প্রায় ৭০ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। গাভীগুলিকে দানাদার জাতীয় খাবারের পাশাপাশি ঘাস খাওয়ানোর জন্য তিনি ৫০ শতাংশ জমিতে ইপিল ইপিল চাষ করছেন।
সিঙ্গাপুর ফেরত যুবক হাইজাদী ইউনিয়নের তিলচন্দ্রী এলাকার আমান উল্যাহ জানান, তিনি ২০১৬ সালের প্রথম দিকে ২৪টি গাভী দিয়ে খামার শুরু করেন। খামারে প্রতিদিন ২৪০ লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে। ক্যাটেল ফিডসহ গাভীগুলিকে অন্যান্য দানাদার খাবার খাওয়াচ্ছেন। পাইকাররা ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে দুধ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তার খামারে ১৭টি বাছুর রয়েছে। তিন জন শ্রমিক ১০ হাজার, ১১ হাজার ও ৭ হাজার টাকা বেতনে কাজ করছেন। তিনি আরও জানান, তার খামারে আড়াইলাখ টাকা দামের গাভী রয়েছে। খাবার এবং ওষধের দাম কম হলে আরও বেশী লাভ হতো। স্থানী ব্যাংকগুলি থেকে স্বল্প সুদে বড় আকারে ঋণ দেয়া হলে খামারের পরিধি তিনি বাড়াতে পারতেন। প্রথমে তিনি শখের বসে শুরু করলেও, বর্তমানে তিনি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খামার গড়ে তোলেছেন।
সাতগ্রাম এলাকার নাজিরুল ইসলাম বলেন, তিনি ২০০০ সালে  খামার গড়ে তোলেছেন। তার খামারে পূর্ণবয়স্ক ১১টি গাভী রয়েছে। প্রতিদিন ৮০ লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়াও প্রতি বছর কোরবানীর ঈদের বিক্রির জন্য তিনি পাঁচটি ষাঁড় গরু পালন করেন। এতে খরচ বাদে তার প্রায় দুই লাখ লাভ হয়। আগামী ঈদকে সামনে রেখে তিনি সাতটি গরু পালন করছেন। বাজার ভালো থাকলে চার লাখ আয়ের স্বপন দেখছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, গরু বিক্রির আয় দিয়ে তিনি সারা বছর সংসারের খরচ চালাচ্ছেন। তার দেখাদেখি অনেক বেকার যুবক এলাকায় খামার গড়ে তোলেছেন। তার খামারে দুইজন শ্রমিক মাসিক ১৬ হাজার টাকা বেতনে দিচ্ছেন।
শফিকুল জানান, প্রশিক্ষণ শেষে শেষে আড়াইহাজার উপজেলা যুবউন্নয়ন অধিদফতর থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে প্রথমে একটি গাভী নিয়ে খামার শুরু করেন। বছর ঘুরতেই তিনি লাভ দেখতে পান। দুধ বিক্রির টাকা থেকে ঋণের টাকা পরিশোধ করছেন। স্বল্প পুঁজি নিয়ে শুরু করলেও, লাভজনক হওয়ায় খামারের পরিধি বুদ্ধি করার চিন্তাভাবনা করছেন। গোবর দিয়ে তিনি বাড়িতে একটি বায়ুগ্যাস প্লানও স্থাপন করেছেন। এটি থেকে পরিবারের সকল রান্না-বান্নার কাজ চলছে।
দুগ্ধ খামারকে কেন্দ্র করে মের্সাস ভাই বোন ট্রেডার্স, সিরাজ ফিড, লিটন ট্রেডার্স, মা ফিড, মদিনা ফিড ও ভাই ভাই ফিডসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে গবাদীর পশুর সুষম খাদ্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে স্থানীয় খামারিরা ফিড কিনে নিচ্ছেন। অন্যান্য খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে সুষম এই খাবার খাওয়ানোর ফলে খামারে আগের তুলনায় দুধের উৎপাদন কয়েক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। খাদ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান স্থানীয় লিটন ট্রেডার্সের মালিক লিটন জানান, প্রতিদিন গড়ে দুইশ’ বস্তা বিক্রি হচ্ছে। ২৫ কেজির একটি বস্তা ৬শ’ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরও জানান, সুষম খাবার খামারে ব্যবহার করে খামারিরা লাভবান হচ্ছেন। আগের তুলনায় ফিডের বিক্রিও বেড়েছে।
আড়াইহাজার উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তা ডাক্তার মো: ফারুক আহাম্মদ আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, বাছুর মৃত্যুর হার আগের তুলনায় অনেক কম। উপজলার নীচু এলাকায় দারিদ্র খামারিদের বিনামূল্যে কৃষিনাশক বড়ি দেয়া হচ্ছে। তৃণমুল পর্যায়ে ভেকসিনেশন চালু হওয়ায় তরকা (এনথ্্রাক্স) রোগের পার্দুভাব কমে গেছে। এতে এলাকায় গাভীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, ৩০ জন করে খামারির অংশ গ্রহণে ইউনিয়ন পর্যায়ে কমন ইস্টারেস্ট ( সি,আই, জি) প্রকল্প চালু করার প্রস্তুতি চলছে। এত খামারিরা উপকৃত হবেন। দুগ্ধ খামারগুলিতে প্রতিদিন ৪৭ হাজার লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে ক্রেতা (কনজুমার) সৃস্টি হওয়ায় উৎপাদিত দুধ বিক্রিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
আড়াইহাজার পৌরসভা শাখা কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মুক্তিযোদ্ধা  মো: মতিউর রহমান জানান, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সরকারের বকনা বাছুর প্রকেল্পের অধিনে বরাদ্দ অনুযায়ী স্থানীয় আর্দশ ডেইরী ফার্ম ও মেসার্স নাসিব মিক্স নামে দুই দুগ্ধ খামারে ৫ পার্সেন সুদে চার লাখ টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে। উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা ই, আ, ম, মামুন মজুমদার বলেন, দুগ্ধ খামারে উৎসাহিত করতে স্থানীয় বেকার যুবক প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে ৩০ জন যুবক-যুবতীকে ৭ দিনের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।