ডিএনডি প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে আবারো জলাবদ্ধতা

92
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ডিএনডি এলাকায় বসবাসরত প্রায় ২০ লাখ মানুষয়ের দুর্ভোগ লাঘবে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ৫শ ৫৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পাশ করেছেন। তারই প্রেক্ষিতে ১৫ই অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এম পি শামীম ওসমানের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় একটি জনসভার। জনসভায় ডিএনডি উন্নয় প্রকল্পের কাজ শুরুর ঘোষণা দিয়েছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিষ্টার নজরুল ইসলাম মাহমুদ এমপি। ওই জনসভার ৪ দিন পর (১৯ অক্টোবর) ফতুল্লাতে একই রকম একটি জনসভার আয়োজন করা হয় প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য। সেখানেও উপস্থিত ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রী। দুটি সমাবেশে মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে রাজনীতিকদের কৃতজ্ঞতা আর উচ্ছাসের বেশ আবেগঘন পরিবেশ দেখা গেলেও এই প্রজেক্টের কাজ শুরুর আগেই আরেক দফা জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে ডিএনডির সিদ্ধিরগঞ্জ সহ বেশ কয়েকটি এলাকায়।

১৫ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জ ও সবশেষ বৃহস্পতিবার ১৯ অক্টোবর ফতুল্লাতে আলাদা দুটি সমাবেশ হয়। সমাবেশে পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল হক মাহমুদ, প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম হিরু, রাজধানীর দুই এমপি সানজিদা খানম, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা সহ স্থানীয় এমপি শামীম ওসমানসহ অনেক রাজনীতিবিদ উপস্থিত ছিলেন। ডিএনডি বাধের ৫৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বেশীরভাগই সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা এলাকাতে। ওই দুটি সমাবেশে এসে মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীরা বেশ আস্থার সাথে বলেছেন, অক্টোবরের মধ্যেই এই উন্নয়ন প্রজেক্টের কাজ শুরু হবে। ৫শ ৫৮ কোটি টাকার প্রকল্প হলেও এর উন্নয়নের জন্য যদি আরো টাকার প্রয়োজন হয় সেটার ব্যবস্থা করা হবে। কারণ প্রধানমন্ত্রী নিজেই এ বিষয়টা নিয়ে বেশ আন্তরিক। তাই বাজেট কোন সমস্যা নয়। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও চান এ প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন হোক এবং ডিএনডিবাসী জলাবদ্ধতা থেকে দ্রুত মুক্তি পাক।
১৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) জনসভা শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি শুক্রবার রুপ নেয় বর্ষণে। শুক্রবার সারাদিনের বর্ষণে আবারো পানিতে তলিয়ে যায় সিদ্ধিরগঞ্জের বেশ কিছু এলাকা। সরেজমিনে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে আগের সেই চিত্র। সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি,সিআইখোলা,হিরাঝিল, পাইনাদি,কদমতলী, জালকুড়ি,শান্তিনগরসহ বিভিন্ন এলাকার চিত্র প্রায় একই রকম। প্রায় সব জায়গাতেই চলাচলের রাস্তাগুলো রয়েছে পানির নিচে। কোথাও কোথাও দেখা গেছে হাটু সমান পানি দিয়েই মানুষ চলাফেরা করছে। সিদ্ধিরগঞ্জের শান্তিনগর এলাকার মঞ্জুর হোসেন বলেন, এমপি ও মন্ত্রীরা কথা দিয়েছেন কাজ শুরু করবেন। তবে সেটা বাস্তবায়ন হবে সেনাবাহিনী যখন কাজ শুরু করবেন তখন থেকে। কিন্তু শুক্রবারের বৃষ্টিতেই আমরা তলিয়ে গেছি।  কদমতলী এলাকার বাসিন্দা বেসকারী চাকুরিজীবি  মঈনুল ইসলাম পলক জানান, কোরবানির ঈদের পর থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় এবং ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমানের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এ এলাকার জলাবদ্ধতা কিছুটা নিরসন হয়েছিল। কিন্তু গত দুইদিনের বৃষ্টিতে আবারো জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নাসিকের প্যানেল মেয়র-২ মতি তার নিজ অর্থায়নে তার নির্বাচনি এলাকার বাইরে আমাদের এই ৭নং ওয়ার্ডের জলাবদ্ধতা নিরসনে পাম্প বসিয়েছেন। তার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমাদের ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিল আলী হোসেন আলার কোন উদ্যোগ নেই এই বিষয়ে। সম্প্রতি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় এবং আমাদের সংসদ সদস্য ঘোষনা দিয়েছেন এই এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ শুরু হবে। কিন্তু যতদিন এই প্রজেক্ট বাস্তবায়ন না হবে ততদিন আমরা এই এলাকার জনগণ তথা ডিএনডি বাসি জলাবদ্ধতার এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবো না। তাই তাদের কাছে সবিনয় আবেদন থাকবে যাতে দ্রুত এই প্রজেক্ট বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ শুরু করা হয়। সিদ্ধিরগঞ্জ হিরাঝিল এলাকার বাসিন্দা সোহেল আহমেদ জানান, অনবরত গত দুই দিনের অনবরত বৃষ্টির কারণে নতুন করে আবার জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তাই আমি আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্যর কাছে বিনিত অনুরোধ করবো যাতে করে ডিএনডির জলাবদ্ধতা নিরসনে যেই প্রজেক্ট পাশ হয়েছে তা আর কালক্ষেপণ না করে অতি দ্রুত শুরু করা হোক।

নতুন করে সৃষ্টি জলাবদ্ধতা নিয়ে কথা হয় সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলস্থ ডিএনডি পাম্প হাউসের উপ-সহোকারী প্রকৌশলী রাম প্রসাদ বাছারের সাথে। তিনি বলেন, গত দেড় মাস আগে একটানা সাতদিনে যতটুকু বৃষ্টি হয়েছিল তার চেয়ে বেশি বৃষ্টি গত দুই দিনে হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। গত মাসে বৃষ্টি না হওয়ায় পানি অনেকটাই কমে গিয়েছিলো। যার কারণে আমাদের পাম্পগুলোও বন্ধরাখতে হয়েছে। গত দুদিনের বৃষ্টিতে আবারো জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে আমাদের চারটি বড়ো পাম্পের মধ্যে তিনটি চালু করেছি। এবং আরো কয়েকটি অস্থায়ি পাম্প আছে সেগুলো আজ দুপুরের মধ্যে চালু হয়ে যাবে। এবং ডিএনডির বিভিন্ন স্থানে