‘জনতার মুখোমুখি’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীসহ সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আইভীর কৃতজ্ঞতা

53

মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় জিমখানার উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে ‘জনতার মুখোমুখি’ অনুষ্ঠানে নাসিক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, পৌরসভা থাকা কালীন ২০০৫ সালে প্রথম শহীদ মিনারে সর্বপ্রথম জনতার মুখোমুখি হয়েছিলো।পরবর্তীতে এটাকে ফলো করে অন্যান্য শহরগুলোতে এটা করা হয়েছিলো।

প্রতিবছর এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। আমি প্রথমে নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর আমাকে নির্বাচিত করার জন্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার প্রতি আস্থা রেখে নৌকা তুলে দিয়েছিলেন। সে আস্থার প্রতিদান নারায়ণগঞ্জবাসী ব্যালটের মাধ্যমে আমাকে নির্বাচিত করে দিয়েছিলো।

তাই আমি আপনাদের এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ৯ জানুয়ারি আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম। ৫ জানুয়ারি ছিলো আমাদের শপথ গ্রহণ। ৯ জানুয়ারি আমার বাসভবন থেকে আপনাদের সাথে নিয়ে হেঁটে হেঁটে নগরভবনে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম। আজকে আমার দায়িত্বগ্রহণের ১ বছর । এ ১ বছরে আমি কি করলাম এবং সামনে কি করবো তার জন্যই এ অনুষ্ঠানের আয়োজন।

২০০৩ সালে আমি যখন নির্বাচন করতে আসলাম তখন এটা পৌরসভা ছিলো। ২০০২ সালে বাংলাদেশের পরিবেশ পরিস্থিতি কি ছিলো তা আমার থেকে আপনারা ভালো জানেন। কারণ আমি এ দেশে ছিলাম না। প্রায় ১৭ বছর পর আমি দেশে এসেছিলাম। ২০০৩ সালের ১৬ জানুয়ারি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম।

অত্যন্ত নাজুক ও খারাপ অবস্থার মধ্যে ৮ বছর পৌরসভা চালিয়েছি। ২০১১ সালের ৫ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ঘোষণা করলেন। তারো ৪ মাস পর ৩০ অক্টোবর যে নির্বাচন হয়েছিলো আমি প্রার্থী ছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমি দলীয় সমর্থ আদায় করতে ব্যর্থ ছিলাম। আমার হয়তো তখন কিছু কমতি ছিলো তাই সে সময় আমি দলীয় সমর্থন আদায় করতে পারি নি। কিন্তু আমি নির্বাচন করেছিলাম প্রতিবাদ করার জন্য।

এ শহরের মানুষের জন্য। এ শহরের মানুষ যাতে মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারে। কথা বলার শক্তি ও সাহস যেন সঞ্চয় করতে পারে তার প্রতীক হয়ে আপনাদের সাথে নিয়ে নির্বাচন করেছিলাম। আপনারা আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছিলেন। ৫ বছর আমি আপনাদের সেবা করেছি। অত্যন্ত প্রতিকূলতার মাঝে থেকেও এ শহরকে কাঙ্খিত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমি কি করেছি আপনারা তা দেখেছেন।

মেয়র আইভী বলেন, এমন কোন জায়গা নেই। আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, সাংস্কৃতিক জোট, গণ্যামান্য ব্যক্তিবর্গ, একজন রিক্সাওয়ালা থেকে শুরু করে ছাত্র-জনতা সকলে আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। আমি দল মত নির্বিশেষে যেমন সকলের কাজ করেছি। সবাই তেমনি আমাকে অন্তত সিটি করপোরেশনের কাজে সহযোগিতা করেছেন। আমিও কখনো দলীয় বড়াই করি নি। আপনারা আমাকে কখনো সেভাবে নেন নি। মাটি ও মানুষের আলী আহমদ চুনকার সন্তান হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।

তিনি বলেন, বন্দরবাসীর কথা না বললে চরমভাবে অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হবে। আমার বাবাকে বন্দর বাসীরা এমন ভালোই বাসতো ১৯৮৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি চলে যাওয়ার সময় দুপুর ও রাতের খাবারও এ বন্দরবাসীর সাথেই খেয়েছিলেন। ২০১১ তে বন্দরবাসী আমাকে ৯০ ভাগ ভোট দিয়েছিলেন। ২০১৬ তেও ৯০ ভাগ ভোট দিয়েছেন।

মেয়র আইভী আরো বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জবাসীর ২০১১ সালে আমাকে ৫০ ভাগ ভোট দিয়েছিলেন। আমার জন্য সেটি ছিলো মেঘ না চাইতে বৃষ্টি পাওয়ার মতো। ১৯৮৪ সালে বাবা মারা যাওয়ার পর সিদ্ধিরগঞ্জবাসীর সাথে আমার তেমন যোগাযোগ ছিলো না। মুক্তিযোদ্ধারা আমার সাথে না থাকলে আমি এতো ভোট পেতাম না।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সকল ওয়ার্ডের কাউন্সিলরগণ, সাংবাদিকগণসহ সর্বস্তরের জনগণ উপস্থিত ছিলেন।