এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীর অন্যতম হোতা জোবায়দুল ইসলাম মিঠু গ্রেপ্তার

59

নিজস্ব সংবাদদাতা : আবারোও প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ। এবার এসএসসি পরীক্ষার ইংরেজী দ্বিতীয়পত্র প্রশ্ন ফাঁসের অন্যতম হোতা ঢাকার উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জোবায়দুল ইসলাম মিঠু নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ও সদর থানা পুলিশ। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার সময় এই ঘটনা ঘটে সদর উপজেলার মস্তফাপুর বাসস্ট্যান্ডে। এ সময় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজে ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মাদারীপুর সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার সকালে ঈগল পরিবহনে ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়ার সময় জোবায়দুল ইসলাম মিঠু নামে এক যুবক মাদারীপুরের মস্তফাপুর এলাকায় আসে। সে এসএসসি পরীক্ষার ইংরেজী দ্বিতীয়পত্র প্রশ্ন মোবাইলে ফেইসবুক দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষার্থীর মধ্যে সরবরাহ করছিল। এসময় তার পাশের সিটে বসা অপর যাত্রী লিটন বৈরাগী প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি বুঝতে পেরে অন্যদের জানায়। তখন স্থানীয়রা পরিবহনটি আটক করে জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম ও সদর থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতে-নাতে প্রশ্নের কপিসহ তাকে আটক করে। আটককৃত ওই যুবক ঢাকার উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী এবং বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার সবুজবাগ এলাকার আব্দুস ছাত্তার চোকদারের ছেলে বলে দাবী করেছে। সে একটি ফেইসবুক পেইজের মাধ্যমে প্রশ্ন সরবরাহ করে ৫’শ টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন একজন ছাত্রকে দিতো বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।

জোবায়দুল ইসলাম মিঠু সাংবাদিকদের জানান, তিনি একটি ফেসবুক গ্রুপের সদস্য। ওই গ্রুপের মাধ্যমে তিনি টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার সাজেশন দিতেন।’ ওই যুবক এই প্রশ্ন কীভাবে পেয়েছেন সেটা বের করার চেষ্টা করছে প্রশাসন।

এই চক্রের সাথে অন্য কারা জড়িত রয়েছে তাদের ধরতে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। তবে আটক মিঠুর দাবী সে শুধুমাত্র ফেসবুকে একটি গ্র“পের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার সাজেশন লেনদেন করতো। এদিকে ফেসবুক গ্র“পের দেয়া প্রশ্নপত্রের সাথে বুধবারের ইংরেজী দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষার হুবহু মিল রয়েছে।

এব্যাপারে জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম জানান, আটককৃত ব্যক্তির মোবাইল চেক করে সত্যতা পাওয়া যায়। পরে আজকের পরীক্ষার প্রশ্নের সাথে ফাঁসকৃত প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া যায়। একই সাথে প্রশ্নের উত্তরও পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সৈয়দ ফারুক আহম্মদ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে তোলপাড় চলছে দেশ জুড়ে। ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপের মতো সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন সরবরাহ করে আসা হচ্ছে। আর এ জন্য কোনো রকম আর্থিক সুবিধাও চাইছে না এর সঙ্গে জড়িতরা। গত ৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী প্রশ্ন ফাঁসে জড়িতদেরকে ধরিয়ে দিতে পারলে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন। এরপর ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপে ‘পারলে আমাদের ধরেন’ বলে পাল্টা চ্যালেঞ্জও দেয়া হয়েছে।