নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলায় মা ও দুই মেয়ের হত্যা মামলার প্রধান আসামি শোভাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ভৈরব থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাসেল আহমেদ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভৈরব থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে শোভাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে বলে জানায় পুলিশ।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম জানান, গত রোববার মামলার আরেক আসামি সোহেল হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গত সোমবার অপর আসামি নিহত আঞ্জুবির স্বামী মাসুদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার অধিক তদন্তের জন্য তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, মামলাটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা। ১১জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জের পৃথক পৃথক স্থানে আমরা তিনটি লাশ পাই। আঞ্জুবির লাশ পাওয়ার পর পুলিশ তেমন কাউকে সন্দেহ করতে পারছিলাম না। পরবর্তিতে ঈদের দিন ও তার একদিন পর বাচ্চা দুটির লাশ পাওয়া যায় সিদ্ধিরগঞ্জের আটি হাউজিংয়ের একটি মাছের খামার থেকে। তখন তারা তিনটি লাশের যোগসূত্র খুঁজতে থাকে। পরে আঞ্জুবির বোন আঞ্জুবির বড় মেয়ের শার্টের পকেটে থাকা চেইনটি দেখে লাশটি সনাক্ত করেন। একই সঙ্গে ছোট মেয়ে এবং আঞ্জুবির লাশও সনাক্ত করেন।
তখনই এসপির নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরফুদ্দিনের নেতৃত্বে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আ. সাত্তার, পরিদর্শক আ. আজিজ, উপপরিদর্শক রাসেল এবং রফিকুল ইসলামকে নিয়ে একটি টিম গঠন করে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা আঞ্জুবির স্বামী মাসুদকে আটক করি। মাসুদকে জিজ্ঞাসবাদে আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাই। এরই মধ্যে মাসুদের দ্বিতীয় স্ত্রী শোভা পালিয়ে যায়। পরে আমরা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার আরেক আসামি সোহেলকে নেত্রকোনার খালিয়াজর থেকে আটক করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আটকের পর সোহেল প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয়। অন্যদিকে আমরা শোভাকেও আটকের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করি। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি শোভা মৌলভিবাজারের জগন্নাথপুর তার বোনের বাড়িতে অবস্থান করছে। সেখান থেকে গতকাল বিকেলে পুলিশ আমরা আটক ককে। আজ বুধবার দুপুরে শোভাকে আদালতে পাঠানো হয়।’