২৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৪ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 215

আওয়ামীলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত-১,আহত-১০

কুষ্টিয়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে ইদ্রিস আলী (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় কমপক্ষে আরো ১০ জন আহত হয়েছেন।

আজ শুক্রবার সকাল ৮টায় সদর উপজেলার জিয়ারখী ইউনিয়নের মঠপাড়া গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত ইদ্রিস আলী একই গ্রামের মৃত গফুর মেম্বারের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জিয়ারখী ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আফজাল হোসেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।

এরই জের ধরে সকালে জমি ভাগবাটোয়ারা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদের পক্ষের সমর্থক শাহজাহান ইসলাম ও আফজাল হোসেন পক্ষের সমর্থক ইসমাইল এর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

দু’পক্ষের সংঘর্ষে আফজাল হোসেন পক্ষের সমর্থক ইদ্রিস আলী ফালার আঘাতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এসময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। বর্তমানে ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) রবিউল ইসলাম জানান, মরদেহটি উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃত জামায়াতের ২৮ নারী ২ দিনের রিমান্ডে

জামায়াতের ২৮ নারী সদস্যের ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। শুক্রবার বিকেলে ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।

এর আগে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া জামায়াতে ইসলামীর ২৮ নারী সদস্যের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, গ্রেপ্তারকৃত ২৮ জন হলেন: মহিলা জামায়াতের সেক্রেটারি শাহনাজ বেগম (৫৬), রোকন পর্যায়ের নেত্রী নাঈমা আক্তার (৫৫), উম্মে খালেদা (৪০), জোহরা বেগম (৩৫), সৈয়দা শাহীন আক্তার (৪০), উম্মে কুলসুম (৪২), জেসমিন খান (৪৩), খোদেজা আক্তার (৩২), সালমা হক (৪৫), সাকিয়া তাসনিম (৪৭), সেলিমা সুলতানা সুইটি (৪৮), হাফসা (৫৫), আকলিমা ফেরদৌস (৩৭), রোকসানা বেগম (৫১), আফসানা মীম (২৫), শরীফা আক্তার (৫৩), রুবিনা আক্তার (৩৮), তাসলিমা (৫২), আসমা খাতুন (৩৫), সুফিয়া (৪১), আনোয়ারা বেগম (৪৬), ইয়াসমিন আক্তার (৪১), সাদিয়া (৪৫), ফাতেমা বেগম (৫১), উম্মে আতিয়া (৪৬), রুমা আক্তার (৩২), রাজিয়া আক্তার (৪২) এবং রাহিমা খাতুনন (৩০)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার জানান, বৃহস্পতিবার বেলা দুইটা থেকে আড়াইটার মধ্যে তাজমহল রোডের একটি বাসার (১১/৭) দ্বিতীয় তলা থেকে এই ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাড়িতে গেলে তারা ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। পরে পুলিশ দরজা ভাঙতে গেলে তারা খুলে দেন।

এ সময় তাদের কাছ থেকে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের উদ্দেশে ছাপানো ৫০টি ও অন্য আরো ৭০টি লিফলেট, সংগঠনের মাসিক রিপোর্ট ফরম ২২৫টি, গোলাম আযমের লেখা তিনটি এবং মতিউর রহমান নিজামীর লেখা একটি বই উদ্ধার করা হয়।

সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে শাহজাদপুরে হরতাল

দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুল হত্যার প্রতিবাদে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আগামীকাল শনিবার আধা বেলা হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছে।

শাহজাদপুরের মেয়রের ব্যক্তিগত শটগানের গুলিতে বৃহস্পতিবার আহত হন সাংবাদিক আবদুল হাকিম। শুক্রবার দুপুরে তিনি মারা যান। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সাংবাদিকরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল শনিবার শাহজাদপুরে হরতাল আহ্বান করেছে স্থানীয় আওয়ামী, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সাংবাদিক সমাজ। শাহজাদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহবুব ওয়াহিদ কাজল হরতাল আহ্বানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র হালিমুল হক মিরুর ছোট ভাই হাসিবুল হক পিন্টু শাহজাদপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বিজয় মাহমুদকে মারপিট করেন। পরে মেয়রের বাসা থেকে পুলিশ পিন্টুকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

এদিকে বিজয় মাহমুদকে মারপিটের ঘটনার প্রতিবাদে বিকেলে এলাকাবাসী মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি মেয়রের বাসার সামনে পৌঁছালে কতিপয় লোক মেয়রের বাসা লক্ষ্য করে ঢিল মারে। একপর্যায়ে মেয়র তার ব্যক্তিগত শটগান থেকে গুলিবর্ষণ করেন।

এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, গুলি ও হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক সমকালের শাহজাদপুর প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুলসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।

গুরুতর আহত সাংবাদিক শিমুলকে প্রথমে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরবর্তী সময়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শুক্রবার দুপুরে বগুড়া থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে দুপুর ১টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় এলাকায় সাংবাদিক শিমুল মারা যান।

এ ঘটনায় পুলিশ মেয়রের দুই ভাই ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল হক পিন্টু এবং পাবনা জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুল হক মিন্টুকে গ্রেপ্তার করেছে।

শাহজাদপুরে বিক্ষোভ

সাংবাদিক আবদুল হাকিম শিমুল নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। শুক্রবার দুপুরে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সাংবাদিকরা মিছিল বের করেন। মিছিলটি শাহজাদপুর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে শাহজাদপুর থানার সামনে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।

এ সময় সাংবাদিকরা শিমুলের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

এদিকে সাংবাদিক শিমুল হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা এবং দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেছেন পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি স্কয়ার গ্রুপের পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক শিবজিত নাগ, সাধারণ সম্পাদক আখিনুর ইসলাম রেমন, সাবেক সম্পাদক সমকাল ও এনটিভির নিজস্ব প্রতিবেদক এ বি এম ফজলুর রহমান, পাবনা সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি আবদুল মতীন খান, সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান শহীদ, পাবনা টেলিভিশন এবং অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী মাহবুব মোর্শেদ বাবলা, সাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদ। পৃথক পৃথক বিবৃতিতে তাঁরা অবিলম্বে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি দাবি করেন।

নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের বিরোধে ঘি ঢালছে কারা?

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে ঐক্যের সুবাতাস বইতে শুরু করলে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে আসে। তবে সাংসদ শামীম ওসমান ও মেয়র আইভীর মধ্যে বিরোধ মিটেছে এমন চাউর হলেও তাদের ঐক্য দৃশ্যমান হচ্ছে না। তবে তাদের মধ্যে কোন বিরোধ আছে এমনটাও এখন প্রতিয়মান হচ্ছে না। নেতাকর্মীরা শীর্ষ নেতাদের মধ্যে ঐক্য দেখে অনেকটা আশাবাদী হলেও এই ঐক্যের মাঝে আবারো বিরোধের সুর বেজে উঠেছে। শামীম-আইভীর মধ্যে বিরোধ মিটলেও নতুন করে বিরোধ দেখা দিয়েছে জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও জেলা পরিষদের চেয়াম্যান আনোয়ার হোসেনের মধ্যে। যিনি নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতিও। এই দুই নেতার মধ্যে জেলা পরিষদ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। আর এই বিরোধ এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পরেছে। গড়ে উঠতে শুরু করেছে পৃথক পৃথক বলয়। তবে এই ঐক্যের মাঝে নতুন করে দেয়াল তৈরী হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের বিরোধে ঘি ঢালছে কারা? এমন প্রশ্ন আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সংশ্লিষ্টদের মতে, দলের ভেতরে কিছু সুবিধাভোগী নেতা রয়েছে। যারা চাননা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে ঐক্য থাকুক। এসব নেতারা উভয় গ্রæপের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে থাকে বলেও তাদের অভিযোগ। তবে আওয়ামী লীগের ঐক্য বিনষ্টকারীদের এখনি চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করা সময়ের দাবি বলে মনে করছেন বোদ্ধা মহল। সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন মেয়র আইভী ও নতুন করে জেলা পরিষদের চেয়াম্যান আনোয়ার হোসেনের পাশেও বেশ কিছু সুবিধাভোগী নেতার আর্ভিভাব ঘটেছে। যারা বরাবরই কোন না কোন পক্ষে কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে নিজেরা লাভবান হচ্ছে। অনেক সময় এসব বিতর্কীতরা মেয়র, সাংসদ কিংবা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের নাম ব্যবহার করে নিজেরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। এখন নতুন করে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের পাশে অবস্থান নিতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগের ঐক্যে ফাটল সৃষ্টিকারীদের একটি গ্রæপ এমন অভিযোগ আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের। এসব নেতারা ঘুরেফিরে কখনো আইভী,কখনো শামীম ওসমান আবার কখনো আনোয়ার হোসেনের ঘনিষ্ঠজন পরিচয় দিয়ে রাজনীতির মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনেরি নর্বাচনকে ঘিওে সাংসদ শামীম ওসমান ও মেয়র আইভীর মধ্যে বিরোধ কমে আসলেও নতুন করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ: হাই ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের মধ্যে বিরোধের সুর বেজে উঠেছে। জেলা পরিষদ নিয়ে এই দুই নেতার মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে তা রাজনৈতিক অঙ্গনে চাউর হলেও দলের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এটা মানতে নারাজ। তাদের মতে, এই দুই নেতার বিরোধ সৃষ্টির পেছনে আওয়ামী লীগের বেশ কিছু সুবিধাভোগী নেতার হাত রয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিরোধ ধরে রাখতে মূলত এই চক্রটিই বরাবর সক্রিয় থেকে কাজ করে যাচ্ছে। তবে যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বিরোধ সৃষ্টি করে সব সময় সুবিধা নিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া জরুরী হয়ে পরেছে বলে মনে করছেন বোদ্ধা মহল।

আদর্শ নগর আহসান উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদেও বিদায়ী সংবর্ধনা

গতকাল শনিবার দুপুরে কুতুবপুরের আদর্শনগর এহসান উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায়ী সংবর্ধনা দেয়া হয়ছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথিী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদেও সভাপতি আব্দুল খালেকের সভাপতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্য আব্দুল কাইয়ুম সরকার শাহিন, ফতুল্লা থানা যুবলেিগর সহ-সভাপতি জাকির হোসেনসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। প্রধান অতিথির বক্তব্যে হেলাল বলেন, আজকের শিক্ষার্থীরাই একদিন দেশের রাষ্টনায়ক হবে, একদিন এই দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করবে। এই প্রজন্মকে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তলতে হবে। বিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রসঙ্গে হেলাল বলেন, বিদ্যালয়কে উন্নয়নের ব্যাপারে স্থানীয় এমপির সহযোগী নেয়া হবে। আগামী এই বিদ্যালয়কে কলেজে রুপান্তিরিত করা হবে বলেও তিনি আশ^াস দেন। হেলাল বিদায়ী ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি সকল শিক্ষার্থী শিক্ষক পরিচালনা পরিষদ ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ভালো ফলাললের পাশাপাশি সবচেয়ে জরুরী হলো ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠা। তাই শুধু ভালো পড়াশোনা না বরং শিক্ষার্থীদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠছে কিনা সেই দিকে শিক্ষক, পরিচালনা পরিষদ ও অভিভাবকদের নজর রাখতে হবে

ফতুল্লায় নিখোজের ২দিন পর যুবকের লাশ উদ্ধার

নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার ফতুল্লায় নিখোঁজের দুইদিন পর মাছের খামার থেকে মানিক মিয়া (৩৫) নামে এক ইটভাটার শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৮ জানুয়ারী) বেলা ১২টার সময় ফতুল্লার লাঁলপুর এলাকায় বিএনপি’র স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা রিয়াদ মো: চৌধুরীর মাছের খামার হতে মানিকের লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে নিহতের পরিবারের অভিযোগ মানিক মিয়াকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে খামারে ফেলে দেয়া হয়েছে।

নিহত মানিক মিয়া ফতুল্লার ফাজিলপুর এলাকার মৃত সোনা মিয়ার ছেলে। ঘটনার সংবাদ পেয়ে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করেন। নিহত মানিক মিয়া বক্তাবলীর বাবুল মিয়ার ইটভাটায় কাজ করে পরিবার নিয়ে বসবাস করে করতো।

এদিকে নিহতের স্ত্রী ডলি বেগম সময় নারায়ণগঞ্জ.কম’কে জানান, বক্তাবলীর বাবুল মিয়ার ইটভাটায় তার তিন মেয়ে এক ছেলে নিয়ে তারা স্বামী-স্ত্রী মিলে কাজ করে ঐ স্থানে বসবাস করে আসছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধায় তার স্বামী মানিক মিয়া মাছ ধরার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। এরপর হতে মানিক মিয়া নিখোঁজ হয়ে যায়। টানা দু’দিন যাবত নিখোঁজের পর শনিবার সকালে ফতুল্লার লালপুর এলাকায় বিএনপি নেতা রিয়াদ চৌধুরীর একটি মাছের খামার থেকে তার স্বামীর লাশের সন্ধান পাওয়া যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে সে তার স্বামীর লাশ সনাক্ত করে।

এসময় ডলি বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার স্বামী মাছ ধরতে বেরিয়ে ছিলেন। তাকে পরিকল্পিত ভাবে-ই হত্যা করা হয়েছে।’

ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন জানান, ‘মানিক মিয়ার লাশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারন জানা যাবে। ’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে পুলিশ উসকানি পাবে : বুলবুল

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেছেন, এটিএন নিউজের দুই সংবাদকর্মীর ওপর হামলা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে পুলিশ সদস্যরা উসকানি পাবেন।

শনিবার রাজধানীর শাহবাগে এক প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বুলবুল।

ঢাকায় তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির হরতাল চলাকালে সাংবাদিক নির্যাতনের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, সাংবাদিক নির্যাতন পুলিশে করে না। মাঝেমধ্যে ধাক্কাধাক্কি লেগে যায়, এটা স্বাভাবিক। আপনারা দুজন বন্ধু যদি একসঙ্গে চলেন ধাক্কাধাক্কি তো লেগেই যায়। এই ধরনের একটা কিছু হয়েছে।

শুক্রবার বিকালে মৌলভীবাজার জেলার শমসেরনগরে শাহ তোরণের ফলক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শনিবার সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় বেলা ১১টার দিকে প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু হয়। শেষ হয় বেলা ১১টা ২০ মিনিটে।

সমাবেশে মুখে কালো কাপড় বেঁধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত হন। ওই সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে দাঁড়াতে দেখা যায়।

সমাবেশ শেষে মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, বহুবার গণমাধ্যমকর্মীরা তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু বিগত সময়ে কোনো সুষ্ঠু বিচার সম্পন্ন হয়নি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে বুলবুল বলেন, ওই ঘটনার পর মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে পুলিশ সদস্যরা উসকানি পেয়ে যাবেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তাঁর বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।

সমাবেশে উপস্থিত এটিএন নিউজের বার্তাপ্রধান মুন্নী সাহা বলেন, নিরস্ত্র সাংবাদিকদের পুলিশ যেভাবে পিটিয়েছে, সেটা মানবতাবিরোধী। এই ঘটনার জন্য যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, আশা করা যায়, সে তদন্ত কমিটি সুষ্ঠুভাবে প্রতিবেদন দেবে। মুন্নী সাহা আরো বলেন, আজ এই সমাবেশস্থলে যাঁরা উপস্থিত হয়েছেন, তাঁরা কোনো সাংবাদিক সংগঠনের ব্যানারে উপস্থিত হননি। প্রত্যেকে নিজ নিজ উদ্যোগ এই সমাবেশে এসেছেন।

বৃহস্পতিবার বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের দাবিতে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ডাকা আধা বেলা হরতাল পালন করে। হরতাল চলাকালে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক এহসান বিন দিদার ও ক্যামেরাম্যান আবদুল আলীম পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন। এ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি শাহবাগ থানার এক সহকারী উপপরিদর্শককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

শুক্রবার এ ঘটনায় একটি অভিযোগও নিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি হামলার ঘটনায় রাজশাহীতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ দুঃখ প্রকাশও করেন। এর মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ নিয়ে মন্তব্য করেন।

বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যেতে পারে পাকিস্তান!

২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ান্ডে বিশ্বকাপে সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান অংশ গ্রহণ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে! তবে শেষ পর্যন্ত সুযোগ পেলেও তা সরাসরি নয়, লড়াই করে জায়গা করতে হবে তাদের।

আজহার আলির দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইসিসি ক্রমতালিকায় প্রথম আটটি দল সরাসরি ২০১৯ বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করবে।

পাকিস্তান এখন ৮৯ পয়েন্ট নিয়ে আট নম্বরে আছে। ৮৭ পয়েন্ট নিয়ে একধাপ পেছনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মার্চে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে সিরিজ খেলতে যাচ্ছে পাকিস্তান। দুই দলের কাছেই সেই সিরিজটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে।

তবে সবচেয়ে শঙ্কায় রয়েছে পাকিস্তান। কারণ অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সদ্যসমাপ্ত ওয়ান্ডে সিরিজে ১-৪ ব্যবধানে বিপর্যস্ত হয়েছে পাকিস্তান। এই হারের পর আজহারের অধিনায়ক পদে থাকা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

কয়েকদিন আগেই পিসিবি চেয়ারম্যান শাহরিয়ার খান বলেছেন, তারা অস্ট্রেলিয়া সফরে দলের পারফরম্যান্স নিয়ে অখুশি। দল দেশে ফিরলে আজহারের অধিনায়কত্ব নিয়ে আলোচনা হবে। সব মিলিয়ে পাক ক্রিকেট ফের সঙ্কটের মুখে।

হরতালে পুলিশি নির্যাতনের শিকার ২ সাংবাদিক

তেল-গ্যাস ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ডাকা হরতালের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক।

বৃহস্পতিবার শাহবাগ থানার সামনে কয়েকজন পুলিশ মিলে ওই সাংবাদিকদের নির্মম নির্যাতন করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে তেল-গ্যাস ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সুন্দরবন বাঁচানোর হরতালে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও গরম পানি ছুড়ে মারে। এরপর দফায় দফায় তাদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এসময় পুলিশি অ্যাকশনের ছবি সংগ্রহ করতে গেলে বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন নিউজের ক্যামেরাপারসন আব্দুল আলিমের ওপর চড়াও হয় পুলিশ। এ ঘটনায় বাধা দিতে গেলে রিপোর্টার ইশান দিদারকেও বেধড়ক মারধর করা হয়।

এটিএন নিউজের অ্যসোসিয়েট হেড অব নিউজ প্রভাষ আমিন তার ফেসবুক টাইমলাইনে জানান, পুলিশ হরতাল সমর্থকদের পেটাচ্ছিল। তার ছবি তুলছিলেন এটিএন নিউজের ক্যামেরাপারসন আব্দুল আলিম। ‘এ অপরাধে’ পুলিশ শাহবাগ থানার ভেতরে নিয়ে তাকে পেটাতে থাকে। বাধা দিতে গেলে রিপোর্টার ইশান দিদারকেও পিটিয়েছে পুলিশ।

তিনি আরো জানান, ২০/৩০ জন পুলিশ মিলে এই দুই সাংবাদিককে বেধড়ক পিটিয়েছে। এখন তাদের ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়েছে। আলিমের আঘাত গুরুতর, ইশানের আঘাতও কম নয়।

এদিকে শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তিনি রাস্তার উল্টোদিকে ছিলেন। ঘটনাস্থল সিসি ক্যামেরায় আওতাধীন, যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের বের করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

“গোলাম আজমের পক্ষে ছিলেন সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী” ৩ সম্পাদককে সংসদে তলবের দাবি শামিম ওসমানের

আবুল কালাম আজাদ:প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের চরিত্র হরণ করে সংবাদ প্রকাশ করায় গণমাধ্যমের তিন সম্পাদককে সংসদে তলবের দাবি জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। একই সঙ্গে গণমাধ্যমের জন্য নতুন আইন প্রণয়নের দাবি জানান তিনি।

বুধবার রাতে দশম জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব দাবি জানান।

আইন প্রণয়নে শামীম ওসমানের এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদসহ বেশিরভাগ সংসদ সদস্য। তারা টেবিল চাপড়ে ওই বক্তব্যে সমর্থন জানান।

শামীম ওসমানের বক্তব্য শেষে স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, এ চেয়ারে বসে আমি অনেক কিছুই বলতে পারি না। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবে না বলে সংশ্লিষ্ট বিধিতে বললে আমি যত ক্ষুদ্র ব্যক্তি হই না কেন রুল জারি করতাম। তবে আপনি কোনো বিধিতে নোটিশ দিলে রুলিং দেব।

বক্তৃতার শুরুতেই মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা প্রসঙ্গ তুলে শামীম ওসমান বলেন, যতই আমি-আপনি এখানে শোক জানাই, তিনি আর ফিরে আসবেন না। আমি প্রশ্ন রাখতে চাই জাতির বিবেকের কাছে, সব সংসদ সদস্যের কাছে। আমার প্রশ্ন হল, গুলিবদ্ধি হয়ে লিটন কি মৃত্যুর জন্য বেশি কষ্ট পেয়েছিলেন নাকি তার বিরুদ্ধে কিছু পত্রিকা অপপ্রচার চালিয়েছিল, সেটা ভেবে বেশি কষ্ট পেয়েছিলেন?

তিনি বলেন, লিটনের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলার পরও পরদিন দু-একটি মিডিয়ায় দেখলাম লিটনকে অন্যভাবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কেন?

শামীম ওসমান বলেন, কিছু পত্রিকা হলুদ সাংবাদিকতা করছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। এসব ঠেকাতে আইন করেন। সময় এসেছে আইন করার। কারণ ওরা খেলতে শুরু করেছে।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য বলেন, আমি নিজে মৃত্যু দেখে এসেছি। আজকে এখানে দাঁড়িয়ে আছি, এটা আমার এক্সটেনশন লাইফ। আল্লাহ রাব্বুল আল আমিন আমাকে এ লাইফ দিয়েছেন। ঠিক যেইভাবে আমার নেত্রীকে এ পর্যন্ত ২০ বার দিয়েছেন।

হত্যার উদ্দেশ্যে নিজের ওপর চালানো হামলার কথা উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, রক্ত কত গরম, রক্ত কত আগুনের মতো গরম হয় আমি অনুভব করেছিলাম। যখন জ্ঞান ফিরেছিল আমার মনে নাই। আমি সেদিন ভেবেছিলাম এটাই বুঝি আমার কবর। ওই গরমটাকে আমি অনুভব করেছিলাম। ভেবেছিলাম একজন মুসলমান হিসেবে কবরের আজাব শুরু হয়েছে। তবে সেদিন আমি কিন্তু আমার জন্য কষ্ট পাইনি। নিজের জন্য চিন্তা করি নাই। আমি চিন্তা করেছিলাম আমার ছোট মেয়েটা, ছেলেটা, মা, স্ত্রী ও পরিবার-পরিজন নিয়ে। আমি তখন বুঝেছিলাম একজন পিতা কত মহৎ হন। আমি মনে করি আমার বন্ধু লিটন যখন গুলিতে নিহত হয় সে সময় সেও হয়তো নিজের জন্য চিন্তা করেন নাই। কষ্ট পান নাই। কষ্ট পেয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে যে মিথ্যা অপপ্রচারটা হয়েছিল সেটা ভেবে।

শামীম ওসমান বলেন, আমি কিছু মিডিয়ার এসব কর্মকাণ্ডের মধ্যে ষড়যন্ত্র দেখতে পাই। এরা কারা! এ পত্রিকাগুলি কারা! আমি নাম ধরেই বলতে চাই। কারণ আমি কাউকে ভয় করি না। এমন কোনো কাজ করি না আল্লাহ রাব্বুল আল আমিন ছাড়া কাউকে ভয় পাব।

তিনি বলেন, এই ডেইলি স্টার, এই প্রথম আলো; এরা কারা? কি কারণে চরিত্র হরণে নেমেছে তারা। আজকে আমি সেই কথাটি বলতে চাই। বন্ধু লিটন নয়। এ সংসদের অধিকাংশ সংসদ সদস্য যারা শেখ হাসিনার বাইরে রাজনীতি করতে চান না। যারা আপস করবেন না। যারা রাইজিং লিডার। প্রতিনিয়ত কোনো না কোনোভাবে তাদের বিরুদ্ধেও লিখা হচ্ছে। সূত্র বলে, অমুককে এমন করে বলা হচ্ছে। আমি নিজে সবচেয়ে বড় ভিকটিম। লং মার্চ, গোলাম আযম এবং নিষদ্ধিপল্লী এই তিনটি কাজ করার পর আমাকে গডফাদার বানানোর চেষ্টা করা হল। এখনো হচ্ছে। ভবিষ্যতে হবে। যখন পারে নাই। তখন বোমা মেরে মারার চেষ্টা করা হল। তারা সেদিন বলেছিল এটি সাজানো নাটক। নাটক করে নিজের গায়ে বোমা মেরেছি, নিজের ২০ জন ভাইকে মেরে ফেলেছি!

তিনি বলেন, ওরা আমার নেত্রীকে মারতে চায়। ২১ আগস্ট তার প্রমাণ। নেত্রীকে মারার চেষ্টা এখনো চলমান আছে।

স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শামীম ওসমান বলেন, আমি জানি না এটা আমার শেষ বক্তব্য কিনা? আমি এটাও জানি না, আজকে আপনাকে আমি শেষ দেখছি কিনা। কারণ শকুনীরা চারিদিকে গরম নিঃশ্বাস নিচ্ছে। নিঃশ্বাস নিচ্ছে শেখ হাসিনার অগ্রগতিকে ঠেকিয়ে দেয়ার জন্য।

তিনি বলেন, আমি তাকে (প্রধানমন্ত্রী) খুব ভালোবাসি। আমরা তো সবাই তাকে ভালোবাসি। যারা বেশি ভালোবাসেন তাদের ওপরই আঘাতটা বেশি হচ্ছে। লংমার্চ ঠেকানোর কথা আমি স্বীকার করছি। আমি ঠেকিয়েছি। কিন্তু আটকে দেয়া হয় নাই। লংমার্চের সময় পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছিল। কারণ প্ল্যান ছিল ফেনীর কোনো এক জায়গায় খালেদা জিয়ার গাড়ির পিছনে দুটি বাস ছিল। ওই বাসে মাটিকাটা শ্রমিক নেয়া হয়েছিল। বাসটি বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়ার প্ল্যান ছিল। উদ্দেশ্য দেশকে অশান্ত করা। এই নিউজ তৎকালীন গোয়েন্দা সংস্থার ফাইল দেখলেই প্রমাণ হবে। আমি নিজে ৬৫ জন মানুষকে বাঁচানোর জন্য নিজের ওপর দায়িত্ব নিয়েছি। আমি তাতে অনুতপ্ত না। আমরা কিন্তু খালেদা জিয়াকে আটকে দেই নাই। বরঞ্চ বিরোধীদলীয় নেত্রী যাতে সঠিকভাবে চিটাগাং যেতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম। গোলাম আযমকে অবাঞ্ছিত করেছিলাম নারায়ণগঞ্জে। আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। এরকম যদি অবাঞ্ছিত করার ঘটনা সারা দেশে হতো আজকে জঙ্গিবাদের এই চিত্র দেখতে হতো না। এসব করার কারণে ওরা আমাকে আঘাত করেছিল। এতেও আমার কোনো আপত্তি নাই।

তিনি বলেন, জোড় হাত করে বলছি, আমাকে আজকে একটু সময় দিন। আজকে আমি আমার কথা বলতে চাই না। অধিকাংশ সংসদ সদস্যের মনের কথা বলতে চাই। যখন ইচ্ছা তখন একজনের বিরুদ্ধে লিখে দেয়া হচ্ছে। আমি কোথায় বলব।

এ সময় তিনি কিছু কাগজ তুলে বলেন, যদি লিটনকে সেই দিন ১৬৪ বিধিতে কথা বলতে দিতেন। লিটন তার আত্মার তৃপ্তি নিয়ে বলত, আমি এই কাজ করি নাই। আমি যদি না বেরোতাম আমাকে গুলি করে মারত। বাংলাদেশের ৯০ ভাগ সাংবাদিক ভালো মানুষ। যারা ওয়ান-ইলেভেন ঘটাতে চায়, কিছু আঁতেল সুশীল আছেন তারা নতুন করে চক্রান্ত শুরু করেছেন। শেখ হাসিনার প্রশ্নে যারা বিন্দু পরিমাণ আপস করবে না তাদের টার্গেট করা হচ্ছে। চরিত্র হরণ করার ষড়যন্ত্র চলছে। এমনভাবে এটা করা হবে যাতে আগামীতে তারা জনগণের সামনে যেতে না পারে। কিংবা দলের ভিতরে বিতর্কিত করার চেষ্টা হবে। হয়তো দলের ভিতরেও কিছু লোক থাকতে পারে। এইগুলো করার জন্য।

শামীম ওসমান বলেন, এটা হতেই পারে। কারণ মোশতাক তো এ দলের লোক ছিল। আমাদের কোনো ইজ্জত নাই। আমাদের কোনো সমাজ নাই। আমাদের ঘরবাড়ি, বউ-বাচ্চা নাই। আমাদের কিছু নাই। আমাদের রক্তের কোনো দাম নাই। আমরা মরলে কেউ কাঁদে না। আমাদের রক্ত, রক্ত না। আমাদের রক্ত নর্দমার ময়লা পানি। কিন্তু শেখ হাসিনা। উনি কে। উনি তো জাতির জনকের কন্যা। আমরা যারা ‘৭৫-এর পর এসেছি তিনি আমাদের মা হন। মাতৃতুল্য নেত্রী। ওয়ান-ইলেভেনের সময় তার বিরুদ্ধে যারা ছিল তাদের কিছুই হল না। এগুলো কিসের আলামত। তারা কি বিচারের ঊর্ধ্বে। তাদের মতো কিছু সাংবাদিকদের জন্য আজকে সত্যিকারের ভালো সাংবাদিক; যাদের সংখ্যা ৯০ শতাংশের বেশি তারা বিতর্কিত হচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, আমার নেত্রী নীলকণ্ঠী। উনি বিষ হজম করেন। কারণ আমার নেত্রী তার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে চান। যারা দেশের বিরুদ্ধে খেলা খেলে, যারা মানুষের বিরুদ্ধে খেলে, নেত্রী তাদের ব্যাপারে আপস করেন না। কিন্তু যারা উনার বিরুদ্ধে খেলেন তাদের কিন্তু উনি ক্ষমা চাইলেই ক্ষমা করে দেন। কারণ উনি ক্ষমাশীল ও ধৈর্যশীল। আমরা জানি না, ওরা কারা। আমার নেত্রী আজকে নাম বলেন নাই। ওরা নতুন করে ষড়যন্ত্র করছে। বিদেশের মাটিতে মিটিং হয়েছে। দুঃখ ওরা কী করেছে সেটা না, আমার দলের লেবাস পরে আছেন ভালো কথা। সরকারেরও সুযোগ-সুবিধা নেন। উপদেষ্টাও হন। উনার পত্রিকায় গত তিন দিন আগে লেখা হল বিভিন্ন সংসদ সদস্যের নামে, আমার নামসহ। আমি অবাক হলাম। কষ্ট পেলাম। বলে কী এই লোকটা? কে এই লোকটা, উনার ব্যাকগ্রাউন্ড কী? ব্যাকগ্রাউন্ড দেখলাম। ১৯৭০ সালে সলিমুল্লাহ সাহেব ছিলেন স্পোর্টস রিপোর্টার অবজারভারের। উনি মুক্তিযুদ্ধে চলে যান। আর এই ভদ্রলোক তখন এসে তার স্থলাভিষিক্ত হন। ১৯৭১ সালের ৫ মে উনি জয়েন করেন, যখন সবাই যুদ্ধ করছেন। ১৯৭৮ সালে নেত্রী ফেরেন নাই; তখন আমরা তরুণ। রাজপথে দাঁড়িয়ে জিয়াউর রহমানের গাড়ি আটকে দিয়েছি। কষ্ট লাগে, আমরা যখন এ কাজটি করছি। এই ভদ্রলোক কৃপায় টিকে আছেন। মোশতাককে নিয়ে বড় চিন্তা হয়। ভয় লাগে। মনে হয় কোথায় কী জানি একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কারণ এই ভদ্রলোক গোলাম আযমের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়ার জন্য যারা সই করেছিলেন, তার মধ্যে অন্যতম। আজকের এই ভদ্রলোক ১৯৭৮ সালে সই দিয়েছিলেন। জামায়াতে ইসলামীর প্রকাশিত ‘গোলাম আযমের সংগ্রামী জীবন’ বইতে লেখা আছে উনি গোলাম আযমের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়ার জন্য সিগনেচার করেছিলেন। এটিও আছে সংগ্রাম পত্রিকায়। এই লোকটা কে? উনি তো আমাদের মধ্যেই ঘোরাফেরা করেন। প্রগতিশীল সাজেন। আর এই সংসদ সদস্যদের মাদকের সম্রাট বানানোর চেষ্টা করেন। উনার নাম ইকবাল সোবহান চৌধুরী।

এ সময় সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়ে শামীম ওসমানের বক্তব্যকে সমর্থন জানান।

স্পিকারের উদ্দেশে শামীম ওসমান বলেন, যদি আমাদের মধ্যে কেউ একজন অপরাধী হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিত। আমাদের স্যাক করা উচিত। সংসদ থেকে বের করে দেয়া উচিত। আপিল করছি। বহু দেখা হয়ে গেছে। তবে এদের কাছে মাথা নত করার লোক আমি না। কারণ আমি আল্লাহকে বিশ্বাস করি। ওদের সাহস বেড়ে গেছে। ওরা শেখ হাসিনাকে নিয়ে বলে। কারণ ওদের কিছু হয় না। ভালো সম্পাদকও তো আছে। অনেক ভালো সম্পাদক আছে। আমাকে একজন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন, আমি ডেইলি স্টার প্রথম আলো পড়ি না। আপনার নেতারা কিভাবে ডেইলি স্টারের জন্মদিনের কেক কাটেন! কিভাবে আপনার কোনো নেতা প্রথম আলোর পাঠক ফোরামের নেতা হন। এটি চিন্তার বিষয়। শুনেছি, কোনো এক জায়গায় বসে ষড়যন্ত্র হয়েছে। ১০০ জন এমপির নাম ঠিক করা হয়েছে। সেই এমপিদের বিভিন্নভাবে হেয় করার চেষ্টা করা হবে। এমন সিচুয়েশন সৃষ্টি করা হবে ভবিষ্যতে যাতে তাদের রাজনীতি করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

শামীম ওসমান বলেন, ১৬৪ বিধিতে আপনি তো আমাদের জিজ্ঞেস করতে পারতেন। আপনি আমাদের প্রটেকশন দেন। আইদার আমাকে ছেড়ে দেন। সাধারণ মানুষ বানিয়ে দেন। জাস্ট সাধারণ মানুষ বানিয়ে দেন। কারণ আমি যাতে কিছু করলে আমার দল বা নেত্রীর ওপরে না পড়ে। তারপর দেখাব, সাধারণ মানুষের ক্ষমতা কতটুকু। লাখ লোক নিয়ে ওদের অফিসের সামনে আসতে আমাদের বেশি সময় লাগবে না। আমরা এই বাংলাদেশেই বড় হয়েছি।

শামীম ওসমান বলেন, অনুরোধ জানিয়ে বলছি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। নেত্রীর প্লেনের ইঞ্জিন বিকল হয়। লিটন মারা যায়। সবার বিরুদ্ধে লেখা হয়। পরিস্থিতি এমন কি কেউ করতে চায় যে, সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে বলবে, প্রিয় দেশবাসী, এভাবে দেশ চলতে পারে না। কেউ বলতে চায় কি-না! যদি বলতে চায়, তাহলে আমি বলি আমরা অপপ্রচারে ভয় পাই না।

তিনি বলেন, আমাদের এই তরুণ সংসদ সদস্য যারা আছেন তাদের ধরা হচ্ছে। মন্ত্রীদের ধরা হচ্ছে। আমার মনে হয় আপনি প্রবীণ সংসদ সদস্য হিসেবে, ডেপুটি স্পিকার হিসেবে লিটনের গার্জিয়ান হিসেবে আপনি কিছু বলবেন আমার বক্তব্যের পরে। আমরা চাই এরপর থেকে যদি কোনো সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে লেখা হয়। তাহলে সে যাতে প্রথমে এসে কথা বলতে পারেন। যদি সে দোষী হন ব্যবস্থা নেন। আর যদি না হন, যারা লেখে তাদের ডেকে আনেন। জিজ্ঞাসাবাদ করেন।