দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুল হত্যার প্রতিবাদে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আগামীকাল শনিবার আধা বেলা হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছে।
শাহজাদপুরের মেয়রের ব্যক্তিগত শটগানের গুলিতে বৃহস্পতিবার আহত হন সাংবাদিক আবদুল হাকিম। শুক্রবার দুপুরে তিনি মারা যান। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও সাংবাদিকরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল শনিবার শাহজাদপুরে হরতাল আহ্বান করেছে স্থানীয় আওয়ামী, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সাংবাদিক সমাজ। শাহজাদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহবুব ওয়াহিদ কাজল হরতাল আহ্বানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র হালিমুল হক মিরুর ছোট ভাই হাসিবুল হক পিন্টু শাহজাদপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বিজয় মাহমুদকে মারপিট করেন। পরে মেয়রের বাসা থেকে পুলিশ পিন্টুকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
এদিকে বিজয় মাহমুদকে মারপিটের ঘটনার প্রতিবাদে বিকেলে এলাকাবাসী মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি মেয়রের বাসার সামনে পৌঁছালে কতিপয় লোক মেয়রের বাসা লক্ষ্য করে ঢিল মারে। একপর্যায়ে মেয়র তার ব্যক্তিগত শটগান থেকে গুলিবর্ষণ করেন।
এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, গুলি ও হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক সমকালের শাহজাদপুর প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুলসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।
গুরুতর আহত সাংবাদিক শিমুলকে প্রথমে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরবর্তী সময়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শুক্রবার দুপুরে বগুড়া থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে দুপুর ১টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় এলাকায় সাংবাদিক শিমুল মারা যান।
এ ঘটনায় পুলিশ মেয়রের দুই ভাই ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল হক পিন্টু এবং পাবনা জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুল হক মিন্টুকে গ্রেপ্তার করেছে।
শাহজাদপুরে বিক্ষোভ
সাংবাদিক আবদুল হাকিম শিমুল নিহতের ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। শুক্রবার দুপুরে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সাংবাদিকরা মিছিল বের করেন। মিছিলটি শাহজাদপুর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে শাহজাদপুর থানার সামনে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।
এ সময় সাংবাদিকরা শিমুলের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
এদিকে সাংবাদিক শিমুল হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা এবং দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেছেন পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি স্কয়ার গ্রুপের পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক শিবজিত নাগ, সাধারণ সম্পাদক আখিনুর ইসলাম রেমন, সাবেক সম্পাদক সমকাল ও এনটিভির নিজস্ব প্রতিবেদক এ বি এম ফজলুর রহমান, পাবনা সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি আবদুল মতীন খান, সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান শহীদ, পাবনা টেলিভিশন এবং অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী মাহবুব মোর্শেদ বাবলা, সাধারণ সম্পাদক সৈকত আফরোজ আসাদ। পৃথক পৃথক বিবৃতিতে তাঁরা অবিলম্বে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি দাবি করেন।