১৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 114

একজন সাংবাদিক সর্বদা একা!

মাজহারুল ইসলাম রোকনঃ একজন সাংবাদিক সর্বদা একা! মনে রাখা উচিত তার আপন বলতে পরিবারের সদস্য ছাড়া আর কেউ নেই! ১১ বছরের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতায় সেটাই মূল্যায়ন!

রাজনীতিবিদ তার প্রয়োজনে আপনাকে ব্যবহার করবে! প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে তার সামনেই যাওয়া যাবেনা! বিপদের সময় চেয়ার এগিয়ে দিবে। কিন্তু সে যখন বড় চেয়ারের মালিক হবেন তখন আপনি তার সামনেও যেতে পারবেন না। কথায় তখন তাদের আগুনের ফুলকি ঝড়বে। মুখের কথায় তারা এক কাপ চা কফি খাইয়ে সাংবাদিক পটাতে পটু! বিবেক বলতে তাদের ভিতরে একটাই মুখের কথায় বিনামূল্যে সেবা নেয়া! কিছু রাজনীতিক আছে তার জন্য বিনা ফিতে সারা বছর শ্রম দিলাম কখনো পাচশো টাকা হাতে ধরায়নি বাট সে মনে করে অন্য রাজনীতিকেরা হাত ভরে দিচ্ছে! অদ্ভুদ ব্যাপার।

অভিজ্ঞতা থেকে বলি, ২০১৩ সালে বহু বিএনপির নেতাদের হুমকি ধমকি পেয়েছিলাম যাদের বহু মিটিং মিছিলের নিউজ বিনা পারিশ্রমিকে করেছিলাম! কারন তাদের ভাবখানা এমন ছিল ২০১৪ সালেই তারা ক্ষমতার চেয়ারে বসবেন। তবে ২০১৩ সালের আগে খুব কদর পেয়েছিলাম তবে জাস্ট মুখের কথায় আর চা কফিতে। আবারো চেয়ারের সম্ভাবনা দেখলে হুমকি ধমকি আসবে জানি। আজকে কোর্টে এক ভদ্র লোক বললেন তারা ক্ষমতায় আসলে সাংবাদিকদের এটা ওটা করে দিবেন। কিন্তু দুইজন সাংবাদিক একদিন এসেছিলাম তার কাছে একটা বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য কিছু টাকা কমিয়ে রাখতো। কিন্তু তার ভাই অধ্যক্ষ তাকেই ফোন করে হাজার দুয়েক টাকা কমাতে বলেননি।। তাই হুট করেই সাথে সাথেই স্মরণ করিয়ে দিলাম সেই কথাটি, যে সামান্য কলটাই করেননি আর ক্ষমতায় আসলে সাংবাদিকদের জন্য এটা ওটা করবেন!

পুলিশের ক্ষেত্রে এমন- যে পর্যন্ত আপনি তার দুর্নীতির ঘটনার সংবাদ প্রচার করতে না পারবেন সে পর্যন্ত আপনাকে সে তিরস্কার করবে। ভয় ভীতি দেখাবে। তার কুকর্ম প্রকাশ করার পর তার কাছে আপনার কদর বেড়ে যাবে! আর ভাল পুলিশ কর্মকর্তারা কাজের ক্ষেত্রে ভাব দেখাবেনা আপনাকে সহযোগীতা করবেন। কোথাও কোন দায়িত্ব পালনে গেলে অহেতুক পুলিশ কার্ড দেখতে চাইবে। কার্ড নিয়ে পুলিশেরা হাতাহাতি করবে এটা ভূয়া নাকি আসল। আর পুলিশ তার প্রয়োজনে আপনাকে ম্যানেজ করে রাখবেন এবং আপনাকে তাদের পাচাটা দালাল বানিয়ে রাখবে। আপনি অন্যের পক্ষে তদবির করতে যাবেন তখন তদবির রাখবে। কিন্তু আপনি নিজে যখন বিপদে পড়বেন তখন আপনাকে সে চিনবেইনা।

সারাদিন সারা বছর সাধারণ মানুষের দূর্ভোগ কষ্ট যন্ত্রনা বিপদে আপদে কিংবা রাস্তা সংস্কারে, নৌ পথে, রেলপথে মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য আপনি ক্ষমতাশালীদের বিরুদ্ধে কলম ধরেছেন। কিন্তু আপনার বিপদে একজন সাধারণ মানুষকেও পাশে পাবেন না। বরং কোন সন্ত্রাসি আপনার উপর হামলা করলে আমজনতা না বুঝে না জেনেই মারধর শুরু করবে। আর তারা মনে করে সাংবাদিকেরা কোটি কোটি টাকা ইনকাম করে। জনগণ দুএকজন কোটিপতি সাংবাদিকের উদাহরণ টেনে মনে করে সব সাংবাদিক কোটিপতি। পাবলিক মনে করে যে সাংবাদিক লাখ লাখ টাকা ইনকাম করে সেই বড় সাংবাদিক। যে পেটে পিঠে খেয়ে চলে সে ভূয়া সাংবাদিক। তাদের ধারনা টাকা কামাতে পারেনা সে কিসের সাংবাদিক। যেমন কদিন আগে এক লোক আমার হাতে দেড় হাজার টাকার মোবাইল দেখে বললো আপনি কিসের সাংবাদিক, মনে হয় ভূয়া। নতুবা সাংবাদিকের মোবাইল দেড় হাজার টাকার হয় নাকি?

আরেক ধরনের পন্ডিত লোকজন আছে যারা সাংবাদিকতা সম্পর্কে সও বুঝেনা। কিন্তু এমন ধরনের মন্তব্য করবে মনে হয় সে সাংবাদিকতায় পিএইচডি করেছিল। উদাহরণস্বরুপ বলি, ক বছর আগে, এক লোক আমাকে বললো কিরে তুই নাকি সাংবাদিক? তখন তার পাশেই দাড়ানো একজন বললো, সে তো সাংবাদিক হতে পারেনি, রিপোর্টার সে!

আরেক ধরনের পন্ডিত আছে, বলবে কিরে তুই কোন টিভির সাংবাদিক? তাদের ধারনা টিভিতে কাজ যারা করে তারাই সাংবাদিক। আর পত্রিকার কথা বললে বলবে এ পত্রিকা সরকারি নাকি বেসরকারি? আরেকদল আছে, যাদের কাছে স্থানীয় পত্রিকার নাম বললে বলে এগুলো ভূয়া পত্রিকা। সরকারি না! কয়েক বছর আগে ডান্ডিবার্তায় কাজ করতাম। এক বন্ধু হটাত বললো কিরে তোরে দেখলাম মিছিলের নিউজ করতাছচ? তো কোন পত্রিকার সাংবাদিক? আমি বললাম, ডান্ডিবার্তা। সে তো পুরো চমকে গেল। বললো এমন পত্রিকার নামও শুনিনি। এগুলো মানুষ তো পড়েনা। পোলাপানের গু মুত ফালায়। অথচ ডান্ডিবার্তা জেলার বহুল প্রচারিত পত্রিকা। সে নিজেও জীবনে কোন পত্রিকা পড়েছিল কিনা সন্দেহ হয়। একজন সাংবাদিক সবচেয়ে বেশি সাধারণ জনগণের পক্ষে ভুমিকা রাখে অথচ একজন সাংবাদিক কখনই সাধারণ মানুষের কাছ থেকে যথেষ্ট সম্মানটা পায়না। নানা তিরস্তারের শিকার হন।

ইদানিং ফেসবুকে কিছু পন্ডিতের আভির্ভাব যারা অনলাইনের নিউজগুলোর শিরোনাম দেখেই কমেন্টস করে পান্ডিত্য দেখায়। কোন নেতার অপকর্মের সংবাদ লিখলে তা নেতার বিপক্ষে গেলে কর্মীরা টানবাজারের ভাষাও ব্যবহার করে। একেকজন জ্ঞানের ভান্ডার সেটা বুঝাতে নানান অশ্রাব্য ভাষায় কমেন্টস করে।

ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এম জহিরুল ইসলাম ভাই বললেন, সাংবাদিকতা হলো রাজমিস্ত্রির মতন। রাজমিস্ত্রি একটি ভবন তৈরি করে কিন্তু ভবন তৈরির পর সেই ভবনে রাজমিস্ত্রি প্রবেশ করতে পারেনা। ঠিক তেমনি সাংবাদিকেরা একজনকে চেয়ারে বসাতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখে কিন্তু সেই ব্যক্তি চেয়ারে বসার পর ওই সাংবাদিকের জন্যই প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ! সুতরাং Now give and take. শ্রম দাও পারিশ্রমিক নেও! কারন ভবিষৎে তোমার জন্যও প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ থাকতে পারে!

বিঃ দ্রঃ এখানে প্রতিটি ঘটনা যেমন ঘটে আবার তাদের দ্বারা পজেটিভও পাওয়া যায়। বাট আমি একটা শ্রেণিদের নিয়ে বাস্তবতা তুলেছি। ম্যালথাসের তত্ত্ব যেমন পক্ষে বিপক্ষে যু্ক্তি ছিল এখানেও থাকবে। এসব জাস্ট আমার পর্যবেক্ষণে পাওয়া। কেউ এসবের পজেটিভও পেয়ে থাকতে পারেন।

লেখকঃ সংবাদকর্মী

নরসিংদীর ২ জঙ্গি বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

নরসিংদীর মাধবদীতে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা দুটি বাড়ির আশপাশের এলাকায় মাইকিং করে সবাইকে সরিয়ে দিচ্ছেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সদস্যরা।

মঙ্গলবার সকাল থেকে স্থানীয় জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় মাইকিং করে এলাকাবাসী ও সাংবাদিকদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান নরসিংদী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হাসান।

এদিকে  ঢাকা থেকে সোয়াতের একটি দল এসে সদর উপজেলার শেখেরচরের দিঘিরপাড় চেয়ারম্যান বাড়ি সড়কে অপর বিল্লাল মিয়ার সাত তলা বাড়িতে প্রবেশ করেছেন।  সেই বাড়িতে অবস্থানরত সকল বাসিন্দাদের নামিয়ে নেয়া হয়েছে। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই অভিযান শুরু হবে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

এর আগে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিবপুর সার্কেল) থান্ডার খায়রুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, সাত তলা বাড়িটির এক তলা থেকে তিন তলা পর্যন্ত মিততাহুল জান্নাহ হমিলা মাদ্রাসা।

আমরা গোপন সূত্রে তথ্য পেয়েছি বাড়িটির ৭ তলার একটি বাসায় ৭ জন জঙ্গি অবস্থান করছে। এরই ভিক্তিতে পুলিশ ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের ১৫০ জন সদস্য যৌথভাবে এই অভিযান চালাচ্ছে।

এছাড়া শেখেরচরের দিঘিরপাড় চেয়ারম্যান বাড়ি সড়কের আরেকটি বাড়িতেও জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়া গেছে, বলেন ওই কর্মকর্তা।

এদিকে রাত দেড়টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নরসিংদীর পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের নিরাপদ দূরত্বে থেকে দায়িত্ব পালন করতে বলেন।

পুলিশ জানায়, আস্তানাগুলোতে জঙ্গি রয়েছে এটা নিশ্চিত হয়েই এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এখন ভেতরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনে সম্পাদক পরিষদের ৭ দফা।

এম এম হাসান:ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা সংশোধন করতে ৭ দফা দাবি জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। সোমবার বেলা সোয়া ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। লিখিত বক্তব্যে এসব দাবি তুলে ধরেন ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আনাম।

মানববন্ধনে অংশ নেন বিভিন্ন পত্রিকায় কর্মরত ১৬ জন সম্পাদক। মাহফুজ আনাম বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি পাস হওয়ার আগ থেকে আমরা এর বিভিন্ন ধারা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। আমরা মনে করি, এই আইনটি স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মুক্ত গণমাধ্যমের পরিপন্থি। আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরোধী নই। কিন্তু বর্তমান এই আইনটি শুধু সাইবার জগতে নয়, স্বাধীন গণমাধ্যমেরও পরিপন্থি। আমরা চাই, আগামী সংসদ অধিবেশনে এই আইনটি সংশোধন করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিত করা হোক।’

দাবি সমূহ হলো- ১. সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ও বাক-স্বাধীনতা সুরক্ষার লক্ষ্যে এ আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা অবশ্যই যথাযথভাবে সংশোধন করতে হবে।

২. এসব সংশোধনী বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে আনতে হবে।

৩. পুলিশ বা কোনো সংস্থার মাধ্যমে কোনো সংবাদ মাধ্যম তল্লাশি চালানোর ক্ষেত্রে তাদেরকে শুধু নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু আটকে দেয়ার অনুমতি দেয়া যাবে, কিন্তু কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থা বন্ধ করার অনুমতি দেয়া যাবে না। তারা তখনই প্রকাশের বিষয়বস্তু আটকাতে পারবে যখন সংশ্লিষ্ট সাংবাদ প্রতিষ্ঠানের সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে কেন ওই বিষয়বস্তু আটকে দেয়া উচিত। সে বিষয়ে যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারবে।

৪. কোনো সংবাদ মাধ্যমের কম্পিউটার ব্যবস্থা আটকে দেয়া বা জব্দ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আদালতের আগাম নির্দেশ নিতে হবে।

৫. সংবাদ মাধ্যমের পেশাজীবীদের সাংবাদিকতার দায়িত্বের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথমেই আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করতে হবে, এবং সংবাদ মাধ্যমের পেশাজীবীদের কোনো অবস্থাতেই পরোয়ানা ছাড়া বা যথাযথ আইনি পক্রিয়া অনুসরণ ছাড়া আটক বা গ্রেফতার করা যাবে না।

৬. সংবাদ মাধ্যমের পেশাজীবীর দ্বারা সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের গ্রহণযোগ্যতা আছে কিনা তার প্রাথমিক তদন্ত প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে করা উচিত। এ লক্ষ্যে যথাযথভাবে প্রেস কাউন্সিলকে শক্তিশালী করতে হবে।

৭. বর্তমান সরকারের পাস করা তথ্য অধিকার আইনকে দ্ব্যর্থহীনভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওপর প্রাধান্য দেয়া উচিত। এ আইনে নাগরিক ও সংবাদ মাধ্যমের জন্য যেসব স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে সেগুলো সুরক্ষা অত্যাবশ্যক।

সাত দফা দাবি উত্থাপনের পর তিনি ১০ মিনিটের মানববন্ধন কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করেন। মানববন্ধনে অংশ নেন- মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, সংবাদ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনিরুজ্জামান, করতোয়া সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক, ইনকিলাব সম্পাদক এএমএম বাহাউদ্দীন, দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত, যুগান্তর-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাইফুল আলম, বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, সমকাল-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, ইনডিপেনডেন্ট সম্পাদক এম শামসুর রহমান প্রমুখ।

টকশোতে মিথ্যা বললে ৩ বছরের কারাদন্ড ৫ কোটি টাকা জরিমানা।

গণমাধ্যমের লাইসেন্স প্রদান ও বাতিলের একচ্ছত্র ক্ষমতা দিয়ে সাত সদস্যের কমিশন গঠনের বিধান যুক্ত করে সম্প্রচার আইন ২০১৮-এর অনুমোদন দিয়েছে সরকার।আজ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে আইনটির খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে আইনটি সম্পর্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

শফিউল আলম জানান, প্রস্তাবিত আইনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও রাষ্ট্রপ্রধানের ব্যাপারে বিকৃত তথ্য ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রকাশের দায়ে তিন বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ কোটি টাকার জরিমানার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া টকশোতে মিথ্যা ও অসত্য তথ্য প্রচার করলে একই সাজার কথা বলা আছে এই আইনে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আইন অনুযায়ী আদালত কর্তৃক দুই বছরের দণ্ড পাওয়া কোনো ব্যক্তি অথবা বিকৃত মস্তিষ্ক ও দেউলিয়া ঘোষিত কোনো ব্যক্তির মালিকানায় গণমাধ্যম প্রকাশিত হলে সাত বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ কোটি টাকা জরিমানা হবে।

শফিউল আলম বলেন, সম্প্রচার কমিশন গঠনের জন্য প্রথমে পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি। পরে রাষ্ট্রের উপযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে সাতজনকে নিয়ে কমিশনটি গঠনের সুপারিশ করবে এই সার্চ কমিটি। গঠিত ওই কমিশন উপযুক্ততার ভিত্তিতে দেশের রেডিও, টেলিভিশন, অনলাইনসহ সব ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে লাইসেন্স দেবে। কোনো কারণে লাইসেন্স বাতিল করতে হলেও, সেটা করতে পারবে কমিশন। সরকারের অনুমোদন নিয়ে কমিশন এই দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়া গণমাধ্যমগুলোর লাইসেন্স নবায়নও করবে এই কমিশন।’

লাইসেন্স কী কী কারণে বাতিল হতে পারে এবং কত বছর পরপর লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে আইনটিতে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই। পরে বিভিন্ন বিধিতে এগুলো যুক্ত করা হবে।’

শফিউল আলম আরো জানান, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানি করতেও অনুমোদন দেবে এই কমিশন। এ ছাড়া গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হলে কমিশন তার নিষ্পত্তি করবে। সূত্রঃ এনটিভি

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বক্তাবলীতে কোন মাদক থাকবেনা-পুলিশ সুপার

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান বলেন,আগামী ৭ দিনের মধ্যে বক্তাবলীর মাদক ব্যবসায়ী ও জঙ্গীদের নামের  তালিকা তৈরী করে জমা দিন। এ মাসের মধ্যেই মাদক ব্যবসায়ী ও জঙ্গী বিরুধী চিরুনী অভিযান চালানো হবে।

শনিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে কানাইনগর স্কুলে মাঠে মাদক, সন্ত্রাস,জঙ্গিবাদ ও ভূমিদস্যুদের প্রতিরোধের দাবীতে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেয়া কালে তিনি এ কথা বলেন।

বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদ ও বক্তাবলী কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এবং বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজ্বী শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ মঞ্জুর কাদের, বক্তাবলী ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি আবুল হোসেন প্রধান, জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন। আরো উপস্থিত ছিলেন-বক্তাবলী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আফাজউদ্দিন ভূইয়া,সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো.বাবুল মিয়া,শফিক মাহমুদ,বক্তাবলী ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম,আতাউর রহমান প্রধাণ, ভিপি আলমগীর,ইউপি সদস্য আখিল উদ্দিন,হাজ্বী মো.ফারুক, আ:মতিন,মো.রাসেল চৌধুরী মো.জলিল গাজী,মো.মনির হোসেন,আমজাদ হোসেন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোসা.হাজেরা বেগম,মো.মরিয়ম বেগম,মোসা.কুলসুম বেগন ও কমিউনিটি পুলিশিং  কমিটির কমিটির ৭নং ওয়ার্ড সভাপতি মো.দেলোয়ার প্রমূখ।

এ সময় আনিসুর রহমান মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও ভূমিদস্যদের বিরুদ্ধে হুশিয়ারী উচ্চারন করে বলেন, সব কিছু ছেড়েঁ দাও নইলে ১৫ দিনের মধ্যে অভিযান চালানো হবে কেউ রক্ষা পাবেনা।

এছাড়াও তিনি জঙ্গিবাদের তৎপরতা দেখলে পুলিশকে জানানোর জন্য জনসাধারনের প্রতি আহবান জানিয়ে আরো বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে বক্তাবলীকে মডেল ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলবো। বক্তাবলীতে অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি গড়ে তোলা হবে।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শাহ্ মঞ্জুর কাদের এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের এলাকায় টেটাঁ বল্লমের ছড়াছড়িঁ। আমি চেয়েছিলাম সমাধান করতে যেন কেউ খুন না হয়। কিন্তু একজন খুন হয়ে গেছে, আমি ব্যর্থ।

তিনি আরো বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বক্তাবলীতে কোন মাদক থাকবেনা। আমাদের কোন পুলিশ সদস্য মাদক ব্যবসায়ীদের ধরে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিলে তার চাকুরী থাকবেনা।

সভাপতির বক্তব্যে হাজ্বী শওকত আলী বলেন, বক্তাবলী একটি রক্ষনশীল এলাকা। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন মাদক ব্যবসার জন্য বিলিন হয়ে যাচ্ছে। মাদক ও জঙ্গী নির্মূলে  পুলিশ সুপারের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করে যাব।

ফতুল্লায় প্রবাসীর স্ত্রীর ফ্ল্যাট থেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফাহিমসহ আটক ২

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীর স্ত্রীর ফ্ল্যাটে বসে এক বন্ধুকে নিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মদ পান করার সময় পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন।

এসময় পুলিশ ওই বাসা থেকে ১৫টি বিদেশী মদের খালি বোতল ও একটি প্রিমিও প্রাইভেটকার ( ঢাকা মেট্রো-গ ৩৪-১৪৫৪)  জব্দ করে।

শুক্রবার ভোর রাতে ফতুল্লার আবাসিক এলাকা আফাজনগরের কুদ্দুস মিয়ার পাঁচতলা বাড়ির পঞ্চমতলার ফ্ল্যাট থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় পুলিশ প্রবাসীর স্ত্রীকে সকালে থানায় হাজির হওয়ার শর্তে বাসায় রেখে আসেন।

আটককৃতরা হলেন, শহরের দেওভোগ এলাকার জহিরুল হক সেলিম রেজার ছেলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফাহিম (৩৫) ও তার বন্ধু রনি।

স্থানীয়রা জানান, ফাহিম নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী সমর্থক ছাত্রলীগ নেতা।

ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (আইসিপি) গোলাম মোস্তফা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে আফাজ নগর আবাসিক এলাকায় কুদ্দুস মিয়ার ৫ম তলার ফ্ল্যাটে মধ্য রাতে অভিযান চালানো হয়।

অভিযানে দুইজনকে মদ পান করা অবস্থায় আটক করা হয়েছে। জানা যায় ওই ফ্ল্যাটে বিথি নামে এক নারী বসবাস করেন। তার দুইটি মেয়ে আছে, স্বামী জিয়াউল হাবিব আমেরিকায় বসবাস করেন।

এছাড়া বিথির ফ্ল্যাট থেকে আরো ১৪টি বিদেশী মদের বোতল খালি অবস্থায় পাওয়া যায়।

ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার আরেক পরিদর্শক (অপারেশন) মজিবুর রহমান জানান, স্থানীয়রা পুলিশকে জানিয়েছে বিথির ফ্ল্যাটে প্রতিদিন প্রাইভেটকারে একাধীক ব্যবসায়ীরা এসে সকাল থেকে ভোর রাত পর্যন্ত মদের আড্ডা জমাতো।

একই সঙ্গে অসামাজিক কার্যকলাপও চালাতো। এতে মাতাল হয়ে অনেকেই ফ্ল্যাটের বাহিরে বের হয়ে মাতলামী করতো। এনিয়ে ওই এলাকায় বসবাসকারী লোকজন অতিষ্ট হয়ে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছেন। এরপর এলাকাবাসীর অভিযোগ তদন্ত করে অভিযান চালানো হয়েছে।

তিনি আরো জানান, ওই ফ্ল্যাটে দুই ব্যাক্তিকে মদ পানের সময় আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ফাহিম নামে একজন নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়েছেন। তিনি ওই ফ্ল্যাটে একটি প্রিমিও প্রাইভেটকার নিয়ে এসেছেন। উদ্ধার করা মদের খালি বোতলের সঙ্গে সেই প্রাইভেটকারও জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

খালেদা ও তারেকের বিরুদ্ধে সাজানো রায়ের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জে আইনজীবিদের বিক্ষোভ মিছিল।

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এর বিরুদ্ধে সাজানো রায়ের প্রতিবাদে ও বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে আইনজীবীরা। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাডভোটেক সাখাওয়াত হোসেন খান এর নেতৃত্বে আইনজীবী ঐক্যের মিছিলটি আদালত এলাকা প্রদক্ষিন শেষে আইনজীবী সমিতির সামনে সমাবেশে আইনজীবী নেতৃবৃন্দ রায়কে প্রত্যাখান করে তারা বলেন, এক দফার নির্বাচন করে বিজয়ী হওয়ার জন্য এমন আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার এ রায় দিয়েছে। তাদের সেই আশা ভঙ্গ করে দেবে এ দেশের জনগন। রাজনৈতিক ফয়দা আদায় করার চেষ্টা করছে এই রায়ের মাধ্যমে।
মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, এটা আসলে একটা ফরমায়েশি রায়। সরকার এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেষ্টা করছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন, এই নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করার জন্য বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গায়েবী মামলায় জড়াচ্ছে। নৃশংস একটা হত্যা কান্ডে বিরোধী দলীয় নেতাদের জড়িয়ে বিরোধী দলীয় নেতাদের কলঙ্কিত করার জন্য একটা প্রয়াস করছে আওয়ামী সরকার। রাজনৈতিক ফায়দা আদায় করার চেষ্টা করছে এই রায়ের মাধ্যমে। তিনি বলেন, আমি একজন আইনজীবি হিসেবে আমার মামলার কাগজ পত্র দেখার সুযোগ হয়েছে। এই মামলায় যে সকল বিএনপি নেতাকর্মীদের সাজা দেওয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণ রয়েছে তাদের ভিত্তি খুবই দূর্বল। তাদেরকে সাজা দেওয়ার মতো কোন সাক্ষ্যপ্রমাণে কিছু নেই। অথচ সরকার আদালতকে দিয়ে সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। ন্যায় বিচার করা হয়নি। এই রায় দিয়ে সরকার একটা সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে। এই রায় আমরা প্রত্যাখ্যান করছি, রায়কে রাজনৈতিক করার কারণে দেশের জনগন এই রায় প্রত্যাখান করছে। সমাবেশ বক্তব্য রাখেন, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এ্যাড: সরকার হুমায়ূন কবির, এ্যাড: আবদুল হামিদ খান ভাসানী, এ্যাড: বেনজির আহম্মেদ, এ্যাড: রফিক আহম্মেদ, এ্যাড: কাজী আবদুল গাফফার, এ্যাড: আনোয়ার প্রধান, এ্যাড: ওমর ফারুক নয়ন, এ্যাড: সিমা সিদ্দিকী, এ্যাড: মানিক মিয়া, এ্যাড: শেখ আঞ্জুমান আহাম্মেদ রিফাত, এ্যাড: ফজলুর রহমান ও এ্যাড: মোজাম্মেল হক মল্লিক প্রমুখ।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়ে-নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় ঘোষণার পর নারায়ণগঞ্জ শহরের গলাচিপা, ফতুল্লার ভুইঘর এবং সোনারগাঁয়ের বেশ কিছু স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় সোনারগাঁ থেকে সাতটি তাজা ককটেলসহ বিএনপির তিন নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এ খবর নিশ্চিত করেন।

 

সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম জানান, উপজেলার কাঁচপুর, মোগড়াপাড়া চৌরাস্তাসহ চারটি পয়েন্টে ৮-১০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। এরমধ্যে তারা কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ডের সামনে তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ডের সামনে থেকে উপজেলা তাঁতীদলের সভাপতি ইসমাইল সিকদারকে ককটেলসহ গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা আয়ুব প্লাজার সামনে তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় মার্কেটে আসা ক্রেতা ও পথচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আয়ুব প্লাজার তৃতীয় তলায় বর্তমান জাপা সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকার রাজনৈতিক কার্যালয় রয়েছে। তবে ওই সময় সাংসদ কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না।’

ওসি জানান, সাতটি তাজা ককটেলসহ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-সম্পাদক এনামুল হক রবিন, পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক নুর নবী মাস্টার ও উপজেলা তাঁতীদলের সভাপতি ইসমাইল সিকদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে নাশকতার চেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে, নগরীর গলাচিপা এলাকার ৩-৪ স্পটে ৪-৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। গলাচিপা ডিএইচএল গলির ভেতরে একটি এবং আশপাশের এলাকায় এই ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, দুপুর সাড়ে ১২টায় নগরীর গলাচিপা এলাকায় ৪-৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে কয়েকটি বিস্ফোরিত ককটেলের আলামত জব্দ করে। এতে ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

একই সময়ে ফতুল্লার ভুইঘর এলাকায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা একটি ঝটিকা মিছিল বের করে কয়েকটি ককেটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ধাওয়া দিলে মিছিলকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়।

ফতুল্লা মডেল থানার ওসি এস এম মঞ্জুর কাদের জানান, ভুইঘরে একটি মিছিল থেকে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। পুলিশ যাওয়ার আগেই মিছিলকারীরা পালিয়ে যায়। এ সময় ৩-৪টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুল ইসলাম জানান, রায় ঘোষণার পরপরই নারায়ণগঞ্জ সদর, ফতুল্লার ভুইঘর ও সোনারগাঁয়ের মোগড়াপাড়া ও কাঁচপুর বাসস্ট্যান্ডসহ কয়েকটি স্থানে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। সোনারগাঁয়ে ককটেলসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য জায়গায় কারা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, তা শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এসব ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় শুনে খালেদা জিয়া-নেতাকর্মীদের যে নির্দেশ দিলেন!

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় শুনেছেন কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বহুল আলোচিত এ হামলা মামলার রায় শোনেন তিনি।

খালেদা জিয়া বড় ছেলে ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের খবর পেয়ে কিছুক্ষণ নিশ্চুপ ছিলেন। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় দলের নেতাকর্মীদের ধৈর্য সহকারে পরিস্থিতি মোকাবেলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বিএনপি ও হাসপাতাল সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার মামলার রায়ের মতোই ছেলে তারেক রহমান ও দলীয় নেতাদের মামলার রায়ের ঘটনায় দলকে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেই অনুসারে বড় কোনো কর্মসূচি দেয়নি দলটি। রায় শোনার পরও ‘বিশেষ বার্তা’ বাহক দ্বারা দলীয় নেতাকর্মীদের হতাশ না হয়ে ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার নির্দেশনা দিয়েছেন।

বিএসএমএমইউ সূত্রে জানা গেছে, কারাবন্দি খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য ভিআইপি ৬১২ নম্বরের যে কেবিনে ভর্তি আছেন, টেলিভিশন নেই সেখানে। তাই রায় জানার সুযোগ নেই। তিনি চাইলে জেল কোড অনুযায়ী টেলিভিশন পাবেন। তবে সেখানে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ছাড়া অন্য কোনো চ্যানেল দেখতে পারবেন না।

বিএসএমএমইউ পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, জেল কোড অনুযায়ী তিনি (খালেদা জিয়া) যেসব সুবিধা পাবেন, তার সবক’টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি চাইলে টেলিভিশন দেওয়া হবে। না চাওয়ায় এখন পর্যন্ত টেলিভিশন দেওয়া হয়নি।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বুধবার বিকেলে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। এর আগে চিকিৎসকরা পৃথকভাবে দেখা করলেও পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল বোর্ড তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে পারেননি। তার আগের পরীক্ষার রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করেছেন তারা।

পরে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়ার ফিজিওথেরাপি গত মঙ্গলবার শুরু হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা আজ বৃহস্পতিবার তার রক্ত পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খালেদা জিয়াও এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন। রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানা যাবে। ধাপে ধাপে তার আরও বেশকিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও বিএসএমএমইউ’র ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম এ জলিল চৌধুরী বলেন, মেডিকেল বোর্ডের সব সদস্য তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। রক্ত পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয়তার কথা জানালে তিনি তাতে সম্মতি দেন। বৃহস্পতিবার তার রক্ত পরীক্ষা করা হবে। ওই পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর তার চিকিৎসার পরবর্তী ধাপ শুরু হবে।

এর আগে গত সোমবার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বলেছিলেন, খালেদা জিয়া গেঁটে বাতজনিত সমস্যায় ভুগছেন। তার ডায়াবেটিসসহ বেশকিছু রোগ অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় আছে। এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে আনার পর মূল চিকিৎসা শুরু হবে। এ অবস্থায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কতদিন তার চিকিৎসা চলবে, তা নির্দিষ্ট করে এখনই বলতে পারছে না মেডিকেল বোর্ড।

গত ৬ অক্টোবর থেকে খালেদা জিয়া বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। ইউনাইটেড বা বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর রিট করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ বিষয়ে শুনানির পর গত ৪ অক্টোবর তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার এবং এ জন্য পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড পুনর্গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

খালেদা জিয়া, তারেকের নাম না বলায় মৃত্যুদণ্ড: বাবর

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারসপারসন তারেক রহমানের জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করেননি বলেই মৃত্যুদণ্ডের সাজা পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।

১৪ বছর আগে ওই গ্রেনেড হামলার সময় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। বুধবার রায় ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাবর বলেন, ২১ আগস্টের ঘটনাটি ন্যাক্কারজনক। এটি ইতিহাসের জঘন্যতম একটি ঘটনা। এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের সর্বোচ্চ সাজা আমিও চেয়েছি।

সাজা ঘোষণার পর তিনি আদালতকে বলেন, আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমাকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাজা দেয়া হল। আমি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নাম বলিনি। তাই আমাকে এই সাজা দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি প্রতিদিন তাহাজ্জুত নামাজ পড়ি এবং আল্লাহর কাছে এই ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করি। আমি আল্লাহর কাছে এই ঘটনার বিচার চাই।

নারকীয় সেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং বাকি ১১ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে।

১৪ বছর আগে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে নৃশংস ওই গ্রেনেড হামলা বাংলাদেশকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল।

ঢাকার এক নম্বর দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন বুধবার বেলা ১২টায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে করা আলোচিত দুই মামলার রায় ঘোষণা করেন।