ফতুল্লার বক্তাবলীর কানাইনগর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমজাদের দূর্নীতির তদন্ত করেছে তদন্ত টিমের প্রধান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শরিফুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর ১২ টায় কানাইনগর ছোবহানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়।
নারায়নগঞ্জ সদর উপজেলার বক্তাবলী ইউনিয়নের কানাইনগর ছোবহানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনের কয়েক কোটি টাকা দূর্নীতির অভিযোগে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশে গঠিত তদন্ত টিম মঙ্গলবার স্কুলে যায়। সেখানে ৯৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী সহ এলাকাবাসী দূর্নীতির সাক্ষ্য দেন।
শিক্ষক মানুষ গড়ে/ সে কী আবার দুর্নীতি করে?’-আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এ প্রশ্নের উত্তর-ই শুধু দেননি স্থানীয়দের বিস্মিত করেছেন কানাইনগর ছোবহানীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন।
৯ বছরের মেয়াদকালে তাঁর দুর্নীতির খতিয়ান যেন রূপকথার গল্পকেও হার মানায়।
স্কুলটির সাবেক শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে দুর্নীতির এ মহাকান্ড! অনিয়ম দূর্নীতি শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্যের কারণে শিক্ষা ব্যবস্থা একেবারে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। অভিযোগ উঠেছে, তিনি তাঁর মেয়াদকালে ২ কোটি ৩৪ লক্ষ ৬০ হাজার ১শত ৬৭ টাকা দূর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন।
এ কারণে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনের পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্নখাতে তাঁর দুর্নীতির খতিয়ান জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবি তুলেছেন-বিদ্যালয়ের ১৯৯৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
এ দাবিতে এলাকায় বেশ কয়েক মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছে ’৯৭ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারীদের দেয়া তথ্যমতে, আমজাদ হোসেন স্কুলের পূন:ভর্তি বাবদ ৩২ লক্ষ ৭৬ হাজার, বিলম্ব অনুপস্থিত বাবদ ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা, খেলাধুুলা খাতে ৯ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, নির্মাণ খাতে ৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, গ্রায়াচ্যুইটি বাবদ ১২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৮ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা, মিলাদ বাবদ ৮ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা, দূস্থ: তহবিলের ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা, পাঠাগারের ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা, গবেষণার ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা, সাংস্কৃতিক খাতে ৩ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা, স্কাউটের ৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা, উন্নয়নের ৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা, কম্পিউটারের ৬ লক্ষ ৩০ হাজার, মসজিদ ফান্ডের ৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা, অগ্রগতি পত্র বাবদ ৫লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা, মনোগ্রাম বাবদ ৫ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা, এসএসসি পরিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরন বাবাদ অতিরিক্ত ২৮ লক্ষ ৩ হাজার ১ শত ৬৭ টাকা, কৃষি ও গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষা বাবদ ৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা, উপবৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্র ছাত্রীদের সরকারি অনুদানের ৫ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ করেন। এর প্রমাণ হিসেবে স্কুলের রশিদ ও ব্যাংক এ্যাকাউন্ট সহ নানা তথ্য-উপাত্ত¡ তুলে ধরা হয়।
এই বিষয়ে আঃ আজিজ বলেন, প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষকের লাগামহীন অনিয়ম দূর্নীতির কারণে বিদ্যালয়টির শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস হয়েছে। বিষয়টির বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
বক্তাবলী ইউনিয়ন মাদক নির্মুল কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, অর্থের বিনিময় অযোগ্য, দলীয় লোকদের নিয়োগ দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নেওয়া হয়েছে। তিনি অযোগ্যদের বাদ দিয়ে মেধাবীদের নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবী জানান।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা একটি অভিযোগ ও সত্য নয়।যারা করেছে তারা সবাই আমার ছাত্র।ওরা আমার কাছে আসলে সব ঠিক হয়ে যেত।
তদন্ত টিমের প্রধান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা মোঃ শরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান,তদন্তাধীন বিষয়ে মন্তব্য করা সমীচিন নয়। উধ্বঃতন পক্ষের কাছে রির্পোট দিব। বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনে সুপারিশ করবো।