৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
১৫ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
Home Blog Page 259

চট্টগ্রামে এসপির স্ত্রীকে গুলি করে হত্যা

চট্টগ্রামে দুর্বৃত্তদের গুলিতে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু (৩৫) নিহত হয়েছেন। রবিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে মহানগরীর জিইসি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার ইকবাল বাহার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ইকবাল বাহার জানান, সকালে ছেলেসন্তান আক্তার মাহমুদ মাহিদকে নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের উদ্দেশে রওনা হন মিতু। বাসা থেকে ৫০ গজ দূরে রাস্তায় মোটরসাইকেলে করে তিন দুর্বৃত্ত প্রথমে মিতুকে ধাক্কা দেয়। পরে তাঁকে ছুরিকাঘাত করে। এর পর মাথার পেছনে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়।

সিএমপি কমিশনার জানান, খবর পেয়ে তিনিসহ পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তাঁরা মিতুকে চিনতে পারেন।

ইকবাল বাহার আরো জানান, বাবুল আক্তার ও মাহমুদা খানম মিতু দম্পতির ছেলে আক্তার মাহমুদ মাহিদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্র। তাবাসসুম তাসনিম নামের এক মেয়েও রয়েছে এ দম্পতির।

বাবুল আক্তার সিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি-গোয়েন্দা) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্প্রতি তিনি এসপি পদে পদোন্নতি পেয়ে ঢাকায় বদলি হয়ে এসেছেন।

জামায়াতের সঙ্গে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর সম্পর্ক ভালো নেই

ধর্মীয় মূল্যবোধ নিয়ে রাজনীতি করা দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে দেশের অধিকাংশ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক ভালো নেই। কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়লেও ওই দলগুলো কখনও জামায়াতকে সমর্থন করে না বলে জানা গেছে।

এমনকি কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের সঙ্গেও জামায়াতের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্বে টানাপড়েন দেখা দিলেও কৌশলগত কারণে দলটির শীর্ষ নেতারা মুখ খুলছেন না।

সূত্রমতে, ২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশকে ঘিরে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা হেফাজতে ইসলামের ‘ব্যাপক জনসমর্থন’ কাজে লাগিয়ে সেই সময় সরকারের ভিত কাঁপিয়ে দিতে চেয়েছিল জামায়াত ও বিএনপি। কিন্তু এতে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সরকারের পতনের লক্ষ্যে বিএনপি-জামায়াত সারাদেশে ব্যাপক সহিংসতা চালালেও তাদের সঙ্গে কোনো ধর্মভিত্তিক দল যোগ দেয়নি। কারণ দেশের অধিকাংশ ধর্মভিত্তিক দল অতীতে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত ও তাদের সহিংস কর্মকা-কে কখনও সমর্থন করেনি এবং এখনও করছে না।

সূত্রমতে, ২০১৫ সালের বছর ১১ এপ্রিল এক সমাবেশে হেফাজতের আমির আহমেদ শফী বলেন, আওয়ামী লীগ, সরকার ও ছাত্রলীগ আমাদের শত্রু নয়, বন্ধু। তার এই বক্তব্যের পরই মূলত, জামায়াতের সঙ্গে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর ফাটলের সূচনা হয় বলে মনে করছেন অনেকেই।

কারণ, কওমী মাদ্রাসাকেন্দ্রিক গড়ে ওঠা ইসলামিক দলগুলোর মূল নিয়ন্ত্রক হচ্ছে আহমেদ শফীর নেতৃত্বাধীন হেফাজতে ইসলাম। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের বেশিরভাগ শীর্ষ নেতাই হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র মহাসচিব মাওলানা ইউনূস আহমদ বলেন, আমাদের দল স্বাধীনতাবিরোধী দল নয়। আমাদের দল স্বাধীনতার চেনায় বিশ্বাসী। ফলে কোনো স্বাধীনতাবিরোধী দলের সঙ্গে আমাদের দলের কখনও ঐক্য হতে পারে না।

বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব লায়ন এমএ আউয়াল বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আমাদের ঐক্য হওয়ার প্রশ্নই আসে না। জামায়াত ’৭১-এ দেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে আবস্থান নিয়েছে। আর বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন হলো স্বাধীনতার পক্ষের দল। সুতরাং এ দলের সঙ্গে জামায়াতের ঐক্যের কোনো সম্ভাবনা নেই।

নারায়ণগঞ্জ কারখানায় আগুন, দগ্ধ ৭

নারায়ণগঞ্জে একটি ভোজ্য তেল কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে সাত শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। বুধবার বিকালে জেলার সোনারগাঁয়ে মেঘনা গ্রুপের কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

ঢামেকে কারখানার সহকারী ম্যানেজার ইজাবুল হক সাংবাদিকদের বলেন, বিকাল ৩টার দিকে শ্রমিকরা কারখানায় কাজ করছিলেন। এ ছাড়া কারখানার ভেতরে সংস্কারের জন্য ওয়েলডিংয়ের কাজ চলছিল। এ সময় আগুনের একটি ফুলকি এসে তেল তৈরির মেশিনের ওপর পড়ে। মুহূর্তেই তা কারখানার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।

তিনি আরো বলেন, আগুনে ফয়সাল, রানা, আব্দুল হাই, মাহাবুব, হুময়ুন কবির, মাসুদুর রহমান ও মোতালেব দগ্ধ হলে প্রথমে তাদের নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢামেকে আনা হয়।

হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. পার্থ প্রতীম শংকর গণমাধ্যমকে বলেন, সাতজনের শরীরের বিভিন্নস্থানে আগুনে ঝলসে গেছে। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

মুন্সীগঞ্জে আ’লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থী সমর্থকদের সংঘর্ষ : গুলিবিদ্ধ-৬,আহত-২৫

মুন্সীগঞ্জে বুধবার সকালে আ’লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থী রিপন পাটোয়ারী ও বিদ্রোহী প্রার্থী মহসীনা হকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষে ৬ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে ২৫ জন।

বেলা ১০ টার দিকে মুন্সীগঞ্জ সদরের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামে ওই ২ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সজিব বেপারী, শাহজাহান, শুক্কুর দেওয়ান, বাশার দেওয়ান, শফিকুল দেওয়ান,  পাভেলকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহতদের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সদর থানার এসআই নুরুল কাদের সৈকত জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

আ’লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী রিপন পাটোয়ারী সংঘর্ষের ঘটনার জন্য প্রতিদ্বন্ধি চেয়ারম্যান প্রার্থী মহসীনা হকের সমর্থকদের দায়ী করেছেন। তিনি বলেন- গুলি করে আ’লীগ নেতাকর্মীদের মহেশপুর গ্রাম থেকে বিতাড়িত করেছে। গুলিতে বেশ কয়েকজন আ’লীগ কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

পক্ষান্তরে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মহসীনা হক বলেন- আমার সমর্থকরা গ্রামে গেলে আ’লীগ প্রার্থীর লোকজন সেখানে গুলি চালায়। প্রতিরোধ গড়ে তুললে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

খালেদা জিয়াকে কোনো কারাগারই বন্দি রাখতে পারবে না-রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গণবিচ্ছিন্ন হয়ে সরকার বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে। কোনো কারাগারই তাঁকে বন্দি রাখতে পারবে না।

আজ বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।

যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘এটা সরকারের বেআইনি কাজ। এ সরকার গণবিচ্ছিন্ন সরকার বলেই বিএনপি চেয়ারপারসন, আজকে যিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছেন, তাঁকে ভয় পেয়ে এ কাজগুলো করছে, বিএনপি চেয়ারপারসন যাতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু এটি তাদের ভুল ধারণা। ওনার উপস্থিতি এ দেশের লাখ লাখ নেতাকর্মীকে উজ্জীবিত করে। এ দেশের জাতীয়তাবাদী শক্তিকে অনুপ্রাণিত করে। ওদের কোনো কারাগার তাঁকে বন্দি করে রাখতে পারবে না।’

নির্বাচন কমিশন সরকারের নির্দেশের বাইরে কোনো কাজ করতে পারছে না  উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের মতো পৌরসভা নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন দল কেন্দ্র দখল ও ভোট ডাকাতি করেছে।

কাজী নজরুল ছিলেন স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে অনমনীয়-খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম দেশের স্বাধীনতা ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠীর অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলমকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে কারাগারে নির্যাতন সহ্য করতেও দ্বিধা করেননি। তিনি দেশে দেশে স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ছিলেন অনমনীয় প্রতিবাদী। তাঁর কবিতা ও গানে মানবতা ও সাম্যের বাণী উচ্চারিত হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে  জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক বাণীতে খালেদা জিয়অ এসব কথা বলেন।

খালেদা জিয়া বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করি এবং তাঁর প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যের এক অবিসাংবাদিত প্রাণপুরুষ। শত জুলুম, অন্যায়-অত্যাচার ও অবিচারের বিরুদ্ধে ক্ষুরধার লেখনি দিয়ে তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। নিজেও অত্যাচার সয়েছেন ঔপনিবেশিক শাসক গোষ্ঠীর।

তিনি বলেন, পারিবারিক সীমাহীন দুঃখ কষ্টের মধ্যে থেকেও নির্বাক হওয়া পর্যন্ত সাহিত্য-চর্চায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। তিনি ছিলেন বিস্ময়কর বহুমূখী প্রতিভার অধিকারী, তাঁর ক্ষুরধার লেখনির মধ্যে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে বিপ্লবের মন্ত্রণা সুষ্পষ্ট। তাঁর সাহিত্যে উচ্ছাস ও স্বত:স্ফুর্ততা এক অনন্য সৌন্দর্যময়তায় বিশিষ্ট শিল্পরুপ ধারণ করেছে। তিনি যুগান্তরের কবি। তিনি বাংলা সাহিত্যে নবযুগের সূচনা করেন। অন্তর্গত সুন্দরের প্রেরণাতেই তিনি অসুন্দরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, নজরুল ছিলেন একাধারে শ্রমিক, সৈনিক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গীতিকার, সুরকার ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী নির্ভিক কণ্ঠস্বর এবং একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিক যোদ্ধা। তিনিই উপমহাদেশের স্বাধীনতার প্রথম বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর। তাঁর কবিতা ও গান আমাদের মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিল। এছাড়াও তাঁর প্রকৃতি, মানবপ্রেম ও ভক্তিমূলক গান অনন্য বৈচিত্রময় সুর ও বাণীর সংমিশ্রণে এক অনবদ্য স্বপ্নিল পরিবেশ সৃষ্টি করে। যে গানের আবেদন চিরকালীন ও চিরস্থায়ী। জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকল কর্মসূচির সর্বাত্মক সাফল্য কামনা করেন বেগম জিয়া।

অনুরুপ এক বাণীতে “জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  বলেন, ২৫শে মে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৭তম জন্মবার্ষিকী। আজকের এই শুভদিনে আমি মহান কবির প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি এবং তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করি। কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের জাতীয় কবি, বাংলা সাহিত্যের এক অবিসংবাদিত কিংবদন্তী।

তিনি বলেন, পারিবারিক সীমাহীন দুঃখ দুর্দশার মধ্যেও তিনি নির্বাক হওয়া পর্যন্ত সাহিত্য-চর্চায় ব্রতী ছিলেন। তিনি ছিলেন বিস্ময়কর প্রতিভার অধিকারী, তাঁর ক্ষুরধার লেখনিতে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে বিপ্লবের মন্ত্র উচচারিত হয়। তাকে বলা হয় মুসলিম পুনঃজাগরণের কবি এবং উপমহাদেশের স্বাধীনতার  প্রথম বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর । তাঁর কবিতা ও গান আমাদের মুক্তি সংগ্রামে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।

আওয়ামী লীগ ইসলামপন্থী মানুষদের জঙ্গি বানিয়ে হয়রানি করছে-রুহুল কবির রিজভী

আওয়ামী লীগ ইসলামের নাম মুছে দিতেই ইসলামপন্থী মানুষদের জঙ্গি বানিয়ে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, এই অবৈধ ভোটারবিহীন সরকার হেফাজতের ওপর আক্রমণ করে বহু লোককে হত্যা করেছে এবং কত লোককে হত্যা করা হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্য কৌতুক ও কৌতুহলী ছাড়া আর কিছু না।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বিএনপির বিরুদ্ধে ইসলামপন্থী দলগুলোকে মাঠে নামার যে আহ্বান জানিয়েছেন, এর প্রেক্ষিতে রিজভী বলেন, ভূতের মুখে রাম নাম। আওয়ামী সরকারের আমলে ইসলামের উপর সবচেয়ে বেশি আক্রমণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ একটি সুবিধাবাদী দল। প্রধানমন্ত্রী ওআইসি সম্মেলনে গেলেন না। অথচ একটি বেসরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিদেশ গেলেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আসলাম চৌধুরী ও মোসাদ নামে কল্পকাহিনী তৈরি করে সরকার প্রচার করে যাচ্ছে। এই ভোটারবিহীন সরকার এদেশের মানুষকে পাগল বা বোবা ভাবেন। তাই জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। ভারত বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণদেশ। ভারতের যারা পলিসি মেকার তারা এই ভোটারবিহীন সরকারকে সমর্থন করে যাচ্ছে। সেই দেশের মাটিতে কীভাবে এই সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র হয়।

ইউপি নির্বাচনে অযোগ্যরা পাচ্ছেন ধানের শীষ

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন ঘিরে বিএনপির মনোনয়ন-বাণিজ্য অব্যাহত রয়েছে। তৃণমূল নেতাদের পাঠানো তালিকার নাম কেন্দ্রে এসে বদলে যাচ্ছে। কখনও দলীয় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পেয়ে যাচ্ছেন মাঠপর্যায়ের নিষ্ক্রিয় ও অযোগ্য নেতারাও। দলীয় নির্বাচনী প্রতীক ধানের শীষ চলে যাচ্ছে দলীয় পদ-পদবিবিহীন নেতাদের দখলে। এর পেছনে মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেন মূল ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীরা।

নির্বাচনী মৌসুমে বিএনপির প্রভাবশালী নেতারা এ সুযোগে চুটিয়ে বাণিজ্য করছেন। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন স্থানীয় কিছু নেতাও। সারাদেশে দল বেকায়দায় থাকলেও মনোনয়ন বাণিজ্যে লিপ্ত এসব নেতা এ ব্যাপারে নির্লিপ্ত এবং বেপরোয়া। অন্যদিকে এ নিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে দিন দিন অসন্তোষ বাড়ছে। বিভিন্ন স্থানে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন, সমাবেশসহ বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করছেন তারা। এমনকি দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মারামারির ঘটনাও ঘটে গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান মনোনয়ন বাণিজ্যের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়টি এখন রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। যতদিন পর্যন্ত রাজনীতি থেকে দুর্নীতিপরায়ণ ও দুর্নীতিগ্রস্তদের বের করা না যাবে ততদিন এ অবস্থা চলতেই থাকবে। দলীয় নেতাদের এ ধরনের কর্মকা-ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না জানতে চাইলে বিএনপির এ নেতা বলেন, দলের দায়িত্বশীল নেতারা মনোনয়ন বাণিজ্যের ব্যাপারে সচেতন। সময়-সুযোগ মতো অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দলের স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ বলেছেন, ‘কিছু এলাকায় এসব ঘটছে বলে শুনেছি। তবে সরাসরি এ নিয়ে কেউ অভিযোগ করেননি। মূলত দলীয় প্রতীক যারা পাননি, তাদের কাছ থেকেই অভিযোগ আসছে। তবে সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ পেলে দল অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।’

পদ-পদবিবিহীন নেতারাও পাচ্ছেন প্রতীক :তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, সাংগঠনিক দুর্বলতা ও সরকারি নির্যাতন-নিপীড়নের কারণে এমনিতেই চলমান ইউপি নির্বাচনে সব জায়গাতেই দলীয় প্রার্থী দিতে পারেনি বিএনপি। এরপরও যে কয়েকটি জায়গায় মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে, সেগুলোতেও এ নিয়ে চলছে বাণিজ্য। স্থানীয় নেতারা দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা নিচ্ছেন। ফলে অনেক জায়গাতেই দলে পদ-পদবি কিংবা এলাকায় পরিচিতি নেইথ এমন ব্যক্তিরাও ধানের শীষ প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন।

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী মনোয়ন নিয়ে এমন অভিযোগ উঠেছে দলের উত্তর জেলা কমিটির আহ্বায়ক আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে। গত ৭ মে অনুষ্ঠিত চতুর্থ ধাপে সন্দ্বীপের সারিকাইত, মাইটভাঙা, মগধরা, গাছুয়া, আমানউল্লাহ ও সন্তোষপুর ইউনিয়ন নির্বাচনে এই নেতার পছন্দের প্রার্থীরাই মনোনয়ন পান। নেতাকর্মীদের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ায় নির্বাচনে তারা কেউই বিজয়ী হননি। এমনকি সবার জামানতও বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন এ প্রসঙ্গে সমকালকে বলেন, ‘দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে উত্তর জেলার নেতা মনোনয়ন বাণিজ্য করেছেন। সন্দ্বীপের ছয়টি ইউনিয়নে পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছেন তিনি। ভোটের পর দেখা গেছে, এদের কেউই ২০০ ভোটও পাননি।’

কেন্দ্রে এসে বদলে গেল প্রার্থীর নাম : ২৮ মে অনুষ্ঠেয় পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দীঘলিয়ার প্রার্থী হিসেবে ডা. ইউসুফ আলীর নাম কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এখানে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী করা হয়েছে শেখ রবিউল ইসলাম পলাশকে। অভিযোগ উঠেছে, প্রভাবশালী নেতারা অর্থের বিনিময়ে নাম বদলে দিয়েছেন। জেলার কয়েকজন নেতাও এর সঙ্গে জড়িত।

ডা. ইউসুফ আলী সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, প্রার্থী মনোনয়ন করেছেন তৃণমূল বিএনপির দুই স্তরের টিম। সে অনুযায়ী পঞ্চম ধাপের যে প্রার্থী তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল, সেখানে তার নাম ছিল। অথচ তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার চামরুল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম সাগর অভিযোগে বলেন, ‘তিনি ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হলেও পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে তার বদলে শাজাহান আলী নামে এক ইউপি সদস্যকে চেয়ারম্যান প্রার্থী করা হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল মোমেন তালুকদার খোকা টাকা খেয়ে শাহজাহান আলীকে প্রার্থী করেছেন।’

তবে আবদুল মোমেন তালুকদার খোকা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘সাগর বিএনপির কেউ নন। তিনি যুবলীগের রাজনীতি করেন। তাকে বিএনপির মনোনয়ন দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’

চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মারামারি :মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগে খোদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে দলের দু’গ্র“পের মধ্যে মারামারির মতো অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও হয়েছে।

ষষ্ঠ ধাপে অনুষ্ঠেয় ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে কয়েক কোটি টাকার মনোনয়ন বাণিজ্য ও আত্মীয়করণের অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়েই গত ৮ মে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে ভালুকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফখরউদ্দিন আহাম্মেদ বাচ্চু ও উপজেলা যুবদল সভাপতি তারেক উল্লাহ চৌধুরীর সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতা মোর্শেদ আলম গ্র“পের সংঘর্ষ হয়। এতে মজিবুর রহমান মজু নামের একজন নেতা আহত হন।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মোর্শেদ আলম বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে ফখরউদ্দিন আহাম্মেদ বাচ্চু জনপ্রিয় বর্তমান দলীয় চেয়ারম্যানদের বাদ দিয়ে ইচ্ছামতো তার পছন্দের লোকদের নাম কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন। এ নিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।’

তবে ফখরউদ্দিন আহাম্মেদ বাচ্চু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভালুকায় কোনো মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে বলে তার জানা নেই। এ নিয়ে ঢাকার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ভালুকার বিএনপি নেতাদের মধ্যে শুধু তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। মারামারি হয়নি।

আওয়ামী লীগ এখন জনবিছিন্ন-নোমান

ক্ষমতাসীন সরকারকে জনবিচ্ছিন্ন আখ্যা দিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, আওয়ামী লীগ এখন জনবিছিন্ন হয়ে পড়ায় তাদের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। আজকে দেশে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে তা বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। এটা জাতীয় সঙ্কট। এমতাবস্থায় জাতীয় স্বার্থে গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার আহবান জানান তিনি।

সোমবার এক সভায় তিনি বলেন, কারাগার থেকে নেতাকর্মীদের মুক্ত করে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কেননা মানুষ চায় পরিবর্তন। ভোটের মাধ্যমে সেই পরিবর্তন করে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় জনগণ উন্মুখ হয়ে আছেন। বর্তমানে যে শাসনতন্ত্র বা সংবিধান রয়েছে সেখানে জনগণের অধিকারের কোনো ব্যবস্থা নেই, আইন প্রয়োগের নেই কোনো নির্দেশনা।

রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এই সভা হয়। কলামিস্ট ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পেশাজীবীদের মুক্তি দাবি ও বন্ধ মিডিয়া খুলে দেয়ার দাবিতে কলম একাডেমি নামক একটি সংগঠন এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সংগঠনের সভাপতি মইনুল আহসান মুন্নার সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, সাবেক এমপি রাশেদা বেগম হীরা, ধানের শীর্ষের সম্পাদক ডা. সাখাওয়াৎ হোসেন সায়ন্থ, বিএনপির সহ তথ্য বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, বর্তমান শাসকদল আওয়ামী লীগ জনবিছিন্ন হয়ে পড়ায় তাদের মধ্যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। আজকে দেশে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে তা বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। এটা জাতীয় সঙ্কট। তাই জাতীয় স্বার্থে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে। অন্যথায় অস্থিরতা থেকে শাসক দল আরো বেশি স্বৈরশাসকে পরিণত হবে।

তিনি বলেন, অপকর্মের জবাবদিহিতার ভয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। তবে কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা বিএনপি নেবে কিনা জানি না, জনগণ এই সরকারের অপশক্তির আক্রমণের জবাব দিবে।

তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট ও কর্তৃত্ববাদী সরকারে পরিণত হওয়ায় দেশে দু:শাসন নেমে এসেছে। কথা বলার কোনো সুযোগ নেই, ভিন্ন মত প্রকাশ করলেই গ্রেফতারি পরোয়ানা, মামলা এবং জেল।

নোমান বলেন, জিয়াউর রহমান দেশের স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষক। তিনি সঠিক সময়ে ঘোষণা না দিলে সেটা মুক্তিযুদ্ধ নয়, দেশে বিদেশে গৃহযুদ্ধে রুপান্তরিত হতো।

ত্রিমুখী ষড়যন্ত্রে সেলিম ওসমান

স্টাফ রিপোর্টারঃ টেলিফোন করে এমপি সেলিম ওসমানকে বন্দরের পিআর সাত্তার লতিফ হাইস্কুলে ডেকে আনেন দেলোয়ার চেয়ারম্যান। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, স্কুল কমিটি, এলাকার হেফাজত ভোট এই ৩ চক্রের চক্রান্তে পড়ে যান সেলিম ওসমান। ষড়যন্ত্রে পিআর সাত্তার লতিফ হাইস্কুল কমিটি সভাপতি ফারুকুল ইসলাম ও জেলা জাপা সভাপতি আবু জাহেরের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে সবচেয়ে বেশি। আর তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, জাতীয় পার্টির আরেক নেতার ভাতিজা টগর। যে মাইকে এলাকাবাসীকে ডেকে এনেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার অনেক ব্যক্তি এসব কথা জানিয়েছেন। আর স্কুলে পৌঁছে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত না নিতে পেরে উপস্থিত জনতাকে সামাল দিতেই সেলিম উসমান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে চড় মারেন। ধর্ম অবমাননার বিষয়টি একটি গুজব।

বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, এমপি সেলিম ওসমানকে বন্দর ঘটনাস্থলে ডেকে নেওয়ার মিশনে এ দুজনের সঙ্গে সম্প্রতি জাতীয় পার্টিতে যোগদানকারী কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আসন্ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন দেলু প্রধানও জড়িত। সংশিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সেদিন প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে পিটুনিরও মূল নায়ক কলাগাছিয়া ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান। স্কুলের মিটিং চলার সময় সভাকক্ষের দরজা খুলে বাইরে থেকে কিছু লোক নিয়ে ঢুকে দেলোয়ার প্রধান। তারাই তাকে পিটুনি দেয়। পরে তারাই বাইরে গিয়ে প্রচার করে শিক্ষক ধর্ম অবমাননা করেছেন। মাইকে এই ঘোষণা দেয়। দেলোয়ার প্রধান এবার কলাগাছিয়া ইউনিয়নে পুনরায় নির্বাচিত হতে লাঙ্গল মার্কার প্রার্থী হয়েছেন। সেদিন ধর্মের নামে উন্মত্ত চার-পাঁচ হাজার লোক স্কুল মাঠে জড়ো করতে আবু জাহের ও ফারকুল ইসলামের সঙ্গে দেলোয়ার হোসেন ও এমপি সেলিম ওসমানকে বন্দরে ডেকে নেওয়ার ষড়যন্ত্রে যোগ দেন। একই ষড়যন্ত্রে এরা তিনজন একত্রিত হলেও তাদের উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন ভিন্ন। যেমন স্কুল কমিটি সভাপতি ফারুকের উদ্দেশ্য ছিল, তার ছোটবোন স্কুল শিক্ষক পারভিন আক্তারকে প্রধান শিক্ষক বানানো। এ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন বর্তমান প্রধান শিক্ষককে তাড়ানো। এ কারণে স্কুল সভাপতি ফারুক একটি অজুহাত খুঁজছিলেন। ৮ মে রিফাত নামের এক ছাত্রকে মারধর করায় ফারুক অজুহাত পেয়ে যান। এবার উদ্দেশ্য কার্যকর করতে সে আবু জাহেরের সঙ্গে হাত মেলান। এতে জাপা নেতা আবু জাহেরের স্বার্থ পারভিন আক্তারকে প্রধান শিক্ষক করতে পারলে ভোটপ্রাপ্তি এবং এলাকায় নিরঙ্কুশ প্রভাব প্রতিষ্ঠা হয়। ওদিকে, চার-পাঁচ হাজার ভোটার স্কুল মাঠে উপস্থিত দেখে দেলোয়ার চেয়ারম্যান মনে করেন, এমপি সাহেবকে নদীর এ পারে এনে তাকে দিয়ে যদি হেড মাস্টারকে শায়েস্তা করা যায়। এই লোকগুলো যেহেতু ধর্ম অবমাননার ঘোষণায় সমবেত হয়েছে। তাদের কাছে হেডমাস্টারকে শায়েস্তা করে ধর্ম রক্ষার নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যায় এবং এই নিয়ে যদি এমপি সাহেব সমবেত জনতাকে আসন্ন নির্বাচনে তাকে ভোট দিতে অনুরোধ করেন, তাহলে তিনি নির্বাচিত হতে পারবেন। মূলত, এ উদ্দেশ্যেই দেলোয়ার প্রধান ষড়যন্ত্রকারীদের সঙ্গে হাত মেলান।