বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেছেন, ‘দেশের নিরাপত্তার ব্যাপারটি আজ সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সেজন্য দেশ নিয়ে যারা চিন্তা করেন তারা আজ শঙ্কিত, আর সাধারণ মানুষ চরম আতঙ্কিত।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলায়তনে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
সারাদেশে গুম-খুন-গুপ্তহত্যা ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এ সভার আয়োজন করা হয়।
দেশ কঠিন সময় পার করছে উল্লেখ করে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে আজ পৃথিবীজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। দেশের নিরাপত্তার ব্যাপারটি আজ সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সেটা পারিবারিক, ব্যক্তিগত কিংবা জাতীয় যে ধরনের নিরাপত্তাই হোক না কেন। তাই দেশ নিয়ে যারা চিন্তা করেন তারা আজ শঙ্কিত, আর সাধারণ মানুষ চরম আতঙ্কিত।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘গুম-খুন-হত্যা আজ নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিত, খ্রিস্টান ধর্মযাজকসহ সব ধর্মের লোককে হত্যা করা হচ্ছে। কিন্ত প্রকৃত হত্যাকারীদের না ধরে এসব ঘটনার জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করছে সরকার। এতে করে হত্যাকারীরা আরো উৎসাহিত হচ্ছে।’
জেনারেল মাহবুব আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেন, ‘প্রকৃত হত্যাকারীদের না ধরে বিএনপি-জামায়াতকে এভাবে দোষারোপের ঘটনা অব্যাহত থাকলে ব্লেইম গেইমের আড়ালে দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হতে পারে, যেটা কাম্য নয়।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, সাধারণত দুর্বৃত্তরা দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করে থাকে। কিন্তু সরকারই আজ দেশে অরাজকতা তৈরি করছে। দেশে এখন রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন হচ্ছে। জঙ্গি দমনে সাঁড়াশি অভিযানের নামে দেশজুড়ে গণগ্রেপ্তার চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে ২০ থেকে ২৫ হাজার লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপির ৪ থেকে ৫ হাজার নেতা-কর্মী রয়েছে। এতো লোককে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে যে, জেলখানা উপচে পড়ছে। সেখানে তিল ধারণের আর জায়গা নেই। এভাবে চলতে পারে না।’
মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘জাতির ক্রান্তিকালে দল-মত-শ্রেণি নির্বিশেষে এখন জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। দেশপ্রেমিক সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য তৈরি করে সমস্যার সমাধান করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারেরও দায়িত্ব রয়েছে। তাদের দায়িত্ব সমস্যা সমাধানে জাতীয় সংলাপের আয়োজন করা। এ জন্য প্রয়োজনে সম্মিলিতভাবে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে সরকার জাতীয় সংলাপের আয়োজন করতে বাধ্য হয়।’
জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, যুবদলের দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সম্পাদক কাজী রফিক, জিনাফ সভাপতি মিয়া মো. আনোয়ার প্রমুখ।