বিএনপি ইউপি নির্বাচনের পরের ধাপগুলোতেও থাকবে

54

ব্যাপক সহিংসতা, প্রাণহানী, কারচুপি এবং দল মনোনিত প্রার্থীদের ধারাবাহিক পরাজয়ের পরও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের পরের ধাপগুলোতেও থাকবে বিএনপি।

সোমবার (৯ মে) রাতে গুলশান কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

পাশাপাশি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত মনোনয়ন বাণিজ্য’র অভিযোগ তদন্তের দাবিও ওঠে বৈঠকে।

এ ছাড়া জাতীয় কাউন্সিলের পৌনে দুই মাস পেরিয়ে গেলেও বিএনপির বাকি কমিটিগুলো ঘোষণা না হওয়ায় স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং দ্রুত কমিটি ঘোষণার দাবি জানান।

বৈঠকে অংশ নেওয়া স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য’র সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে দলীয় বাধ্যবাধকতার কারণে কেউ নাম প্রকাশে রাজি হননি।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আলোচনার শুরুতেই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতা, কারচুপি, প্রাণহানী ও দলীয় প্রার্থীদের ধারাবাহিক পরাজয় নিয়ে কথা ওঠে। এসময় স্থায়ী কমিটির কয়েকজন নেতা এই নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকার কোনো যৌক্তিকতা আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

কিন্তু দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচনে থাকার পক্ষে অবস্থান নিলে এ নিয়ে আলোচনা বেশিদূর এগোয়নি।

এরপর স্থায়ী কমিটির অন্তত তিনজন নেতা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে দায়িত্বশীল নেতাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত মনোনয়ন বাণিজ্যের বিষয়টি আলোচনার টেবিলে তোলেন।

মনোনয়ন বাণিজ্যের বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য খালেদা জিয়াকে অনুরোধ জানান তারা। জবাবে খালেদা জিয়া বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে।

সব শেষে বিএনপির বাকি কমিটিগুলো ঘোষণা না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থায়ী কমিটির শীর্ষ কয়েকজন নেতা। খালেদা জিয়াকে তারা বলেন, কমিটিগুলো দ্রুত ঘোষণা করে ছোটখাটো কর্মসূচির মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঙ্গাভাব তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি সরকারের ওপর স্নয়ুচাপ সৃষ্টি করতে হবে।

জবাবে সবাইকে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেন খালেদা জিয়া। এসময় তিনি বলেন, তাড়াহুড়া করে কিছু হবে না। হিসাব করে পা ফেলতে হবে। দলকে সংগঠিত করে কর্মসূচির কথা ভাবতে হবে।

খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. আব্দুল মইন খান, নজরুল ইসলাম খান ও গয়েশ্বরচন্দ্র রায়।

রাত সাড়ে ৯ টায় শুরু হয়ে বৈঠক শেষ হয় রাত সাড়ে ১১ টায়। দুই ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে খালেদা জিয়ার মামলা, সাংবাদিক শফিক রেহমান, শওকত মাহমুদ ও মাহমুদুর রহমানের কারাবাস নিয়েও আলোচনা হয়।